আজ ভোর থেকে অবিশ্রাম বৃষ্টি, অনিয়মে- একটানা ঝরছিল। আমি কাচের ফাঁক দিয়ে অস্পষ্ট ভোরের আশায় তখন ক্যাপাচিনোর মগে চুমুক দিচ্ছি। এখানে বৃষ্টির সাথে ব্যাঙের কোরাস শোনা যায় না; এখানে বৃষ্টি একরকম সোদা গন্ধ আনে না সাথে করে। সবুজ বনানীর নমনীয়তায় বৃষ্টি, বাদলের সাথে মাদল বাজায় না এখানে।
তবে, ভোরের যে অভূতপূর্ব নির্জনতা, তার সাথে বৃষ্টি ছাট একরকম লিকার তৈরী করে, যেন মস্ত হাওরের পানসী বুদবুদ। আমি নির্জনতার কব্জীতে একটি হাওয়া ঘড়ি পরিয়ে দেই। আমি বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা ম্যাগপাইয়ের লেজে লিখে রাখি বর্ষার দূরন্ত দূরালপন।
একটু পরেই মানুষ নামবে পথে। বৃষ্টি ধাক্কিয়ে তাদের বর্ষাতি আর শকটের শব্দে তিনটি মেঘ সরিয়ে সূর্য্যটা উঠবে টুপ করে- আলো, মাটি আর বৃষ্টি জন কনষ্টেবলের তৈলচিত্রের মতো আকাশের গায়ে ঝুলে থাকবে সহসা।
আমার পথের কনক্রিটে রোদ্দুর করবে ভর। আমার বেসবল ক্যাপের কার্নিশে ঝিলিক দেবে সকালের নান্দনিকতা। মানুষ তো আলো ছাড়া কোথাও সুন্দরতা খোঁজে নি কখনও! রাত আর দিনের সন্ধিক্ষণে যে নিযুত আগ্রহের ভোর, তা অদেখা হয়ে থাকে দিনের প্রস্তুতির যাতাকলে।
আমার মগের কফি ফুরিয়ে আসে। ত্রিকোণ আলোর স্রোত ঝিলিক মারে পূর্বাকাশে। শা করে ছুটে যায় একটি কালো মার্সিডিজ। দু’টো বুনো খরগোশ গোল চোখে বেরিয়ে আসে ঝোপ থেকে। অজস্র ভোরের পাখি অনুচ্চশব্দে ডেকে উঠে চারপাশে।
আমি নির্জনতার অনুবাদে শুধু বাংলা ভাষাকেই বেছে নিয়েছি। আমি এই বিচ্ছিন্ন উপত্যকায় পাঁচটি সবুজ পাহাড়ে নিবন্ধিত করেছি আমার মনযোগ। আমি বৃষ্টিকেই প্রিয় ভাবনার সবটা দিয়ে, স্তব্ধতা খুঁজেছি না অন্ধকার না আলোর সমান্তরাল সময়রেখায়!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৫১