somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

র‍্যাব থেকে সামরিক সদস্য হ্রাসকরণ বিষয়ে আমার মতামত

২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লেখাটি বেশি বড় হয়ে গিয়েছে। ভাগ করে দিলে মন্তব্য বিক্ষিপ্ত হয়ে যেতে পারে, তাই কষ্ট করে পড়লে কৃতজ্ঞ থাকব।


র‍্যাব থেকে সামরিক বাহিনী অপসারন সম্পর্কে এই লেখাটি চোখে পড়ল -
র‌্যাব এর নিরপেক্ষতা এবার ধংশের পথে!র‌্যাব থেকে সশস্ত্র

বাহিনীর কর্মকর্তা কমানো হচ্ছে

অনেকেই অনেক মন্তব্য করল। আমি আমার মন্তব্য পোস্ট হিসেবে দিচ্ছি। অনেক দিন ধরে এই বিষয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল। (বিঃদ্রঃ - এটি কোন পোস্টের বিরুদ্ধে পোস্ট না)।
লেখাটির মূল প্রবন্ধ -
Click This Link

এখানে প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষন করছি প্রথম আলোর প্রতিবেদনে Saiful Islam এর কমেন্টে -
"প্রতিবেদনটিতে কর্নেল মজিবর রহমানকে একবার র‌্যাবের অতিরিক্ত পরিচালক, আরেকবার অতিরিক্ত মহাপরিচালক উল্লেখ করা হয়েছে,
কোনটি সঠিক? (প্যারা আট ও ১০ দ্রষ্টব্য)।
প্রতিবেদনের শিরোনামের সঙ্গে বক্তব্যের কোনো মিল নেই। প্রতিবেদনে স্পষ্ট, র‌্যাবের জন্য নির্ধারিত পদগুলোতে পুলিশকে বসানো হচ্ছে না।
পুলিশের জন্য নির্ধারিত শূন্য পদগুলো পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মাত্র। পাঠককে বোকা বানানোর জন্যই কি এমন প্রতিবেদন?"
খবরটি সত্য মিথ্যা যাই হোক, ব্যাক্তিগত ভাবে আমি বিষয়টি সমর্থন করি।
প্রথমে যেটা বলব। অনেকে বলেছেন পুলিশের ঘুষ খাওয়ার কথা। আমি সবসময় বিশ্বাস করি সব জাতিতে কিছু হলেও কুলাঙ্গার আছে।
অবস্থাভেদে সেটা কমবেশি হতে পারে। পুলিশ একটি সরকারী বাহিনী। বলার অপেক্ষা রাখেনা প্রত্যেকটি পুলিশ সদস্য কতটুকু রাজনৈতিক চাপ
নিয়ে কাজ করে (বাংলাদেশে)। তাই এই বাহিনী গঠনগত এবং অভ্যন্তরীন ত্রুটির দায় সরকারকেই নিতে হবে।
একজন খারাপ শিক্ষকের দায় যেমন সমগ্র শিক্ষক সমাজকে দেয়া সম্ভব না তেমনি একজন নাগরিক হিসেবে একজন খারাপ পুলিশ সদস্যের
দায়ভার সমগ্র পুলিশ কে দিতে পারিনা।
বর্তমানে আমি যেভাবে পুলিশ সদস্যদের প্রতি সাধারন নাগরিকদের মনোভাব দেখি তাতে মনে হয় বাংলাদেশে ঘুষ এবং দুর্নীতি বিষয়টা শুধু
পুলিশের জন্যই বরাদ্ধ। বলতে খারাপ লাগলেও সত্য, পুলিশ আর অন্যান্য প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে পুলিশের দুর্নীতি হয় অনেকটা মানুষের
চোখের সামনেই আর অন্যান্য প্রশাসনের ক্ষেত্রে সেটা হয় টেবিলের নিচ দিয়ে। সামরিক বাহিনীও (শুধু সেনাবাহিনী নয়) এর ব্যাতিক্রম নয় বরং
তাদেরটা হয় আরো আড়ালে কারন সিভিল প্রশাসনের সাথে তাদের মেলামেশাও অপেক্ষাকৃত কম। যারা ক্যান্টনমেন্টে থাকেন কিংবা সামরিক
বাহিনীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ তারা এই সম্পর্কে জানেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় ছাড়া মিডিয়ায় সামরিক বাহিনীর খবর কিন্তু খুব কমই
দেখবেন।
এর মানে এই নয় আপনি সামরিক বাহিনীও বন্ধ করে দিবেন। বলাই বাহুল্য পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি,
কোস্টগার্ড, আনসার বিডিপি এসব বাহিনীতে যথেষ্ট শৃঙ্খলা বজায় রেখেই সবাই কে ট্রেনিং দেয় এবং দেশের সেবার জন্য শপথ করে।
সরকার যদি বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ নিতে পারত তাহলে পুলিশেও দূর্নীতি কমানো যেত। আমার মতে পুলিশে যোগদান করার সময় অনেককেই যেই
পরিমান ঘুষ দিতে হয় তা যদি বন্ধ করা যেত তাহলে পুলিশে দূর্নীতি আর ঘুষের পরিমান অনেক অংশে কমানো যেত। ক্ষুধার্থ মানুষের ভাত
কেড়ে নিলে সেই মানুষ চুরি-ডাকাতি করবেই।
এই লেখাটি পড়তে পারেন - http://blog.bdnews24.com/Shattik/131416

আরেকটা কথা স্মরন করিয়ে দেয়া গুরুত্বপূর্ন। আমরা যেই পুলিশদের দেখে মন্তব্য করি সেটিই কি পুলিশের একমাত্র বিভাগ? থানার পুলিশদের
কর্মকান্ড দেখে সিআইডি, ডিবি, আর্মড পুলিশ ব্যটেলিয়ান কিংবা স্পেশাল ব্রাঞ্চ এর সব পুলিশদের অনুন্নত বলা কিংবা দুর্নীতিবাজ বলা
আসলেই বুদ্ধিমানের কাজ না।
একই কথা প্রযোজ্য সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রে। বিজিবির একজন পরিচালকের (ধরে নিন) দুর্নীতি দেখে কি আপনি সমগ্র সেনাবাহিনীর কে দূর্নীতিবাজ বলবেন?


