somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আলফ্রিদে জেলিনেকের নোবেলভাষণ/ অনুবাদ : না জি ব ও য়া দু দ

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[নোবেলবিজয়ী আলফ্রিদে জেলিনেক-এর জন্ম ১৯৪৬ সালের ২০ অক্টোবর, অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া প্রদেশের মির্জুশল্যাগ-এ। নিজ শহরেই তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। এলবার্টস জিমনেশিয়াম থেকে ১৯৬৪ সালে গ্রাজুয়েশন করেন। তারপর থিয়েটার ও শিল্পের ইতিহাস বিষয়ে পড়াশোনা করেন ভিয়েনা ইউনিভার্সিটিতে। যৌবনের শুরুতেই তার সাহিত্যচর্চার শুরু, কবিতা দিয়ে। তার প্রথম বই, একটি কবিতা সংকলন, প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালে। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হন তিনি এবং তার লেখা সমাজসমালোচনার দিকে এগিয়ে যায়। ১৯৭০ সালে তার প্রথম উপন্যাস বের হয়। সত্তর দশকের অধিকাংশ সময় কাটে বার্লিন আর রোমে। এ সময় তিনি বিয়ে করেন গটফ্রিড হিংসবার্গকে। একের পর এক বের হতে থাকে তার উপন্যাস ও নাটকগুলো। তার বিখ্যাত আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস দ্য পিয়ানো টিচার অবলম্বনে ২০০১ সালে ছবি নির্মিত হয়।
জেলিনেক-এর লেখাকে বিশেষ সংজ্ঞায় ফেলা কঠিন। গদ্য থেকে পদ্য, জাদুমন্ত্র থেকে ধর্মসঙ্গীত, থিয়েটারসুলভ দৃশ্য থেকে ফিল্মি ঘটনা, সব কিছুর দেখা মেলে তার লেখায়। তবে তার লেখার প্রধান স্রোত প্রবাহিত উপন্যাস থেকে নাটকে। তিনি অনুবাদ করেছেন। লিখেছেন রেডিও নাটক ও ফিল্ম স্ক্রিপ্টও।
সাহিত্যে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৪ সালে তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তার আগেই সরকারি ও বেসরকারি অনেক মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার লাভ করেন। রীতি অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি যে-লিখিত ভাষণ পাঠ করেন, নিচের লেখাটি তার অনুবাদ। -অনুবাদক]

লিখন কি মোচড় খাওয়া, বাস্তবতাকে পেঁচিয়ে জড়িয়ে ধরে ওঠার ফল? কেউ হয়তো পেঁচিয়ে জাপটে ধরা পছন্দ করে থাকবে, অবশ্যই, কিন্তু তখন আমার ক্ষেত্রে কী ঘটে? বাস্তবতা কী, তা আদৌ যারা সত্যিকারভাবে জানে না তাদের ক্ষেত্রেই বা কী ঘটে? খুবই এলোমেলো ব্যাপার। কোনও চিরুনি দিয়েই এটাকে মসৃণ করা সম্ভব নয়। লেখকরা এর মধ্যে দিয়ে এগোন এবং হতাশার সঙ্গে তাদের চুলগুলোকে এক জায়গায় জড়ো করেন একটা স্টাইল দেওয়ার জন্যে, যা রাতের বেলা তাদের সোৎসাহে জ্বালাতন করে। দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই ভ্রম থেকে যায়। সুন্দরভাবে বিন্যস্ত চুলকে তার স্বপ্নের ঘর থেকে পুনরায় তাড়িয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু কোনও ক্রমেই তা আর বাগে আসে না। আর যেই মাত্র তাকে আর পোষ মানানো যায় না, তখনই সে এলোমেলো ঝুলে থাকে, মুখের সামনে পর্দার মতো। অথবা অনৈচ্ছিকভাবেই খাড়া হয়ে যায়, যা কিছু সব সময় ঘটে চলেছে তার আতঙ্কে। সোজা কথা, একে আর বিন্যস্ত করা যাবে না। আর বিন্যস্ত হতে চায় না। একজোড়া ভাঙ্গা দাঁতের চিরুনি দিয়ে কত ঘন ঘন আঁচড়ানো হল, তা কোনও ব্যাপার নয়- এটা আর সোজা হয় না। বরং এটা হয় আগে যা ছিল, তার চেয়ে কম ঠিক। লিখন, যার কারবার ঘটনা নিয়ে, তা সময়ের মতো দৌড়ে চলে আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে, এবং যে-কালে এটা লেখা হচ্ছে কেবল সে সময়ে নয়, বরং যখন জীবন থমকে থাকে তখনও। জীবন থেমে থাকলেও কিছু ফসকে যায় না। না জীবিত না মৃত কাল, এবং কোনও মৃত ব্যক্তি তো আদৌ নয়। তারপরেও যখন কেউ লিখতে থাকে, কাল তার পথ খুঁজে নেয় অন্য লেখকদের কাজের মধ্য দিয়ে। যেহেতু এটা কাল, তা মুহূর্তে সব কিছু করতে পারে: তার রাস্তা সন্ধান করে নিতে পারে কারও নিজের লেখার মধ্য দিয়ে যেমন, তেমনই একই সঙ্গে অন্যদের কাজের মধ্য দিয়েও, বয়ে যেতে পারে অন্যদের উস্কোখুষ্কো চুলের মধ্য দিয়ে টাটকা এমনকী বাজে বাতাসের মতোও, যার আবির্ভাব আকস্মিক এবং অপ্রত্যাশিতভাবে বাস্তবতার দিক থেকে। একবার যখন কোনও কিছুর আবির্ভাব ঘটে, তখন