somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবেগগুলো যে কোথায় গেল?!!!!

০৫ ই আগস্ট, ২০০৮ রাত ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠায় ৫ মিনিট কি বোর্ডের উপর হাতদুটো পড়ে আছে অনড় হয়ে, কি লিখব কি লিখব একটা নিশ্চুপ অস্থিরতা ভেতরে ভেতরে। আবেগগুলো যে কোথায় গেল?! ভুল করে পুরোনো কাগজের সাথে মুঠো পাকিয়ে ওয়েষ্ট বক্সে ফেলে দিইনিতো?!! নাকি এই মধ্যবয়সের ভারে সব আবেগ চাপা পড়ে গেল?!! হায়! হায়!! তা কি করে হয়, এখনওতো বিয়েই করলাম না! আবেগ ছাড়া বউকে পোষ মানাবো কি করে?! থাক, এই চিন্তায় মাথায় আরও দুটো পাঁকা চুল বাড়াতে চাই না। কিন্তু আবেগগুলো যে কোথায় গেল?!!! কোনো অপাত্রে খরচ করিনিতো?? নাহ্, মনে পড়ছে না। নাকি স্মৃতিশক্তিটাও গেল!!

অফিস আওয়ার ৮ ঘন্টা। ছুটির পর আরও ৭ ঘন্টা বসা হয় অফিসে। অযথাই বসি। হৃদপিন্ডের ঢিপ ঢিপ শব্দ আর মাউসের ক্লিক ক্লিক শব্দ ছাড়া আমার অফিস রুমটা এক প্রকার সুনসানই কাটে রাত ১২টা পর্যন্ত। রাত ১২ টায় পরের দিনের অফিস লেট এর ভয়েই চেয়ার থেকে উঠি। মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে অদৃশ্য অশ্রু মুছে কোম্পানীর দেয়া রুমের উদ্দেশ্য পা বাড়াই। পথে একটা শাওয়ার্মা প্রতিদিনের সঙ্গী হয়, ওতে কামড় বসাতে বসাতে পথ মাড়িয়ে চলে আমার পা দুটো, অনৈচ্ছিক পেশীর মতো, মস্তিস্কের নির্দেশে।

ক্লান্ত দেহে মনে হয় যেন মরুময় সাহারা পাড়ি দিচ্ছি, বোধহীন, একঘেয়ে ভাবে। এক সময় কিভাবে যেন পথটা শেষ হয়, আমি রুমে ফিরি। জুতো জোড়া খুলে, ঘামে আধভেজা কাপড় ছেড়ে রুমের খোলস পড়ি।

ঘড়িতে তখন রাত পোনে একটা। কিন্তু তাতে কি! টিভিতে নিজ দেশের হালচালটা একটু দেখে নেয়া যাক। ট্রান্সমিটারের সুইচটা চেপে ওয়্যারলেস হেডফোনটা কানে এটে টিভি রিমোর্টের পাওয়ার বাটনটা চেপে ধরি।

একসময় মনেহয় শরীরের কাছে মনটা পরাজিত। দেহ ঢলে পড়তে চায় ঘুমে। হেডফোনটা খুলে, রিমোর্টে পাওয়ার চেপে, বালিশটা উল্টে দিয়ে আর একটা বুকে চেপে লম্বা দম ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ি।

টিট টিট.. টিট টিট... টিট টিট... মোবাইলের এ্যালামটা বাজতে থাকে ৭ টায়। তারপর ১৫ মিনিটের একটা মালাই ঘুমের পর, হুড়মুড় করে উঠে বসি বিছানায়। দেয়াল ঘড়িতে সময় দেখে শুরু হয় ছুটোছুটি তৈরী হতে অফিসের উদ্দেশ্যে। সকালের নাস্তা হয় শুধু অফিসের সার্ভ করা কফিতে। তারপর এই কাজ, ঐ কাজ করতে করতে দুপুর গড়ায়।

লাঞ্চের পর গরম কফির সাথে চলে পেন্ডিং কাজ শেষ করার পালা। এক সময় ৫ টা বাজে। অফিসের সব লোকগুলো হুড়মুড় করে হাঁসের ঝাকের মতো প‌্যাক প‌্যাক করতে করতে বেড়িয়ে যায়। শুধু থেকে যাই আমি, আমার হৃদপিন্ডের ঢিপ ঢিপ আর মাউসের ক্লিক ক্লিক শব্দগুলো।

আবেগগুলো যে কোথায় গেল?!! টেবিলে কাগজের নিচে, ড্রয়ারে, বুক পকেটে সব খানে খুজলাম। ধুর্ আবেগগুলো যে কই রাখলাম?!! বাতিল কাগজের সাথে ওয়েষ্ট বক্সে ফেললাম নাতো?!! অফিস বয়তো রোজ চারটেয় বক্স পরিষ্কার করে!! হায়! হায়!! আবেগগুলো এখন কোথায় পাই?!! এখনওতো বিয়েও করলাম না!!! বউকে যে কি করে পোষ মানাবো?!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:৫৭
১৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×