SWAT (Special Weapons And Tactics)



দ্বিতীয়ত আবার অনেকে বলেছেন, র‍্যাব কে আলাদা বাহিনী হিসেবে গঠন করার জন্য!
রীতিমত হাস্যকর। অন্তত বাংলাদেশের মত দেশের প্রেক্ষিতে। র‍্যাবের মত একটি বাহিনী আলাদাভাবে পরিচালনা অনেকটা বোকামীই হবে।

তৃতীয়ত, এবার আসি পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর পদ, মর্যাদা, দায়িত্ব ও ক্ষমতা সম্পর্কে। পুলিশের বিভিন্ন পদের সাথে সামরিক বাহিনীর পদের
সমতা করা কঠিন। সবক্ষেত্রে এক থাকেনা। পরিস্থিতি, স্থান, কাল ভেদে এসব পরিবর্তিত হতে পারে।
পুলিশে অফিসার ধরা হয় সাব ইন্সপেক্টর থেকে। আর্মিতে অফিসার র‍্যাংক শুরু হয় সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট থেকে। আবার র‍্যাংক ব্যাজ অনুযায়ী
একজন এসপি সেনাবাহিনীর ল্যাফটেন্যান্ট কর্ণেলের সমান, কিন্তু ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে একজন এসপি মেজরের সমান। আবার যদি ক্ষমতা
সম্পর্কে জানতে চান তাহলে শান্তিকালীন অবস্থায় একজন এসপি একজন মেজর জেনারেলের চেয়েও বেশি ক্ষমতা বহন পারে (ক্ষেত্র বিশেষে)।
আবার যদি দায়িত্ব অনুযায়ী দেখতে চান একজন এসপি ইউনিট প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন সামরিক বাহিনীতে সেটা লেফট্যানেন্ট কর্ণেল
কিংবা কর্ণেল এর দায়িত্বের সমান।
র‍্যাবে বর্তমানে একজন ইন্সপেক্টর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যেখানে সেনাবাহিনী থেকে সিনিয়র ওয়ারেন্ট
অফিসার ও একই দায়িত্ব পালন করেন। অথচ একজন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সুবেদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যেখানে পুলিশে
সুবেদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আর্মড সাব ইন্সপেক্টর। [উল্লেখ্য প্রবন্ধের এই স্থানে তথ্যগত ভুল আছে। সামরিক বাহিনীতে ওয়ারেন্ট
অফিসার নয় বরং সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হচ্ছে সুবেদার। সামরিক বাহিনীতে সুবেদার পদটিকে ভেঙ্গে আরো তিনটি পদ করা হয় (ওয়ারেন্ট অফিসার - নায়েব সুবেদার, সিনিয়র অফিসার অফিসার - সুবেদার, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার - সুবেদার মেজর)। এখানে পদমর্যাদাগত পরিবর্তন খুবই সামান্য। পুলিশ প্রশাসনে একটি সুবেদার পদ দ্বারাই কার্যক্রম পরিচালিত হয় যা বর্তমানে আর্মড সাব ইন্সপেক্টর] অপরদিকে একজন ইন্সপেক্টর প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা, পদমর্যাদার সাপেক্ষে তার পুলিশ প্রশাসনে এই পদে গুরুত্ব ও দায়িত্ব অনেক বেশি এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে অনেক সময় তা ক্যাপ্টেন কিংবা মেজরের সমানও। একজন সাব ইন্সপেক্টর সাধারনত আর্মড সাব ইন্সপেক্টর (সেনবাহিনীতে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার) এর চেয়ে উপরে অবস্থান করেন। আর্মিতে সার্জেন্ট (পূর্বে হাবিলদার) পুলিশের হাবিলদারের সমান অপরদিকে
পুলিশে সার্জেন্ট, সাব ইন্সপেক্টরেরই সমান (গেজেটেড অফিসার)। উল্লেখ্য পুলিশে আর্মির সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট এর সমান পদ নাই (র‍্যাংক
ব্যাজের দিক থেকে ইন্সপেক্টর)। কারন এই পদটি মূলত ট্রেনিং এবং শিক্ষা গ্রহনের সময়কার পদ, নন গেজেটেড এবং অস্নাতক। আবার আর্মির
ল্যান্স কর্পোরালের সমান পদ পুলিশে নাই।
এবার দেখা যাক বর্তমানে সামরিক ও পুলিশ পদ সমূহের অবস্থান র‍্যাবে কি রকম -
র‍্যাবে পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের অবস্থান
এটি প্রণীত হয়েছিল র‍্যাব গঠনের সময় তখনকার সরকারের তত্ত্বাবধানে।
১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স এর সংস্কার করা হয়েছে বেশ কয়েকবার যার সর্বশেষ সংস্করন ২০০৮ এর। এটি শুধু সরকারী
আনুষ্ঠানিকতায় মানা হয়। এই চার বছরে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুর। আইজির পদমর্যাদা বৃদ্ধি পেয়ে সিনিয়র সচিব করা হয়েছে। ইন্সপেক্টর
পদ কে করা হয়েছে ১ম শ্রেনীর। এছাড়াও ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স নিয়ে হয়েছে মামলা। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে বিমান ও নৌ বাহিনীর প্রধান
সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট জেনারেলের সমান হওয়া স্বত্ত্বেও তাদের অবস্থান সেনবাহিনীর প্রধানের সাথেই অথচ পুলিশ প্রধানের অবস্থান মেজর
জেনারেল বা সচিব এর সাথে যেই অবস্থানে এখন আছে অতিরিক্ত আইজি। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স দিয়ে বর্তমানে সরকারী কর্মকর্তা সঠিক
অবস্থান জানা যায় না এবং এটি শুধু রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানেই মানা হয়/হত। অনেকের অভিযোগ হচ্ছে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সামরিক বাহিনীর
মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যই তৈরী করা হয়েছে। এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স এখন যথেষ্ট বিতর্কিত।
এই প্রসঙ্গে প্রথম আলোর প্রবন্ধ থেকে suman Ranjan Sarkar এর কমেন্ট তুলে ধরছি -
"warrant of precedence does not mean who will commend whom. this is just a official formalities.... made by
autocratic government........ back up by defense force."