সম্ভবত পুনরায় তা দ্রুত নুয়ে পড়ে না। রাগী বাতাস সব কিছুকে উড়িয়ে ঝেড়ে ফেলে। আর উড়িয়ে নিয়ে যায় সব কিছুকে, কোথায় সেটা কোনও ব্যাপার নয়, কিন্তু যে-বাস্তবকে উপস্থাপন করা হচ্ছে সেখানে আর কখনও ফিরে আসে না। সবখানে যেতে পারে, কেবল সেখানে নয়। বাস্তবতা হচ্ছে তা-ই, যা থাকে চুলের নিচে, স্কার্টের নিচে এবং স্রেফ এই: তাদের উড়িয়ে নিয়ে যায়, কিছু একটার মধ্যে। লেখক বাস্তবতাকে জানতে পারেন কীভাবে, যদি তা হয় এই রকম যে, সেটা প্রবেশ করে তার মধ্যে এবং তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়, পাশের লাইনে, চিরদিনের জন্য? সেখান থেকে, একদিকে, সে অধিকতর ভালো দেখতে পারে, অন্যদিকে, সে স্বয়ং বাস্তবতার পথের ওপর অবস্থান করতে পারে না। সেখানে তার জন্য কোনও জায়গা থাকে না। তার স্থান সব সময় বাইরে। যা সে বলে বাইরে থেকে তাকেই কেবল ভেতরে নেওয়া চলে, তার কারণ সে দ্ব্যর্থক কথা বলে। এবং তখন সেখানে রয়ে যায় দু'জন- যারা খাপ খায়, যাদের দু'টি মুখই সত্য, যারা সাবধান করে দেয় যে কোনও কিছু ঘটছে না, যারা বিভিন্ন দিক থেকে তার ব্যাখ্যা করে, পৌঁছে অপর্যাপ্ত ভূমিতে, যা অনেক আগেই ভেঙে গেছে চিরুনির দাঁতের মতো। যে কোনওটি। সত্য অথবা মিথ্যা। এটা ঘটতে পারে শিগগিরই অথবা দেরিতে, যেহেতু ভূমি, নির্মাণভূমি যথেষ্ট অপ্রতুল। আর কেউ কি তলাবিহীন গর্তের ওপর কোনও ভাবে কিছু নির্মাণ করতে পারে? কিন্তু এই যে অপ্রতুলতা, যা লেখকের অভিজ্ঞানের মধ্যে প্রবেশ করে, তা এখনও কোনও কিছুর জন্যে যথেষ্ট, তারাও নিতে বা ত্যাগ করতে পারে। তারা নিতে বা ত্যাগ করতে পারে, এবং তারা প্রস্থানই করে। তারা এটাকে হত্যা করে না। তারা স্রেফ এর দিকে তাকায় ঝাপসা দৃষ্টিতে, কিন্তু এই ঝাপসা দৃষ্টি সত্ত্বেও সেটা যাচ্ছেতাই হয় না। এই দৃষ্টি লক্ষ্যাভিসারী। কোনও কিছুকে আঘাত করে এই দৃষ্টি বলে, এমনকী তা অস্তমিত হওয়ার সময়েও, যদিও তা সহজদৃষ্ট নয়, যদিও জনতার তীক্ষ্ণ দৃষ্টির সামনে তা উন্মোচিত হয় না, যা কিছু তার দৃষ্টির সামনে পড়ে তা কখনও বলে না যে, এটাও কিছু একটা হয়ে যেতে পারে, এই এক বর্ণনার শিকারে পরিণত হওয়ার আগেই। এটা ঠিক সে কথাই বলে যা ভালোভাবে অকথিত রয়ে গেছে (তার কারণ কি এই যে, এটাকে আরও ভালো ভাবে বলা যেত?), যাকে থাকতে হয়েছে অস্পষ্ট এবং ভূমিহীন হয়ে। অনেক বেশি কিছুই ইতোমধ্যে ডুবে গেছে এর মধ্যে, তাদের ক্ষুধা অনুযায়ী। এটা চোরাবালি, কিন্তু এটা কোনও কিছুকে জীবিত করে না। এটা অপ্রামাণ্য, কিন্তু যুক্তিহীন নয়। এটা পছন্দসই, কিন্তু পছন্দিত নয়।
অনুষঙ্গগুলো জীবনের সেবায় নিয়োজিত, যেটা যথার্থভাবে সেখানে ঘটে না, তা না হলে আমরা সবাই এর গভীরে নিমজ্জিত থাকতাম না, পূর্ণাঙ্গভাবে, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গতায়, এবং এটা জীবনের পর্যবেক্ষণে কাজে লাগে, যা সব সময় অন্য কোথাও ঘটছে। কেউ যদি জীবন পরিভ্রমণ, জীবনের ভ্রমণের পথ খুঁজে না পায় তাহলে কেন তাকে ভৎর্সনা করবে, যদি সেটা সে বহন করে- এই বহন কাউকে বহন করা নয়, কিংবা এটা কোনও রকম পরিবহনও নয়- সে এটা আকস্মিকভাবে বহন করেছে, একজোড়া জুতার সঙ্গে লেগে থাকা ধুলোর মতো, যার পেছনে নির্দয়ভাবে লেগে থাকে গৃহকর্ত্রী, স্থানীয় লোকরা যেমন অনুসরণ করে কোনও আগন্তুককে, তার চেয়ে কিছু কম নির্দয়তার সঙ্গে। কী ধরনের ধুলো এটা? এটা কি রেডিওএ্যাকটিভ নাকি স্বয়ংক্রিয়, ঠিক ঐ রকম, আমি বলছি, কারণ সেটা পথের ওপর আলোর পদাঙ্ক রেখে যায়? এটা কি তা-ই, যা পাশাপাশি দৌড়াচ্ছে কিন্তু কখনও পুনরায় মিলিত হচ্ছে না লেখকের সঙ্গে, পথটাই, নাকি লেখকই, পাশাপাশি চলেছে, পাশের রেখায়? সে এখনও পেরিয়ে যায়নি, তথাপি সে ইতোমধ্যে লাইন অতিক্রম করেছে। সেখান থেকে সে তাদেরকে দেখে যারা তার থেকে আলাদা হয়ে গেছে, আলাদা হয়েছে পরস্পর থেকেও, তাদের সকল রূপসমেত, তাদের সকল বিশ্বাসযোগ্যতাসহ তাদেরকে উপস্থাপন করার জন্যে, তাদেরকে ফর্ম দেওয়ার জন্য, কারণ ফর্ম হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, যাই হোক, সে তাদেরকে ভালো দেখে সেখান থেকেই। কিন্তু, সেটাও কি আকরিত হয় তার বিপরীতে, চিহ্নবিন্দুগুলো যে রকম আলোকিত