somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেশ্যা এককালে সতী থাকে আর বাঙালী সব হারিয়ে নিজেকে সতী করে

০৭ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দৈনিক পত্রিকাগুলো খুললে মনে হয় সেদিন আর দূরে নেই যেদিন আফ্রিকার গরীব দেশগুলোর মত আমাদেরও পরিণতি হবে।হত্যা,খুন,ধর্ষন রাজনীতি,চুরি,ডাকাতি,চামারি,সন্ত্রাস,টেন্ডারবাজি কি নেই ।৭১এ শহীদের সংখ্যা,ধর্ষিতা নারীর সংখ্যা নিয়ে এখনো আমরা বিতর্ক করি।কিন্তু ৭১ থেকে ২০১০ আমাদের কি দিয়েছে?এমন কোন বছর যায়নি ৩-৪হাজার মানুষ খুন হয়নি।এমন কোন বছর যায়নি যে বছরে ধর্ষন ২-৩হাজার হয়নি।ইদানিং বাঙালীর নুতুন রোগ আবিষ্কার হয়েছে।সেটি হচ্ছে ইভটিজিং।বন্ধ হউক ইভটিজিং।ইভটিজিংয়ের জন্য পোস্টারিং হউক ,মানববন্দন হউক আরো কত কি।যেন মামার বাড়ির আবার ।চাইলেই মামা গাছ থেকে আম পেড়ে দিবে।মূল সমস্যায় কেউ যাইতে চাইছেনা।আইন করে কি হবে ?আইন কি কম আছে?অনেকের দাবী ক্রসফায়ার করা হউক।ক্রসফায়ারতো অনেক হয়েছে?সন্ত্রাসী কার্যক্রম কি থেমে গেছে?

ইভটিজিং কি?সহজ ভাষায় ইভটিজিং এক ধরনের মানসিক যৌন নির্যাতন।যা ইভটিজার একজন নারীর প্রতি বিভন্নি ভাবে প্রকাশ করে।ইভটিজিং নিয়ে ২০০৯ এর ১৪ মে হাইকোর্টে একটি রায়ে বলা হয় অশালীন ভঙ্গি, যৌন নির্যাতনমূলক ভাষা বা মন্তব্যের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করা, কাউকে অনুসরন করা বা পিছন পিছন যাওয়া, যৌন ইঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা, চিঠি, টেলিফোন, মোবাইল, এসএমএস, ছবি, নোটিস, কার্টুন, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল নোটিস বোর্ড, অফিস ফ্যাক্টরি, শ্রেণীকক্ষ বা অন্যকোন স্থানে যৌন ইঙ্গিতমূলক অপমানজনক কোন কিছু লেখা ইত্যাদি ইভটিজিং বলে গণ্য হবে। এ জাতীয় যে কোন অপরাধের শাস্তি হিসেবে বলা হয় সংশিস্নষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে আর ছাত্রদের ক্ষেত্রে, অভিযোগ কমিটির সুপারিশক্রমে তাদেরকে শ্রেণীকক্ষে আসা থেকে বিরত রাখতে পারেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশিস্নষ্ট কর্তৃপক্ষ তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে এবং সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের শৃঙ্খলাবিধি অনুসারে ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে অথবা উক্ত অভিযোগ যদি দণ্ডবিধির যে কোন ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় তাহলে সংশিস্নষ্ট কোর্টে বা ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেবেন।

এদিকে ঢাকা মহানগরী পুলিশ অর্ডিন্যান্সের ৭৬নং ধারায় ইভটিজিং একটি শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে অর্ন্তভুক্ত।৭৬ নং ধারায় ইভটিজিং নিয়ে লেখা হয়েছে যদি কেহ কোন রাস্তার বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বা সেখান হইতে দৃষ্টিগোচরে আসে এবং স্বেচ্ছায় অশালীনভাবে নিজ দেহ এমনভাবে প্রদর্শন করে যাহা কোন গৃহ বা দালানের ভিতর হইতে হউক বা না হউক, কোন মহিলা দেখিতে পান, অথবা স্বেচ্ছায় কোন রাস্তায় বা জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোন মহিলাকে পীড়ন করে বা তাহার পথ রোধ করে, অথবা রাস্তায় বা জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে অশালীন ভাষা ব্যবহার করিয়া বা অশস্নীল আওয়াজ, অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্য করিয়া কোন মহিলাকে অপমান বা বিরক্ত করে, তবে সেই ব্যক্তি এক বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দণ্ড অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।


ইভিটিজিং নারীর প্রতি যৌন কিংবা মানসিক নির্যাতনের একটি দিক মাত্র।একজন সানি কিংবা একজন প্রতিবাদী শিক্ষক প্রান হারালে ইভটিজিং নিয়ে অনেক আলোচনা সভা,ফিচার কলাম ,মত বিনিময়ের আয়োজন করা হয় ।কিন্তু বাংলাদেশের নারী নির্যাতনের চিত্র কতটা ভয়াবহ তা সংসদে উত্থাপিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখেই শুনুন ।একজন সংসদ সদস্যের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী জানান ,চলতি বছরের শুরু থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত পৃথক ১১টি বিষয়ে সারাদেশে ১৭ হাজার ৫৭৭টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে নারী নির্যাতন, যা ৭ হাজার ২৮৫টি। খুন হয়েছে ১ হাজার ৯৫১টি আর ১ হাজার ৫৮৬টি হয়েছে ধর্ষণের ঘটনা । তাছাড়া ৪ হাজার ১৩৩টি চুরি, ৭৫৪টি শিশু নির্যাতন, ৪৯৬টি দস্যুতা, ৪৭৬টি গবাদিপশু চুরির ঘটনা, ৪০২টি অপহরণ, ৩৬২টি ডাকাতি, ৮২টি দাঙ্গা এবং ৫০টি এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।