চতুর্থত অনেকেই হয়ত জানেন না কিংবা হয়ত ভুলেই গেছেন, র‍্যাব মাত্রই পুলিশের একটি শাখা। র‍্যাবের মহাপরিচালক পদটি শুধুমাত্র পুলিশের
একজন অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেলের জন্যই বরাদ্ধ। র‍্যাব পুলিশের আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান এর অংশ। এর পরিচালনা, দেখাশোনার
দায়িত্ব পুলিশেরই। এর পরিচালনা কিন্তু পুলিশের আইজি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকেই হয়। তাই এর যেকোন ধরনের পরিবর্তনের ক্ষমতা পুলিশ
প্রশাসনেরই। আর মনে রাখবেন, র‍্যাবের কর্মকান্ডের কৃতিত্ব, স্বীকৃতি বা দায়ভার সর্বোপরি পুলিশেরই, হোক তা পুলিশ কিংবা সামরিক সদস্যদের দ্বারা গঠিত। আরেকটি বিষয় হচ্ছে র‍্যাবের জন্য সবধরনের খরচ, বাজেট পুলিশ থেকে ব্যায় করা হয়। র‍্যাবে অস্ত্র, সরঞ্জাম প্রায় সবকিছুই পুলিশ থেকে আসে।
একটা উদাহরন দেই - পুলিশ ব্যতীত একজন সাধারন ব্যাক্তি হোক তিনি অতি উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা কোন অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেনা (বাংলা সিনেমার ডায়ালগের কারনে হাস্যকর মনে হলেও এটিই সত্য, সত্য সর্বদা সত্যই)। কিন্তু একজন সাধারন
পুলিশ সদস্যের দায়িত্বই আইন কেন্দ্রিক। তাই যখন একজন ব্যাক্তি আইন প্রয়োগের দায়িত্ব বা ক্ষমতা অর্জন করে তখন থেকেই তিনি পুলিশ
ডিপার্টমেন্টের সদস্য। উল্লেখ্য আইন প্রয়োগ করার দায়িত্ব পুলিশ থেকেই অর্জন করতে হয় যা আর কারো পক্ষে দেয়া সম্ভব না। এজন্য তাকে
অবশ্যই ফৌজদারী আইন, আইন-নীতি শৃঙ্খলা, আইন প্রয়োগ নিয়মাবলী ইত্যাদি বহুবিধ বিষয়ে পড়াশোনা-জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি প্রশিক্ষন
করতে হবে। এগুলো সামরিক জ্ঞানের অন্তভূক্ত না। পুলিশে যোগদানের সময় থেকেই এসব বিষয়ে প্রশিক্ষন ও পড়াশোনা করতে হয়। একজন
সামরিক সদস্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হওয়া মাত্রই তিনি পুলিশের অন্তর্ভূক্ত এবং পুলিশ অধীনেই কাজ করেন। তাই র‍্যাবের সব
কৃতিত্ব সামরিক বাহিনীর, পুলিশ কোন কাজেরই না - এই ধরনের চিন্তাভাবনা একদমই ঠিক না। সচেতন, বিবেকবান মানুষ এই ধরনের মনোভাব রাখতে পারেনা। আমি নিশ্চিত র‍্যাবের দায়িত্বশীল সামরিক সদস্যরাও এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করেন না। আমার দেখায় শুধু র‍্যাবে নয় সামরিক সদস্যদের সাথে পুলিশ সদস্যদের সর্বোপরি যথেষ্ট ভাল সম্পর্কই বিদ্যমান।

পঞ্চমত র‍্যাবে সামরিক বাহিনীর কীর্তি অস্বীকারের উপায় নাই। হোক সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন বা সুশৃঙ্খল ভাবে আইন রক্ষা। র‍্যাব সৃষ্টির
সময়কার সরকারের আমলে বড় সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের স্থলে কাজ করেছে সামরিক বাহিনী। অস্বীকার করার উপায় নাই তখন কত মানুষ
হাহাকার করেছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলে, কত চোর ছ্যাচোর একই সাথে দূর্ধষ সন্ত্রাসী গুলি খেয়ে মরেছে, আবার সেসময়ই মানুষ
অনুভব করেছে স্বস্তি। এর কিছুকাল পরই ঘুষ আর দূর্নীতির অভিযোগ থেকে কি র‍্যাব মুক্তি পেয়েছিল?

