আখেরাতে বুরখিছ
মুহাম্মাদ যাফযাফ
অনুবাদ : ফয়সাল বিন খালিদ
বুরখিছ তার বিখ্যাত ছোট গল্পগুলোতে মূলত ইতিহাস বিচার করেছিলেন, ব্যক্তি বা কোন ঐতিহাসিক চরিত্রের বিচার করেন নি। ইতিহাসের বিভিন্ন সময় আদালত অনেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে। কিন্তু পরে দেখা গেল, সেই রায় সঠিক ছিল কিনা সেই প্রশ্ন উঠছে এবং অনেকে তার পুনর্বিবেচনার কথা বলছেন। তবে ততক্ষণে মৃত্যু, বিচারক, বাদি-বিবাদী মিথ্যে সাক্ষী সেনানায়ক শাসক এবং বিঁঝি পোকা- সবার সম্পর্কে চুড়ান্ত রায় দিয়ে দিয়েছে। ইতিহাসের মঞ্চে এই ধরনের অসংখ্য চরিত্রের আগমন ঘটেছে এবং বুরখিছের পক্ষে তাদের সবার বিচার করা সম্ভব ছিল না। কারণ তার জীবন ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। তিনি বেঁচে ছিলেন মাত্র আশি বছর। তার জীবনের এই সংক্ষিপ্ততার সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে তার ছোট গল্পের তালিকাটাও। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার সবসময় মনে হয় বুরখিছ যদি এই ধরনের আরো কয়েকটা ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে কাজ করতেন তাহলে খুব ভাল হত। কিন্তু তিনি যেহেতু মারা গিয়েছেন তাই তিনি খলিফা মুতাছিমের প্রধান সেনাপতী আফশিনের বিচার প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার সুযোগ পেলেন। বাবুক বিদ্রোহ দমনকারী আফশিন, কবি আবু তাম্মাম তার সম্পর্কে বলেছিলেন :
'বর্শার ফলার মত সেনাপতী আফশিনের সংকল্প'
বুরখিছ তার সংক্ষিপ্ত জীবনে কখনো মহান সেনাপতী আফশিন সম্পর্কে কোন কিছু জানার সুযোগ পান নি। তবে তিনি 'এক সহস্র রজনি' নিয়ে কাজ করেছিলেন এবং সেই সূত্রে আব্বাসী যুগ নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং সেই পর্বের অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিকে তার বিচারের মুখামুখী দাঁড় করান। এই যোগাযোগের ফলেই মৃত্যুর পর, নাস্তিকতার অভিযোগে অভিযুক্ত আফশিনের বিচার প্রক্রিয়ায় তাকে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই বিচার মজলিসে বুরখিছ অদ্ভুত কিছু অভিযোগ শুনতে পান। এই সব অভিযোগগুলো দ্বারা যে কারো নাস্তিকতা প্রমাণ করা যায় সেটা তার মাথায় কোনভাবেই আসা সম্ভব ছিল না। কারণ তিনি ছিলেন খৃষ্টান। আফশিনের বিরুদ্ধে তোলা সেই সব অভিযোগগুলো তাবারী ও মাসউদীর মত ঐতিহাসিকগন তাদের গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।