মাত্র ৬ মাসে দেশে অপরাধমূলক তথ্যের যে চিত্র এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী হয়েছে নারী নির্যাতন।দুঃখজনক হলেও সত্য যে বিদেশে গিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বাহবা কুড়িয়ে এসে সংবধিত হয় কিন্তু নারীরা ইভিটিজিংয়ের প্রতিবাদ করার সাহসও পায়না তথাকথিত সমাজের কাছে লজ্জার কারণে ।আমাদের প্রধানমন্ত্রী,বিরোধী দলীয় নেত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারী।অথচ দেশে সংঘটিত অপরাধের বেশী ঘটছে নারীর বিরুদ্ধে ।

মানববন্ধন আলোচনা সভা অনেক হয়েছে তাই সেদিকে না গিয়ে আমরা সাধরণ জনগনই এর বিরুদ্ধে সোচ্ছার এবং সচেতন হওয়ার সময়।ইভটিজিং কেন হয় ?এই নিয়ে বিভিন্ন গবেষনা এবং বিভিন্ন জরিপের পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যগুলোতে যে বিষয়গুলোকে বেশ গুরুত্ব সহকারে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তা হচ্ছে নারীর প্রতি অশ্রদ্ধা,নারীর ক্ষমতায়ন,মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসন,আইন শৃংখলা বাহিনীর অপেশাদার সূলভ আচরণ,পারিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার ব্যর্থতা,ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব।

অনেকে মনে করেন পর্দা করলে ইভটিজিং বন্ধ হয়ে যাবে আবার অনেকেই মনে করেন কঠিন শাস্তি দিলে বন্ধ হয়ে যাবে।আমার বোনটিও পর্দা করে কিন্তু এরপরও ইভটিজিংয়ের স্বীকার।কঠিন শাস্তি দিয়ে সাময়িক ভাবে ভীতি সৃষ্টি করে বন্ধ করা যায় সাময়িক ভাবে কিন্তু সেটি কখনোই প্রকৃত সমাধান নয়।আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি পরিবার থেকে যদি সুশিক্ষা ছেলে সন্তানটিকে দেওয়া যায় তাহলে ইভটিজিংসহ নারীর প্রতি বিভিন্ন রকম যৌন নির্যাতন ৮০ ভাগের বেশী কমে যাবে।তাই ইভটিজিং সহ নারীর বিরুদ্ধে সকল আগ্রাসন বন্ধের জন্য আমার কিছু প্রস্তাবনা।

১..স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্ধ সন্তানদের সামনে না আনা।

২..প্রায় দেখা যায় পরিবারের মেয়ে সন্তানটিকে ছেলে সন্তানের সাথে তুলনা দিয়ে ছেলেটির সামনে মেয়েটিকে বলা হয়, তুই তো মেয়ে ।এতে নারীর প্রতি ছোট বেলা থেকেই এক ধরনের অবহেলা সৃষ্টি হয় ছেলেটির মনে ।

৩..ছোটবেলা থেকেই অন্যকে সম্মান দেখানোর মানসিকতা সৃষ্টি করা

৪..সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের স্বীকার থেকে রক্ষা করতে এমন চ্যানেল না রাখা যেসব চ্যানেলে বিনোদনের নামে নোংরামীতে ভরপুর।

৫..ভাই-বোনের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক সৃস্টি করে দেওয়া ছোটবেলা থেকেই।

৬..অনেক বাবা মাকেই দেখা যায় মেয়েদের পোশাকের ব্যাপরে অসেচতন।আধুনিকতার নামে এমন সব জামা-কাপড় পড়ায় যা আমাদের সমাজ সংস্কৃতির সাথে একদম মানায়না।তাই মেয়েদের পোশাকের শালীনতার ব্যাপারে মায়ের নজর রাখা।

৭..ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা সন্তানদের মধ্যে জাগ্রত করা।

৮..ডিজুস জেনারেশনের জোয়ারে ভেসে যেতে না দিয়ে ভাল ভাল বই পড়তে দেওয়া।

৯..নষ্ট ছাত্র রাজনীতির সাথে যেন জড়িয়ে না পরে সেজন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা।


সব কথার শেষ কথা পরিবার থেকে যদি একটি ছেলে নারীদের প্রতি সম্মান করতে না শিখে তাহলে সচেতনতার জন্য এতসব আয়োজন তেলের মত শরীরে মাখতে হবে।কনডম ব্যবহার করে এইডস না হওয়ার একটি পথ আটকানো যায় এইডস নিমূল করা যায়না।তেমনি ইভটিজিং বন্ধ হউক বন্ধ হউক করলেও নারী নির্যাতন বন্ধ হয়ে যাবেনা।সামনে ইভটিজিং তাই ইভটিজিং ইভটিজিং।ঘরের খুটিঁর খবর নাই ছাল নিয়ে টানাটানি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×