ষষ্ঠত, ট্রেনিং এর ব্যাপারে না জেনে বলাটা ভুল। সেনাবাহিনীর উন্নত ট্রেনিং কিন্তু গড গিফটেড না। একই প্রশিক্ষন আর আর্মির মত আধুনিকায়ন
করলে পুলিশও উন্নত আর আধুনিক হত । সন্ত্রাস দমন আর প্রতিরক্ষা একেবারেই ভিন্ন বিষয়। ইচ্ছা করলেই পুলিশের সোয়াট এর দিকে
তাকিয়ে দেখতে পারেন। সোয়াট কিন্তু র‍্যাবের ধারে কাছেও না, বরং অনেক উপরের লেভেলের। শুধুমাত্র উদ্ধার অভিযান, পাচ স্তরের নিরাপত্তা
এবং যেসব ক্ষেত্রে র‍্যাব ব্যার্থ হ্য় তখনই সোয়াট মোতায়েন করা হয়। আর গোয়েন্দা বিষয়ে বলব আমাদের দেশে ডিবি, সিআইডি, এসবি কিন্তু
যথেষ্টই পারদর্শী এবং এই কথা অনেকেই স্বীকার করেন, সেটা কয়জন জানেন আমি জানিনা। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে এই বিভাগগুলো কাজ
করতে পারলে সকলেই এটা অনুধাবন করতে পারত। রাজনৈতিক প্রভাব থাকলে শুধু র‍্যাব বা পুলিশ নয়, সামরিক বাহিনীও স্বাধীনভাবে এবং
নিরপেক্ষভাবে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যার্থ হবে, এটাই স্বাভাবিক। অপরাধ তদন্ত, গোয়েন্দাগিরি, ফৌজদারী আইন এবং অনান্য আইন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সামরিক বাহিনী কিভাবে পুলিশের থেকে বেশি যোগ্যতার প্রমান দিবে? স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ, ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট কে বিশেষায়িত করেই গড়ে তোলা হয়েছিল। সম্প্রতি যোগ করা হয়েছে এনপিবিসিটি।
এবার উইকিপিডিয়া থেকে কিছু উক্তি তুলে ধরছি -
Special Branch - "The Special Branch or SB is the prime intelligence agency of Bangladesh, being an important agency in the Bangladeshi intelligence community."
Bangladesh Intelligence Community - "Interestingly, this (SB) is the only intelligence outfit of Bangladesh which works in all strategic, operational and tactical levels."
Bangladesh Police - "Detective Branch (DB) is the specialized branch of a police unit. It is highly capable,
sophisticated and technology based branch. Every metropolitan police and district police has its own Detective Branch.
"
SWAT - "SWAT (Special Weapons And Tactics) is an elite tactical unit of the Dhaka Metropolitan Police,Bangladesh. They operate under the Detective Branch of DMP."
"The SWAT will go for action whenever existing law enforcing agencies even the elite force of Bangladesh Police Rapid Action Battalion (RAB) would fail to deal with the criminal groups or any criminal. The members of this team equipped with sophisticated weapons will act as 'quick response' and conduct 'risky' operations in Dhaka City and even outside if requires. This is a special wing of the Detective Branch, will work under direct control of the Dhaka Metropolitan Police Commissioner."
আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান এর ট্রেনিং কোথা থেকে হয়? পুলিশে কমান্ডো ট্রেনিং হয় না? পুলিশ থেকে কি কেউ এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট হয় না? কমান্ডো, প্যারা কমান্ডো ট্রেনিং পুলিশেও ব্যবস্থা করা যায়। আর র‍্যাবে যোগদানের পর র‍্যাবের কর্মকর্তাদের ট্রেনিং কি পুলিশে হয়নি? দেশের প্রতিরক্ষা, যুদ্ধ কলা কৌশল, যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রদর্শনের জন্য নেয়া প্রশিক্ষন আপনি কোন যুক্তিতে সন্ত্রাস দমনে ব্যবহার করবেন? একারনেই প্রতিরক্ষা থেকে আইন প্রয়োগ কারীর সংস্থার সদস্য হতে আলাদা প্রশিক্ষন লাগবেই, এবং সেটা কিন্তু পুলিশ থেকেই নিতে হবে। যুদ্ধনীতি আর সন্ত্রাস দমন কি এক জিনিষ? প্রয়োজনে অবশ্যই সামরিক বাহিনী প্রয়োগ করা হবে যখন তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষে নিয়ন্ত্রন সম্ভব হবে না। এছাড়া বিমান বাহিনী আর নৌ বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যদের প্রশিক্ষন কিন্তু শুধু যোগদানের প্রথম ২ বছরই সেনাবাহিনীর মত। তাদের কে ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা কিন্তু করতেই হবে।
আরেকটা বিষয় আমাদের বোঝা উচিত সাধারনের চোখে একটি বিষয় যা বিশেষজ্ঞের চোখে তা না।
যদি একজন মানুষ রাস্তায় ধুলা-বালি, অপরিচ্ছন্ন পোষাক পরিহিত ট্রাফিক পুলিশ দেখে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ বা অত্যাধুনিক সোয়াট কে অযোগ্য মনে করে আবার সেই মানুষই টিভি অ্যাড কিংবা অনির্বানে অনুষ্ঠানে একজন সামরিক বাহিনীর অতি চৌকস প্যারা কমান্ডো দেখে যদি মন্তব্য করে "বাপরে বাপ! আমাগো আর্মি না জানি কবে আমেরিকারে খাইয়া ফালায়।", তাহলে আমার কিছু বলার নাই।





সপ্তমত, সামরিক বাহিনী কি র‍্যাব থেকে বিলুপ্ত করা হচ্ছে? পুলিশের জন্য বরাদ্দ অনেক পদে সামরিক বাহিনীই কাজ করতো। পুলিশ ইচ্ছা
করলেই র‍্যাবের পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। র‍্যাব থেকে সবধরনের সামরিক সদস্য অপসারনের ক্ষমতাও পুলিশের আছে।
এই প্রসঙ্গে বর্তমান পুলিশ প্রধান, মহা পরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার স্পষ্ট করেই বলেছেন -
"র‌্যাবের কোন বাহিনীর সদস্যসংখ্যা কত থাকবে, তা নির্ধারিত আছে। সেটা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। এখন সেটাই করা হচ্ছে।"

