somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের ইতিহাস ও খুটিনাটি

১১ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মুসলিম বিশ্বের জন্য জেরুজালেম সর্বদাই একটি স্পর্শকাতর বিষয়। সম্প্রতি পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে জামাতুল বিদা ও শবে ক্বদরের জামাত কে কেন্দ্র করে হয়ে যাওয়া সংঘর্ষ, চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আন্তঃদেশীয় এই প্রেক্ষাপটের কিছু অবশ্য জ্ঞাতব্য ইতিহাস, গ্লোবাল ডিপ্লোম্যাসির চলমান প্যাটার্ন ও এর রাজনৈতিক ব্যাখ্যা জানা থাকা প্রয়োজন (বলে আমি মনে করি)।

• মধ্যযুগীয় জেরুজালেম
দক্ষিণ মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন ভূখন্ড ফিলিস্তিন। এশিয়া-ইউরোপ-আফ্রিকা তিন মহাদেশীয় প্লেটের গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানে বিদ্যমান এই ভূখণ্ড। ফিলিস্তিন ছিলো উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে। স্বভাবতই আরব বংশোদ্ভূত মুসলমানেরা এই অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। ইতোপূর্বে এই ভূখন্ডে ক্রুসেডারদের (খ্রিষ্টীয় ধর্মযোদ্ধা)দখলদারিত্বও চলেছে। এই ক্রুসেডাররা এসেছে পশ্চিমা দেশ থেকে। সেসময় ইহুদি ও মুসলমানদের মধ্যবর্তী সম্পর্কে তেমন বৈরিতার ছাপ ছিলোনা। ঈসা (আ.) ও মরিয়ম (আ.) এর প্রার্থনার জায়গা ও তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় ইতিহাসবিজড়িত হওয়ায় এই অঞ্চল (বিশেষ করে জেরুজালেম ও বায়তুল মোকাদ্দাস বা আল আকসা) খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছেও পবিত্র স্থান। সেই পবিত্র স্থান বিজয়ের উদ্দেশ্য ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে আসে ক্রুসেডাররা। জেরুজালেম যাওয়ার পথে ক্রুসেডারদের হাতে বহু ইহুদি প্রাণ হারায়। জেরুজালেম দখল করেই ক্রুসেডাররা শান্ত ছিলোনা। তারা সে অঞ্চলে জঘন্যতম অপরাধে লিপ্ত হয়, সেখানকার সব ইহুদি ও মুসলমানদের হত্যা করে। অনেক ইতিহাসবেত্তার ভাষ্যমতে ক্রুসেডাররা নারী ও শিশুর রক্তে পা ডুবিয়ে হেঁটেছে। বায়তুল মোকাদ্দাস দখল করে ক্রুসেডাররা একে গীর্জায় পরিণত করে।
পরবর্তীতে সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী তথা আরব বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর শাসক এর হাত ধরে মুসলমানরা পুনরায় জেরুজালেম বিজয় করে। তাঁর সালতানাতে সিরিয়া,মিসর,হেজ্জাজ,উত্তর আফ্রিকা,ইয়েমেন সহ আরও অনেক ভূখণ্ড অন্তর্ভুক্ত ছিল।



• জায়নবাদ (Zionism) বা ইহুদিবাদের সৃষ্টি ।
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইহুদীরা অমানবিক বিদ্বেষ-নির্যাতনের স্বীকার হয়। এর ৬ শতাব্দী পূর্বেও তারা ক্রুসেড গণহত্যার অন্যতম স্বীকার। এসব অত্যাচার নিপীড়নের ইতিহাস থেকেই জায়নবাদী বা ইহুদিবাদী আন্দোলন শুরু হয়। এটি মূলত ইহুদিদের একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিলো ইউরোপের বাহিরে কেবলমাত্র ইহুদীদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র তৈরী করা। এই জায়নবাদ থেকেই ইহুদিদের চোখ পড়ে আরব ভূখণ্ডে তথা ফিলিস্তিনে। [ এছাড়াও ইহুদিরা বিশ্বাস করে তাদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত আদি পিতা আব্রাহাম ও তার বংশধর তথা ইহুদিদের জন্য যে পবিত্রভূমির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ফিলিস্তিন তথা আজকের ইসরায়েলই হচ্ছে সেই অঞ্চল।]
ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা ইহুদীরা ফিলিস্তিনে আসতে শুরু করে। তাদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। তারা মরিয়া হয়ে ওঠে আরব ভূখন্ডে নিজেদের আবাসভূমি স্থাপনের জন্য। কিন্তু তাদের এই অভিবাসন মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরী করতে থাকে।

