সেদিন সন্ধ্যায় দু’টো পাপ এসেছিল নিরবে
হামাগুড়ি দিয়ে;
আমি তাদের দেখিনি,
তবে কথোপকথনের ফিসফিস হলকায়
আমি উষ্ণতা আর গন্ধমের অপার্থিব ঘ্রাণ
পেয়েছিলাম পুরোটা সময়ভর।
একটি পাপ কিছুটা সময় চাইলো,
অন্য পাপটি বিবশ রইল শুনশান নিরবতায়-
সুখ আর যাতনার অভূতপূর্ব শিহরনে সে
মুছে ফেলতে চাইলো পারিপার্শ্বিক কোলাহল;
কৈফিয়াতের স্বরে বললো:
স্নায়ু এবং কল্পলোকের মাত্রাবিন্যাসে আমার দাহন।
রতি এবং বিপরীত কামনার মোহাচ্ছন্ন যজ্ঞে আমার অধিষ্ঠান-
তোমাকে দিতে পারি সর্বোচ্চ সুখের প্রমোদ নিকেতনের খোজ!
তার কথা শেষ হলে আমি প্রশ্ন করলাম: অত:পর কি!
ক্ষরণ প্রমাদের পর আমার জন্য কি অবশিষ্ট রইবে-
অস্ফূটস্বরে সে বললো- আত্মগ্লানি!
আমি এবার অন্য পাপটির মনোযোগ আকর্ষন করে তার বক্তব্য শুনতে উৎসাহী হলাম-
দ্বিতীয় পাপটি কিছুটা যান্ত্রিক স্বরে আমাকে বললো:
বৈভব এবং সম্পদের মধ্যেই মানবজীবনের তাবৎ সফলতা-
তোমার গ্রীবা সমুদয় জগতের মহিরুহ হয়ে ছড়ি ঘুরাবে উদয়াচল এবং অস্তাচলে;
চোখের দূরবীনে তুমি হারুত আর মারুতের নিষিদ্ধ মুদ্রায় শাসন করবে জীবনকাল!
ক্ষমতার উষ্ণীষ তোমাকে দেবে কাঙ্খিত আড়ম্বর-
ঐশ্বর্য্যই পরম এবং প্রগাঢ় প্রাপ্তি!
কথোপকথন শেষে নেমে এলো আশ্চর্য নির্জনতা আবার।
আমি ম্লান হেসে পাপদ্বয়ের কাছে আমার অন্তিম প্রশ্ন ছুড়লাম:
অথচ আমি অমর হতে চেয়েছি-
আমি অঙ্কের ছক কাটিয়ে বার্ধক্যের চামড়ায় বুলাতে চাই অবিনশ্বর শ্বেতপল্লব!
আমি অনুভব করলাম, আমার ঘরে আর কেউ নেই।
অক্ষম পাপদ্বয় নিজেদের অক্ষমতা ঢেকে চলে গিয়েছে নিরবে।।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