অষ্টমত,
এবার প্রথম আলোর কয়েকজনের কমেন্ট তুলে ধরছি আর উত্তরে আমার মতামত দিচ্ছি -

ফারিহা তাবাসসুম মম
"র‍্যাব থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হ্রাস করা হলে র‍্যাব আর পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কার্যত আর কোন পার্থক্য থাকবেনা। এমনিতে পুলিশের উপর
জনগণ আস্থা হারিয়েছে বহুকাল আগে। সে তুলনায় কিছু বিতর্কিত ঘটনা ব্যতিরেকে নিজেদের যোগ্যতা আর সাহসী কর্মকাণ্ডের কারনে
জনসাধারণের কাছে র্যা বের গ্রহণযোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত। কিন্তু র‍্যাবের পুলিশিকরন করা হলে পুলিশের ন্যায় এ বাহিনী ও কার্যকারিতা হারাবে
অনেকাংশে। ফলে দেশে খুন, রাহাজানি আর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আবার পুরো দমে মাথা চাড়া দিয়ে উঠার আশংকা রয়েছে। জঙ্গিবাদ দমনে
র‍্যাবের অভূতপূর্ব সাফল্যের পেছনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চরম পেশাদারিত্বই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাই এ বিষয়টি বিবেচনায়
নিয়ে সরকারের উচিত র‍্যাবের সাংগঠনিক কাঠামোর প্রয়োজনীয় সংশোধন পূর্বক র‍্যাবের কমান্ড সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হাতে ন্যস্ত করা।"

>> স্বীকার করছেন যে র‍্যাবের গ্রহনযোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত এবং বেশ কিছু দিকে র‍্যাবের অভূতপূর্ব সাফল্য আছে। উল্লেখ্য যে প্রতিবেদনের
তথ্যানুসারে র‍্যাবে পুলিশ ৪২.১৯ শতাংশ এবং ৪০.৪৭ শতাংশ সামরিক বাহিনী। এখন র‍্যাবের সাফল্য যদি ভাগ করে দেই (যদিও আমি
সমর্থন করি না) তাহলে র‍্যাবের ৪২.১৯ শতাংশ সাফল্যের ভাগিদার পুলিশ এবং এবং ৪০.৪৭ শতাংশ সামরিক বাহিনীর। যদি তা না মানেন

এবং বলেন র‍্যাবের সকল সাফল্যের অধিকারী এবং তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই (যদিও তর্ক করতে চাইনা) তাহলে লিমন, বিচার বহির্ভূত
হত্যাকান্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘন সহ সব ধরনের অভিযোগ ও কুখ্যাতির জন্যও সামরিক বাহিনী দায়ী (যুক্তি অনুযায়ী কোন কিছুর পুরা লাভ নিলে
ক্ষতিও সম্পূর্ন আপনাকে বহন করতে হবে)। যদি তাও না মানেন এবং বলেন পুলিশ সব কুখ্যাতির জন্য দায়ী এবং সামরিক বাহিনী দায়ী
সুখ্যাতির। তাহলে তথ্যানুযায়ী ৪২.১৯ শতাংশ পুলিশ খারাপ কাজ করে, এবং ৪০.৪৭ ভাগ সামরিক সদস্য ভাল কাজ করে অর্থাৎ র‍্যাবে খারাপ
কাজ বেশি হবার কথা ভাল কাজের চেয়ে। কিন্তু আপনিই বলেছেন র‍্যাবের যথেষ্ট যোগ্য, এর সাফল্য বেশী এবং কার্যকর। সুতরাং এটা বলতে
পারেন না যে র‍্যাবের সকল সফলতার কৃতিত্ব সামরিক বাহিনীর এবং ব্যার্থতা ও কুখ্যাতির দায়ভার পুলিশের। তাই হয় মেনে নেন র‍্যাবের
সাফল্যের ৪২.১৯ শতাংশ ভাগিদার পুলিশ এবং ৪০.৪৭ শতাংশ ভাগিদার সামরিক বাহিনীর অর্থাৎ সামরিক বাহিনী থেকে ১.৭২ শতাংশ বেশি সাফল্য অর্জন করে পুলিশ। সেক্ষেত্রে পুলিশ অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকর এবং পুলিশের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করাই যৌক্তিক। আর যদি তা না
মানেন তাহলে মেনে নেন র‍্যাবের সকল সাফল্যের পাশাপাশি লিমনের ঘটনা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘন সহ সকল কুফলের
দায়ভার সামরিক বাহিনীর। এক্ষেত্রে পুলিশের সফলতা, বিফলতা কিছুই নাই তাই পুলিশ সম্পর্কে কোন দোষ দেয়া অর্থহীন। ফলে "কিন্তু র‍্যাবের
পুলিশিকরন করা হলে পুলিশের ন্যায় এ বাহিনী ও কার্যকারিতা হারাবে অনেকাংশে। ফলে দেশে খুন, রাহাজানি আর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আবার
পুরো দমে মাথা চাড়া দিয়ে উঠার আশংকা রয়েছে।" এই কথার পিছনে কোন যৌক্তিকতা থাকে না।

Joynul Abedin Khan
পুলিশের এসআই পদটি সেনাবাহিনীর সুবেদার (ওয়ারেন্ট অফিসার) পদমর্যাদার হলেও র‌্যাবের ক্ষেত্রে ওয়ারেন্ট অফিসারদের পুলিশ
পরিদর্শকের সমমর্যাদায় এনে উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) পদে পদায়ন করার বিধান রাখা হয়। আর উপপরিদর্শকদের (এসআই)
সেনাবাহিনীর হাবিলদার/ সার্জেন্টদের সমমর্যাদায় রাখা হয়েছে।
ব্রিটিশ আমলের পরে থেকে ২০১২ পর্যন্ত কোনদিন পুলিশের এস আই সেনা বাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার (সুবেদার) পদমর্যাদার সমমান ছিল?
কিছুদিন পূর্বে প্রধান মন্ত্রী কেবল এস আই কে দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা ঘোষনা দিয়েছেন, যদিও এখনো কার্যকরি হয়নি, তাতেই এতটুকু! এর পর
তাহলে কি হবে? এস আই সাহেবদের চিন্তা করা উচিৎ যে, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসারের কাঁধে জাতীয় মানের পিপস লাগানো থাকে, এস আই
এর মত + চিহ্ন নয়। আর এটা ব্রিটিশ আমল থেকেই প্রচলিত।

