ধ্বসে যাওয়া রানা প্লাজা এর নিচে মানুষের আর্তনাদ শুনি, আমাদের সরকারী সহায়তায় কুলিয়ে উঠতে পারিনা। আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য তন্ন তন্ন করে খুঁজে ফিরি শহরের অলি-গলিতে । কিন্তু আমরা অনেক সচেতন, আমরা ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতপ্রায় মানুষকে উঠিয়ে তার অনুভূতির ব্যাপারে সচেষ্ট হই।
আমরা জিহাদকে মাটির নিচে গর্তে পরে থাকতে দেই সারা রাত ধরে,আমরা উদ্ধার করতে পারি না, মৃত্যুকে অস্বীকার করি। তারপর লাশ পেলে চুপ মেরে যাই। ওর বাবাকে আটক করি, ব্যাটা মিথ্যা বলে আমাদের হয়রানি করছিস না তো!!
আচ্ছা একবার ভাবুন তো, একটা বাচ্চা মার খেয়ে বাঁচার জন্য আকুতি জানাচ্ছে, আর একদল মানুষ মুঠোফোনে ভিডিও করছে সেটা পরে আরাম করে ফেসবুকে শেয়ার করা যাবে। একটা ১৩ বছরের বাচ্চাকে যে জাতি দিনে দুপুরে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে, সামান্য একটা অপরাধে, এমন কি সে অপরাধী কি না সেটাও প্রমাণিত না, কতটা পরিমাণ সাইকোপ্যাথ হলে এরকমভাবে চিন্তা করতে পারে। সত্যিই রাজন আমরা মধ্যম আয়ের দেশ, কিন্তু তোমার সামান্য অপরাধে আমরা জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড দেই।
আমাদের মুখে মুক্তচিন্তা, মানবাধিকার এই সব বড় বড় শব্দ মানায় না। কারণ এগুলো মানুষের মুখে মানায়, আমরা সেই স্তর থেকে অনেক আগেই নিচে নেমে আসছি।
এরপরেও আমরা সেহেরি নাইট করবো, ঈদের কিরণমালা আর মোদী ড্রেসের খোঁজ নেব, ঈদ বলে কথা, বছরে একবারই তো আসে
শুধু খোঁজ নেব না জিহাদের,
খোঁজ নেব না রাজনের
খোঁজ নেব না একদল ক্র্যাচ হাতে ঘোলাটে চোখের মানুষের প্রতিদিনের রোজনামচার, যেখানে রানা প্লাজা এক বিরাট যতি টেনে দিয়েছে।
কিন্তু তারপরেও জোড় গলায় বলে বেড়াব আমরা মানবাধিকারের বিষয়টা কিন্তু কক্ষনো ছোট করে দেখি না
আজকে সকালবেলায় রাজন আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় আমরা অনেক আগেই মানুষ নামের পরিচয় দেয়া হারিয়েছি
আমাদের ক্ষমা করো রাজন