যুক্তরাষ্ট্রে বড় হওয়া দুই বাংলাদেশী বিশ্বের ৫০ প্রভাবশালীর তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এদের একজন হলেন সুমাইয়া কাজী (২৭) এবং অপরজন সালমান খান। ওয়েবসাইট জগতে সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০ উদ্যোক্তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং ক্লাউট। সে তালিকার ১৬ নম্বরে স্থান পেয়েছেন সুমাইয়া কাজী। অপরদিকে বিনামূল্যে অনলাইনে অংক শেখানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করে বাংলাদেশী সালমান খান বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগানোর পর বৃটেনের ‘উইয়ার্ড’ ম্যাগাজিন কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বের পরিবর্তন সাধনে সক্ষম ৫০ ব্যক্তির তালিকাভুক্ত হয়েছেন। সালমান খানের ক্রমিকও ১৬। আটলান্টিকের দু’পাড়ের দুটি খ্যাতিমান সংস্থার এ তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ানদের মধ্যে আর কেউ নেই। কয়েক মাস আগে বিশ্বের ১০০ জন উদ্যমী মানুষের একজন হিসেবে বাংলাদেশী আমেরিকান ড. রায়ান সাদীর নাম উঠে এসেছিল।
বাংলাদেশের মেয়ে সুমাইয়া কাজী তার মা-বাবা-ভাই-বোনদের সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো বে এলাকায় থাকেন। সুমাইয়া ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘কালচারাল কানেক্ট ডট কম’ তথা টিসিসিসি। ৩৫ বছরের কম বয়েসী কর্মোদ্দীপক যুবক-যুবতীদের আপন সংস্কৃতির অবগাহনে উজ্জীবিত করেন এ প্রতিষ্ঠানে সম্পৃক্ত করে। প্রকাশ করেন সাপ্তাহিক ৫টি ই-ম্যাগাজিন। শতাধিক দেশে এসব ম্যাগাজিনের গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। ৩ স্টাফ নিয়ে শুরু“ এসব ম্যাগাজিনে বর্তমানে অর্ধ শত স্টাফ কাজ করছেন। ২০০৬ সালে বিজনেস উইক ম্যাগাজিন কর্তৃক আমেরিকায় অনুর্ধ ২৫ বছর বয়েসী সেরা উদ্যোক্তার একজন হিসেবে স্বীকৃতি পান সুমাইয়া কাজী।
এদিকে বিশ্বকে পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম ৫০ প্রতিভাবান ব্যক্তির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে লন্ডনভিত্তিক ‘উইয়ার্ড’ ম্যাগাজিন। সেখানে রয়েছেন বিল গেটসের স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস, আমাজন ডটকমের জেয় বেজোস এবং জুকারবার্গসহ বিখ্যাতরা। সেই বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিদের তালিকায় বরিশালের প্রবাসীর সন্তান সালমান খানও রয়েছেন। সালমান খানের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানায় এবং বিশ্ববিখ্যাত এমআইটি থেকে তিনি ৩টি ডিগ্রি নিয়েছেন। ইয়াহু ডুডল নোটপ্যাডে সালমান তার কাজিন নাদিয়াকে ২০০৪ সালে অংক শেখাতে শেখাতে ইউটিউবে টিউটোরিংয়ের আইডিয়া উদ্ভাবন করেন। এরপর প্রতিষ্ঠা করেন খান একাডেমি। মাইক্রোসফ্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিল গেটসের ছেলে এ তথ্যটি তার বাবাকে জানালে বিল গেটস অভিভূত হন এবং ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক একটি সম্মেলনে বক্তৃতার সময় সালমান খানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তারপরই খান একাডেমির নাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এ যাবত ২৬০০ ভিডিওর মাধ্যমে প্রায় সোয়া কোটি লেসন প্রদান করেছেন ইউটিউবে বিনিময়ে একটি পয়সাও নেননি। বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে যে কেউ নিতে পারে এ শিক্ষা। অংক, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও অর্থনীতি বিষয়ে এ লেসন দেয়া হচ্ছে। তার এই টিউটোরিংয়ের কনসেপ্ট বিশ্বব্যাপী ভার্চুয়্যাল ক্লাস রুমের ধারণাকে সফল হিসেবে প্রমাণ করেছে এবং সে কারণেই তাকে এই সম্মান দেয়া হয়েছে।
এনা, নিউইয়র্ক থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ২:১৭