পশ্চিমা কেতাদুরস্ত পোষাক পড়া বুরখিছ আদালত কক্ষে প্রবেশ করলেন (তখন তার সাথে তার তরুণী স্ত্রী ছিলেন না) এবং প্রথম যে বিষয়টা তার নজর কাড়ল সেটা হচ্ছে উপস্থিত সবাই জমকালো পোশাক পরে আছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, দুনিয়াতে অন্ধ থাকলেও আখেরাতে গিয়ে বুরখিছ তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে ছিলেন। মনে হয় বুরখিছ তার জীবনে নাস্তিকতার অর্থটা ভালভাবে ধরতে পারেন নি। অবশ্য এটা জোড় দিয়ে বলা যায় যে, বুরখিছ এটা জানতেন, যার একটা মাত্র সিদ্ধান্ত থাকে তার অবাধ্য হওয়া মানেই নাস্তিক হয়ে যাওয়া এবং অযৌক্তিক কথা বলা মানেও নাস্তিকতা করা। সিন্ধু, হিন্দুস্তান, চীন, আরব দেশ এবং বুরখিছের জন্মস্থান ল্যাটিন আমরিকা, সবখানেই এই বিষয়টা ছিল। জীবৎকালে বুরখিছ তার দেশের এমন অনেককে জানতেন যারা নাস্তিকতার অভিযোগে কঠিন সাজা ভোগ করেছিলেন বা প্রাণ দিয়ে ছিলেন। সম্ভবত তাদের জন্য কেঁদে কেঁদেই বুরখিছের চোখ দুটি অন্ধ হয়ে গিয়ে ছিল।
তার পাশে বসে থাকা একজন বলল :
- মিষ্টার বুরখিছ ! এমন অবাক হয়ে কি দেখছেন ? অবাক হওয়ার কিছু নেই। সাধারণ একটা মামলা এবং বিচার নিশ্চয় ইনসাফপূর্ণ হবে। সম্ভবত আপনাদের ল্যাটিন আমেরিকাতে যেমন ঘটত তেমনই কিছু একটা হবে। কোন সন্দেহ নেই বিষয়গুলো দুনিয়ায় যেমন ছিল তেমন থেকে যাবে। তাই না, আপনার কি মনে হয় ?!
- ঠিক বলতে পারছি না, কারণ আমার তো সে দিন মাত্র মৃত্যু হল। তাছাড়া আমি এখনো আপনাদের আখেরাতী আচার-আচরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠি নি।
প্রধান বিচারপতি বলে ওঠলেন : আমরা সব শুনব, মন খুলে সব বলবেন। কারণ আমরা এখন আখেরাতে আছি। এখানে পুলিশ, সাংবাদিক বা রাষ্ট্রপতী বলে কেউ নেই। আমরা সবাই সমান। আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি আপনাকে খানিকটা আনন্দ দেওয়ার জন্য এবং দুনিয়ার সম্পর্কে কিছু স্মৃতিচারণ করতে, যার অধিবাসী মানুষজন এখনো ভেবে যাচ্ছে তারা সেখানে চিরদিন থাকবে।
অপ্রতিভভাবে ছোট একটা কাঁশি দিয়ে বুরখিছ বললেন :
- মাফ করবেন মহামান্য বিচারপতি ! আপনি আমার নাম জানেন ?
- অবশ্যই। আখেরাতে সবাই সবার নাম জানে। উদাহরণত: আমি আপনার পাশের ওই লোকটার নাম জানি। তিনি ইয়াজদান বিন বাযান। তিনি আফশিনের কালের লোক এবং তিনিও নাস্তিকতার অভিযোগ মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছিলেন। তাই আমার ধারণা, অতীতের স্মৃতি চারণ করতে এবং কিভাবে নাস্তিকদের বিচার করা হয়- আরো সঠিক ভাষায় বললে, নিজেরা বাঁচার জন্য কিভাবে আমরা নাস্তিকদের বিচার করি, তা দেখার জন্য তিনি এখানে উপস্থিত হয়েছেন।
- কিন্তু মহামান্য বিচারপতি ! আমরা কি ইতিমধ্যেই মারা যাইনি ?
হা ! ঠিক, আমি সেটা জানি। আর মিষ্টার বুরখিছ ! আমাকে মহামান্য বিচারপতি-টতী বলার দরকার নেই। কেউ মহামান্য আর কেউ অমান্য, কেউ রাজা কেউ প্রজা- এই ব্যাপারগুলো এখানে আর নেই। আমরা শুধু আপনাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য এবং দুনিয়ার ভুলগুলো শোধরানোর জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। হায় দুনিয়ার মানুষজন কী নির্বোধ জীবনযাপন করে যাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য ওরা খেটে মরছে, যুদ্ধ-বিগ্রহ, খুনোখুনি করছে। অথচ তারা জানে না, যে মারা যায় এবং আমাদের সাথে এসে মিলিত হয় সেই আসলে বেঁচে যায়। আপনার পিছনে দেখুন বুরখিছ, যদিও আমি আব্বাসী যুগের লোক কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি ওই লোকটাকে চিনি। তার নাম হিলাছি লাছি। তিনি হাবশী সাম্রাজ্যের মহারাজা ছিলেন।
- হা.. হা.. আমি তাকে ভাল করেই চিনি। তিনি আমার কালের লোক। কিন্তু তাকে যে চিন্তিত দেখাচ্ছে !
- না তিনি মোটেও চিন্তিত নন। তিনি তার কুকুরগুলো নিয়ে নতুন কোন কবিতা রচনার কথা ভাবছেন। হতে পারে তিনি এখান থেকে, যাদের সাথে দুনিয়াতে যুদ্ধ করেছিলেন, সেই ইটালিয়ানদের ক্যাম্পে গিয়ে পানসভায় যোগ দিবেন।
বুরখিছ বললেন :
- আমার জনা মতে দুনিয়াতে তিনি কখনোই কবিতা লেখতেন না।
- আখেরাতে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। যাইহোক, আলোচনা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে। এই নিয়ে আরেক সময় কথা বলব। আগে আজকের কাজটা সেরে ফেলা যাক।
বিচারপতি গলা খাকাড়ি দিয়ে উপস্থিত সবার দিকে তাকালেন এবং সবাই তাতে সম্মতি জানালেন। মুহাম্মাদ বিন আব্দুল মালেক আয-যাইয়্যাত আহমাদ বিন আবু দাউদকে লক্ষ্য করে বললেন :
- মুতাছিমের সেনাপতী আশফিনের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করুন। আর প্রসঙ্গত: তারা দুইজনই কিন্তু এখন জান্নাতে একসাথে নিয়মিত শরাব পান করে যাচ্ছে- আল্লাহ মহা দয়ালু ও মেহেরবান।
আহমাদ বিন আবু দাউদ বললেন :
- তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ, যেমন খুনখারাবি, ছিনতাই, বাড়ি-ঘর ও ক্ষেত-খামার জালিয়ে দেওয়া। তবে আমরা এখানে নির্দিষ্টভাবে ছয়টি অভিযোগ নথিভূক্ত করেছি, যেগুলো এখনো দুনিয়ার মানুষের নথিপত্রে সংরক্ষিত আছে। সদ্য আমাদের সাথে যোগ দেওয়া দুই হাজার সনের লোক মহান লেখক বুরখিছের সামনে আমরা সংক্ষেপে সে ছয়টি অভিযোগ উল্লেখ করব।
মুহাম্মাদ বিন আব্দুল মালেক আয-যাইয়্যাত আহমাদ বিন আবু দাউদকে বললেন :
- আমরা আফশিনের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তুলে ছিলাম আপনি শুধু সেগুলো উল্লেখ করুন। আমরা আমাদের মহান লেখককে বেশিক্ষণ বিরক্ত করতে চাই না। তার অন্য কোনও প্রোগ্রাম থাকতে পারে।
জো হুকুম ! আমরা আফশিনের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরওয়ানা জারি করলাম। এবং যারা তার মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়ণ করেছিল তারা সবাই এখন এই অনন্ত বিস্তৃত জগতেই ঘুড়ে বেড়াচ্ছে।
বুরখিছ বললেন :
নিশ্চই তারা হাবিয়া দোজখে আছে, তাদের গলা ও পায়ে পেচিয়ে আছে নরকের জলন্ত শিকল ? তোমাদের ধর্মগ্রন্থ পড়ে আমি যা বুঝেছি তাতে এই ধরনের লোকদের শাস্তি এমনটাই তো হওয়ার কথা।
প্রধান বিচারপতি হেসে ওঠলেন এবং আহমাদ বিন দাউদকে বললেন :
আফশিনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো পড়ে শোনান।
আহমাদ বললেন :
-আমরা তো এখানে একটা প্রীতি-অনুষ্ঠানে মিলিত হয়েছি এবং আমাদের নতুন সাথীর সাথে পরিচিত হচ্ছি, তাই না ?!
-ঠিক, ভাল কথা। আফশিনের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, লেখক আহমদ আমীন তাবারী এবং মাসউদীর বরাত দিয়ে তা উল্লেখ করেছেন (এরা সবাই এখানে উপস্থিত আছেন)।
প্রথম অভিযোগ : আফশিন দুই জন লোককে চাবুক মারতে মারতে পিঠের মাংস খসিয়ে ফেলেছিলেন। তাদের অপরাধ, তারা উভয়ে মিলে একটি মন্দিরকে মসজিদ বানিয়ে একজন সেই মসজিদের ইমাম এবং অপরজন তার মুআজ্জিন হন।
দ্বিতীয় অভিযোগ : তার বাড়িতে সোনা-মুক্তা খচিত রেশমে মোড়া একটি কিতাব পাওয়া যায়। তা ছিল কুফুরী কালামে ভরা। এই অভিযোগের উত্তরে আফশিন বলেছিলেন, কেতাবটি তিনি তার বাপ-দাদা থেকে মিরাছ সূত্রে পেয়েছেন এবং তিনি এই বইয়ের সাহিত্য রস উপভোগ করতেন। তিনি কখনো তাতে উল্লেখিত কুফুরী কালাম গ্রহণ করেননি।
তৃতীয় অভিযোগ : তিনি গলা চেপে মারা পশুর মাংস খেতেন এবং বলতেন তার মাংস জবে করা পশুর মাংসের চেয়ে অনেক সুস্বাদু ও পবিত্র। এটা সম্পূর্ণই ইসলামী বিধান বিরুদ্ধ আচরণ।
চতুর্থ অভিযোগ : তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগও করা হয় যে, মক্কার তার কিছু অনুসারী তার কাছে আশরোসতী ভাষায় চিঠি লিখত, তাতে তাকে সম্বোধন করা হয় এই ভাবে : 'হে উপাস্যদের উপাস্য ! ..' এ তো ফেরাউনের চেয়েও বড় কাফের। ফেরাউন বলেছিল, 'আমি তোমাদের সর্বোচ্চ রব'।
প্রধান বিচারপতি কেশে ওঠে বললেন :
- নাউজু বিল্লাহ !! আহমাদ শেষ করেন, শেষ করেন !
- পঞ্চম অভিযোগ : আফশিনের ভাই তার কাছে একটা চিঠি লিখেছিলেন। ফোহিয়া যাওয়ার পথে চিঠিটি ধরা পড়ে। তাতে ছিল 'একমাত্র আমি, তুমি এবং বাবুকই পারে এই শুভ্র দ্বীন (মাজুছী ধর্ম)-কে রক্ষা করতে। আমার সাথে আছে পারাস্য, নাজদ এবং বাছের লোকজন। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাই তাহলে আমাদের সাথে লড়ার জন্য বাকি থাকে আরব, মাগরেবী এবং তুর্কীরা। আরবরা হচ্ছে কুকুরের মত। এক টুকরো রুটি ছুড়ে দাও তারপর তার মাথায় ছুড়ে মার দাব্বুছ আর ওই মাছিগুলো তো (মাগরেবীরা) হচ্ছে মাথাখোর এবং তুর্কীরা শয়তানের আওলাদ। যুদ্ধ বাঁধার কিছুক্ষণ পরই তাদের তীর ফুরিয়ে যাবে, তাপর তাদের উপর, শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত, ঘোড়া দাবড়ে দিবে।'
একজন সাকী এসে সবার হাতে হাতে শরাবের পাত্র দিতে লাগল। বুরখিছ হতভম্ব হয়ে বসে রইলেন। এই সব কী হচ্ছে তিনি তার কিছুই বুঝতে পারছেন না। তবে তিনি আহমাদকে বললেন :
- কিন্তু কি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে নাস্তিক সাব্যস্ত করা হল এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল ?
