আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার অযুহাতে (!) তিনি এ অনুরোধ জানিয়েছেন রাজধানীর অভিজাত এলাকার জণগনকে।
পত্রিকায় অনলাইন ভার্সনে এ নিউজটি পড়েই প্রশ্ন জাগল- তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ কি?
যদি জনগণকে ঘরের ভেতরে রেখেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হয় তাহলে তাদের পেছনে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা খরচ করার অর্থ কি? এতদিন শুনে এসেছি সামরিক শাসকরা জনগণকে ভেতরে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার মহান (!) কাজটি সম্পাদন করতেন, পুলিশ বাহিনীও কি সে পথে হাঁটছে?
পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ডিএমপি কমিশনার সংবাদ সম্মেলন করে এমন আরো হাস্যকর কথা বলেছেন। তিনি বলেন-ওই দিন বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢাকার কূটনৈতিক এলাকা, গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সড়ক, হোটেল-ক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয় ও গির্জায় বাড়তি সতর্কাবস্থায় থাকবে পুলিশ।
কিন্তু ডিএমপি কমিশনার হয়তো জানেন না (!) গত ৫মার্চ, ২০১২ তারিখে গুলশানের কুটনৈতিক এলাকার রাস্তার পাশে বুলেটবৃদ্ধ অবস্থায় সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রশ্ন জাগে- এত অভিজাত এলাকায় তখন পুলিশ কোথায় ছিল? মাননীয় ডিএমপি কমিশনার আপনাদের এহেন কথা এবং ভুমিকায় জনমনে চিন্তা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বৈকি। এজন্য যে রামুর বৌদ্ধ বিহারে হামলার সময় আপনাদের ডেকেও পাওয়া যায় নি। প্রশ্ন জাগে ওই সময় পুলিশ সদস্যরা কার পদলেহন করছিলেন?
মাননীয় ডিএমপি কমিশনার আরো বলেছেন- দায়িত্ব পালনে কোনো পুলিশ সদস্য যদি অবহেলা করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাননীয় ডিএমপি কমিশনার আমাদেরকে এত বিনোদন না দিলেও আপনার চলত। কেননা আমরা জানি যে শৃঙ্খলাবিরোধী যে কোনো ঘটনায় জড়িত থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের তাৎক্ষণিকভাবে 'প্রত্যাহার' করা হয়। মজার ব্যাপার, কখনও কখনও প্রত্যাহৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ ও লোভনীয় স্থানে পোস্টিং হয়।
মাননীয় ডিএমপি কমিশনার বলেন-সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সবাই যাতে ইংরেজি বর্ষবরণ উদযাপন করতে পারে, সে জন্য নগরের রাজপথে, বিশেষ করে গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এসব এলাকায় বসানো হবে ১৪টি বিশেষ চেকপোস্ট।
মাননীয় কমিশনার আপনার এ কথাতেও জনগণ আশ্বস্ত হবে না এজন্য যে- যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের নাম করে এদেশে পুলিশ সদস্যরা চাঁদাবাজির রেকর্ড গড়েছেন। ঈদ থেকে শুরু করে এমন কোন উৎসব পার্বণ নেই যাতে তারা এহেন পবিত্র (!) কাজটি করেননি।
সবশেষে
প্রধানমন্ত্রী সমীপে
আপনি ২৩ ফেব্র“য়ারী ২০১২ তারিখে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলেছিলেন, দুই সাংবাদিককে নিজের ঘরে মারা হয়েছে। সরকারের পক্ষে কারও বেডরুম পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকেও কিন্তু এদেশের কিছু কুলাঙ্গার বেডরুমে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। তাহলে আপনি কেন বিচার চেয়েছিলেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের এধরনের কথা বলা মানে -দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া। ডিএমপি কমিশনার আপনার দেখানো গন্তব্যে হাঁটছেন নাতো?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