somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এন ইডিয়ট ইন লাভ!!! (তেইশ)

২১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(আগের পর্বের পরে...।)

সিটিতে হাঁটাহাঁটি করতে আমার বেশ ভালোই লাগে। আর সাথে সুন্দরির মত সুন্দরি থাকলে তো আর কথাই নাই। সিটির এই জায়গাটা এখন আরও সুন্দর হয়ে গেছে। এভ্রিথিং সিমড টু বি মোর বিউটিফুল। মনে মনে ডিবেট করতেছিলাম, আসলে কাহিনীটা কি? সুন্দরি সাথে আছে বলেই কি সবকিছু এত সুন্দর মনে হইতেছে নাকি সবকিছুই আসলে সুন্দর হইয়া গ্যাছে!!!যাইহোক একটু হাঁটার পর একটা অসাধারণ দৃশ্য লক্ষ করলাম! ও আমার বাম পাশ দিয়ে হাটতেছিল আর আমি ছিলাম ওর ডানে। আর অস্তগামী সূর্যটার শেষ বেলার আলোটা তার ডান গালটা ছুইয়া দিয়া যাইতেছিল। খালি জানতাম যে, এই সময়ের আলোটা নাকি এক্সেপ্সনাল কিন্তু কেন? ব্যাপারটা আজকে দিনের আলোর মতন পরিষ্কার হইয়া গেল। এমনিতে তো তার রূপের আগুনে পুড়তেছিলাম, আর শেষ বিকেলের আলোর কারসাজিতে তার সৌন্দর্য এত বেশি এমপ্লিফাইড হইছিল যে আমার চক্ষুদ্বয় আমার সাথে বিট্রে কইরা আঠার মত সেই ডান গালে লাইগা ছিল (চক্ষুদ্বয় আমার বেশ অনুগত)।

যাইহোক ব্যাপারটা হিতে বিপরীত হইল আরকি! একটু পর সুন্দরি টের পাইয়া গেল যে আমার চক্ষুদ্বয় আমার সাথে বিট্রে করছে, এতে সুন্দরি শরম পাইয়া গেল। ফলাফলঃ সুন্দরির গাল আরও বেশি কইরা লাল হওয়া শুরু হইল! এই লাল আর অস্তগামী সূর্যটার শেষ বেলার আলোটা মিলে এমন একটা মিস্টিরিয়াস কালার তৈরি হইছিল যেইটার বর্ণনা দেওয়া এই অধমের পক্ষে সম্ভব নাহ! আমি হলফ করে বলতে পারি এই কালার আমি লাইফেও দেখি নাই। আবার এমনও হইতে পারে যে আমাকে হ্যালুসিনেসনে ভুগতেছিলাম। যাইহোক অভিজ্ঞতাটা ছিল সম্পূর্ণ নতুন।একটু পরেই দেখি, বিএমসিসি’র সামনে। অকি!!! এত তাড়াতাড়ি এতটা রাস্তা হাইটা ফালাইলাম? ক্যামনে? যাইহোক এরপর ওরে লইয়া গেলাম নদীর পাশের ওই পার্কটাতে। যায়গাটা একটা পারফেক্ট প্লেস। গোধূলির সেই সময়, সাথে বাচ্চাদের শেষ সময়ের দৌড়াদৌড়ি প্লাস সাথে অপরূপা এক সুন্দরি! যাইয়া দাঁড়াইলাম নদীর পাশের রেলিঙটাতে। একবার ওরে দেখতেছি আর একবার দেখতেছি অস্তগামী সূর্যটার দিকে। মনে হইতেছিল যে, এই সুন্দরির সৌন্দর্যের কাছে অস্তগামী সূর্যটার সৌন্দর্য একটা জোকমাত্র।

ক্যামনে যেন ইমোশনাল হইয়া গেলাম। লাইফটারে হঠাৎ করেই ফুল মনে হইতেছিল। মনে হইতেছিল লাইফের সব চাওয়াপাওয়া পুরন হইয়া গ্যাছে। এর মধ্যে গলাটা আবার ধরে আস্তেছিল, এই অবস্থায় কিছু বলতে গেলেই সুন্দরি টের পাইয়া যাবে। ধুর বাল। সো ডুবন্ত সূর্যটার দিকে তাকায় থাকলাম।

