ভোর মাত্র হচ্ছে আর বাইরে খুব সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে । ডিসডুম ডিসডুম জেনারেশনের ছেলে-মেয়েদের মোবাইল কথোপোকথনের মত পুতুপুতু-কুকুর-বিলাই মার্কা বৃষ্টি না, একেবারে 'হালুম-হালুম গিলুম সবাইরে' টাইম বৃষ্টি হচ্ছে। মাথার উপরে ইট না থেকে টিন থাকলে এই 'হালুম-হালুম-গিলুম সবাইরে' শব্দটাই 'এসো হালুয়া খাই গিলিয়া' টাইপের গানে পরিনত হত। অবশ্য এখন আমাগো আরামবাঘের হালুয়া খাইলে নাকি লোকজনের ঘুম হারাম হয়ে যায়। হালুয়া খাওয়ার গান শুনতে শুনতে বিকাট এক ঘুম দিয়ে উঠলাম। ঘুম থেকে উঠে রুটি-হালুয়ে খেয়ে আবার জামাই-বাজারে যেতে হল মাছ কিনতে। ভদ্দরলোকেরা যদিও এই জামাইবাজারকে 'মাছ বাজার' নামে অভিহিত করে থাকে। জামাই বাজারে গিয়ে দেখি মাছের দাম আগুনমুখী থেকে লাভামুখী হইছে। দোকানী দাম কইলেই আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে । সিং মাছের দাম আগে আছিল কই মাছের কানের মত ছোট মানে কম কিন্তু এখন দেখি সিংমাছের দাম বাড়তে বাড়তে সিংমাছের দাড়ির চেয়েও বড় হয়ে গেছে। দোকানীরে ডরে ডরে জিজ্ঞাসা করলাম-
- 'মামা, সিংহ মাছের কেজি কত ? '
-'আপনার জন্য মাত্র ৩৫০টাকা কেজি ' দোকানী উত্তর দিল।
আমি বললাম-
- ' ২০০টাকা রাখ'
- 'আপনে এই কয়েকমিনিট যে মাছের দিকে তাকাই ছিলেন, তার দামওতো ২০০ টাকার চেয়ে বেশী । এইডা যদি মাছ বাজার না হয়ে বাঘ-সিংহ বাজার হইত তাইলে এতক্ষন বাঘ/সিংহ দেখার পরেও সেই সিংহ না কিনলে দোকানী মাংশের বদলে তোমারে কেটে সিংহকে খাওয়াইত ' দোকানীর সোজা উত্তর।
- 'মামা, মাছ দেখার ওজন পরিমাপ করার জন্য তোমার কাছে কি কোন বাটখারা আছে নাকি ? থাকলে পরের বার আসলে তোমার কাছ থেকে একটা সিংহ কিনে সেই সিংহকে দিয়ে তোমারে আফসুস খাওয়াইতাম ' এইডা ডরে ডরে দোকানীরে কইতে পারি পারি নাই। সিং মাছ না কিনতে পেরে বোয়াল মাছ নামক ক্যাডার মাছ কিনে আসতে হল।
কোনরকম ক্যাডারীয় আক্রমন ছাড়াই বোয়াল মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার ভক্ষন করার পরে আবার ঘুম দিলাম। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখলাম -সিং মাছ না কিনার কারনে সেই সিং মাছ আমারে দৌড়ানি দিছে। সিংমাছের দৌড়ানি খেয়ে আনু আর আনুর গার্লফ্রেন্ডের সাথে গেলাম বউ বাজারে মানে আপনাগো ভাষায় শপিং মলে ।
আনুর পুরা নাম হইল আনোয়ার কিন্তু কেন যে তার নাম "আনু" হয়ে গেল কে জানে। তার গার্লফ্রেন্ড আবার তাকে আনু/অনু/ম্যানু বলে অনেক নামে ডাকে । তবে দিনকে দিনকে সে যেইভাবে চিকনা হইতেছে আমি সিউর কয়েক বছর পরে সে পরমানুতে রুপান্তরিত হবে। তখন তার গার্লফ্রেন্ড তাকে পরু, পনু, পরী নাকি 'হনু' ওরফে হনুমান বলা ডাকপে কে জানে। সে তার গার্লফ্রেন্ডকে পুতুপুতু কইরা 'জানু' বলে ডাকে। আনোয়ারকে 'আনু' ডাকলে সূত্র অনুযায়ী তার গার্লফ্রেন্ডের ভাল নাম হওয়ার কথা "জানোয়ার"। কিন্তু তার গার্লফ্রেন্ড যে মানুষ এই ব্যাপারে আমি সিউর।
বউ-বাজারে গিয়ে বউ না কিনে আনু কিনল পাঞ্জাবি আর টি শার্ট। টি শার্টের পিছনে লেখা -
"দিন দুনিয়ার কাপড়ের মালিক তুমি শপিং-মলা
তোমার কাপড়ের দাম কি তবু কম হয় না ?"
মেলা ঘুরাফেরা আর ভুংবাং কাপর চোপড় দেখার পরে মলা বাবার ফুল খাটে কি কই ফুড কোর্টে গিয়ে আগডুম বাগডুম নাসাগো দেশের অনাসীয় খাবার খেয়ে আমার ব্যারামবাঘের বাসায় এসে আরাম করে ঘুম দিলাম।
এইবার কাপড়-চোপড় যদি সিংমাছের মত স্বপ্নে এসে দৌড়ানি দেয় তাইলে কাপড়-চোপড়কে সিং মাছের কাছে পাডামু যাতে সিংমাছ কাপড়-চোপড় খেয়ে কিছুদিন বাচে।
[ নিতান্তই মজা করার জন্য লেখা। কেউ যদি নামের ব্যাপারে বা অন্য যেইকোন শব্দ বা বাক্যের জন্য দুঃখ পান , তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ]
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৮:০৯