জিনিসের টুকরো নয়, সেটাই কি লিখন-পথকে চিহ্নিত করে? যে কোনও মূল্যে এটা চিহ্নায়ন, যা একই সঙ্গে দেখায় এবং আড়াল করে, এবং পরে সতর্কভাবে ঢেকে দেয় সেই পদচিহ্নকে যা সে নিজেই এঁকেছে। সে কখনও সেখানে ছিল না। কিন্তু সে জানে সেখানে কী আছে। শব্দগুলো আসে একটা পর্দা থেকে, যন্ত্রণাবিকৃত রক্তমাখা মুখাবয়ব থেকে, হাসি থেকে, প্রসাধিত মুখমণ্ডল, প্রসাধন নেওয়ার আগেই ঠোঁট ফোলানো, অথবা অন্যদের কাছ থেকে যারা কুইজের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়, অথবা জাত বাগ্মী নারীগণ, যারা কোনও কিছুর পক্ষেও নয় বিপক্ষেও নয়, যারা উঠে দাঁড়ায় এবং জ্যাকেট খুলে ক্যামেরার সামনে স¤প্রতি কঠিন হয়ে যাওয়া স্তন দেখায়, যেগুলো একদা ছিল কঠিন এবং পুরুষের। আর যে কোনও পরিমাণ চাপা শব্দ, যার মধ্যে থেকে দুর্গন্ধময় নিঃশ্বাসের মতো সঙ্গীত বেরয়, উচ্চনাদে। এটাই দেখা যায় পথে, যদি সে তখনও থাকে তার ওপর। সে পথ থেকে পথের বাইরে যায়। সম্ভবত সে এটা অবলোকন করে দূর থেকে, যেখানে তার অবস্থান একাকী, এবং কেমন আনন্দের সঙ্গে, কারণ সে পথ দেখতে চায়, কিন্তু তাতে হাঁটতে চায় না। এই পথটা কি কেবল এখনই কোলাহল তৈরি করল? এটা কি এখন নিজের দিকে মনোযোগ টানে, কোলাহল তৈরি করে, এবং কেবল আলো, কোলাহলকারী জনমণ্ডলি, কোলাহলকারী আলো দ্বারা নয়? যখন মোটের ওপর এত সব পাপ সংঘটিত হচ্ছে, নির্যাতন, প্রকাশ্য বলাৎকার, চুরি, হুমকিমূলক আচরণ, তখন পথটা কি, যাতে কেউ হাঁটতে পারে না, আদৌ না হাঁটার ভয়ে, বিশিষ্ট বিশ্বভাগ্য নির্মাণে প্রয়োজনীয় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়? এতে পথের কিছু আসে-যায় না। এতে সব কিছু আছে, শক্তভাবে, এমনকি যদি ভিতহীনও হয়। ভিত্তি ছাড়া। হƒত মাটির ওপর। আমার চুল, যা আগেই বলা হয়েছে, দাঁড়িয়ে আছে প্রান্তের ওপর, এবং কোনও বিন্যাসকারী লোশন নেই, যা তাকে পুনরায় শক্ত হয়ে দাঁড়াতে শক্তি যোগাতে পারে। আমার মধ্যে কোনও দৃঢ়তা নেই। আমার ওপরে নয়, আমার মধ্যেও নয়। কেউ যখন পার্শবর্তী লাইনে অবস্থান করে, তখন তাকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয় একটা লাফ দেয়ার জন্য এবং তারপর আরেকটা লাফ পাশে, শূন্যে, পার্শবর্তী লাইনের ঠিক পরেই আছে। পার্শরেখাগুলো তাদের সঙ্গে পার্শবর্তী চোরাগর্ত নিয়ে চলেছে, সব সময় এটা প্রস্তুত, কাউকে আরও বাইরে যাওয়ার জন্য প্রলোভিত করতে এটা বিস্তৃত হয়। দয়া করবেন, আমি এখন পথ থেকে দৃষ্টি হারাতে চাই না, যার ওপর আমি নেই। সেজন্যে আমি সততার সঙ্গে এবং মোটের ওপর সত্য ও ঠিক ভাবে তার বর্ণনা দিতে চাই। আমি যদি সত্যিই তার দিকে তাকাই, সে আমার জন্যেও কিছু একটা করে। কিন্তু এই পথ আমার জন্যে কিছু ছেড়ে যায় না। আমার জন্যে কিছুই রেখে যায় না। কী থাকে আমার জন্যে? আমি আমার নিজের পথে চলতে বাধাপ্রাপ্ত হই, আমি কদাচিত আমার নিজের পথ নির্মাণ করতে পারি। আমার অবস্থান বাইরে, যদিও না বাইরে যাই। এবং সেখানেও, আমি চাইব আমার নিজের অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে আমার রক্ষাকবচ থাকুক, কিন্তু যে মাটির ওপর আমি দাঁড়িয়ে আছি তার অনিশ্চয়তা থেকেও। এটা কেবল আমাকে রক্ষা করবে তা নয়, বরং নিশ্চিত করবে যে আমার ভাষা ঠিক আমার পাশে আছে, এবং পরখ করছে আমি এটা ঠিকভাবে করছি কিনা, বাস্তবতাকে ঠিক ভুলভাবে বর্ণনা করছি কিনা, কারণ এটাকে সব সময় ভুলভাবে বর্ণনা করতে হয়, আর কোনও পথ নেই, কিন্তু এমন ভুলভাবে যে, যে কোনও পাঠক বা শ্রোতা যেন তাৎক্ষণিকভাবে মিথ্যাটা ধরতে পারে। সেগুলো মিথ্যা। আর এই কুকুর, অর্থাৎ ভাষা, যার আমাকে রক্ষা করার কথা, যে জন্যে আমি তাকে রেখেছি, মোটের ওপর সে এখন আমার গোড়ালিতে কট করে কামড় বসাচ্ছে। আমার রক্ষীই আমাকে কামড়াতে চায়। আমার একমাত্র রক্ষাকর্তা, ভাষা, বর্ণিত হওয়ার বিপক্ষে, যা, বিপরীতপক্ষে, অস্তিত্ববান কোনও কিছুকে বর্ণনা করার মধ্যে দিয়ে, যা আমি নই-সেজন্যেই আমি এত সব কাগজ জুড়ে লিখি- আমার একমাত্র রক্ষী আমার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। সম্ভবত আমি তাকে রাখি, যেন সে, আমাকে রক্ষার ভান করার সময়, আমার ওপর ছোঁ মারে। কারণ আমি