somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আফগান মাংশে

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এই যে! হ্যাঁ আপনেকি বলছি আজকাল দুচার টুকরো লিথিয়াম ছাড়া আপনার মোটেই চলেনা। ফোনে রিং বাজলো? আচ্ছা, তার ব্যাটারি দিব্যি লিথিয়ামে চার্জ হয়। বিছানায় হেলান দিয়ে ল্যাপটপে লেখা পড়ছেন? তা পড়তেই পারেন কারণ আজকাল টেবিলযন্ত্রের চেয়ে কোলযন্ত্রের প্রতিই মানুষের আগ্রহ বেশী ।সেটিকে ওল্টালেও দিব্যি আরেকটুকরো লিথিয়াম পাবেন।টেবিলের পাশে বাড়ির পিচ্চি বেশী তাফালিং করছে? ছবি তুলে রাখবেন? তার ব্যাটারীতেও লিথিয়াম। আর বছর দশেকের মধ্যে যে গাড়িতে চড়বেন তাও লিথিয়াম ব্যাটারী চালিত হবার সম্ভাবনা ধরেন সিকিভাগ।কারণ হালকা, উচ্চ তাপ ক্ষমতাসম্পন্ন ধাতুটি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটারীর এনোড হিসেবে সর্বক্ষেত্রে প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়ামের সাম্প্রিতিক ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সাথেই এর উৎসের সংখ্যা কিন্তু তেমন বাড়ছে না। আজকালকার সময়ে চিলি এবং আর্জেন্টিনা সাথে অজিরা মিলে অধিকাংশ চাহিদার যোগান দিচ্ছে। সম্প্রতি চীনেরাও কমবেশী উৎপাদন শুরু করেছে।

লিথিয়াম প্রাকৃতিকভাবে কমবেশী পাওয়া গেলেও তাকে বিশুদ্ধভাবে আলাদা করা মনে হয় বেশ ঝামেলার কাজ। লিথিয়াম মেশা নোনাপানি থেকেই সম্ভবত কিঞ্চিত কম খরচে এই বস্তু আহরন করা সম্ভব। আর এই রকম পানির বৃহত্তম উৎস হল বলিভিয়ার ইউনি হ্রদে। নাম শোনেন নাই? ম্যাটের নাচানাচির দ্বিতীয় ভিডিওটি দেখেছেন? না দেখলে প্রথম পনের সেকেন্ড দেখে নেন।



শ্বাসরুদ্ধকর রকমের ভয়াবহ সৌন্দর্যের আধার এই হ্রদটি খুব অল্পদিনেই ছিড়েখুঁড়ে একাকার করে ফেলবে মনে হয় আন্তর্জাতিক চক্র। কাছাকাছি রকমের একটা গল্প ছিল বন্ডের কোয়ান্টম অফ সোলেস মুভিটিতে। মনে পড়ে? তবে আসলেই কাছাকাছি রকমের চক্রান্ত সম্ভবত চলছে বলিভিয়াতে খাবার পানি নিয়ে। কই যেন একবার পড়েছিলাম বলিভিয়ার সরকার পরিকল্পনা করছে তাদের লিথিয়াম তারা নিজেরা উৎপাদন করে প্রয়োজনে রপ্তানী করবে। আমি বলব স্লিম চান্স!

সমস্যা খানিকটা সেরকমই আফগানীদের।প্রাচীনকাল থেকেই কিছু আখরোট-বাদাম আর আজকালকার পপিচাষ ছাড়া তেমন কোন আয়ের উৎস নেই এই ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া দেশে।কদিন আগেই ন্যুয়র্ক টাইমস বোমা ফাটালো (রিপোর্টটি না পড়তে পারলে এখান থেকে পাসওয়ার্ড দেখে নিন ) এই বলে যে মাটির তলায় লিথিয়ামের যেই পরিমাণ সংগ্রহ সাম্প্রতিক সময়ে আবিষ্কার হয়েছে তাতে দিব্যি সাতপুরুষ পায়ের ওপরে পা তুলে খাবার জন্য যথেষ্ট। ভিন্ন রিপোর্টে যদিও বলা হচ্ছে যে, মার্কিন আর রাশান ভূবিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরেই আফগানিস্তানের এই ডিপোর কথা জানতো কিন্তু ওপর মহলে এই নিয়ে তেমন সাড়া না থাকায় আর এই নিয়ে আগানো হয়নি।

দুর্বল ব্যাবস্থাপনার অস্থিতিশীল রাষ্ট্রের যখন বিপুল পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ আবিষ্কার হয়, তখুনি আমি বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যাই। এমনিতেই ভোটাভুটির আগে থেকেই ওবামার নজর ছিল ইরাক থেকে সরিয়ে আফগানিস্তানের দিকে সামরিক শক্তি নিয়োগের। এখন আশঙ্কা করছি তার এই আকাঙ্খা বহুদূর আর বহুদিনের হবে।

যদি লিথিয়াম আহরণের দিকে যায় তাহলে যথারীতি ওপরমহলের হাতেগোণা পরিবার তারছিড়া রকমের পয়সাওয়ালা হয়ে যাবে আর পায়ে ধরে আমেরিকান কিছু মাইনিং কোম্পনী “সুলভে” কাজ করবে। আর গণতন্ত্র বলেন বা সুশাসনই বলেন তার পথ মোটামুটি চিরদিনের জন্য এই হার না মানা জাতির কাছ থেকে বন্ধ হয়ে যাবে।

তবে যুদ্ধবাজ এই প্রজাতি সেই আলেক্সান্ডারের সময় থেকে বিদেশীদের জন্য মাথাব্যাথা ছিল আছে এবং সম্ভব থাকবে। এখন এই মুহুর্তে আফগানিস্তানে কিন্তু ফুল স্কেল যুদ্ধ চলছে। আজকালকার মিডিয়া তেমন ফলাও করে প্রচার না করলেও মার্কিন জেনারেলদের এখনো ঘুম হারাম করে ছাড়ছে এই ভাঙ্গাচোরা বিরতিহীন পাগলারা। অনেকেই হয়তো আগেই দেখেছেন কিন্তু সেই এলাকার অস্ত্রবাজীর প্রত্যক্ষদর্শী রিপোর্টটি আবার শেয়ার করলাম।



আপনা মাংশে হরিণা বৈরি, আপনা লিথিয়ামে?

বহুদিন আগে এক বুড়োর কাছে শুনেছিলাম তাদের ছেলেবেলায় কাবুলিওয়ালা আসতো। রাস্তায় ডেকে বেড়াতোঃ

কাবুল কি আনার,
আনে মে চার,
খাও বাবু,
বাড়া মযাদার

সেই দিন কি আর কখনো আসবে মানুষ নিশ্চিন্তে বলতে পারবে? কাবুলিওয়ালা! তোমার ঝোলার ভেতর কি?

(কন্সপিরেসি থিউরি হয়ে গেল নাকি? আগামী দশকে দেখা যাবে )
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×