মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা এখনো অবরুদ্ধ অবস্থায় আতঙ্কিত দিন কাটাচ্ছে। গত জুন ও অক্টোবর মাসে দু'দফা সহিংসতার শিকার হয়ে অনেকেই পরিবারের সদস্য হারিয়ে বা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ত্রাণ শিবির অথবা অস্থায়ী তাবুতে আশ্রয় নিয়েছে।
মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলো নিরাপত্তার নামে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কিংবা সীমান্ত রক্ষীবাহিনী নাসাকা ঘিরে রেখেছে। সেখানকার মুসলমান নাগরিকরা কর্মসংস্থান বা জীবিকা নির্বাহের কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।
বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত মিয়ানমারের শহর মংডু ও তার আশপাশের মুসলমান গ্রাম এর আগে হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেখানে কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য পৌঁছায়নি।
মুসলিম অধ্যুষিত আকিয়াব অঞ্চলে যারা তাবু বা ত্রাণ শিবিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন কাটাচ্ছে তারা খাদ্য এবং ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে জ্বর ও নিউমনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি দেখা দিয়েছে। সব বয়সের নারী-পুরুষ এবং শিশুরা অপুষ্টি এবং রোগ ব্যাধির শিকার হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এর মাঝে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা ও হয়রানীর কারণে মুসলমান নারী পুরুষরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
সীমান্তের ওপার থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ খবরে জানা যায়, গত বুধবার রাতে মংডু শহর থেকে তিন মাইল দক্ষিণে বাকগুনা গ্রামে নাসাকা বাহিনীর একটি দল চারজন তরুণীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় গ্রামবাসী তাদের সাহায্যে এগিয়ে এলে নাসাকা বাহিনী গুলি ছুঁড়ে গ্রামবাসীদের তাড়িয়ে দেয়। এরপর নাসাকা বাহিনী পার্শ্ববর্তী বাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আট -দশটি দোকান পুড়ে যায়।
আজ সকালে নাসাকা বাহিনী আবার ওই গ্রামে হানা দেয়। এ সময় আতঙ্কিত পুরুষরা পালিয়ে গেলে নাসাকা সদস্যরা গ্রামের আঠারো থেকে পঁচিশ বছর বয়সী আটজন মহিলাকে ধরে নিয়ে যায় এবং তাদের ক্যাম্পে আটকে রাখে। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আকিয়াবের এক রোহিঙ্গা ত্রাণ শিবিরে গিয়ে সেনাবাহিনীর লোকেরা সেখানকার আশ্রিত মুসলমানদের একটি ছাপানো ফর্মে সই করতে বলে। তাতে নাগরিকত্বের ঘরে বাংলাদেশী লেখা দেখে ত্রাণ শিবিরের লোকেরা সেই ফর্মে সই করতে অস্বীকার করে। এরপর সেনাবাহিনীর লোকেরা সেখান থেকে চার মহিলাসহ আটজনকে ধরে নিয়ে যায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