নিরাপত্তা খুঁজি লিখনের মধ্যে, এটা আমার পথ বলে; ভাষা, যা গতিমান কথায়, নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে আবির্ভূত, ঘুরে দাঁড়ায় আমার বিরুদ্ধে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমি, মোটের ওপর, শিগগিরই তাকে অবিশ্বাস করি। সেটা কী ধরনের ছদ্মবেশ, যা বিরাজ করে কাউকে অদৃশ্যবান করার জন্যে নয়, বরং তাকে আরও সুস্পষ্ট করার জন্য? কখনও কখনও ভাষা পথ খুঁজে পায় ভুলক্রমে, কিন্তু পথ থেকে বিচ্যুত হয় না, ভাষা দিয়ে কথা বলা- এটা কোনও স্বেচ্ছাচারী পদ্ধতি নয়, এটা এমন যা অনিচ্ছাকৃতভাবে স্বেচ্ছাচারী, কেউ তা পছন্দ করুক বা না করুক। ভাষা জানে সে কী চায়। ভালো, কারণ আমি জানি না, আদৌ জানি না। আলাপ, সাধারণভাবে আলাপ সেখানে এখন গল্প চালিয়ে যায়, কারণ সেখানে আছে কেবল আলাপ আর আলাপ, এর কোনও শুরুও নেই শেষও নেই, কিন্তু সেখানে কোনও কথা নেই। সুতরাং সেখানে আছে কেবল গল্পবলা, যেখানে অন্যরা অবস্থান করছে, কারণ তারা সময় দীর্ঘায়িত করতে চায় না, তারা খুব ব্যস্ত। সেখানে কেবল তারাই আছে। আমি নই। কেবল ভাষা, যা কখনও কখনও আমার কাছ থেকে সরে যায়, জনগণের কাছে, অন্য লোকের কাছে নয়, কিন্তু ঘুরে বেড়ায় বাস্তব, প্রকৃত, সুচিহ্নিত পথে (কে এখানে নষ্ট হয়ে যেতে পারে?), ভাষা ক্যামেরার মতো তাদের প্রত্যেকটা পদক্ষেপ অনুসরণ করে, যেন অন্ততঃপক্ষে সন্ধান পায় জীবন কেমন ও কী, কারণ তখন এটা ঠিক-ঠিক তা নয়, এবং পরে এর সকল কিছুকে অবশ্যই বর্ণনা করতে হবে, যথাযথ ভাবে যা এটা নয় সেইভাবে হলেও। আসুন আমরা আলাপ করি এই বাস্তব বিষয় সম্পর্কে যে, আমাদের যেন আবারও মেডিকেল চেক-আপ করাতে হবে। তথাপি আমরা অকস্মাৎ কথা বলি, যথার্থ কঠোরতার সঙ্গে, এমন কারও মতো যার কথা বলা বা না-বলার পছন্দ আছে। যা-ই ঘটুক, কেবল ভাষা আমার থেকে দূরে চলে যায়, আমি নিজে, আমি দূরে থেকে যাই। ভাষা যায়। আমি থাকি, কিন্তু দূরে। পথের ওপর নয়। এবং আমি নির্বাক। না, সে তখনও সেখানে। সম্ভবত সে সেখানে সব সময়ই বিরাজমান, সে কি কাউকে ওপরেও তুলতে পারে আবার নিচে নামাতেও পারে? সে, এই ভাষা, এখন আমাকে দেখতে পায় এবং সঙ্গে সঙ্গে আমার ওপর নজর দেয়। সে আমার ওপর হুকুমদারির মেজাজ গ্রহণের সাহস পায়, আমার দিকে হাত তোলে, আমাকে সে পছন্দ করে না। সে আনন্দের সঙ্গে পছন্দ করে পথের ভাল লোকদের, যাদের পাশে নিয়ে সে দৌড়ায়, কুকুরের মতো অনুগতের ভান করে। বাস্তবে, সে অবাধ্য হয় শুধু আমারই না, প্রত্যেকেরই। সে নিজেকে ছাড়া আর কারও ধার ধারে না। সে রাতভর চিৎকার করে, কারণ কেউ খেয়াল করে এই পথের পাশে আলো জ্বালায় না, যা সরবরাহ হয় সূর্য ছাড়া অন্য কোনও কিছু থেকে নয় এবং সকেট থেকে পাওয়া বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না তার, কিংবা ভুলে যায় এই পথের জন্যে একটা সঠিক পথনাম খুঁজে পেতে। কিন্তু তার আছে অনেক নাম, এত যে চেষ্টা করলেও সকল নাম স্মরণে রাখা অসম্ভব। আমি চিৎকার করি, আমার একাকীত্বের মধ্যে, মৃতদের কবরের চারপাশে, কারণ যেহেতু আমি ইতোমধ্যেই পাশাপাশি দৌড়াচ্ছি, আমি ভালো মতো নজর দিতে পারছি না কার ওপর আমার পা পড়ছে আর কার ওপর পড়ছে না, আমি কেবল যে কোনও ভাবে পৌঁছতে চাচ্ছি সেখানে, যেখানে আমার ভাষা ইতোমধ্যে অবস্থান করছে, এবং যেখানে থেকে সে আমার দিকে তাকিয়ে কপট হাসি হাসছে। কারণ সে জানে যে, যদি আমি কখনও বেঁচে উঠতে চাই, সে আমাকে ফেলে দেবে, তারপর আমার ক্ষতস্থানে লবণ ঘষবে। ভালো। সুতরাং আমি অন্যদের পথে অবশ্যই লবণ ছিটাব, আমি তা ছিটাব নিচে, যেন তাদের বরফ গলে, মোটা লবণ, যেন তাদের ভাষা তার শক্ত শেকড় হারায়। তারপর থেকে সে মাটিছাড়া হয়ে থাকে। তার পক্ষে এটা কত বড় তলাবিহীন ধৃষ্টতা! আমার পায়ের নিচে শক্ত মাটি না থাকলে আমার ভাষারও তা থাকতে পারে না। ঠিক বন্দোবস্ত! কেন সে আমার সঙ্গে থাকে না, পাশের পথে, কেন সে আমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়? সে কি আমার চেয়ে বেশি দেখতে চায়? আরও অনেক লোক, মহাসড়কে, যেখানে মোট কথা অধিকতর পছন্দসই লোক পরস্পর চমৎকার গল্প-গুজবে রত? সে আমার চেয়ে বেশি জানতে চায়? সে সব সময় আমার চেয়ে অধিক জেনেছে, সেটা