somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিপ্লবী ফণিভূষণ মজুমদার

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ, ৩১ অক্টোবর আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলের অতি প্রিয় বলে পরিচিত ‘ফণিদা’ এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় অগ্নিযুগের বিপ্লবী প্রয়াত ফণিভূষণ মজুমদারের ৩২মত মৃত্যু বার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি পরলোক গমন করেন। বর্ণাঢ্য সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনে ফণিভূষণ মজুমদার বৃটিশ ও পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন, ৬ দফা ও স্বাধীকার থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭৫ সালে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক-স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ এবং সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্বদান করেন। ফরিদপুরের (বর্তমান মাদারীপুর) তৎকালীন ভারতবিখ্যাত কংগ্রেস সভাপতি অম্বিকা চরণ মজুমদারের ভ্রাতুষ্পুত্রের ঘরে ১৯০২ সালে ক্ষণজন্মা বাংলাদেশের এই কৃতি সন্তান কৈশোরেই বিপ্লবী পার্টিতে যোগদান করেন। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত প্রায় সকল বিপ্লবী নেতার সংস্পর্শে আসেন। তিনি বিপ্লবী পূর্ণ চন্দ্র দাস, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, মহারাজ ত্রৈলক্ষ্যনাথ চক্রবর্তী, মস্টারদা সূর্যসেন, অম্বিকা চক্রবর্তী, পঞ্চানন চক্রবর্তী, বিপ্লবী সন্তোষ কুমার মিত্র, বিখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা মুজাফ্ফর আহম্মদ, মহাত্মা গান্ধী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- প্রমুখের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। রাজনৈতিক কারণে বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে সব মিলিয়ে তিনি সর্বমোট ৩২ বছেরেরও অধিক কারান্তরীণ ছিলেন। শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয়, উপমহাদেশে রাজবন্দী হিসেবে আর কেউ এতো বচল জেল খেটেছেন বলে জানা যায় না। ১৯৮১ সালে মৃত্যুশয্যায় স্মৃতিচারণমূলক তাঁর সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী আমার গ্রন্থনায় ১৯৮৪ সালে প্রথম একটি স্মরণিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। সেটি পুনঃপ্রকাশ করছি।

জন্ম:
ফণিভূষণ মজুমদার ১৯০২ সালে বর্তমান মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সেন্দিয়া গ্রামের প্রসিদ্ধ মজুদমদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সতীশ চন্দ্র মজুমদার তৎকালীন মাদারীপুর এসডিও অফিসে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯১৭ সালে লাহোর অধিবেশনে নিখিল ভারত কংগ্রেসের সভাপতি ভারতবিখ্যাত অম্বিকা চরণ মজুমদার তাঁর পিতার পিতৃব্য।

শিক্ষাজীবন:
ফণিভূষণ মজুমদার ১৯২১ সালে মাদারীপুর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক এবং ১৯২৩ সালে বাঁকুড়া ওয়েসলিয়ান মিশন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই, এস, সি পাশ করেন। রাজশাহী কলেজে বি, এ, ক্লাসে ভর্তি হওয়ার পর রাজনৈতিক কারণে তাঁর শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়। পরে ১৯২৭ সালে তিনি কলকাতা বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বি, এ, পাশ করেনে এবং কলকাতা রিপন কলেজে আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।

বিপ্লবী পার্টিতে যোগদান ও ভারতবর্ষের বিপ্লবীদের সাথে পরিচয়:
১৯১৯ সালে প্রথম ভারতবর্ষের অন্যতম বিপ্লবী পূর্ণচন্দ্র দাসের সাথে ফণিভূষণ মজুমদারের পরিচয় ঘটে এবং ১৯২০ সালে তিনি গুপ্ত সমিতির সদস্য হন। এ সময় তিনি একই সাথে নিজ এলাকার সেবাদল এবং বিপ্লবী পরিচয় গোপন রেখে কংগ্রেসের সদস্যরূপেও কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। বাঁকুড়া কলেজে তিনি একটি গুপ্ত সমিতি গঠন করেন। রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় অল্পদিনের মধ্যেই তিনি স্থানীয় সেবক সংঘের অন্যতম পুরোধাপূরূপে শহরে ব্যাপক পরিচিতিলাভ করেন। ১৯২৭ সালের শেষাংশে কলকাতা বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্রাবস্থায় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর সাথে ফণিভূষণ মজুমদারের পরিচয় হয়। তারপর ১৯২৮-২৯ সালে একে-একে তিনি মহারাজ ত্রৈলক্ষ্যনাথ চক্রবর্তী, মাস্টারদা সূর্যসেন, অম্বিকা চক্রবর্তী, হুগলী জেলে নিহত বিপ্লবী নেতা সন্তোষ কুমার মিত্র এবং বিখ্যাত ভারতীয় কমউনিস্ট নেতা কমরেড মুজাফ্ফর আহম্মদসহ অন্যান্যদের সাথে পরিচয়লাভ করেন। ফলে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের দিন কলকাতায় প্রথম যে ২৩ জন বিপ্লবী গ্রেফতার হন, ফণিভূষণ মজুমদার তাঁদের অন্যতম। এ সময় তিনি ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কারাভোগ করেন।

ফরওয়ার্ড ব্লকের দায়িত্ব:
১৯৩৮ সালে কারামুক্তির পর ফণিভূষণ মজুমদার নেতাজীর নিবিড় ঘণিষ্টতালাভ করেন। ঐ বছরেই তিনি সর্বোদয় নেতা জয় প্রকাশ নারায়ণের সাথে পরিচয়লাভ করেন। ১৯৩৯ সালে ত্রিপুরী কংগ্রেস অধিবেশনে ফণিভূষণ মজুমদারসহ বাংলার অন্যান্য বিপ্লবীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসলস্বরূপ গান্ধীজী মনোনীত পট্টভিসি তারামিয়ার বিরুদ্ধে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বিপুল ভোটাধিক্যে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু দুঃখের বিষয় চক্রান্তমূলকভাবে মিথ্যা শৃংখলাভঙ্গের অভিযোগে নেতাজীকে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কংগ্রেস থেকে বহিস্কার করা হয়। নেতাজী তাঁর ঐ সময়ে সবচেয়ে কাছের ফণিভূষণ মজুমদারসহ অন্যান্য সহযোগী ও অনুগামীদেরকে নিয়ে ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। গঠন পরবর্তী এই সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘বেঙ্গল ফরওয়ার্ড ব্লক’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। নেতাজী সম্পাদক এবং ফণিভূষণ মজুমদার উক্ত পত্রিকার ম্যানেজারপদে নিযুক্ত হন।

হলওয়েল মনুমেন্ট আন্দোলনে ভূমিকা:
১৯৪০ সালে নেতাজীর নেতৃত্বে হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণ আন্দোলন সংঘটিত হয়। ফণিভূষণ মজুমদার নেতাজীর দক্ষিণ হস্ত হিসেবে এই আন্দোলনের পুরোভাতে নেতৃত্বদান করেন। এই আন্দোলনের ফলে কুখ্যাত হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারিত হয় বটে, কিন্তু তার পূর্বেই নেতাজীর সাথে ফণিদা গ্রেফতার হন এবং পরবর্তী বছরের প্রথম দিকে নেতাজীর সাথেই মুক্তিলোভ করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন রাজনৈতিক কর্মকণ্ড:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বৃটিশ আই, বি, পুলিশের কড়া পাহাড়াকে ফাঁকি দিয়ে দেশত্যাগের এক সপ্তাহ পূর্বে ফণিভূষণ মজুমদারকে নেতাজী ডেকে পাঠান। তাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলাপ-আলোচনা হয়। ফণিদা নেতাজীর মুখে তাঁর দেশত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারেন এবং নেতাজীর অনুপস্থিতিতে করণীয় বুঝে নেন। নেতাজীর দেশত্যাগের পর পুলিশ ফণিদাকে গ্রেফতার করে প্রথমে কলকাতা জেলে ও পরে মাদারীপুরে গৃহবন্দী করে রাখে। ১৯৪১ সালে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায়ই ভারতরক্ষা আইনে তৎকালীন ভারত সরকার এক ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁকে গ্রফতার করে দমদম জেলে প্রেরণ করে। ঐ বছর গান্ধীজী সরকারের অনুমতিক্রমে জেলে আটক সকল বিপ্লবীদের সাথে আলোচনা করেন। কিন্তু বিপ্লবীরা সরকারের দেয়া কতিপয় শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর প্রায় পাঁচ বছরান্তে গান্ধীজীর সাথে আলোচনার পর ভারত সরকার ১৯৪৬ সালের প্রথমভাগে অন্যান্য বিপ্লবীদের সাথে ফণিদাকেও মুক্তি দেয়। তিনি কয়েক সহকর্মী ও বন্ধুসহ তাঁর নিজ জন্মস্থান মাদারীপুরে আপতত ফিরে আসেন।

ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল আর্মির সাথে সংশ্লিষ্টতা এবং ত্রিখণ্ডিত স্বাধীনতা:
১৯৪৬ সালে কারামুক্তির পর ফণিদা অন্যান্যদের সাথে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য সর্বাত্মক সংগ্রাম শুরু করেন। একাজে নেতাজী গঠিত ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল আর্মি (আইএনএ)’র নেতৃবৃন্দ এবং কমান্ডারদের সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। কিছুদিনের মধ্যে সমগ্রভারতে বিরাজমান অস্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে বৃটিশ সরকার কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের সাথে ভারতের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করতে বাধ্য হয়। অবশেষে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ এবং বৃটিশ সরকারের মধ্যে সমঝোতার ফলে ১৯৪৭ সালের মধ্য আগস্টে তথাকথিত দ্বি-জাতি তত্ত্বভিত্তিক ভারত এবং নতুন দেশ হিসেবে পাকিস্তান স্বাধীনতালাভ করে। ফণিদা ধর্মভিত্তিক জাতীয় পরিচয়ে তৃখণ্ডিত মাতৃভূমির তথাকথিত এই স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেননি। তাই তাঁর অনেক রাজনৈতিক সহযোগী এবং আত্মীয়-স্বজন দেশান্তরিত হলেও তিনি দেশমাতৃকার টানে এখানেই তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণে অটল থাকেন।

