somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশী তেল-গ্যাস কোম্পানীর দালাল অধ্যাপক হোসেন মনসুরের গালে আমার কয়েকটি চপেটাঘাত

১৭ ই জুন, ২০১১ রাত ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটু আগে একুশে টিভিতে একুশের রাত অনুষ্ঠানটা দেখলাম যেখানে আলোচনার মূল বিষয় ছিল কনোকোফিলিপস এর সাথে বাংলাদেশের বর্হিসমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের নতুন চুক্তি। এখানে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, আরও একজন এবং পেট্রোবাংলার বর্তমান চেয়ারম্যান (আসলে বিদেশী কোম্পানীর দালাল) ড. হোসেন মনসুর সাহেব উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাটা শুনে অনেক কিছুই বুঝলাম - অর্থাৎ কিনা এবারও আমাদের দেশের স্বার্থ বর্হিসমুদ্রেই তলিয়ে দেবার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এই দালাল হোসেন মনসুর কয়েকটা যুক্তি দিলেন যার বিপরীত চিত্র তার কথাতেই ফুটে উঠল, তার প্রেক্ষিতেই তার গালে আমার এই চপেটাঘাত:

চপেটাঘাত ১:
উনি বললেন বর্হিসমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন এখন আমাদের সার্বভৌমত্বের একটা প্রশ্ন হিসাবে দাড়িয়ে গেছে, কেননা ভারত আর মায়ানমার আমাদের সমুদ্র সীমার একটা অংশ দাবী করে বসেছে এবং তারাও সমুদ্রে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তাই এই চুক্তির মাধ্যমে এখনই অনুসন্ধান শুরু না করলেই নয়।

আবার দালালটা এও বললেন যে ভারত আর মায়ানমারের সাথে বিরোধপূর্ণ জায়গা বাদ দিয়ে বাকি ব্লকটুকু কনোকোফিলিপস কে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ বিদেশী কোম্পানীকে যে ব্লক দেয়া হয়েছে তা নিয়ে কোন দেশের সাথেই আমদের কোন বিরোধ নেই।

তাহলে দালালটা কেন বলল যে বর্হিসমুদ্রে এই অনুসন্ধান আমাদের সার্বভৌমত্বের একটা ব্যাপার? গাধাটার কাছে আমার প্রশ্ন রইল।

চপেটাঘাত ২:
দালালটা বলল বিদেশী কোম্পানীগুলোর কাছে আমাদের যেতে হয় কেননা আমাদের সে অর্থ, প্রযুক্তি বা দক্ষতা নেই, তাই বর্হিসমুদ্রে দেশী কোম্পানীর পক্ষে অনুসন্ধান সম্ভব না। আর এ কারণেই অতীতে বিদেশী কোম্পানীকে দেশের ভেতরেও কাজ দেয়া হয়েছে। অথচ এই বিদেশী কোম্পানীদের দক্ষতার কল্যানেই আমাদের দেশে দুবার ভয়াবহ গ্যাসকূপ বিস্ফোরণ হয়েছে যার ক্ষতিপূরণ আজও আমরা পাইনি। আর আমাদের দেশী অদক্ষ (দালালের ভাষায়) কোম্পানীদের গ্যাসকূপে আজও এমন কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া আমাদের দেশী কোম্পানীর কাছ থেকে সরকার প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস কেনে ৭ টাকা দরে আর সেই একই সময়ে একই পরিমান গ্যাস বিদেশী কোম্পানীর কাছ থেকে সরকার কেনে ২৫৬ টাকায়। তাহলে কিভাবে আমাদের দেশী কোম্পানী অদক্ষ হয় যেখানে তারা মাত্র ৭ টাকায় গ্যাস বিক্রি করেও লাভ করতে পারে আর কিভাবে বিদেশী কোম্পানী দক্ষ হয় যেখানে তাদের সেই একই পরিমান গ্যাস ২৫৬ টাকায় বিক্রি করে লাভ করতে হয়? এর এখানে সরকার গ্যাস কেনার ক্ষেত্রে দেশী কোম্পানীকে যে দাম দিচ্ছে বিদেশীদের দিচ্ছে তার ৩৬ গুনেরও বেশি!!!! তাহলে পুজির অভাব হবে না কেন?

চপেটাঘাত ৩:
দালালটা বলল পেট্রোবাংলাকে এখন কোন ভর্তুকি দিতে হয় না। পেট্রোবাংলা বিদেশী কোম্পানীর কাছ থেকে প্রতিহাজার ঘনফুট গ্যাস কেনে ২৫৬ টাকায়, আর সিএনজি পাম্পে (যেখানে গ্যাসের দাম সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে) সে গ্যাস বিক্রি করে ২৫ টাকায়! তাহলে এই ২৩১ টাকার যে ঘাটতি সেটা ঘাটতি নয়তো কি ? আর এটা কার পকেট থেকে আসে। দালালদের পকেট থেকে নিশ্চয়ই নয়!

উপরে দালালটার একট ছবি দিলাম, দেখে থুতু দিতে ইচ্ছা করছে। তবে এ তো পুতুল মাত্র, পেছনে আমাদের নেতানেত্রীরা আর তাদের মোসাহেব আর আমলারা (যেমন তৌফিক ইলাহি চৌ.) আছেন। আর সমান ভাবে আছেন আমাদের বিরোধী দল; কারণ ম্যাডামের বাড়ি নিয়ে গেল বলে যে দল হরতাল দিতে পারে তারা এখন কোন রা টি কেন করছে না?!! অথচ দেশের স্বার্থ অতলে তলিয়ে দেবার উপক্রম।

এই অনুষ্ঠানেই জানলাম উইকিলিকসের তথ্যমতে সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি আমাদের জ্বালানি মন্ত্রনালয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তৌফিক ইলাহি চৌ. এর সাথে সাক্ষাৎ করে বলে দিয়ে এসেছিলেন যে মার্কিন কোম্পানী কনোকোফিলিপসকে ব্লক বরাদ্দ দিতে হবে - তাহলে এই হল আসল কথা!!

আল্লাহই জানেন আমাদের দেশটাকে এই দালালদের চক্র থেকে কবে রক্ষা করবেন! তবে আমি যেভাবে পারি এই লুটেরা চুক্তিবাস্তবায়নের বিপক্ষে থাকবো।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১১ রাত ৩:৪১
১৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×