>> উনার মন্তব্য প্রায় পুরোটাই ভুল। প্রথম ভুলের কথা আগেও বলেছি। পুলিশে সাব ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন দারগা হিসেবে। দারগা কিন্তু
সুবেদারের উপরে অবস্থান করে (ব্রিটিশ আমলেও) সেখানে হাবিলদারের সমমর্যাদা হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা (একজন ২য় শ্রেনীর প্রশাসনিক
কর্মকর্তার জন্য এটা অপমানজনক)। যদি এসআই সামরিক বাহিনীর হাবিলদারের সমান ধরেও নিই তাহলে পুলিশের হাবিলদার কাদের সমান
হবে? কিভাবে আপনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে বেস্ট সাপোর্ট আশা করেন যেখানে আপনি তাকে সম্মানই দিচ্ছেন না। এসআই এবং এএসআই যেই র‍্যাংক ব্যাজ পরে সেটা হচ্ছে স্টার। চারকোনাকৃতির স্টারের মাঝে
থাকে জাতীয় প্রতীক শাপলা। (পুলিশ অফিসারদের র‍্যাংক ব্যাজে সবধরনের পিপসে জাতীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা অঙ্কিত থাকে। সেনাবাহিনীর পিপসে থাকে না। সেনাবাহিনীর পিপসে থাকে + এর ন্যায় চিহ্ন। দেখুন এখানে এবং এখানে ) সামরিক বাহিনীতে র‍্যাংক ব্যাজে স্টার থাকে না। ওয়ারেন্ট অফিসার সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট এর ন্যায় একটি পিপস, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার লেফট্যানেন্ট এর ন্যায় দুটি পিপস এবং মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার মেজরের ন্যায় একটি শাপলা ব্যাজ পরে। এর মানে কি
তারা আর্মি অফিসারদের সমান মর্যাদার? মোটেও না, কারন তাদের ব্যাজের পাশে জেসিও নির্দেশক রিবন থাকে যেটা দিয়ে বোঝা যায় তারা
অফিসার নয়। পুলিশে সাব ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট উভয়েই দুটি পিপস পরে তার পাশে থাকে লাল বা নীল রিবন। লাল রিবন নির্দেশ করে সার্জেন্ট
আর নীল রিবন সাব ইন্সপেক্টর। এটা তাদের পদ মর্যাদা বৃদ্ধির আগেও একই ছিল। এখন এসআই এবং সার্জেণ্ট উভয়েই ২য় শ্রেনীর গেজেটেড
কর্মকর্তা এবং এটা কার্যকর।
এবার দেখি এসআই এবং সিনিয়র/মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসারদের পদমর্যাদা। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে এই নিয়ে কোন উল্লেখ নাই ( যদিও
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের সমস্যা নিয়ে আগেই বলা হয়েছে)। এসআই অনার্স/ মাস্টার্স উত্তীর্ন হয়ে যোগ দান করতে হয়। অধিক প্রতিযোগীতার
কারনে মাস্টার্স ব্যতীত এসআই হিসেবে নিয়োগ পাওয়া প্রায় দূরহ ব্যাপার যেই শিক্ষাগত যোগ্যতা সামরিক বাহিনীর অনেক ক্যাপ্টেনদেরও থাকেনা, অনেকে মেজর পর্যায়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করে। অপরদিকে একজন এসএসসি উত্তীর্ন সৈনিক পদোন্নতির মাধ্যমে মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার হয় (সুবেদার মেজর)। আবার একজন এসআই দায়িত্ব পালন করে দারগা হিসেবে কিংবা সম্পূর্ন একটি ফাড়ির ইনচার্জ হিসেবে। অন্যদিকে মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসারের দায়িত্ব সুবেদার মেজর হিসেবে সর্বোচ্চ একজন প্লাটুন লিডার।

# পুলিশ এখন সব কিছুতেই সেনাবাহীনির সমান হতে চাইছে। এই যেমন পুলিশ প্রধানের পদবী ৪ স্টার জেনারেলের সমান করা হয়েছে (বিশ্বে
প্রথম)। পুলিশের নিম্নস্তরে পরিদর্শকদের প্রথম শ্রেনীর মর্যাদা (বিশ্বে প্রথম) দেয়া হয়েছে। উচ্চতর পদ সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়
যে অনুযায়ী পুলিশের সেবার মান কতটুকু বেড়েছে!!! টিআইবি'র প্রতিবেদন অনুযায়ী পুলিশ সবচেয়ে দূর্ণিতিগ্রস্ত বিভাগ। এখন বিশেষায়িত
বাহিনী র‍্যাবে যদি পুলিশের পরিমাণ বাড়ানো হয় তাহলে র‍্যাব আবার পুলিশ বাহীনির মতো প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় কিনা তাই ভয়ের বিষয়।
পুলিশ বাহীনির ওপর মানুষের আস্থা বাড়ুক আমরা সবাই তা-ই চাই কিন্তু তা যেন অন্য বাহীনির ওপর আস্থা কমিয়ে করা না হয়। তাছাড়া
পুলিশ-কে বুঝতে হবে তারা সিভিল, মিলিটারী নয়।

