দৃশ্য ১ঃ
একে একে একই গ্যারেজের বাকি গোরুগুলো কুরবানি করা হলো। শেষ গোরুটি একদিন বেশী জীবন পেয়ে গেল। তাকে ঈদের পরদিন কুরবানি করা হবে।
তার সামনে কিছু শুকনো খড়। সে মাঝে মাঝে আড়চোখে সহযাত্রীদের পরিণতি দেখছে, আর আপনমনে তার খড়টুকু চিবুচ্ছে। হয়তো মৃত ভাই-ব্রাদারের বেঁচে যাওয়া অতিরিক্ত খড়টুকু পেয়েও সে খানিকটা প্রীত।
***
জীবনমুখী দার্শনিকঃ
দেখেছেন ওদের জীবনবোধ?
একদিনের জীবন, তো কী হয়েছে?
চাইলে সেই একদিনের জীবনের প্রতিটা মুহূর্তও আয়েশ করে খড় চিবিয়ে কাটানো যায়!
***
বিপ্লবী দার্শনিকঃ
এজন্যেই ওরা গোরু।
ভিক্ষে পাওয়া একটি দিন বেশী আয়ুর আশা ছেড়ে, আজ যদি সে খড় চিবুনো বন্ধ করতো, আজ যদি সে তার ভাই হত্যার প্রতিবাদ করতো, তাহলে আগামীকাল একই পরিণতি বরণ করতে হতো না তাকেও!
যে প্রাণী তার স্বজাতি হত্যার প্রতিবাদ করতে জানেনা, তার নামই গোরু!
***
সাধারণ এক মানুষের মনে কিছু প্রশ্ন ছিলো।
যেমন, স্বল্প জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত খড় না চিবিয়ে অন্য কিছু চিবুলে কী চলবে?
যেমন, গোরু যদি তার ভাতৃ-হত্যার প্রতিবাদই করতো, তবে মানবজাতি এত সুস্বাদু প্রোটিন কোথায় পেত?
কিংবা, 'মনুষ্য প্রাণী'ও যদি তার স্বজাতি নিধনের প্রতিবাদ করতে না জানে, তবে কি তার নামও গোরু?
সাধারণ মানুষটি তার রাশি রাশি প্রশ্নের কোনটিই শেষ পর্যন্ত করতে পারলেন না। পাছে শিশুতোষ প্রশ্নের দায়ে দার্শনিকেরা তার নামই দিয়ে দেন "গোরু"!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩৮