somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বয়স্কদের সরিয়ে দিয়ে যুবতী এবং সুন্দরীদের সবার সামনে ধর্ষন করে । আমার আপন চাচীকেও ওরা ধর্ষন করে ............

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আব্দুল হান্নান
পিতা : মৃত আঃ রাজ্জাক
গ্রাম : মানাউরা
ডাকঘর : সালুটিকর বাজার
থানা : গোয়াইনঘাট
জেলা : সিলেট

ভারতীয় নং- ২২৮৭০
গেজেট নং- ২২৪৫
জাতীয় পত্রিকা নং- ২০৭
মুক্তিবার্তা নং- ০৫০১১১০৩১১


উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা । নিজের চাচীকে চোখের সামনে ধর্ষিত হতে দেখেছেন এবং সেই চাচী তারপর আত্মহত্যা করেছেন । তারপর মাত্র ১৭বছর বয়সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । তখন তিনি ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন । পাকিদের নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে যুদ্ধের ময়দানে নামেন । বিনিময়ে এই লোকটা তার নিজের বাড়ি ছাড়া সব হারালেন । সেসাথে তার ১০একর জায়গা দখল হয়ে যায় । কারণ উনার বাড়িতে আগুন দেয় পাকবাহিনী । উনার জায়গার সব দলিল জ্বলে যায় । কোন রাজাকার জায়গা দখল করেনি । সুযোগ সন্ধানীদের দখলে চলে যায় । উনার এলাকার প‌্রভাবশালী রাজাকার টুনু মিয়া ও গনি মিয়া পালিয়ে যায় এলাকা থেকে এবং স্বাধীনতার ১৫বছর পর নিজেদের এলাকায় ফিরে আসে ।

এই মহান মুক্তিযোদ্ধাকে আমার বন্ধুর বাবা আশ্রয় দেন এবং তিনি তাদের গাড়ি চালান । ৫৫ বছর বয়সী হান্নান ভাইয়ের কাছে যেদিন আমি শুনি পাক এবং রাজাকারদের নির্যাতনের ঘটনা তখন থেকে একটা জিনিস বুঝি ওরা মানুষ না । তাই কাউকে যদি ওদের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে দেখি তখন মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনা । গালি চলে আসে । এজন্য আমি অনুতপ্ত নই । আমি গালি দিবো ।

উনার মুখে শোনা মা-বোনদের নির্যাতনের কিছু চিত্র তুলে ধরি ।

“৩০/৩১ মার্চ ১৯৭১, ৫০-৬০ জন পাকিস্তানী সৈন্য ৪জন রাজাকার নিয়ে আমার গ্রাম মানাউরাতে আসে । ওদের দেখে যারা পেরেছে পালিয়ে ঝোপ-জঙ্গলে চলে যায় । মহিলাদের এক লাইনে দাঁড় করায় । বয়স্কদের সরিয়ে দিয়ে যুবতী এবং সুন্দরীদের সবার সামনে ধর্ষন করে । আমার আপন চাচীকেও ওরা ধর্ষন করে । আমি শুধু ঝোপের আড়াল থেকে দেখেছি । কিছু করতে পারিনি । তারপর সুন্দরী মেয়েদের ধরে নিয়ে যায় ক্যাম্পে । আমার চাচী আত্মহত্যা করেন ঐদিনই । তারপর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি । প্রতিশোধ নেয়ার জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি । ”

তারপর হান্নান ভাই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে । ছাতকের হাদা টিলা ক্যাম্প দখল করে মুক্তিবাহিনী জুলাই মাসে । সেই যুদ্ধ লাগাতার ১১দিন চলে । সেখানের একটা অমানবিক ঘটনা শুনুন উনার মুখে ।

“আমার খুব কষ্ট হয় এই দিন । আমরা হাদা টিলা ক্যাম্প দখল করার পর একটা তালাবদ্ধ ঘর ভেঙে পাই ২০০-২৫০ মেয়ে । সবাই উলঙ্গ । অনেকেই রক্তাক্ত । প্রায় সবারই মাথার চুল কেটে ফেলেছে অথবা ছোট করে ফেলেছে । আমাদেরকে দেখে মেয়েরা একজন আরেকজনের পেছনে লুকানোর চেষ্টা করেছে । আমরা মুক্তিরা গায়ের জামা,গামচা ছুড়ে দেই ওদের দিকে । তারপর এদেরকে ভারতের হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য । সেদিনের পর থেকে আমাদের মাথায় একটা জিনিস ঢুকে আর কোন পাকিস্তানী আত্মসমর্পন করলেও বাঁচতে দিব না । মেরে ফেলবো । আমি এমন মহিলার লাশও দেখেছি যাকে তিন টুকরা করা হয়েছে । মাথা এক জায়গায় । দুই পা দুই জায়গায় বুক পর্যন্ত । স্তন বেয়নেট দিয়ে কেটে ফেলছে ।”

এসব ঘটনা হান্নান ভাই যখন আমাকে বলছিলেন তখন আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি । উনিও । এরকম অনেক ঘটনা উনি বলেছেন আজ থেকে দেড় বছর আগে । আমি তখন অন্য নিকে লিখতাম । উনাকে নিয়ে আমি লিখতে চেয়েছিলাম অনেক আগেই । কিন্তু পারিনি । এবার বাসায় গিয়ে উনার স্বাক্ষর নিলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই ফর্মে । উনি স্বাক্ষর তো দিলেনই । সেসাথে একটা প‌্যাড নিয়ে গেলেন । আফসোস একজন মুক্তিযোদ্ধা স্টেনগানের পরিবর্তে কলম নিয়ে নেমে গেলেন আরেক যুদ্ধে । এই যুদ্ধেও যেন তিনি জয়ী হন সেই কামনা করি ।

এসব ঘটনা শোনার পর ব্লগে যেসব রাজাকার ও পাকিস্তানের সমর্থনকারী দেখি তখন গালি না দিয়ে পারি না । ওদের মা-বোনকে যদি এভাবে কেউ ধর্ষন করতো এবং তারপর স্তন কেটে ফেলতো তখনও কি তারা তাদেরকে সমর্থন করবে ????
৮৮টি মন্তব্য ৮৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×