আহমাদ এক চুমুক গিলে বললেন :
- মিষ্টার বুরখিছ ! মনে হচ্ছে আপনি ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলছেন। ষষ্ঠ যেই অভিযোগটা পাত্র উপচে দিয়েছিল তা হল : আফশিন ছিলেন আ-কাটা, তার খৎনা করানো হয়নি... হাসিতে ফেটে পড়ল বিচার কক্ষ। বুরখিছও হাসতে লাগলেন, এমনকি হাসতে হাসতে তার চোখে পানিও এসে পড়ল। হাসি থামিয়ে তিনি আহমাদকে বললেন :
- এটাও অপরাধ ?! আমি নিজেই তো দুনিয়ার আশি বছরের জীবনের গোটাটাই খৎনাহীন ছিলাম। আফশিন কি এই অভিযোগের উত্তরে কিছু বলেছিলেন ?
আহমাদ বলেলেন :
- হা মিষ্টার বুরখিছ। আত্মপক্ষ সমর্থন করে সেনাপতি আশফিন বলেছিলেন, তিনি খৎনা করাননি, কারণ তার ভয় হত সেটা কাটাতে গিয়ে তিনি মারা যেতে পারেন। কিন্তু আফশিন বুঝতে পারেননি খৎনা না করা মানে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়া।
বুরখিছ বললেন :
- তোমাদের সময়ে নিশ্চই এই অদ্ভুত বিচারটা খুব সাড়া জাগিয়ে ছিল। তারপর তোমরা তাকে নিয়ে কি করলে ?
প্রধান বিচারপতি বললেন :
- তারপর তারা তাকে বন্দী করে খাবার-পানি দেওয়া বন্ধ করে দিল। এভাবে ক্ষুধা-পিপাসায় সে একসময় মারা গেল। তারপর তার মৃতদেহ শূলে চাড়ানো হল এবং পুড়িয়ে ফেলা হল/ তাবারী, ইবনুল আছির, ইবনে খালদুন সবাই এখানে এই পরোকালেই (যেটা আসলে প্রথম কাল) আছেন। আপনি তাদের জিজ্ঞেস করে দেখুন।
বুরখিছ ওঠে প্রধান বিচারকের মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন :
- তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। খুব আনন্দ পেলাম। তোমরা আসলেই খুব ভালমানুষ এবং তোমরা জান কিভাবে মৃতদের স্বাগত জানাতে হয়। এই জগৎ এত সুন্দর, এটা আগে জানলে তো অনেক আগেই আমি আত্মহত্যা করতাম। তবে যেভাবেই হোক এই গল্পটা গোপন রাখাই ভাল। কারণ দুনিয়ার মানুষজন তা জানতে পারলে দল বেঁধে সবাই আত্মহত্যা করবে। তবে লাভ নেই। আসলে তো অন্য পদ্ধতি তারা সবসময় অবিরাম এই কাজটাই করে যাচ্ছে। বেচারা মানুষ !!
১২/৫/২০০৮ ইং
ফায়সাল বিন খালেদ
প্রথম বর্ষ, ত্রিপলী ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (ত্রিপলি, লিবিয়া)
আলোচিত ব্লগ
স্মৃতিপুড়া ঘরে
বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।
দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
গরমান্ত দুপুরের আলাপ
মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজীব নূর কোথায়?
আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন