প্রশ্ন ফাঁসের কারণে ৩৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার স্থগিতের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই ঘটনার সঙ্গে কারা এবং কিভাবে জড়িতÑ তা নিয়েও চলছে নানা বিশেষণ। সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পিএসসি, বিজি প্রেস, দুটি কোচিং সেন্টার এবং ছাত্রলীগের সমন্বয়ে গড়া একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। ওই সিন্ডিকেটে বিগত জোট সরকারের আমলে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের কয়েকজন সদস্যও রয়েছে। জানা গেছে, বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে গোয়েন্দারা এখন তদন্তে নেমেছে।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি সরকারি কর্ম কমিশনও (পিএসসি) গুর“ত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা এ বিষয়টিকে গুজবই বলছেন। সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রোববার এ নিয়ে পিএসসির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পিএসসির দুইজন সদস্য নামপ্রকাশ না করে বলেছেন, তাদের ধারণা প্রশ্ন ফাঁস হয়ে থাকলে তা বিজি প্রেস থেকেই হয়েছে। পিএসসির বিদ্যমান ব্যব¯’ায় সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁসের কোনই সুযোগ নেই। ওই সূত্র আরও জানায়, এরই ভিত্তিতে তারা সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সং¯’াকে বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে।
পিএসসির এক সদস্য জানান, চেয়ারম্যানসহ তারা কেউই রোববার পর্যন্ত প্রশ্নপত্র দেখেননি। কিন্তু‘ গুজবটি ব্যাপকভাবে চাউর হওয়া এবং এ নিয়ে সংবাদপত্রের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই পরীক্ষা ¯’স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কথিত প্রশ্নপত্র তারা সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সহায়তাও কামনা করা হয়েছে। ওই সদস্য জানান, কথিত প্রশ্ন পাওয়ার পর তা মূল প্রশ্নের সঙ্গে মেলানো হবে। পিএসসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও দেশবাসীর কাছে এ ব্যাপারে সহায়তা চেয়ে তথ্য প্রমাণ চাওয়া হয়েছে।
পিএসসি চেয়ারম্যান এটি আহমেদুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছেÑ এমন বিষয় নিশ্চিত হয়ে তারা পরীক্ষা ¯’গিত করেননি। বরং এ নিয়ে ব্যাপক গুজব থাকায় পরীক্ষার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সংশয়-সন্দেহ নিরসন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই পরীক্ষা ¯’গিত করা হয়েছে। তারা মনে করছেন, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কিনা, সেটি কথিত প্রশ্নের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার পর বলা যাবে। তিনি বলেন, শিগগিরই ওই পরীক্ষার পরিবর্তিত তারিখ ঘোষণা করা হবে। পিএসসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, তারা নিজস্ব ম্যাকানিজমে এর তদন্ত করছেন। গোয়েন্দা সং¯’ারও সহায়তা নেয়া হবে। এরপর প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পেলে এবং এর সঙ্গে জড়িত কাউকে পেলে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
ওদিকে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার মূলে কাজ করেছে বিজি প্রেসের কয়েকজন কর্মচারী। প্রশ্ন ছাপানো কার্যক্রম তথা প্রশ্ন সেটিং, কম্পোজ, ছাপাখানার কাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এমন ধারণাই করছেন তারা। এজন্য গোয়েন্দারা ওই কাজের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রাথমিক সন্দেহে রেখে কাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক দুটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সং¯’ার সদস্যরা জানান, বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর তা পিএসসির দুইজন কর্মকর্তা, রংপুরের গঙ্গা চড়ায় ২০১০ সালে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির সাবেক সদস্য মাহফুজুর রহমানের কয়েকজন আÍীয়ের মাধ্যমে ফাঁসের পরিকল্পনা হয়। ঢাকা শহরের বাইরে যারা প্রশ্ন পেয়েছে, তা তেমনটি প্রকাশ হয়নি। কিš‘ ঢাকা শহরে বাজারজাত করতে গিয়েই বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। ঢাকায় বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার মাধ্যমে বাজারজাত করা হয় বলে গোয়েন্দারা জানান। সূত্র জানায়, এর মধ্যে ‘ম’ আদ্যাক্ষরের একজন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একই নামের এক শীর্ষ নেতা, ‘জ’ আদ্যাক্ষরের আরেক নেতা, বঙ্গবন্ধু হলের এক নেতাকে তারা সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন। এক্ষেত্রে তারা ওইসব নেতার মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। সূত্রটি আরও জানায়, ওই চক্রটিই জোট সরকারের আমলে প্রশ্ন ফাঁস করেছিল। অভিজ্ঞতার আলোকে তারা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস করে। কিš‘ রংপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় গণহারে মডেল টেস্ট নিতে গিয়ে ধরা খেয়ে যায়। ওই ঘটনায় পিএসসির সাবেক ওই সদস্যের ভাগ্নেসহ আÍীয়স্বজন, বিজি প্রেসের কয়েকজন কর্মচারী ধরা খায়। ওই চক্রটিই লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থী পাস করিয়ে পরে তাদের মৌখিক পরীক্ষা পর্ব পার করানোর চুক্তিও করে থাকে বলে জানা গেছে। জোট সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্ন দিলে তা ব্যাপক আকারে ফাঁস হয়ে যায়Ñ এমন ঘটনার কারণে পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সাধারণ কলেজ এবং ঢাকার বাইরের এলাকা বেছে নেয়। যে কারণে পিএসসির সাবেক সদস্য মাহফুজুর রহমান যেই বিসিএসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, সেই বিসিএসে রংপুরের একটি কলেজেরই শতাধিক শিক্ষার্থী চান্স পেয়েছিল।
সংশিষ্টরা জানান, তখনই ‘প্যাকেজ পদ্ধতি’তে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা আবিষ্কৃত হয়েছিল। এবারও সেই একই পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে যুগান্তরে টেলিফোনে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা এ তথ্য জানান। তারা বলেন, এই ‘প্যাকেজ পদ্ধতি’টি হলÑ চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী সিন্ডিকেটের চুক্তি হয়। পরীক্ষার আগের দিন বা রাতে সংশিষ্ট প্রার্থী ওই সিন্ডিকেটের কব্জায় চলে যান। গোপন ¯’ানে এক প্রকার নজরবন্দিই হতে হয় তাকে। সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনসহ জমা নেয়া হয়। ফলে বাইরের জগৎ থেকে এক প্রকার বি”িছন্ন হয়ে পড়তে হয়। তাদের তত্ত্বাবধানে লেখাপড়া শেষে পরীক্ষার দিন সকালে ছাড়া পেলে সোজা যেতে হয় পরীক্ষার হলে। এ পদ্ধতির নামই ‘প্যাকেজ প্রশ্ন ফাঁস’। সংশিষ্টরা জানিয়েছেন, এভাবে প্রার্থী খুঁজতে গিয়ে দাওয়াতপ্রাপ্ত কিš‘ অর্থ দিতে অপারগ এমন প্রার্থীরাই তথ্য ফাঁস করে দেয়। এ ঘটনা ২৭ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রকাশ পায়। তবে শুক্রবার রাত আর শনিবার সকালে প্রশ্নের নামে আলাদা চারটি সেট শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে চলে যায়।
তথ্য বিবরণী : এদিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি বলেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন এবং সরকারের বিশেষ সং¯’ার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কমিশনের বিশেষ সভায় পর্যালোচনান্তে এ বিষয়ে প্রার্থীদের মধ্যে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসনের জন্য ৭ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিব্য ৩৩তম বিসিএসের আবশ্যিক ও পদ সংশিষ্ট বিষয়ের লিখিত পরীক্ষাগুলো কমিশন কর্তৃক ¯’গিত করা হয়েছে। গুর“ত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কথিত ফাঁসের মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িত জালিয়াত চক্রের হীন কার্যক্রম সমূলে বন্ধ করার জন্য প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সংশিষ্ট জালিয়াত চক্র সম্পর্কে তথ্য, উপাত্ত বা কথিত প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন আলামত কারও কাছে থাকলে তা সরকারি কর্মকমিশনকে সরবরাহ করার জন্য সংশিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকমিশন সবার সহযোগিতা কামনা করছে।প্রশ্ন ফাঁসের কারণে ৩৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ¯’গিতের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় শুর“ হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই ঘটনার সঙ্গে কারা এবং কিভাবে জড়িতÑ তা নিয়েও চলছে নানা বিশেষণ। সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পিএসসি, বিজি প্রেস, দুটি কোচিং সেন্টার এবং ছাত্রলীগের সমন্বয়ে গড়া একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। ওই সিন্ডিকেটে বিগত জোট সরকারের আমলে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের কয়েকজন সদস্যও রয়েছে। জানা গেছে, বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে গোয়েন্দারা এখন তদন্তে নেমেছে।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি সরকারি কর্ম কমিশনও (পিএসসি) গুর“ত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা এ বিষয়টিকে গুজবই বলছেন। সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রোববার এ নিয়ে পিএসসির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পিএসসির দুইজন সদস্য নামপ্রকাশ না করে বলেছেন, তাদের ধারণা প্রশ্ন ফাঁস হয়ে থাকলে তা বিজি প্রেস থেকেই হয়েছে। পিএসসির বিদ্যমান ব্যব¯’ায় সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁসের কোনই সুযোগ নেই। ওই সূত্র আরও জানায়, এরই ভিত্তিতে তারা সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সং¯’াকে বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে।
পিএসসির এক সদস্য জানান, চেয়ারম্যানসহ তারা কেউই রোববার পর্যন্ত প্রশ্নপত্র দেখেননি। কিš‘ গুজবটি ব্যাপকভাবে চাউর হওয়া এবং এ নিয়ে সংবাদপত্রের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই পরীক্ষা ¯’গিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উদ্ভূত পরি¯ি’তিতে কথিত প্রশ্নপত্র তারা সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সহায়তাও কামনা করা হয়েছে। ওই সদস্য জানান, কথিত প্রশ্ন পাওয়ার পর তা মূল প্রশ্নের সঙ্গে মেলানো হবে। পিএসসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও দেশবাসীর কাছে এ ব্যাপারে সহায়তা চেয়ে তথ্য প্রমাণ চাওয়া হয়েছে।
পিএসসি চেয়ারম্যান এটি আহমেদুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছেÑ এমন বিষয় নিশ্চিত হয়ে তারা পরীক্ষা ¯’গিত করেননি। বরং এ নিয়ে ব্যাপক গুজব থাকায় পরীক্ষার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সংশয়-সন্দেহ নিরসন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই পরীক্ষা ¯’গিত করা হয়েছে। তারা মনে করছেন, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কিনা, সেটি কথিত প্রশ্নের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার পর বলা যাবে। তিনি বলেন, শিগগিরই ওই পরীক্ষার পরিবর্তিত তারিখ ঘোষণা করা হবে। পিএসসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, তারা নিজস্ব ম্যাকানিজমে এর তদন্ত করছেন। গোয়েন্দা সং¯’ারও সহায়তা নেয়া হবে। এরপর প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পেলে এবং এর সঙ্গে জড়িত কাউকে পেলে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
ওদিকে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার মূলে কাজ করেছে বিজি প্রেসের কয়েকজন কর্মচারী। প্রশ্ন ছাপানো কার্যক্রম তথা প্রশ্ন সেটিং, কম্পোজ, ছাপাখানার কাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এমন ধারণাই করছেন তারা। এজন্য গোয়েন্দারা ওই কাজের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রাথমিক সন্দেহে রেখে কাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক দুটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সং¯’ার সদস্যরা জানান, বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর তা পিএসসির দুইজন কর্মকর্তা, রংপুরের গঙ্গা চড়ায় ২০১০ সালে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির সাবেক সদস্য মাহফুজুর রহমানের কয়েকজন আÍীয়ের মাধ্যমে ফাঁসের পরিকল্পনা হয়। ঢাকা শহরের বাইরে যারা প্রশ্ন পেয়েছে, তা তেমনটি প্রকাশ হয়নি। কিš‘ ঢাকা শহরে বাজারজাত করতে গিয়েই বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। ঢাকায় বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার মাধ্যমে বাজারজাত করা হয় বলে গোয়েন্দারা জানান। সূত্র জানায়, এর মধ্যে ‘ম’ আদ্যাক্ষরের একজন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একই নামের এক শীর্ষ নেতা, ‘জ’ আদ্যাক্ষরের আরেক নেতা, বঙ্গবন্ধু হলের এক নেতাকে তারা সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন। এক্ষেত্রে তারা ওইসব নেতার মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। সূত্রটি আরও জানায়, ওই চক্রটিই জোট সরকারের আমলে প্রশ্ন ফাঁস করেছিল। অভিজ্ঞতার আলোকে তারা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস করে। কিš‘ রংপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় গণহারে মডেল টেস্ট নিতে গিয়ে ধরা খেয়ে যায়। ওই ঘটনায় পিএসসির সাবেক ওই সদস্যের ভাগ্নেসহ আÍীয়স্বজন, বিজি প্রেসের কয়েকজন কর্মচারী ধরা খায়। ওই চক্রটিই লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থী পাস করিয়ে পরে তাদের মৌখিক পরীক্ষা পর্ব পার করানোর চুক্তিও করে থাকে বলে জানা গেছে। জোট সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্ন দিলে তা ব্যাপক আকারে ফাঁস হয়ে যায়Ñ এমন ঘটনার কারণে পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সাধারণ কলেজ এবং ঢাকার বাইরের এলাকা বেছে নেয়। যে কারণে পিএসসির সাবেক সদস্য মাহফুজুর রহমান যেই বিসিএসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, সেই বিসিএসে রংপুরের একটি কলেজেরই শতাধিক শিক্ষার্থী চান্স পেয়েছিল।
সংশিষ্টরা জানান, তখনই ‘প্যাকেজ পদ্ধতি’তে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা আবিষ্কৃত হয়েছিল। এবারও সেই একই পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে যুগান্তরে টেলিফোনে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা এ তথ্য জানান। তারা বলেন, এই ‘প্যাকেজ পদ্ধতি’টি হলÑ চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী সিন্ডিকেটের চুক্তি হয়। পরীক্ষার আগের দিন বা রাতে সংশিষ্ট প্রার্থী ওই সিন্ডিকেটের কব্জায় চলে যান। গোপন ¯’ানে এক প্রকার নজরবন্দিই হতে হয় তাকে। সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনসহ জমা নেয়া হয়। ফলে বাইরের জগৎ থেকে এক প্রকার বি”িছন্ন হয়ে পড়তে হয়। তাদের তত্ত্বাবধানে লেখাপড়া শেষে পরীক্ষার দিন সকালে ছাড়া পেলে সোজা যেতে হয় পরীক্ষার হলে। এ পদ্ধতির নামই ‘প্যাকেজ প্রশ্ন ফাঁস’। সংশিষ্টরা জানিয়েছেন, এভাবে প্রার্থী খুঁজতে গিয়ে দাওয়াতপ্রাপ্ত কিš‘ অর্থ দিতে অপারগ এমন প্রার্থীরাই তথ্য ফাঁস করে দেয়। এ ঘটনা ২৭ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রকাশ পায়। তবে শুক্রবার রাত আর শনিবার সকালে প্রশ্নের নামে আলাদা চারটি সেট শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে চলে যায়।
তথ্য বিবরণী : এদিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি বলেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন এবং সরকারের বিশেষ সং¯’ার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কমিশনের বিশেষ সভায় পর্যালোচনান্তে এ বিষয়ে প্রার্থীদের মধ্যে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসনের জন্য ৭ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিব্য ৩৩তম বিসিএসের আবশ্যিক ও পদ সংশিষ্ট বিষয়ের লিখিত পরীক্ষাগুলো কমিশন কর্তৃক ¯’গিত করা হয়েছে। গুর“ত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কথিত ফাঁসের মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িত জালিয়াত চক্রের হীন কার্যক্রম সমূলে বন্ধ করার জন্য প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সংশিষ্ট জালিয়াত চক্র সম্পর্কে তথ্য, উপাত্ত বা কথিত প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন আলামত কারও কাছে থাকলে তা সরকারি কর্মকমিশনকে সরবরাহ করার জন্য সংশিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকমিশন সবার সহযোগিতা কামনা করছে।
দৈনিক যুগান্তর
০৮ অক্টোবর ২০১২