>> প্রায় পুরোটাই তথ্যভিত্তিক ভুল। "এই যেমন পুলিশ প্রধানের পদবী ৪ স্টার জেনারেলের সমান করা হয়েছে (বিশ্বে প্রথম)।" - মালয়েশিয়া
সহ বেশ কয়েকটি দেশে পুলিশ প্রধানের মর্যাদা চার স্টার জেনারেলের সমান। ৫ স্টার থাকাও অস্বাভাবিক কিছু না। এটা নির্ভর করে রাজনৈতিক
বিবেচনা, বাহিনীর সামর্থ্য, আকার ইত্যাদির উপর।
যাইহোক আসল কথায় আসি। ৪ স্টার জেনারেলের সমান পুলিশ প্রধান বাংলাদেশে কখনো ছিলনা এবং এখনো নাই। স্বাধীনতার পূর্বে
প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের পুলিশ প্রধানের পদ মর্যাদা ছিল দুই স্টার জেনারেল এর সমান। স্বাধীনতার পর ১৭ এপ্রিল
১৯৭১ থেকে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম পুলিশ প্রধান হিসেবে এ. খালেক তিন স্টার জেনারেল সমান পদ মর্যাদা সম্পন্ন ছিলেন। শেখ মুজিবুর
রহমান পুলিশ প্রধানকে ৩ স্টার জেনারেল বা লেফট্যানেন্ট জেনারেলের মর্যাদা দান করেন। তখন পুলিশ ছিল ৩ স্টার জেনারেলের সমান পুলিশ
প্রধানের জন্য সামর্থ্যবান। কিন্তু সেনাবাহিনীতে সেটা ছিল মেজর জেনারেল বা দুই স্টার। ১৯৮৩ সালে তৎকালীন সামরিক সরকার আইজিপির
র‌্যাঙ্ক ব্যাজকে এক ধাপ অবনমিত করে ক্রস সোর্ড ও ব্যাটনের সঙ্গে একটি পিপস পরিধান করতে বাধ্য করেছিল। সামরিক সরকারের সময়
সেনাবাহিনীর প্রধান ছিল মেজর জেনারেল পদমর্যাদার। তাই তিনি পুলিশ প্রধানের মর্যাদাকে অনেকটা অন্যায় ভাবেই অবনমিত করেন। এরপরে
সেনাবাহিনীর জেনারেল এর মর্যাদা বেড়ে দুই থেকে চার স্টার এ এসেছে। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় পুলিশ এর আকার বাড়লেও পুলিশ প্রধানের
মর্যাদা বৃদ্ধি পায়নি যা অধিকাংশ দেশের পুলিশ প্রশাসনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ন। চলতি বছরে এটি পুণরায় প্রবর্তন করা হয়েছে। পূর্ব এবং প্রাপ্য
মর্যাদায় ফিরিয়ে দেওয়ায় সমস্যাটা কি?
"পুলিশের নিম্নস্তরে পরিদর্শকদের প্রথম শ্রেনীর মর্যাদা (বিশ্বে প্রথম) দেয়া হয়েছে।" - ভুল। অধিকাংশ না, বরং বলতে গেলে প্রায় সব দেশেই
ইন্সপেক্টর ১ম শ্রেনীর গেজেটেড কর্মকর্তা। শুধু তাই নয় অনেক দেশেই ইন্সপেক্টর পদটি তিনটি পিপস সম্পন্ন ব্যাজের এবং সেনাবাহিনীর
ক্যাপ্টেন মর্যাদা সম্পন্ন। বাংলাদেশে ইন্সপেক্টর পদটির দায়িত্ব প্রায় একই হলেও ১ম শ্রেনীর করা হয়েছে কিছুদিন আগে।
টিআইবির প্রতিবেদনে কি র‍্যাব কে আলদা করে উপস্থাপন করা হয়েছে? টিআইবির প্রতিবেদনে ১০০ টাকা ঘুষ খাওয়া আর ১ লাখ টাকা ঘুষ
খাওয়া একই। টিআইবি প্রতিবেদন হিসাব করলে আরো দেখবেন পুলিশে দূর্নীতির ফলে অর্থের পরিমান থেকে এর পরবর্তী খাত সমূহের
দূর্নীতিকৃত সর্বমোট অর্থের পরিমান অনেক বেশি।
"পুলিশ এখন সব কিছুতেই সেনাবাহীনির সমান হতে চাইছে।" - হতে চাওয়াটা দোষের কি? আমরাতো আমাদের সেনাবাহিনীর সুনামই করি।
কোন খারাপ ছাত্র ভাল ছাত্রের মত হতে চাওয়ার ইচ্ছা কি খারাপ? নাকি সেনাবাহিনীকেই খারাপ বুঝাতে চাচ্ছেন?
"তাছাড়া পুলিশ-কে বুঝতে হবে তারা সিভিল, মিলিটারী নয়।" - এটা দিয়ে কি বুঝানো হল? বাই দি ওয়ে পুলিশ, সিভিল এর মধ্যেই আরেকটি
প্রশাসন। আপনার কথা ঘুরিয়ে যদি বলি - "মিলিটারী কে বুঝতে হবে তারা মিলিটারি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নয়" তাহলে কি জিনিষটা ভালো
হবে? যাই হোক, পুলিশে প্রায় সবধরনের শাখাই আছে, এমনকি মিলিটারি ডিপার্টমেন্টও।

Md. Mahbubur Rab
এর পরও এটা এলিট ফোর্স থাকবে?