সত্যি, কিন্তু তাকে আরও বেশি জানতে হবে। সে, আমার ভাষা, শেষ হয়ে যাবে নিজেকে নিজে ভক্ষণের মাধ্যমে হত্যা করে। সে বাস্তবতার প্রতি অতি-সংলগ্ন হয়ে পড়বে। ঠিক কাজ! আমি থুথু ছিটাই, কিন্তু সে থুথু না ছিটিয়ে ধরে রাখে। আমার ভাষা আমাকে ডাকে, পাশের লাইনে, সে পাশের লাইনে ডাকতে সবচেয়ে পছন্দ করে, তাকে সেজন্যে এ রকম সযত্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয় না, কারণ সে সব সময় লক্ষ্যভেদী, কোনও এটা বা ওটা বলে নয়, সে ‘হয়ে ওঠার তপশ্চর্যা’ দিয়ে কথা বলে, যেমনটা হেইডেগার বলেছেন ট্র্যাকল সম্পর্কে বলতে গিয়ে। সে, ভাষা, আমাকে আহ্বান করে, আজকাল যে কেউ তা করতে পারে, কারণ প্রত্যেকে সব সময় তাদের সঙ্গে বহন করে তাদের ভাষাকে ছোট্ট একটা যন্ত্রের মধ্যে, যেন তারা কথা কইতে পারে, কেন তারা এটা শিখেছে? সুতরাং সে আমাকে ডাকে সেখানে যেখানে আমি খাঁচায় ধরা পড়েছি এবং চিৎকার আছাড়িপিছাড়ি করছি, কিন্তু না, এটা সত্যি নয়, আমার ভাষা আমাকে ডাকছে না, সে-ও চলে গেছে, আমার ভাষা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, সে কারণেই তাকে ডাকতে হয়, সে আমার কানে চিৎকার করে, বিচার্য বিষয় নয় যন্ত্রটা কী, কম্পিউটার নাকি মোবাইল ফোন, নাকি ফোন বুথ যেখান থেকে সে আমার কর্ণকুহরে গর্জন করছে, কোনও কিছু উচ্চস্বরে বলার মধ্যে কোনও বিশেষত্ব নেই, সে ইতোমধ্যে সেটা কোনও ভাবে করে ফেলেছে, সে যা বলে আমার উচিত হবে ঠিক সেটুকুই বলা; কারণ প্রিয় মানুষের কাছে মনের কথা একবার বলা এমনকি আরও কম গুরুত্ববহ, সে খাঁচার নিচে পতিত হয়েছে, যার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা যায়, কারণ সে পতিত হয়েছে এবং খুব দ্রুত পুনরায় উঠে দাঁড়াবে না কারও পশ্চাদ্ধাবন করার জন্য, আর, হ্যাঁ, একটুখানি গল্প করার জন্য। কোনও বিবেচ্য বিষয় নেই। সুখকর পথের ওপর আমার ভাষার শব্দগুলো (আমি জানি সেটা বেশি সুখকর আমার পথের চেয়ে, প্রকৃতপক্ষে আমারটা আদৌ কোনও পথই নয়, কিন্তু আমি সেটা স্পষ্ট দেখতে পাই না, কিন্তু আমি জানি, যে, আমিও সেখানে অবস্থান করতে পছন্দ করি), আমার ভাষার শব্দগুলো, অতএব, আমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শিগগিরই কথনে পরিণত হয়। না, এটা কারও সঙ্গে আলাপ নয়। একটা কথন। সে নিজেই নিজের কথন শোনে, আমার ভাষা, সে নিজেকে সংশোধিত করে, কারণ কথনকে এখনও যে কোনও সময়ে উন্নত করা যায়; হ্যাঁ, এটাকে সব সময় উৎকর্ষিত করা যায়, বরং সে সেখানে থাকে উৎকর্ষিত হওয়ার জন্যই এবং তখন একটা নতুন ভাষা রীতি তৈরি করার জন্যে, কিন্তু কেবল তখনই সে রীতিগুলোকে আবার উল্টিয়ে দেবার সামর্থ্য লাভ করে। সেটা তখন হয়ে ওঠে মুক্তির নতুন পথ, অবশ্য আমি সমাধান বোঝাতে চাচ্ছি। একটা দ্রুত উভয়-সঙ্কট। দয়া করো, প্রিয় ভাষা, তুমি একবারের জন্যে প্রথমে শুনতে চাও না? যেন তুমি কিছু শিখতে পারো, যেন তুমি অবশেষে কথনের নিয়মগুলো শিখতে পারোঃ সেখানে চিৎকার করে, বিড়বিড় করে কীসব বলছ তুমি? ওহে ভাষা, তুমি কি এটা করছ এই জন্যে যে আমি দয়া পরবশ হয়ে তোমাকে ফের তোমার মধ্যে নিয়ে যাই? আমার মনে হয়, তুমি আদৌ আমার কাছে পুনরায় ফিরে আসতে চাও না! তুমি আমার কাছে ফিরে আসতে চাও এমন কোনও লক্ষণ নেই, যেভাবেই হোক ব্যাপারটা বিশেষত্বহীন, আমি লক্ষণটা বুঝতে পারছি না। তুমি কি ভাষা হয়েছ স্রেফ আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া এবং আমার উন্নতি নিশ্চিত করার জন্য? কিন্তু কিছুই নিশ্চিত নয়। এবং তোমার দ্বারা আদৌ নয়, যতটুকু তোমাকে আমি জানি। আমি এমনকি তোমাকে পুনরায় চিনতে পারি না। তুমি কি আমার কাছে ফিরে আসতে চাও তোমার নিজের ইচ্ছা মতো? আমি তোমাকে আর নেব না, এ ব্যাপারে তোমার বক্তব্য কী? দূর মানে দূর। পথের বাইরে মানে পথ নয়। সুতরাং যদি আমার একাকীত্ব, যদি আমার নিত্যকার অনুপস্থিতি, পথিপার্শে আমার বিরামহীন অস্তিত্ব ব্যক্তি হয়ে আসে ভাষা ফেরত নিতে, যাতে সে, যাকে আমি ভালো রকম পরিচর্যা করেছি, শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফেরে, একটা সুন্দর আওয়াজ হয়ে, যা সে উচ্চারণ করতে পারে, তখনই কেবল এ রকম ঘটে, যেন এই আওয়াজ দিয়ে, সাইরেনের এই তীক্ষè, মর্মভেদী আর্তনাদ, বাতাস দ্বারা প্রবাহিত হয়ে আমাকে আরো দূরে তাড়িয়ে দিতে পারে, পার্শবর্তী থেকে আরও পেছনে। এই ভাষার প্রত্যাবর্তনের কারণে, যা আমি নিজে সৃষ্টি করেছি এবং যা আমার কাছ থেকে পালিয়ে গেছে (অথবা আমি কি তাকে এই উদ্দেশ্যেই তৈরি করেছি? যেন সে তৎক্ষণাৎ আমার কাছ থেকে পালিয়ে যেতে পারে, আমি সময় মতো আমার কাছ থেকে পালিয়ে যেতে পারিনি বলে?), আমি তাড়িত হই পার্শবর্তী গণ্ডির বাইরে আরও গভীরে। আমার ভাষা তো ইতোমধ্যেই কাদাপূর্ণ ডোবায় পরম সুখে গড়াগড়ি খাচ্ছে, পথের ওপর সাময়িক কবর সেটা, এবং কবরে বাতাসের মধ্যে বসে তাকাচ্ছে ওপরে, গড়াগড়ি খাচ্ছে তার পিঠের ওপর, একটা বন্ধুসুলভ সৃষ্টি, যে মানুষকে আনন্দ দিতে চায় যে-কোনও সম্মানিত ভাষার মতো, সে গড়াগড়ি যায়, পা ছড়িয়ে দেয়, যেন বা যন্ত্রণা পেতে, কেন জানি না। সে আদরের কাঙাল, মোটের ওপর। সেটাই তার মৃতের ওপর দৃষ্টিনিক্ষেপকে থামিয়ে দেয়, যেন তার বদলে আমি তাদের দিকে তাকাই, এবং অবশ্যই শেষ পর্যন্ত সে আমার প্রতি আন্তরিক হয়। সুতরাং আমার ভাষাকে সংযত করার সময় নেই, যে কিনা এখন সোহাগকারীদের হাতে নির্লজ্জের মতো গড়াগড়ি খাচ্ছে। মৃতদের সংখ্যা অনেক, যাদের আমি দেখতে চাই, সেটা একটা অষ্ট্রীয় টেকনিক্যাল টার্ম: কার আমি দেখাশোনা করব, কার আমি ভালো চিকিৎসা করব, একাজে বিখ্যাত আমরা, কারণ সর্বদাই প্রত্যেকে ভালো চিকিৎসা পায়। পৃথিবী আমাদের দিকে চেয়ে আছে, দুঃখের কোনও কারণ নেই। তার জন্যে আমাদের পরোয়া করার দরকার নেই। তা সত্ত্বেও এই দাবি, মৃতদের দিকে নজর দেওয়া, স্পষ্টরূপেই আমার মধ্যে সাড়া জাগায়, আমার শব্দের দিকে আমাকে কম মনোযোগ দিতে হবে। আমার অবশ্যই মৃতদের দিকে নজর দেওয়া উচিত, যখন অলস হাঁটিয়েরা চমৎকার পুরনো ভাষাকে আঘাত করছে এবং তার চিবুকে ঠোকনা মারছে, যা মৃতদের আর জীবিত করতে পারে না। কারও দোষ নেই। এমনকী আমি, যে রকম আলুথালু আমি এবং আমার চুল, সে-ও দায়ী নয় মৃতদের মৃত থাকার জন্য। আমি চাই ভাষা অচেনা লোকদের হাতে দাস না হোক, সে কতটা ভালো বোধ করে সেটা কোনও বিষয় নয়, আমি চাই সে শুরু করুক দাবি তোলা বন্ধ করে, কিন্তু সে নিজেই দাবি বনে যায়, শেষে সোহাগকারীদের মুখোমুখী হবার জন্যে নয়, আমার কাছে ফিরে আসার দাবি, কারণ ভাষাকে সব সময় মোকাবেলা করতে হয়, কেবল সব সময় সে তা জানে না এবং আমার কথা শোনে না। তাকে মুখোমুখি হতে হয়, কারণ যারা একটা শিশুর বদলে তাকে গ্রহণ করতে চায়, এটা কী যে কমনীয়, যদি তাকে ভালবাসা যায়, লোকেরা অতএব সামনে আসে না, তারা সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আহ্বানে সাড়া দেয় না, তাদের অনেকে এমনকী তৎক্ষণাৎ তাদের আহ্বানকে ধ্বংস করে, ছিঁড়ে ফেলে, পুড়িয়ে সামাজিকতায় রূপান্তরিত করে, তার সঙ্গে পতাকাকেও। সুতরাং যতই লোকেরা আমার ভাষার পেট খামচানোর আহ্বান গ্রহণ করে, কোনও কিছুকে বিশৃঙ্খল করতে, ভালবাসার সঙ্গে তার বন্ধুত্বকে গ্রহণ করার জন্যে, ততই আমি হোঁচট খাই, আমি অবশেষে আমার ভাষা হারিয়ে ফেলি তাদের কাছে যারা তার ভালো ব্যবহার করে, আমি প্রায় উড়ছি, পৃথিবীর যেখানে এই পথ তার ওপরে, সেটা কি এইজন্য যে, আমি ধীর হতে চাই? কীভাবে আমি জানতে পারব কোথায় কী করতে হবে? সেই জায়গায় আমি কী করে পৌঁছব, যেখানে উজ্জ্বল কিছু জ্বলজ্বল করছে বৃক্ষশাখার নিচে, এটাই কি সেই জায়গা যেখানে আমার ভাষা প্রথম অন্যের সঙ্গে তোষামোদ করে, তাদেরকে নিরাপত্তার অনুভূতিতে কাঁপায়, মাত্র এই জন্য যে শেষে একবারের জন্যে নিজেই কমনীয় ভাবে দোল খাবে? নাকি সে পুনরায় দৃষ্টিক্ষেপ করতে চায়? সে সর্বদাই কামড়ানো ছাড়া আর কিছু করতে চায় না, কেবল অন্যেরা তা জানে না এখনও, কিন্তু আমি এটা খুব ভালো করে জানি যে, সে আমার সঙ্গে আছে দীর্ঘ দিন যাবৎ। পূর্বে সর্বপ্রথম ছিল গাঢ় আলিঙ্গন এবং ফিসফিসানি, আর কিছু নয়, যা সবার বাড়িতেই যেভাবেই হোক আছে, কেন তারা একটা অদ্ভূত প্রাণীকে ঘরে আনে? তাহলে এই ভাষা কেন আলাদা হবে যা তারা ইতোমধ্যে জানে তার থেকে? আর যদি এটা আলাদাই হয়, তাহলে সম্ভবত এটাকে ঘরে আনা বিপজ্জনক। সম্ভবত ইতোমধ্যেই তাদের যেটা আছে তার সঙ্গে এর মিলমিশ হবে না। আরও বন্ধুসুলভ অতিথি আছে, যারা জানে কীভাবে বাঁচতে হয়, কিন্তু তাদের জীবনকে জানা থেকে অনেক দূরে তাদের অবস্থান, যেহেতু তারা তাদের সোহাগী মনোবাঞ্ছার পশ্চাদ্ধাবন করে, কারণ তাদের সব সময় কিছু না কিছুর পেছনে চলতে হয়, আমার দৃষ্টি ভাষার মধ্য দিয়ে আর স্পষ্ট দেখে না। মাইলের পর মাইল এবং তারো বেশি। যদি দেখাই না যায় তাহলে কে আর সক্ষম হবে জিনিসের মধ্যে দিয়ে দেখতে? কথন কি তাহলে দর্শনের ওপর টেক্কা মারতে চায়? সে কথা কইতে চায় দেখার আগেই? সে সেখানে গড়াগড়ি যায়, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে শোনা বন্ধ করে, তাকে অন্ধকারে হাতড়ায়, বাতাস চপেটাঘাত করে, ঝড় আলিঙ্গন করে, শ্রবণ অপমান করে। বেশ, তাহলে: এখানে সবাই শোনে মাত্র একবার! যে শুনতে চায় না, সে অবশ্যই না শুনে কথা কইবে। প্রায় প্রত্যেকেই তাদের কথা শোনে না, যদিও তারা বলে চলে। আমাকে শোনে, যদিও আমার ভাষা আমার নয়, যদিও আমি তাকে আর সহজে দেখি না। তার বিরুদ্ধে অনেক বলা হয়েছে। সুতরাং তার নিজের সম্পর্কে বলার আর বেশি কিছু নেই, চমৎকার। যখন সে ধীরে ধীরে পুনরুচ্চারণ করে, তাকে শোনা হয়, যখন কোথাও একটা লাল বোতাম টেপা হয়, একটা ভয়ানক বিস্ফোরণ হয়। কিছুই আর বলার অবশিষ্ট থাকে না: থাকে কেবল আমাদের পিতা, যা শিল্প। সে আমাকে বোঝায় না, যদিও আমি, মোটের ওপর, আমি পিতা, অর্থাৎ মা, আমার ভাষার। আমি আমার মাতৃভাষার পিতা। মাতৃভাষা শুরু থেকেই বিরাজমান ছিল, আমার মধ্যে, কিন্তু সেখানে কোনও পিতা ছিল না। আমার ভাষা প্রায়ই অনুপযুক্ত ছিল, সেটা আমার কাছে প্রায়ই স্পষ্ট করা হত, কিন্তু আমি ইঙ্গিতটা গ্রহণ করতে চাইনি। সেটা আমার দোষ। পিতা এই পারমাণবিক পরিবারকে মাতৃভাষার সঙ্গে ছেড়ে গিয়েছে। সে ঠিক করেছে। তার জায়গায় হলে আমিও সেখানে থাকতাম না। আমার মাতৃভাষা এখন আমার পিতাকে অনুসরণ করেছে, সে চলে গেছে। এটা, যেমন আগেই বলা হয়েছে, সেখানে আছে। পথে লোকেদের কথা শোনে সে। পিতার পথের ওপর, যে খুব দ্রুত চলে গেল। এখন ভাষা কিছু জানে, যা আপনি জানেন না, যা সে-ও জানত না। কিন্তু সে যতই জানে ততই বলে কম। অবশ্য, সে অবিরাম কিছু না কিছু বলছে, কিন্তু কিছুই বলছে না। এবং একাকীত্ব ইতোমধ্যে তার ছুটি নিয়েছে। এর আর প্রয়োজন নেই। কেউ দেখে না যে আমি এখনও একাকীত্বের মধ্যে ডুবে আছি। আমার দিকে কেউ লক্ষ করে না। সম্ভবত আমাকে সম্মান করা হয়, কিন্তু আমার দিকে নজর নেই কারো। কীভাবে আমি নিশ্চিত করব যে আমার এসব শব্দ কিছু বলে, যে আমাদের কিছু বলতে সক্ষম? আমি এটা কথা দিয়ে করতে পারি না। বাস্তবে আমি এমনকি কথা কইতে পারি না, কারণ আমার ভাষা দুর্ভাগ্যক্রমে এখন বাড়ি নেই। অন্য কোথাও সে কিছু বলছে, সে ব্যাপারে আমি জিজ্ঞেস করিনি, কিন্তু সে ইতোমধ্যে প্রথম থেকে আমার আদেশ ভুলে গেছে। সে আমাকে বলে না, যদিও সে আমার অধিকারের অধীন, মোটের ওপর। আমার ভাষা আমাকে কিছু বলে না, তাহলে অন্যদের সে কী বলবে? কিন্তু সে কিছু বলছে না, সে কথা আপনি নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন! সে অনেক বলে, আমার থেকে আরও দূরে সে, সত্যিই, কেবল তখনই সে কিছু বলার সাহস পায়, যে, সে নিজেকে বলতে চায়, তখন সে সাহস পায় আমাকে অমান্য করার, আমাকে প্রতিরোধ করার। যখন কেউ দেখে, তখন সে দ্রষ্টব্য বিষয় থেকে আরও দূরে সরে যায়, যখন দীর্ঘক্ষণ কেউ তার দিকে তাকায়। যখন কেউ কথা কয়, তখন সে পুনরায় সেটাকে ধরে, কিন্তু ধরে রাখতে পারে না। সে নিজেকে দূরে নিয়ে যায় এবং নিজ নাম, যেসব শব্দ আমি তৈরি করি এবং হারিয়ে ফেলি, তার পেছনে ছোটে। শব্দরা প্রায়শই যথেষ্ট বিনিময় হয়, বিনিময় হার বিস্ময়কর রকম খারাপ, এবং তখন সে অবিশ্বাস্য ছাড়া আর কিছু হয় না। আমি কিছু বলি, এবং তখন সেটা শুরু থেকে ভুলে যাই। এটার জন্যই সে কঠোর পরিশ্রম করে, সে আমার থেকে বের হতে চায়। প্রত্যেক দিন অকহতব্য কিছু কথিত হয়, কিন্তু আমি বলতে চাই, সেটা করতে দেওয়া যাবে না। যা বলা হয়েছে সেটা তার পথ, সেটা বিস্ময়কর পথ। কথিত বক্তব্য আমার নয়। সে সংঘটিত হতে চায়, যেন কেউ বলতে পারে: কথিত এবং সংঘটিত। আমি বরং সন্তুষ্ট হব, যদি সে, আমার