চিন্তা করছি হতভাগাদের জন্য বিষয়টি কিভাবে উপস্থাপন করবো। হতভাগাদের জন্য বাক্যের লুটোপুটিতে বোধগম্য বাক্য তৈরীর জ্ঞান গরিমা আমার নেই। কিংবা লিংগুইস্টিক তঘমাও আমার নেই। সমুদ্রের ফেনা থেকে জলচর মাছ, তারপর উভচর আধা মাছ- আধা পাখী, তারপরে বনের জন্তু জানোয়ার। অতঃপর একদিন লেজ গঁজালো কিছু দিন বাদে লেজ যখন খসে পড়লো তখন নিজেকে যারা মানুষ ভাবতে শুরু করলো তাদের মূলত সকল কিছুর পরির্বতন ঘটলেও বানর জাতের উচ্চ বিটলামি সম্পন্ন ঘিলুটার মতো তাদের ঘিলুটা অপরির্বতীয় রয়ে গেছে। তাদের যুক্তি এতো সুন্দর যে আমি রীতিমতো টাসকি খাই। অবশ্য শয়তানের যুক্তিও সুন্দর ছিলো।
এক ব্লগারকে দেখলাম যে কয়েক জায়গায় খুব আবেগী হয়ে প্রশ্ন করছে আমি হিন্দু আমার কি হবে?, আমার অনেক পূজোঁ আমার ছুটির দিন কোনটি হবে? এভাবেই প্রশ্ন করেছে। এবং এক পর্যায় এসে বললো শালার বাংলাদেশ! কথার ধরনে আমার সন্দেহ হয় বেচারা আদৌ কোন ধর্মের অনুসারি কিনা! এখানে যা বলবো তা শুধু সেই ব্লগারের জন্য না বরং সে সকল উচ্চ বুদ্ধিসম্পন্ন ভাচর্ুয়াল বুদ্ধিজীবিদের জন্যও যারা মনে করেন ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু হলে অন্যান্ন ধর্মালম্বীদের কি হবে? কেউ কেউ আবার আমাদের জলিল সাহেবের মতো হিসাব নিকাশ করে বলেন ধর্ম পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হবে! আরো অনেক কিছু যার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পর্যন্ত নেই। তবে আমি জানি এই লেখার বিরোধীতা কোন অমুসলিম করবেনা। তবে দুই একজন যে নাক সিটকাবেনা সেটার গ্যারান্টি আমি দিবোনা। তবে যাদের করার প্রবাবিলিটি আছে তারা আমার নামধারি জ্ঞাতি ভাই। কারণ স্বজনের দুশমন হওয়ার ইতিহাস বড় পুরানো। এটা স্বর্বজন স্বীকৃত বিষয়। তাই বলি কি হাতের কাছে ঠান্ডা পানির মগ রাখবেন। কে জানে কখন মাথা ঠান্ডা করার জন্য প্রয়োজন পরে!
দেখুন আল্লাহ তায়লা কুরআন শুধু মুসলমানদের জন্য পাঠাননি বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি শুধু মুসলমানদের এর রক্ষক বানিয়েছেন। তিনি আমুসলিমদের জন্য জল আর মুসলিমদের জন্য পানি তৈরী করেননি। কিংবা মুসলমানদের জন্য চাঁদ- সূর্যের আলোর পাওয়ারও বাড়িয়ে দেননি। মানবিক অধিকারের বেলাতেও কোরআনে মুসিলিম আমুসলিমের মাঝে পার্থক্য করা হয়নি। তাই ইসলামের কাছে নিজেদের অবাঞ্চিত মনে করার কোনই অবকাশ নেই। আর তাই দেশ চালনার জন্য আল্লাহ যদি কোন বিধান দিয়ে থাকেন তবে সেটাতেও আপনাদের সমান অধিকার আছে। আপনি ইচ্ছে করলেই ইসলামী রাষ্ট্রকে সাহায্য করতে পারেন। কিভাবে করবেন সেটাও আপনার ইচ্ছে। আপনি মুসলমান হয়ে করলে আল- হামদুলি্ললাহ আর আমুসলিম হয়ে করলেও আল-হামদুলি্ললাহ। অমুসলিম থেকে কি ভাবে সম্ভব? কি বলতাছে ওয়ালী এগুলি। বিশ্বাস করেন আর নাই করেন অমুসলিম থেকেও মানে নিজ নিজ ধর্ম পালন করেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদী ক্ষেত্রে কুরআনের বিধানকে সমর্থন করতে পারেন। যদি অন্যান্ন মতবাদের সাথে তুলনা করে কোরআনের বিধানকে অধিকতর কল্যানকর মনে হয় তবে মানতে সমস্যা কোথায়? এমনতো কোন কথা নেই আপনি ইসলামের রাজনৈতিক মতবাদের বিশ্বাসী হলেই মুসলামন হয়ে যাবেন। আর কেউ যদি হিন্দু থেকেই সমাজতন্ত্রকে গ্রহণ করতে পারে তবে যুক্তির খাতিরে কেন ইসলামকে নয়? মুসলমান হওয়াটা আপনার জন্য আদৌ বাধ্যতামূলক না এটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিবেচনা। এর জন্য ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার প্রয়োজন নেই। এই ধর্মনিরপেক্ষতা আপনাদের কি দিয়েছে তার জন্য পরের প্যারাতে ছোট খাট পরিসরে ইতিহাস তুলে ধরা প্রয়োজন কারণ আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেই না শুধু ব্যবহার করি।
বর্তমানে বাংলাদেশে এক কোটিরও বেশী অমুসলিম রয়েছে যার 4 ভাগের 3 ভাগই হিন্দু ধর্মালম্বী। বাংলাদেশের মুসলমানদের মতোই পৈত্রিক সূত্রেই শত শত বছর ধরে তারা এদেশে বসবাস করছে। দ্বিজাতী তত্বে যে হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে সেটা বলা বাহুল্য। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে এই তিক্ততা তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে কমতে থাকে। এমন কি ভারতে মুসলিম হত্যা চলতে থাকলেও পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের মাঝে কোন খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বরং সম্পর্কের আরো উন্নতি হয়েছে। 54 এর প্রাদেশিক আইন পরিষদের নির্বাচনেও এই সম্পর্ক বিনষ্ট হয়নি। পৃথক নির্বাচনের মাধ্যমে মুসলিম ভোটারদের ভোটে মুসলমান এবং হিন্দু ভোটারদের ভোটে হিন্দু প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলো। ফলে রাজনৈতিক অঙনেও হিন্দু মুসলমানের কোন বিরোধ সৃষ্টি হয়নি।
কিন্তু সেই প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিপুল ভাবে জয় লাভ করলেও শেরে বাংলা এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের মাঝে ক্ষমতার দ্বন্দ শুরু হয়। যুক্তফ্রন্ট দুইভাগে বিভক্ত হলো আর এর ফলশ্রুতিতে আইন পরিষদের হিন্দু সদস্যদের হাতে ক্ষমতার ভারসাম্য চলে যায়। তবে প্রথম দিকে হিন্দু সদস্যার শেরে বাংলার সাথেই ছিলো। 54 সালের শেষ ভাগে হিন্দু সদস্যদের সমর্থন লাভের আশাতে ধর্মনিরপেক্ষতার আর্বিভাব ঘটানো হয় আর এর দোহাই দিয়ে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি কর্তন করা হলো। আর 56 সালের দিকে আইন পরিষদে যুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যার ফলে আওয়ামী লীগ আইন পরিষদে মন্ত্রিসভা গঠনে সক্ষম হয়। সে সময় হিন্দুরা কেন যুক্ত নির্বাচনের সমর্থন করলো সেটা তারাই ভাল বলতে পারবে আর তাতে সত্যি তাদের কোন উপকার হয়েছে কিনা সেটাও তারা বলতে পারবে। কিন্তু যুক্ত নির্বাচনে হিন্দু মুসলমানের মাঝে প্রতিযোগীতার সৃষ্টি হয় ফলে ভোটের মামলায় আবার তিক্ততা শুরু হয়। হিন্দু ভোটারদের তুলনায় মুসলিম ভোটদাতাদের সংখ্যা বেশী হওয়ায় শুধু ভোটে কোন প্রার্থীর বিজয়ের সম্ভবনা থাকলো না। এর ফলে হিন্দু ভোটারদের নিয়ে টানা হেঁচরা করার সুযোগ হলো। আর হিন্দু জনসংখ্যার ভিত্তিতে তারা পার্লামেন্টে কোন প্রতিনিধিত্ব পেলনা। ভিন্ন দিকে মুসলিম ভোটার থেকে তারা কোন সম্মানজনক পজিশনও পায়নি। হিন্দুদের জন্য এটা লাভজনক প্রমানিত হয়নি।
বর্তমানে দেখলে দেখা যাবে বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটাররা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করেনা। আর যে কারনেই হোক বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভারতকে নিঃস্বার্থ বন্ধু মনে করেনা। অথচ তারা আওয়ামী লীগকে ভারতের বন্ধু মনে করে আর হিন্দুদেরকে আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে ধারনা করে। পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা থাকলে এরকম ধারণার সৃষ্টি হতো না।
আমি হিন্দু মুসলিম পৃথক নির্বাচন চালুর পক্ষে যাতে আপনাদের স্বকিয়তা ফিরে আসে, যেন ধর্মনিরপেক্ষতার গ্যড়াকলে আপনারা বাংলাদেশের মাটিতে নিজেদর অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন এবং যার সমাধান কেবল মাত্র ইসলাম’ই দিতে পারে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে আমি বিবেচনা করতে পারি প্রস্তাব দিতে পারি না। এটা তাহলে চাপের পর্যায়ে বিবেচিত হতে পারে। সংখ্যালঘু হিসেবে প্রস্তাবটা আপনাদের কাছ থেকেই আশা করাটা অধিক যুক্তিযুক্ত। সিদ্ধান্তটি পুরোপুরিই আপনাদের স্বাধীন ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে।
আর এটাই আমার ইসলাম। কারো কারো মতে জামায়াত - ই - ইসলাম

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