>> কে জানে? থাকতেও পারে আবার নাও পারে। সামরিক বাহিনী থাকার পরও যদি এলিট ফোর্স না বলা যায় তাহলে সেটা সামরিক বাহিনীরই
ব্যার্থতা। কারন ডিবি, এসবি, এপিবিএন, সিআইডি কে স্পেশালাইজড ই ধরা হয়। সোয়াট অত্যাধুনিক বিশেষায়িত এলিট ফোর্স র‍্যাবের
উপরে। এগুলোর একটাতেও সামরিক সদস্য নাই।

Manik Majumder
র‌্যাব, বিজিবিসহ সকল বেসামরিক প্রতিষ্ঠান থেকে সামরিক বাহিনীর সকল সদস্য প্রত্যাহার করা উচিত।

>> বেসামরিক প্রতিষ্ঠান থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্য প্রত্যাহার করা সম্পর্কে কোন মন্তব্য করলাম না কিন্তু বিজিবি থেকে সামরিক বাহিনীর
সদস্য প্রত্যাহার করা উচিত হবে না। বিজিবি সেনাবাহিনীর অঙ্গসংস্থা যা আধা সামরিক হিসেবে বিবেচিত হয়। বিজিবি যথেষ্ট বড় বাহিনী আর
একে আলাদা ভাবে পরিচালনা করাও ব্যয়বহুল হবে। বিজিবির প্রধান দায়িত্ব মূলত সীমান্ত রক্ষা যা প্রতিরক্ষা কার্যক্রমেরই অন্তভূক্ত।
আর র‍্যাবের ব্যাপারে বলব সামরিক বাহিনীর থেকে বাছাইকৃত যোগ্য সদস্যদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হিসেবে যোগদানের জন্য
প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন দেয়াই যথেষ্ট আর অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যেন বিচার বহিভূর্ত হত্যাকান্ড এবং লিমনের মত ঘটনা না ঘটে। পুরোপুরি
বাদ দেয়ার প্রয়োজন আপাতত হয়নি। তার চেয়ে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সহযোগীতামূলক সুসম্পর্ক বেশি জরুরী।

নবমত, আমি জানি পোষ্ট পড়ে মনে হতে পারে আমি খালি পুলিশের পক্ষে গুন বর্ননা করছি এবং অন্যদিকে সেনাবাহিনী বিদ্বেষী। মূলত পোষ্টের
বিষয় আর অনেক কমেন্টের উত্তরে এভাবে বলতে হয়েছে। সবাই নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টের পক্ষে কথা বলবেই। একজন আর্মি/পুলিশ অফিসার
তার ডিপার্টমেন্ট কে বেষ্ট বললেই সেটা বেষ্ট হয় না। কিন্তু আমি পুলিশ/আর্মির কোথাও কাজ করি না। যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে
বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু প্রসঙ্গের কারনে এমন ভাবে বলতে হয়েছে যেখানে মনে হতে পারে আমি একদমই সামরিক বাহিনী বিদ্বেষী! মোটেও না। এসব কথা আমার অনেক দিনের চিন্তা, গবেষনা, খোজাখুজি, আলোচনার ফল। ইচ্ছা করলেই আমি পুলিশের বিরুদ্ধে আমি লিখতে পারি, লিখতে পারি সামরিক বাহিনীর পক্ষে আবার লিখতে পারি একদম বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। আমি আমার এই গরীব দেশের আধুনিক ত্রিমাত্রিক
সেনবাহিনী নিয়ে যেমন গর্ববোধ করি তেমনি দুঃখবোধ করি পুলিশের ব্যার্থতা, দূর্নীতি দেখলে। আবার গর্ববোধ করি যখন শুনি শান্তি মিশনে
সবার্ধিক পুলিশ বাংলাদেশ থেকে অবদান রাখে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি, অবদান রাখে সর্বাধিক নারী পুলিশ।

দশমত, পুলিশের সঠিক তত্ত্বাবধান, উপযুক্ত প্রশিক্ষনে প্রশিক্ষিত এবং উপযোগী পুলিশ সদস্যদের পরিচালনা, সুনির্দিষ্ট এবং যোগ্য সামরিক
সদস্যদের উপস্থিতি এবং তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষন ও আইন বিষয়ক শিক্ষা নিশ্চিত করা, বিশ্বমানের ইন্টেলিজেন্স এবং ডিটেকটিভ ইউনিট গঠন
করা, ডিবি-সিআইডি-এসবি এর মত বিশেষায়িত করা, সোয়াট এর মত অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন করা, অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার নিশ্চিত করা,
দূর্নীতি দূরীকরনে সক্রিয় পদক্ষেপ, রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করা - এসব বিষয়ের সঠিক সমন্বয় করতে পারলে নিঃসন্দেহে আইন প্রয়োগকারী
সংস্থা হিসেবে র‍্যাব হবে অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনের মোক্ষম উপায়।

সর্বশেষে আরেকটি বিষয়ে আরেকটি বিষয় আলোকপাত। অনেকেই এই পদক্ষেপের জন্য সরকারের উদ্দৈশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বলার অপেক্ষা রাখে দলীয় বা নিজেদের স্বার্থ হাসিল কিংবা উদ্দেশ্য এই পদক্ষেপ নিলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে তা সমর্থন করি না। কিন্তু সরকারের গোপন উদ্দেশ্য বা স্বার্থের জন্য নয় বরং যা কিছু সঠিক ভাবে হওয়ার কথা তা হওয়াই উচিত। এক্ষেত্রে আমি দশম পয়েন্টে উল্লেখ্য করেছি কিভাবে এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলে তা জনগনের জন্য মঙ্গল হত।

অনেকেই আমার লেখার সাথে দ্বিমত পোষন করতেই পারেন, আবার লেখার একদমই বিরুদ্ধাচারন করতে পারেন। আমি আপনাদের কাছ থেকে
আশা করব নিরপেক্ষ মতামত এবং আপনার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। যতটা পারেন পেশাগত বা স্বজনপ্রীতি এড়িয়ে শুধুমাত্র সুনাগরিক হিসেবে আপনার
নিজের যৌক্তিক মতামত করবেন এবং অবশ্যই সাবলীল ভাষায় (আমার মনে হয় না আমি অপ্রীতিকর মন্তব্য প্রয়োগ করার মত কোন লেখা
লিখেছি)। আরেকটি বিষয় হচ্ছে পোস্টে কোন ভুল ধরা পড়লে আগে থেকেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তথ্যে কোন ভুল থাকাও অস্বাভাবিক নয়। ভুল
শুধরে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০০
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×