‘জান্নাতুন নাঈম’ বেহেশতে ঢুকার সাথে সাথেই তীব্র ম্যাৎকার ধ্বনি ও চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনতে পাইলাম। মনে মনে ভাবতাছি এ কোথায় আইসা পড়লাম। দুইন্যাত থাকতে ভাবছিলাম বেহেশতে খালি সুখ আর সুখ, কিন্তু যেমনে চিল্লাচিল্লি শুরু হইছে এই শীতে শান্তিতে একটু ঘুমানোরও চান্স নাই।
আগ বাড়াইয়া জিগাইলাম ভাই কী হইছে আপনাগো?
চিল্লাচিল্লির মধ্যে একজন কইলো, ভাই দেহেন না আমি কইতাছি বেহেশতী হুর’রা খুবই সুন্দরী। আর ওই মদনার বাপ আবুইল্যা কয় বেহেশতী হুর’রা নাকি রূপবতী। তাদের কথা হুইন্যা আমি কইলাম-ভাইজান আপনাগো চিনা চিনা লাগতাছে, কই জানি দেখছি মুনে হইতাছে। এরি মধ্যে মদনার বাপ আবুইল্যা কয়-আরে বেটা আমরাতো সামু ব্লগার। দুইন্যাত থাকতে কত বড় হিট ব্লগারই না আছলাম। এ কথা কইয়া দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে মদনার বাপ আবুইল্যা। মনে মনে কই- হালার বেটা সামুতে ব্লগাইতে যাইয়া কত নামাজ কাজা করছোস, তোরা বেহেশতে ঢুকলি কেমতে? সম্বিত ফিরে পেয়ে ভাবি-সবই সিন্ডিকেট, সবই সিন্ডিকেট। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে যখন ঘুমানোর লাইগা তাদের পাশ কাটি তখনই মদনার বাপ আবুইল্যা আমার হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়া কয়- ওই বেটা তুই একটা কমেন্ট কইরা যা। নাইলে ওই হালায় তো- ল্যাদাইয়া বেহেশতের তেরটা বাজাইব। আবুইল্যার কথায় সহমত পোষণ কইরা যেইনা আমি কমেন্ট করতে যাইমু সেই মুহুর্তে মস্তিষ্ক সিগন্যাল বার্তা পাঠায়- আপনাকে ৭দিনের লাইগা পর্যবেক্ষণে রাখা হইয়াছে !
ইশ্ দুইন্যাত থাকতেও সামু’র মডুরা পর্যবেক্ষণে রাখছে, আর এইহানেও...
কোনরহম তাগো বগল থাইক্যা মুক্ত হইয়া সামনে গেলাম। সামনের একটি রুম থাইকা মাইয়াগো অট্টহাসির সুমুধুর শব্দ শুনিতে পাইলাম। পূর্ব পশ্চিম অবলোকন করিয়া যেইনা রুমে হান্দানোর ধান্দা করতাছিলাম, সেই মুহুর্তে চোক্ষে পড়ল একটি ব্যানার। তাতে লেহা- শুধু মাত্র মেয়েদের জন্য, ছেলেরা নিজ দায়িত্বে প্রবেশ করিবেন। আহ্হারে- দুইন্যাত থাকতে লেডিস গো বাথরুমে লেখা থাকতো শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য! ওই হানেও যদি লেহা থাকত পুরুষরা নিজ দায়িত্ব হান্দাইবেন, তাইলে একটা চান্স নিতাম আরকি। ফাঠুকবৃন্দ কিছু মুনে কইরেন না, আমি কিন্তু লুল প্রজাতির কেউ না। এই চিন্তা কর্তে কর্তে নিজ দায়িত্বে রুমে হান্দাইলাম। কিছুক্ষণ বওনের পর- এক মাইয়া (!) কইলো- এই বেহেশতে আমি নতুন, সবাই আমার লাইগা দোয়া করবেন।
মাইয়ার (!) এই কথা শেষ হইতে না হইতেই সবাই ঝাপিয়ে পড়ছে কমেন্ট করার লাইগা । তাদের কমেন্টের ঠেলায় রুমে অক্সিজেনের থুক্কু কার্বনডাইঅক্সাইডেরও অভাব পইড়া গেছে! কিছুক্ষণ অবলোকন করার পর দেখলাম- আবে হালা এরাতো সব ছাইয়া! ভাবছিলাম কী, আর হইলোডা কী। নাহ্ লস প্রজেক্ট। যাউকগা, ঢুকছি যেহেতু একটা কমেন্ট কইরাই যাই। যেইনা কমেন্ট করছি- আমারে এমন আইক্কাওয়ালা বাঁশ মারছে।
ওহ্ সে কী ব্যাথা!!!
ব্যাথায় কাঁতরাতে কাঁতরাতে নিজেকে ফ্লোরের ওপর আবিষ্কার করি আমি।
আরে! আমি যে এতক্ষণ ঘুমাচ্ছিলাম!
যাক বাবা বাঁচা গেল।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