এরপর ক্যামনে কি হইল বুঝলাম না। এইরকম একটা মধুময় সময় বাদ দিয়া আমার মাইন্ড পাস্টে চইলা গেল। কোন মাইয়ার সাথে কখন কি ইন্টার‍্যাকশন হইছিল সব সুপারকম্পিউটারের গতিতে রিভিউ হইতেছিল। WTF? সব ঘটনাগুলার এন্ডে একটাই জিনিস কন্সট্যান্ট ছিল, সেইটা হইল নান অফ দেম ওয়াজ এরাউন্ড, পিরিত অর নন পিরিত! হঠাৎ করেই মাথায় একটা চিন্তার উদয় হইল এই সুন্দরি কি থাকবে? আমি কি একে ধরে রাখতে যে ডিসিশনগুলা নেওয়া লাগবে ওইগুলা নিতে পারব? মনের মধ্যে আতঙ্ক জন্ম নেওয়া শুরু হইয়া গেল। আমি জানি এইটারে এই মুহূর্তে নিজেরে কন্ট্রোল করতে না পারলে আমি ডান। সো মাথাটা ঘুরাইয়া সুন্দরির দিকে তাকাইলাম। দেইখা তো ভুত দেখার মত কইরা চমকাইয়া গেলাম। সি ওয়াজ লুকিং রাইট এট মি।ওর দিকে তাকাইয়াই টের পাইলাম যে, ও বুঝতে পারছে যে সামথিং ইজ রং। “ইডিয়ট ইজ বাস্টেড”। এখন কি করি। মাথাটা তো হ্যাং হইয়া গেল। কোন সল্যুশন আসতেছে না।

এর মধ্যে আবার সুন্দরির এম্বুশ প্রশ্ন, কি হইছে? আমিও ইন্সটিক্টিভলি বইলা দিলাম "কই? কিচ্ছু না তো"। কিন্তু এমনভাবে বললাম যে আমি নিজেই বিশ্বাস করতেছিলাম না। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হইল যে আমি জানতাম যে ও জানত যে আমি মিথ্যা কথা বলছি। আরও কমপ্লিকেটেড ব্যাপার হইল যে, আমি জানতাম যে ও জানে যে আমি জানতাম যে ও জানত যে আমি মিথ্যা বলছি।

আমার মাথা ঝড়ের বেগে চলতেছে কি কই এইটা নিয়া। ভয়ে সুন্দরির দিকে তাকানোর সাহস কইরা উঠতে পারতেছি না। খামোখাই ডুবন্ত সূর্যটার দিকে তাকায় আছি। মাথাই আর কাজই করতেছে না। চিন্তা করলাম, চুলামার... যা হবার হবে, অনেস্টি ইজ দি বেস্ট পলিসি। ইন অর্ডার টু গেইন হার ট্রাস্ট, সুন্দরিরে আমার লাইফে এক্সেস দেওয়া লাগবে। মনে মনে রেডি হইলাম গল্প শুরু করার জন্য। ডুবন্ত সূর্যটারে বাদ দিয়া সুন্দরির দিক তাকাইলাম। দেখি সুন্দরিও সূর্যটার দিকে তাকাইয়া আছে। কিছু বলতে যাবো এই মুহূর্তে দেখি সূর্যাস্তের সোনালি আলোতে চোখ দুইটা চিক চিক করতেছে। শিট ম্যান! ভয় পাইয়া গেলাম মনে মনে, আবার কুন আকাম করলাম? সুন্দরিরে শেষ পর্যন্ত কান্দাইয়া ফালাইলাম?

বেশ আতঙ্ক আর কন্সার্ন লইয়া এইবার আমি তারে জিজ্ঞাসা করলাম কি হইছে? আর ইউ অকে? মাগার ফলাফল হইল উল্টা। সুন্দরি মুখটা ঢাইকা হু হু কাইন্দা ফালাইল। মনে মনে চিন্তা করলাম ব্যাপারটা কেঁচে গেল ইডিয়ট! তুমার ডেটিং লাইফের বারটা বাইজা গেল। এখন নরমালি যেইটা করা উচিত, সেইটাই করা শুরু করলাম। তারে সান্ত্বনা দেওয়ার ব্যারথ চেষ্টা করতেছি আরকি! ওর পারসোনাল লাইফ সম্পর্কে আমি বলতে গেলে কিছুই জানি না। কি বললে যে সান্ত্বনা দেওয়া যাবে ওইটাও বাল জানিনা। পুরাই বাটে পইড়া গেলাম। মনে মনে কইতেছি আইজকে কুনুমতে বাড়িত যাইয়া লই আর লাইফেও ডেটের নাম মুখে লইতাম না।

