আগের কাহিনীর পর.........।
পরদিন কাজকাম বাদ দিয়া আবার সক্কালে এই অধম থানায় হাজির! লগে কইরা অবশ্য পাসপোর্টখানা লইয়া গেছিলাম! পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টটা বানাইতে ওই জিনিসটা নাকি লাগে। যাইহোক সকালে বড় বাবু দেরী কইরা উইঠা আইয়া প্লাস্টিকের একখান চিয়ারে বইসা চা খাইতে খাইতে আমারে ডাক দিয়া কয়, এই এইদিক আয়। পাসপোর্ট লইয়া আইছস?
আমি কই হ্যাঁ নিয়া আসছি তো।
চা খাওন শেষ হইলে আমার কাছ থেইকা পাসপোর্ট খানা লইয়া কয় আমার লগে আয়। দেখলাম একখান প্যাডের উপ্রে আমার নাম লিখালিখি কইরা সিল ছাপ্পড় মারলো। ব্যাটারে এক্সট্রা কেয়ারফুল দেখলাম ওইটা লিখতে যাইয়া। লেখালিখির কাজকামগুলা নাকি মুন্সিরে (লিখালিখিই যার কাম) দিয়া করায় কিন্তু আমার ক্ষেত্রে দেখলাম “বড় বাবু” নিজেই করতেছে।
এরপর সিল মারতে যাইয়া দেখি সিল আর খুইজ্জা পায় না। থানার ওসির বাংলা সিলটা পাইছে মাগার ওইটা দিয়া নাকি হইব না। ইংলিশ সিলটা নাকি দরকার। এখন ওসি আমারে কয়, হুন, তুমার কামটা তাড়াতাড়ি করতে হইলে তুমারে একটা সিল বানাইয়া আনন লাগবো। নাইলে পাঁচ সাত দিন লাইগা যাইতে পারে!!!
হালার পুতে কয় কি? আমি এমব্যাসি ফেইস করতেছি তিন দিন পর আর এই হালায় কয়, পাঁচ সাত দিল লাইগা যাবে? তাঁর পর ওইটা লইয়া কই আমি ফেরেমে বান্ধাই রাখমু? বাধ্য হইয়া কইলাম ঠিক আছে কইরা আন্তেছি! টেম্পলেট বানাই দেন। ওরা ইস্টাইল্টা কাগজে লিক্ষা দিল আর আমি পাশের থানায় গেলাম। আমাগোর থানায় আবার রাবার স্ট্যাম্প বানায় না কিনা! যাইয়া দেখি, কারেন্ট নাই! কারেন্ট থাকলে নাকি জিনিসটা দুই তিন ঘণ্টার মধ্যে রেডি হইয়া যায়। যাই হোক, জিনিসটা আনতে গেছিলাম আমি সকাল এগারটার দিকে, বানাইয়া থানায় ফেরত গেলাম রাত আটটার দিক।
এরপর ওসিরে কইলাম, সিলটা মাইরা জিনিসটা আমারে দিয়া দেন, আমি নিজে ওইটা লইয়া এসবি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) থেইকা সিল মাইরা লমুনে। ওসি কয় নাহ। তুমারে দিমু না। কালকে সকালেই ওইটা আমি এসবিতে পাঠাই দিমু ওইখান থেইকা তুমি লইতে পারলে লইবা। কি আর করার? “বড় বাবু”র কথা বইলা কথা!
মনে মনে পিলেন কইরা লাইলাম, কালকে সকালে এসবি থেইকা মালটা লইয়া হলে যাইয়া দুপুরে ঘুমামু তারপর রাইতে ঢাকা! ওইদিনের মইদ্দেই কাম সাইরা ঢাকায় একদিন রেস্ট লমূ। তাঁর পরদিন মনের সুকে ইন্টারবিউ দিমু!!! কিন্তু উপরওয়ালার পিলেন ছিল অন্যরকম!!! তারপরদিন সকালে এসবিতে যাইয়া জিগাইলাম, কুনু পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট আইছে কিনা। ওইখানে উনারা বললেন, ওইটা তো থানায় ফেরত পাঠাই দিছি!
আমি জিগাইলাম কিয়েরে?
ওনারা যা কইল তাতে তো আমার চোক কপালে উইঠা গেল। ওনাদের মতে এই ওসি শুয়োরের আওলাদ নাকি এক জাগার সিল অন্য জাগায় মারছে। ওইটা ঠিক করাতেই নাকি মালটা ফেরত পাঠাইছে। তখন বাংলা সেনেমার নায়িকার বাপদের মতন আমারও মনে হইতেছিল, ব্যাটারে চাপাতি দিয়া টুকরা টুকরা কইরা কাইট্টা কুত্তা দিয়া দিয়া খাওয়ান দরকার।
অগ্যতা হলে যাইয়া দুপুরের ভাতঘুমের সাথে সাথে রাতঘুমটাও দেওয়া লাগলো। আমার পিলেন একদিন পিছাইয়া গেল আরকি! পরদিন সকালে এসবি থেইকা মামাগোরে “চা” খাওনের পয়সা দিয়া মালটা লইয়া সেইদিন রাতেই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু! সামনে ইন্টারভিউ!!!
(চলতে থাকপে......।)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩২