বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট আজ বুধবার বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। পুলিশের হামলায় জোটের আটজন নেতা-কর্মী আহত হন। মিছিল থেকে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করলেও পরে তাঁদের ছেড়ে দেয়।
আটক হওয়া ছাত্ররা হলেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) রাজশাহী জেলা শাখার সদস্য সচিব দেবাশীষ রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন (মার্কেটিং), নেতা সাদেকুল ইসলাম (ইংরেজি), আলমগীর হোসেন (নৃবিজ্ঞান), বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক উত্সব মোসাদ্দেক (সমাজকর্ম)। তাঁরা সবাই পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হন।
গত শনিবার ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের চার নেতাকে আটক করে। পরে প্রক্টরের হস্তক্ষেপে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে মিছিল করার অপরাধে ব্যবস্থা নিতে পারলেও পুলিশের সামনে অস্ত্র বের করলেও ছাত্রলীগের কেউ এখনো আটক হননি। তাঁরা প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর পর থেকে ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারেনি। তবে অভিযোগ রয়েছে, নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ছাত্রলীগ যথারীতি তাদের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। এমনকি সশস্ত্র অবস্থায় অন্যদলের নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা চালালেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু অন্য দলের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করলেও পুলিশ তাদের নাজেহাল করেছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের সামনেই ছাত্রদলের মিছিলে হামলা করেছিল। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরে ছাত্রলীগ রাতেই ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মিছিল করে। গত ২ অক্টোবর ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিবির কর্মীদের ওপরে সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতা প্রকাশে পুলিশের সামনে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছুঁড়েছে। গুলি ভরেছে। পরের দিন ছাত্রলীগ ক্যম্পাসে মিছিল বের করে। এতে ক্যাম্পাসের বাইরের ছাত্রনেতারাও অংশগ্রহণ করেন। মিছিল শেষে ক্যাম্পাসে তারা সমাবেশ করেন। পুলিশ তাদের কিছুই বলেনি।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুজ্জামান অরফে খানকীর পোলা বলেন, ‘এটা ঠিক না যে, আমরা অন্যদের ধরছি, ছাত্রলীগকে ধরছি না। আসলে সেদিনের ঘটনাটি ‘একটি অ্যাকসিডেন্ট’। এর পরে গত পরশুদিন (আট অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাঁরা বলেছেন সিন্ডিকেটের পরবর্তী সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো রাজনৈতিক সংগঠন ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারবে না।
ছাত্রলীগের অস্ত্রধারীদের কেন ধরা হচ্ছে না এর জবাবে মনিরুজ্জামান অরফে খানকীর পোলা বলেন, আমাদের কাছে ছাত্রলীগ বলে কোনো কথা নেই ‘ক্রিমিনাল ইজ ক্রিমিনাল।’ ছাত্রলীগের ওই ছেলেদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
প্রথম আলো হইতে কাট-পেষ্ট
১১/১০/২০১২