ভাষা, আমার হতে অস্বীকার করে, কিন্তু তা সত্ত্বেও সে আমারই থাকবে। কীভাবে আমি নিশ্চয়তা দেব, যে, সে ন্যূনতম হলেও একটু জড়িত আমার সঙ্গে? মোটের ওপর কিছুই অন্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, সুতরাং আমি নিজেকে এগিয়ে দেই। ফিরে এসো! দয়া করে ফিরে এসো! কিন্তু না। পথের ওপর সে, আমার ভাষা, গোপন কথা শুনছে, যা আমার জানার কথা নয়, কিন্তু সে পৌঁছে দেয়, গোপন কথাকে, অন্যের কাছে, যারা সেগুলো শুনতে চায় না। আমি চাইব, সেটা আমার অধিকার, সত্যিই, সে যথেষ্ট নীচে নামবে, যদি আপনি চান, কিন্তু সে স্থির হয়ে দাঁড়ায় না, এবং আমার সঙ্গে কথা কয়, হ্যাঁ, সেটা সে করতে পারে না। সে শূন্য স্থানটায় থাকে যা আমার থেকে পৃথক এবং আলাদা। শূন্যতাই সেই পথ। আমি এমনকী শূন্যতারও পার্শবর্তী। আমি পথটা ত্যাগ করেছি। আমি কেবল একটার পর আরেকটা জিনিস বলেছি। আমার সম্পর্কে অনেক বলা হয়েছে, কিন্তু এর কোনওটাই খুব একটা সত্য নয়। আমি নিজে সেটাই বলেছি যেটা অন্যেরা বলেছে, এবং আমি বলি: এখন এটাই সেটা যেটা সত্যি সত্যি বলা হয়েছে। যেমনটা আমি বলেছি- স্রেফ অবিশ্বাস্য! অনেক দিন এ রকম অনেক বলা হয়নি। কারও মনোযোগ আর অব্যাহত থাকতে পারে না, যদিও সে শুনতে বাধ্য, কোনও কিছু করতে সক্ষম থাকার জন্য। এই বিবেচনায়, যা বাস্তবে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেওয়া, এমনকী আমার ওপর থেকে নজর সরিয়ে নেওয়া, আমার সম্পর্কে বলার কিছু নেই আর, কিছু বলার নেই, অতিরিক্ত আর কিছু বলার নেই। আমি সব সময় জীবনকে অবলোকন করছি, আমার ভাষা আমার কাছেই ফিরে আসে, আগন্তুকদের দিকে পেট এগিয়ে দেয় আদর নেওয়ার জন্য, নির্লজ্জের মতো, আমাকে যদি কিছু দেখিয়েই থাকে সে হল তার পশ্চাদ্দেশ। প্রায়শই সে আমাকে কোনও ইঙ্গিত দেয় না এবং কিছু বলেও না। কখনও কখনও আমি তাকে এমনকী সেখানে আর দেখিও না, এবং এখন আমি এটাও বলতে পারি ‘যেমনটি ইতোমধ্যে বলা হয়েছে’, কারণ যেহেতু আমি প্রায়ই এটা যথেষ্ট বলেছি, সেজন্যে আমি এটা আর বলতে পারি না, আমার শব্দ হারিয়ে গেছে। কখনও কখনও আমি তার পৃষ্ঠদেশ বা পায়ের তলা দেখি, যার ওপর ভর করে, সে, শব্দগুলো, বাস্তবে কাজ করতে পারে না, যতটা দ্রুত করতে সক্ষম আমি এত দিন ধরে এবং এমনকি এখনও। আমি তাহলে কী করছি? সেটাই কি তার কারণ যে আমার প্রিয় ভাষা আমার থেকে দূরবর্তী থাকাকে সহ্য করছে? এইভাবে সে, অবশ্য, আমার চেয়ে দ্রুতগামী হয়, লাফায় এবং দৌড়ে চলে যায়, যখন আমি আমার কর্মস্থল থেকে তার দিকে এগিয়ে যাই, তাকে ফিরিয়ে আনার জন্যে। আমি জানি না কেন তাকে ফিরিয়ে আনব আমি। এই জন্যে কি যে সে আমাকে কাছে নেয় না? সম্ভবত জানে সে, যে আমার কাছ থেকে পালিয়ে যায়? যে আমাকে অনুসরণ করে না? যে এখন অপরের দৃষ্টি এবং কথা অনুসরণ করে, এবং সত্যিই আমার সঙ্গে সেসব মেশাতে পারে না। তারা অপর, কারণ তারা অপর। এছাড়া আর কোনও কারণ নেই যে তারা অপর। আমার কথার জন্যে সেটা যথেষ্ট ভালো। মূল বিষয় হল, আমি এটা করি না: কথা বলা। অন্যেরা, সব সময় অন্যেরা, আমি নই, প্রিয় ভাষার সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমি তাকে আঘাত করতে খুব পছন্দ করি, সেখানকার অন্যদের মতো, আমি কেবল তাকে ধরে রাখতে পারি। কিন্তু তখন সে সেখানে থাকে যেন আমি তাকে ধরে রাখতে না পারি।
কখন সে চুপিসারে পালিয়ে যায়? কখন কিছু পালিয়ে যায়? নীরবতা থাকে বলে? সেখানে ভাষা যতই পালিয়ে যায় ততই উচ্চৈস্বরে তা শোনা যায়। সেটা তখন শুধু আমার ঠোঁটে নয়, সবার ঠোঁটে জায়গা করে নেয়। আমার মন খারাপ হয়ে যায়। আমি যাই না, কিন্তু আমার মন বিষাদে ভরে যায়। সমুদ্রের পাশে লাইটহাউস দেখার মতো আমার ভাষার দিকে তাকিয়ে থাকতে-থাকতে আমি অবসন্ন, যার অন্যকে আলোকিত করার কথা সে নিজেই অন্যের দ্বারা আলোকিত, এবং যখন সে আবর্তন করে তখন সব সময় অন্ধকার থেকে কিছু না কিছুকে দৃশ্যমান করে, কিন্তু যেভাবেই হোক সে সেখানে থাকে, তা সে আলোকিত হোক বা না হোক, সে একটা লাইটহাউস, যা কাউকে সাহায্য করে না, তা সে লোকটা পানিতে ডুবে না মরার জন্যে কত কঠিন ভাবে তাকে কামনা করে স
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×