• বেলফোর ঘোষণা, অটোম্যান সাম্রাজ্যের ভাঙন ও ইহুদিদের আরব ভূখণ্ডে প্রবেশ।
জায়নবাদের পরপরই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজতে শুরু করে। বিশ শতকের শুরুর দিকে অটোম্যান সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে আসছিলো। এই সুযোগে ইউরোপীয় জোটগুলো তাদের প্রভাব বাড়াতে থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পুরোপুরি ভেঙে পড়ে অটোম্যান সাম্রাজ্য এবং এর মাধ্যমে ***ফিলিস্তিন ভূখন্ডের ম্যান্ডেট (ততত্ত্বাবধানের দায়িত্ব) পায় ব্রিটেন***। এছাড়াও পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে ঢোকাতে শুরু করে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। যুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকেই ইহুদি ও আরবদের ফিলিস্তিন নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ব্রিটেন সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের একটি জাতীয় বাসস্থান প্রতিষ্ঠায় সমর্থন জানায়। ফিলিস্তিনে দলে দলে অভিবাসী ইহুদি আসতে থাকে এবং নিজেদের স্থায়ী বসতি গড়ে তোলে। [ বেলফোর ঘোষণা মূলত তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ জে বেলফোর এর পাঠানো একটি চিঠি। যা তিনি ব্রিটিশ জায়নিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি লর্ড রথচাইল্ডকে পাঠিয়েছিলেন। এই চিঠির উদ্দেশ্য ছিলো ইহুদিদের জন্য একটি আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা। ]

• ইসরায়েল- আরব,ফিলিস্তিন সংঘাতের সূত্রপাত। (ও স্বাধীন ইসরায়েল ভূখন্ডের প্রতিষ্ঠা।)
ইহুদিরা ক্রমাগত আরব ভূখণ্ড তথা ফিলিস্তিনে আসতে শুরু করলে সেখানে আরব জাতীয়তাবাদী ও ইহুদিবাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত শুরু হয়। ইহুদি এবং আরব মিলিশিয়া গোষ্ঠীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই-যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ১৯২০ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক কাল পর্যন্ত আরবদের সঙ্গে ইহুদিদের বেশ কিছু সংঘর্ষ হয়। ১৯৩৩ সালে ক্ষমতায় আসেন হিটলার এবং ইহুদিদের উপর চরম নিপীড়ন শুরু করেন। সেখানকার ইহুদিরা পালিয়ে ফিলিস্তিন আসতে শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বেই সংঘটিত হয় তিন বছরব্যাপী আরব বিদ্রোহ। সে বিদ্রোহে নিহত হয় ৫০০০ আরব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লাখ লাখ ইহুদি হত্যা (Holocaust) ইহুদিদের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এক বৈশ্বিক চাপ সৃষ্টি করে। *** এতদিন ব্রিটিশ ম্যান্ডেট এর অধীনে থাকা ফিলিস্তিন অঞ্চলটি ইহুদি আর ফিলিস্তিনি দের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।***
এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল ভূখন্ড। কিন্তু এর পর দিবসেই মিসর-জর্ডান-সিরিয়া-ইরাক মিলে অভিযান চালায় ইসরায়েল অঞ্চলে। এটিই প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। কিন্তু এই যুদ্ধ কোনো সুফল বয়ে আনতে পারেনি বরং জাতিসংঘের ফিলিস্তিনিদের জন্য বরাদ্দকৃত অঞ্চলের অর্ধেকটাই চলে যায় ইসরায়েলের দখলে।
সূচনা হয় ফিলিস্তিনিদের জাতীয় বিপর্যয়ের। এদিনটিই ফিলিস্তিনিদের কাছে "নাকবা" বা বিপর্যয়ের দিন। প্রতিবছর এদিনটি জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয়।
পরবর্তীতে এরূপ আরও তিনটি আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে যথাক্রমে ১৯৫৬,৬৭ ও ৭৩ সালে।
এসকল যুদ্ধে ইসরায়েল একক বিজয় অর্জন করে সেই সাথে দখল করে নেয় গাজা এবং সিনাই উপত্যকা।
এর কিছু বছর পর ১৯৭৮ সালে মিশর এক ঐতিহাসিক সন্ধি বা শান্তি চুক্তি করে ইসরায়েলের সঙ্গে। পরস্পরকে স্বীকৃতি ও সিনাই উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে দুপক্ষ।
পরবর্তীকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত একই পথে হেঁটেছে জর্ডান,সংযুক্ত আরব আমিরাত,বাহরাইন, সুদান ও সর্বশেষ মরক্কো। অর্থাৎ এরা সকলেই বৈশ্বিক চাপ,রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অথবা দেশীয় স্বার্থের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি কায়েম করেছে। কিন্তু আজও মূল সমস্যার সমাধান হয় নি। ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই লেগেই রয়েছে।

• ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যার্থ চেষ্টা।
ইসরায়েল রাষ্ট্র উত্থানের পর যখন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নিজেদের আবাসস্থল হারাচ্ছিল তখন তা দ্রুত ফিলিস্তিনের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে রূপ নেয়। একে একে গঠিত হয় পিএলও (প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন), গঠিত হয় হামাস। এসব গোষ্ঠীর মধ্যে দুটি দল ফাতাহ (পিএলও এর অধীন) ও হামাস বেশ সক্রিয়। [এ দুই দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে একসময় (২০০৭ সালে) ফিলিস্তিনের দুই অংশ পশ্চিম তীর ও গাজা চলে যায় যথাক্রমে দুটি দলের নিয়ন্ত্রণে। পরবর্তীকালে এদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চুক্তির মাধ্যমে সমঝোতা হয়। ]
১৯৯৩ সালে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল এর মধ্যে "অসলো শান্তি চুক্তি" সাক্ষরিত হয়। পিএলও এই চুক্তি মানলেও হামাস তা কখনো মানেনি। চুক্তি অনুসারে ইসরায়েল ফিলিস্তিন ভূখন্ড দখলদারিত্ব ত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে তারা কখনোই সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি। বরং করেছে তার উল্টোটাই। বহুদশক ধরে দখলে রাখা গাজা অঞ্চলটি ১৯৯৪ সালে ফিলিস্তিনিদের কাছে ফেরত দিয়ে আবার সে অঞ্চলেই ২০০৮,০৯, ১২,১৪,১৮ তে বড় ধরনের সংঘাত ঘটায় ইসরায়েল। এতে এ অবধি হাজার হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। অর্থাৎ দিনশেষে কোনো চুক্তি-সমঝোতাই আলোর মুখ দেখে নি।



• ফিলিস্তিন স্বাধীন দেশ কি না?
ফিলস্তিন বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হলেও এটি কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র না। জাতিসংঘ এর স্বীকৃতি দেয় নি। বরং জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের (Non Member Observer State) মর্যাদা দেয়। ইতোপূর্বে ১৯৯৪,৯৫ তে ফিলিস্তিন শাসন ও স্বায়ত্তশাসনসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর ইত্যাদি শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও তা মূল সমস্যার সমাধান দেয় নি। ফিলিস্তিনিরা আজও স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে রক্ত দিয়ে যাচ্ছে। যদিও একটি ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে তবে এর কোনো সার্বভৌমত্ব নেই। এটি কার্যত ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল সর্বদাই এমন একটি রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন কে চেয়েছিল যাকে তারা নিজ ইচ্ছানুসারে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