বঙ্গবন্ধুর সাথে পরিচয় ও রাজনৈতিক আলোচনা:
ভারত বিভাগোত্তর ফণিদা তাঁর জন্মস্থান মাদারীপুরে নব পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেন। এখানেই ১৯৪৮ সালে তখনকার টগবগ তরুণ্যে উদ্বেলিত রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবের সাথে তাঁর প্রথম পরিচয় ঘটে। শেখ মুজিব বিপ্লবী ফণিভূষণ মজুমদারের সম্পর্কে আগে থেকেই বিস্তর অবহিত ছিলেন বটে, কিন্তু সরাসরি সাক্ষাত বলে কথা। আর সেই প্রথম দিন থেকেই মুজিবের রাজনৈতিক নির্ভরতার অন্যমত ভরসা হয়ে ওঠেন তাঁর ‘দাদা’- যা তিনি তাঁর নিজের রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকেও জানিয়ে রাখেন। ফলে ১৯৪৯ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় সোহরাওয়ার্দী ফণিদাকে সাথে নিয়ে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রক্ষার্থে পূর্ব বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়ান। ঐ বছরই পাকিস্তান সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে ফরিদপুর জেলে প্রেরণ করে। কিছুদিন পর গ্রেফতার হয়ে বঙ্গবন্ধুও ফরিদপুর জেলে প্রেরিত হন। এই জেলে বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় ‘দাদা’র কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে নেন। এভাবে বঙ্গবন্ধু এবং ফণিদা ফরিদপুর জেলের একই কক্ষে ২ বছর, অর্থাৎ ১৯৫১ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন। তাই খুব সহজেই অনুমেয়ে এই সময়ে এই দুই মহান দেশপ্রেমিক বাঙালি নব্য পাকিস্তানী উপনিবেশ থেকে দেশমাতৃকার মু্ক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা এবং কর্মসূচি প্রণয়ন করেন। এ সময় ফণিদা বঙ্গবন্ধুর মুখ থেকেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনার কথা জানতে পারেন। ফলে পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকেই এই সংগঠনের সাথে পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে ভূমিকা এবং বারবার গ্রেফতার:
১৯৪৯ সালে গ্রেফতার হয়ে ১৯৫২ সালে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের প্রথম নির্বাচন- যা যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন নামে সমধিক পরিচিত- তাতে ফণিদা গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে ইউ,পি,পি’র প্রার্থীরূপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পূর্ব পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য (এম,এল,এ,) নির্বাচিত হন। তবে ঐ বছরই তিনি প্রেফতার হন এবং পরবর্তী বছর- ১৯৫৫ সালে মুক্তিলাভ করেন । ১৯৫৮ সালে ফণিদা গ্রেফতার হন এবং ১৯৬২ সালে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৬৫ সালে ফণিদা পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে পুনরায় গ্রেফতার হন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে মুক্তিলাভ করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা:
আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকেই ফণিদা এই সংগঠনের সাথে পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৯ সালে কারামুক্তির পর আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থনদানপূর্বক আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি গ্রাম বাংলার দ্বারে-দ্বারে ঘুরে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে শক্তিশালী এবং স্বাধিকার আন্দোলনকে বেগবান করায় ব্রতী হন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ফণিদা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরূপে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এম,পি,এ) নির্বাচিত হন। সর্বজন বিদিত যে, এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সারা পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে। এতদসত্তেও পাকিস্তানীরা বাঙালিদেরকে দেশের শাসনক্ষমতা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বঙ্গবন্ধু প্রথমে অসহযোগ আন্দোলন এবং পরে স্বাধীতার ডাক দিলে তাঁকে হানাদার পাকিস্তানীরা গ্রেফতার করে তাদের কারাগারে নিয়ে যায়। ২৬ মার্চ রাতে গ্রেফতারের পূর্বে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। কিন্তু তার পূর্বেই বঙ্গবন্ধু তাঁর অনুপস্থিতিতে ঘনিষ্ট এবং বিশ্বস্ত সহকর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়ে যান। এসবেরই অংশ হিসেবে পরিকল্পনামাফিক ফণিদা অন্যান্য সহকর্মীদেরকে সাথে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত গমন করেন । আওয়ামী লীগের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে ফণিদাকে দেখতে পেয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক সহায়তাদানের বিষয়ে ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কারণ তৎকালীন ভারতের কেন্দ্রীয় এবং পশ্চিম বাংলার সরকারি এবং বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের অধিকাংশই ফনিদার রাজনৈতিক সহকর্মী ছিলেন। ফলে তাঁদেরকে ফণিদা বলামাত্রই মুক্তিযুদ্ধের অনেক কাজ সম্পাদন হয়ে যেত। উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ভারত সরকারের দেয়া প্রথম অস্ত্র চালানটি ফণিদা ভারতে না যাওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল এ কারণে যাতে করে সেগুলো কোনভাবে বেহাত হয়ে শত্রুপক্ষের কাছে চলে না যায়। সে যাহোক, ফণিদা মুজিবনগরে স্থাপিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি মু্ক্তিযুদ্ধ পরিচালনা কমিটির সদস্য, যশোর-ফরিদপুর সেক্টরের চেয়ারম্যান এবং ঐ সময়ে ভারতে বাঙালি আশ্রিত ১১টি শরনার্থী শিবির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত হন। ফণিদা ভারতের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে-ঘুরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনকল্পে পাকিস্তানী হানাদর বাহিনীর অত্যাচারের কাহিনী বর্ণনা করেন। ভারতীয় পার্লামেন্টের যুক্ত অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে তিনি তাঁর বিখ্যাত ভাষণের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাকিস্তানীদের গণহত্যা ও নির্যাতনের বিষদ বর্ণনা তুলে ধরেন। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে তিনি জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্বজনমত গঠনকল্পে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে ভূমিকা:
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হানাদারমুক্ত হওয়ার পরপরই ফণিদা সরাসসি ঢাকায় চলে আসেন। ’৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনপূর্বক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীসভা গঠন করেন। তিনি ফনিদাকে খাদ্য এবং বেসামরিক পরিববহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। মন্ত্রী্ হিসেবে তাঁর বিন্দুমাত্র বাহুল্যের প্রয়োজন পড়েনি। খদ্দরের ধুতি-পঞ্জাবি, তার উপর কালো মুজিব কোটই ছিল তাঁর একমাত্র প্রিয় পোষাক, আর পায়ে দেশি চটি। এভাবেই নির্মোহ ফণিদা তাঁর প্রিয় সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগঠনে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রথম নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রীসভার পূর্বতন দায়িত্বলাভ করেন। এ সময় তিনি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান প্রভৃতি দেশ ভ্রমণপূর্বক যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের জন্য খাদ্রসামগ্রী সংগ্রহার্থে বিভিন্ন দেশের সাথে চু্ক্তি স্বাক্ষর করেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে ষড়যন্ত্রমূলক ও কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ফণিদা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এ সময় তিনি নিজে এতোটাই কৃচ্ছতা সাধন করেন যে, তাঁর সরকারি বাসভবনে সপ্তাহের খাদ্য তালিকা ছিল এরকম: (১) তিন দিন সকালে ও রাতে রুটি-সবজি এবং দুপুরে ভাঙ্গা গমের জাউ, (২) তিন দিন সকালে ও রাতে রুটি-সবজি এবং দুপুরে ডালভাত এবং (৩) একদিন তিন বেলা রুটি-সবজি।

জাতীয় দল বাকশালে দায়িত্ব:
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতীয় দল হিসেবে বাংলাদেশ কৃশক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু ফণিদাকে বাকশালের কৃষক ফ্রন্টের সেক্রেটারি এবং পুনর্গঠিত মন্ত্রীসভার ভূমি প্রশাসন, ভূমি সংস্কার, স্বায়ত্তশাসন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করেন। এতোগুলো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণে ফণিদা আপত্তি তুললে বঙ্গবন্ধু বলেন- গ্রামের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হলে আপনাকে যেসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেসব মন্ত্রণালয় পরিচালনার জন্য সবচেয়ে সৎ ও যোগ্য আপনি ছাড়া অন্য কাউকেই আমি খুঁজে পাইনি। উল্লেখ্য, ঐ সময় একদিন জাতীয় সংসদের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্পীকারের মাধ্যমে সকল সংদস্যকে ঘুষবিরোধী শপথ গ্রহণের প্রস্তাব রাখেন। সে অনুযায়ী ফণিদা বাদে অন্য সব সংসদ সদস্য দাঁড়িয়ে বুকে হাত রেখে শপথ গ্রহণ করেন। এতে পাশ থেকে একজন সদস্য স্পীকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন- “মাননীয় স্পীকার, মাননীয় সংসদ নেতার প্রস্তাব মোতাবেক আমরা সবাই আজ ঘুষবিরোধী শপথ গ্রহণ করলাম। কিন্তু একজন সদস্য তা করা থেকে বিরত থেকেছেন”। তখন ফণিদা দাঁড়িয়ে বলেন- “মাননীয় স্পীকার, ফণি মজুমদার জীবনে কখনো ঘুষ দেয় না, নেয়ও না, তাই তার ঘুষবিরোধী শপথ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে না”। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য গোটা সংসদে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে।

১৫ আগস্ট খুনীদের বর্বতার শিকার:
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিশ্ব ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বাংলাদেশে। এদিন স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি শক্তির লেলিয়ে দেয়া হায়েনার দল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্রষ্টা, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে ও পৈশাচিক উল্লাসে মেতে ওঠে। ফণিদা তখন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন। রাতের আধাঁরে খুনীদের সংঘটিত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি সকালেও জানতে পারেননি। কিছুক্ষণের মধ্যে কালো পোষাক পরিহিত অস্ত্রধারী একদল পশু তাঁর কেবিনের দরজায় আঘাত হানতে থাকে। ফণিদার ভ্রাতুষ্পুত্র ভাস্কর দরজা খুলে দেয়ামাত্র পশুরা অশ্রাব্য ভাষায় ফণিদাকে গালাগাল করতে থাকে এবং টেনে-হিঁচড়ে রুম থেকে বের করে তাঁকে নিয়ে রওয়ানা দেয়। তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে- একথা ফণিদা জিজ্ঞেস করলে একটা পশু উত্তর দেয়- রাস্তার ওপারেই রেডিও স্টেশনে, ওখানে খন্দকার মোস্তাক বসা আছে, সেখানে যেতে হবে। হাসপাতালের ডাক্তার-নার্স সকলের প্রিয় দাদার এ অবস্থা দেখে তারা সমস্বরে চিৎকার করে বলতে থাকেন, দাদাকে নিয়ে যাচ্ছে, দাদাকে নিয়ে যাচ্ছে। চিৎকার-চেচামেচি শুনে পাশের অন্য একটি কেবিনে তখন চিকিৎসাধীন বাংলার অমর পল্লীকবি জসিমউদ্দিন বের হয়ে আসেন। তিনি খুনীদের উদ্দেশ্যে বলেন- “দাদাকে তোমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছ? উনি অসুস্থ, এভাবে টানা-হিঁচড়ায়তো উনি মারা যাবেন। উনি নিতান্ত একজন ভদ্রলোক। ওনার সাথে তোমরা এরকম জঘন্য আচরণ করছো কেন?“ অন্য কেবিন থেকে তৎকালীন চিকিৎসাধীন প্রধান বৌদ্ধধর্ম গুরুও বের হয়ে এসে পশুদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের উভয়ের চেষ্টা বিফল হয়। পশুরা ফণিদাকে নিচে নামিয়ে রাস্তা পার হবে, এমন সময় তিনি পিছনে ফিরে দেখেন ভাস্করকে হাতমোড়া করে তাঁর সাথেই নিয়ে যাচ্ছে। তিনি হাটা থামিয়ে বলেন- “ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আপনারা? ওকে ছেড়ে দিন, নইলে আমি যাব না”। অগত্যা তারা ভাস্করকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এরপর রেডিও স্টেশনে যে রুমে ফণিদাকে নিয়ে বসানো হয়, আবছা অন্ধকার, সেখানে মোস্তাক, তাহের ঠাকুর এবং ওয়াদুর রহমানকে দেখা যায়। অন্য দু’জন মুখ চাওয়াচাওয়ি করে কিছু না বললেও মোস্তাক বলে ওঠে- “একি দাদা, আপনি এখানে? এই তোমরা ওনাকে এখানে নিয়ে এসেছো কোন? দাদা আপনি চলে জান। দরকার হলে আপনাকে ডাকা হবে।” (চলবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×