একটু পরে সুন্দরির চোখের জল পড়া বন্ধ হইল। চোখের চারপাশ কালিঝুলি দিয়া কিম্ভুতকিমাকার আকার ধারণ করছে। মাগার মজার ব্যাপার হইল এই কিম্ভুতকিমাকার ব্যাপারটাও আমার ভাল লাগা শুরু হইয়া গেছে। ইডিয়টরে মনে হয় পিরিতের বিচ্ছু আসলেই কামড়াইছে! যাইহোক একটু পরে তুলি কইল আমার বাথরুমে যাওয়া লাগবে, এইভাবে করে হেঁটে বেড়ানো ঠিক হবে না। আমি তখন কইলাম অক্কে! মহারাণীর আজ্ঞা শিরোধার্য! ইচ্ছা কইরা সিলি হওয়ার চেষ্টা করতেছি, তাতেও যদি সুন্দরির মনটা ভাল হয়। এরপর বিএমসিসির নিচ দিয়া হাইটা চেম্বারস স্ট্রিটের একটা স্টারবাকস এ ঢুকলাম। রেস্টরুম থেইকা সুন্দরি নিজেরে মেরামত কইরা বাইর হইল। আমি ত তারে দেইখা আর একবার তব্দা খাইলাম। এরে আমি যতবার দেখতেছি ততবার আন্ধা হইতেছি! জয়তু পিরিত!!!

এরপর তারে জিগাইলাম কি পান করবা। বলে কিনা কিচ্ছু না। তারপর জোরাজুরি কইরা একটা পানীয়ের অর্ডার দেওয়াইলাম। আমি নিলাম একটা মিডিয়াম কফি! মজার ব্যাপার হইল সেইদিন সুন্দরি কি অর্ডার দিছিল ওইটাই মনে নাই। খালি মনে আছে ট্রান্সপারেন্ট এক্টাস কাপে বরফের টুকরা আর পানীয়ের উপড়ে হুইপ ক্রিম টাইপ কিচ্ছু একটা ছিল। স্টারবাকসে এই অধমের দৌড়ই হইল লাটে পর্যন্ত। বেশি বাহাদুরি না দেখাইয়া আমি একটা মিডিয়াম কফিই নিলাম (স্বাদটা বিটকাল হইলেও কফি আমার বেশ পছন্দের একটা জিনিস)।

তারপর ছোট্ট একখানা টেবিল দখল কইরা বসলাম দুইজনে মিল্লা। আজকের আগে যতবারই আমি এরাম ছোট্ট টেবিলে বসছি মনে মনে মালিকদেরকে গালি দিছি এত্ত ছোট টেবিল বানানোর জন্য। আমার একারই তো তুইটা টেবিল লাগে! আর আজকে ছোট্ট টেবিলের সুবাদে সুন্দরির কাছাকাছি বসতে পারার জন্য আমি মনে মনে ওদেরকে ধন্যবাদ দিচ্ছি! ভণ্ডামি এট ইটস বেস্ট!

এর মধ্যে সুন্দরি পুরা নরমাল হইয়া গেছে! এরপর কফিতে একটা চুমুক দিয়া গলা খাকাড়ি দিয়া শুরু করলাম কাহিনীটা কি বল দেখি সুন্দরি? (এতক্ষনে এই অধম বুইজ্জালাইছি যে তাহার কান্দাকাটির কারন আমি না।) দেখলাম সুন্দরির মনটা একটু খারাপ হইয়া গেল। বলে তেমন কোন কিছু না। আমি তো টের পাইছি ব্যাপারখানা বেশ সিরিয়াস। নাইলে এই বয়সে আইসা ডেটের সামনে কেউ কান্দে না। সে যতই নরম মনের মানুষ হোক না কেন। এখন একজন জেন্টলম্যানের কাজ হইল অপেক্ষা করা যে সুন্দরি যখন বলতে কমফোর্টেবল ফিল করবে তখন বলবে। নো চাপাচাপি! আফটার অল একবার মুখের উপড়ে ডিনাই কইরা দিছে। মাগার আমি যদি জেন্টলম্যান হইতাম তাইলে ইডিয়ট হবে কেডা? তার উপ্রে সুন্দরি আমার কিউরিসিটি জন্মাইয়া ফালাইছে! আর আমি যদি কারো উপ্রে (অবশ্যই কুনো সুন্দরি ছাড়া আর কেউ না) একবার কিউরিয়াস হই, তার নাড়ির খবর আমার জানা লাগবেই। নাইলে এই কিউরিসিটি মাথার মধ্যে কুট কুট কইরা কামড়াবে!

(চলপে...।)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:৩০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×