• ইন্তিফাদা
মূলত ফিলিস্তিনি গণঅভ্যুত্থানকে ইন্তিফাদা হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি আরবি শব্দ। ইহুদি অত্যাচার ও দখলদারত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদই ইন্তিফাদা। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ইন্তিফাদা পরিচালিত হয়েছে।

• সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট
২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন, যেখানে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলস্থ দূতাবাস রাজধানী তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে এক তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয়। ১৯৬৭ এর আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল যেখানে প্রতিশ্রুতি ও স্বীকৃতি ছিলো স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেমে। যেই জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে এতবছরের রক্তক্ষয়ী আন্দোলন তা ট্রাম্পের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ওলট-পালট হতে শুরু করে।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেরুজালেম ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পায়, যা ছিলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের চিন্তাধারার বুকে ছুরিকাঘাত শামিল!
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও ট্রাম্পের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সমর্থন করেনি। এরই প্রেক্ষিতে ইসলামিক ঐক্যজোট (OIC) বিশেষ অধিবেশন ডেকে জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী স্বীকৃতি দেয়। অর্থাৎ তখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এক পক্ষে এবং বাকি মুসলিম বিশ্ব এক পক্ষে অবস্থান নেয়। দুই পক্ষের এই পরস্পর বিরোধী অবস্থান জেরুজালেম অঞ্চলের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় বহুগুন। তবে সব উপেক্ষা করে আরেকটি বিষাদময় দিন এসে হাজির হয় ফিলিস্তিনিদের জন্য। ২০১৮ সালের ১৪ই মে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমে তাদের ইসরায়েল দূতাবাসের উদ্বোধন করে।সেদিনও ফিলিস্তিনে রক্তের জোয়ার অব্যাহত ছিল। গাজা পরিণত হয়েছিল এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। সেদিন নিহত হয় ৫৮ ফিলিস্তিনি। ২০১৪ সালের পর একদিনে এত প্রাণহানি আর ঘটেনি। সে থেকে আজ অবধি নিয়মিত থেমে থেমে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এ অঞ্চলকে ঘিরে।

• মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল স্ট্র‍্যাটেজি
ইহুদি স্ট্রাটেজিস্ট গবেষক ও শিক্ষক ওডেড ইনন ১৯৮২ সালে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ছক প্রণয়ন করেছিলেন।(A strategy for Israel in the nineteen eighties,1982) তার এই পরিকল্পনা মূলত থিওডর হার্জেল (ইসরায়েল রাষ্ট্রের জনক) এর দেখে যাওয়া স্বপ্নের বাস্তবায়ন। ইননের পরিকল্পনায় ছিলো লেবানন ও সিরিয়া কে ভেঙে একাধিক রাষ্ট্রে পরিণত করার মতো স্বপ্ন। অর্থাৎ যেকোনো মূল্যে আরব বিশ্বে বিভক্তি ও উত্তাপ বাঁচিয়ে রাখা। ৩৯ বছর আগে প্রণয়ন হলেও আজ পর্যন্ত এই পরিকল্পনার পরিবর্তন হয়নি তথা ইসরায়েলের উদ্দেশ্যের পরিবর্তন হয়নি। বরং একে ঘিরেই নতুন সব স্ট্রাটেজি গ্রহণ করেছে ইহুদিরা। আর এত বছর পর আজ অনেক অংশেই সফল ইসরায়েল। আরব বিশ্বের বিভক্তি আজ স্পষ্টত দৃশ্যমান।
সৌদি-ইয়েমেন, কাতার-সৌদি, ইরান ও অন্যান্য আরব দেশ এর মধ্যকার যেই প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা তা অনেকাংশে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিচ্ছে বিভক্তি। ইসরায়েলের পরিচালিত এই গ্রেট গেমে এখন অবধি তারা সফল।

তবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা একটি বাস্তব সত্য। যেই বাস্তব সত্যকে কোনোদিন অস্বীকার করা যাবেনা।
-সাদাত সিয়াম




সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২১ সকাল ৮:২৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×