somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দূর পাহাড়ের আমন্ত্রণে !!! বান্দরবান, কেওক্রাডং, জাদিপাই ঝর্ণা । পর্ব- ২

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজের নিয়ম মেনে দেরি করে ঘুম থেকে উঠলাম তাও সেটা গাইডের চেঁচানিতে । আরেক পশলা উৎসবে তখন লেকপাড়া সরগরম । মনে হল সূর্যটা খুব ভয়ে ভয়ে পাহাড়ের চূড়া থেকে উঁকি দিতে চেয়ে খুব জোর ধমক খেয়েছে সেই নাম না জানা পাহাড়ের কাছে তাই এখন বাধ্য ছেলের মত জবুথবু বসে আছে । আমরা এই পাহাড়ের পাশের পাহাড়টাই উঠলেই হয়ত সূর্যটাকে ছোঁয়া যাবে ! নাশতা সেরে এবার আমরা কেওক্রাডং এর জন্য পা ফেললাম । এই লেক পাড়ার খাবারের প্রতি আমাদের সকলের কেমন জানি একটা আসক্তি এসে যাচ্ছিল । যাই হোক, আমাদের গন্তব্য ছিল কেওক্রাডং থেকে জাদিপাই ঝর্নায় গোসল সেরে আবার কেওক্রাডং এ ফিরে লাঞ্চ করে কটেজে ফিরব । সব মিলে ১২ ঘণ্টা হাঁটার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে নিলাম আমরা । হাঁটার ব্যাপারে আমি খুব পজিটিভ । বনানী থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত হাঁটাটা আমার কাছে এমন কিছুই নয় কিন্তু অনভ্যস্ত পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে টের পেলাম এটা সেই বনানী-মিরপুর রুটের হাঁটা নয় । একপাশে পাহাড় আরেকপাশে খাদ সঙ্গে একটা কচি বাঁশ, এটা এই হাঁটা । কিন্তু আমার রক্তে রক্তে যে রোমাঞ্চের অনু পরমানু বয়ে যাচ্ছিল তার কাছে কোন ভয়, বাধা কিছুই ঠিক সুবিধে করতে পারছিল না । বড় বড় পাহাড়গুলোর দিকে তাকিয়ে বারবার নিজেদের কত অসহায় আর ক্ষুদ্র মনে হচ্ছিল । এখানের সবকিছুতেই কেমন জানি একটা বিশুদ্ধতা, পবিত্রতা মিশে আছে । আকাশের এমন কটকটে নীল রঙ আমি আর কোথাও দেখিনি, মাইলের পর মাইল সবুজ দেখতে দেখতে চশমাটা খুলে ব্যাগে রেখে দিলাম । ধুলোতে এলারজি, ব্যাক পেইন, ঠাণ্ডার এলারজি হেন তেন সব প্রব্লেম পায়ে মাড়িয়ে আমাকে সারাবছর বাঁচতে হয় । অথচ এখানে আসার সময় চাঁদের গাড়ির ৪৫-৬০ ডিগ্রী এঙ্গেলের আছাড়েও আমার কিছু হয়নি । কেজি কেজি লালচে ধুলো প্রতিমুহূর্ত নাক গলিয়ে মুখে ঢুকছিল অথচ একটা হাঁচিও আসেনি আমার । এটা হবে হয়ত আমার মনের উপর আমার বশীকরণ অথবা সব যুক্তির শেষ যেখানটায় ! এত মুগ্ধতা, এমন ফ্রেশনেস, কটকটে নীল, এত বিশালতা, সবুজের শামিয়ানা । মনটা বারবার আমাকে থামিয়ে দিয়ে মুগ্ধ হতে বলছিল কিন্তু দলের সবাই আর গাইডের অত্যাচারে এমন মন্ত্রমুগ্ধের মত আমার পাহাড় দর্শন ঠিকঠাক হলনা । তবু হঠাৎ থেমে কানে হাত দিয়ে জোরে একটা চিৎকার দিলাম । পাহাড়ে পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে আমার চিৎকার তখন আমার কানে, সামনে থেকে কয়েকজনের কড়া ধমকে আবার হাঁটতে শুরু করলাম । চারপাশে এত ছবি ছবি আর ছবি যে আমার নিজেকে নায়িকা মনে হল । দারজিলিং পাড়া নামটা শুনেই কেমন একটা উঁচুনিচু রাস্তা আর পাহাড়ি বাতাসের ছোঁয়া লাগছিল আমার ভেতরে বাহিরে । সমরেশ মজুমদারের প্রত্যেকটা চরিত্র কেমন জীবন্ত হয়ে আমার চারপাশে হইচই করছিল ! কেওক্রাডং এ উঠে ৩০ টা সেকেন্ড নিখাদ আমার নিজের জন্য, এটা নীরবতা, মুগ্ধতা, ক্ষুদ্রতা, দর্শন আর হারিয়ে যাওয়া নিজের ভেতরে । অনুভূতি গুলো এত ছাপোষা যে অন্য কেউ এটা উপলব্ধি করতে পারবেনা, তাই হয়ত বোঝাতে পারছিনা ।
এবার ঝর্না স্নান.।.।.। (পরবর্তী এবং শেষ পর্ব) [এবার আর দীর্ঘবিরতি না দেয়ার প্রতিজ্ঞা করলাম)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×