জীবনের প্রয়োজনে যে মানুষ বাস বা ট্রেনে চড়ে সেই মানুষই প্লেনে চড়ে বিশ্ব ঘোরে। কিন্ত তাই বলে কি সে হাঁটা ভুলে যায়???
সে কথা না হয় নাই বললাম।
আজ আমি আমার কিছু অবজারভেশনের কথা লিখবো। নিতান্ত সাধারণ দিনলিপি বলতে পারেন।
এক
একটা কাজে খুব সকালে উঠে বাইরে নাস্তা করতে গিয়েছি। যে এলাকায় আছি সেটাকে শহর বলা যাবে না। তবে গ্রামও নয়। সাধারণত আমি শহর এলাকায় থাকতে অভ্যস্ত। কিন্তু যেকোনো পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারি।
তো.... যেখানটিতে আছি সেখান থেকে কিছুদূর হেঁটে নিতান্ত সাধারণ মানের একটা খাওয়ার হোটেলে গেলাম। সাধারণত এসব হোটেল থেকে একশ হাত দূরে থাকি। কারনটা অবশ্য পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা।
অর্ডার করলাম। পরোটা আর ডাল। চলে টাইপ স্বাদ। খাওয়া চলছে এরই মাঝে একজন বৃদ্ধা মহিলা এলেন। শতছিন্ন, মলিন হয়ে যাওয়া একটা শাড়ি গায়ে। চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ। দেখে মনে হলো ভিক্ষা করেন। বড় মানের হোটেল বা রেস্টুরেন্টে এমন একজনকে সহজে ঢুকতেই দেয়না। তিনি একটা টেবিলে বসে কিছু খেতে চাইলেন। সেই টেবিলেই একজন বাবা তার ছেলেকে নিয়ে বসেছিলেন। তথাকথিত দামি রেস্তোরাঁর মানুষ নামধারী নির্দয়গুলোর মতো তারা কিছু করলেন না। হোটেলের মালিক তাকে এককাপ চা আর দুটো রুটি দিলো। তিনি তা খেতে শুরু করলেন।
কিছু সময় পরে কয়েকটি পরোটা এবং ডিমভাজি এলো। বৃদ্ধা খাচ্ছেন । আমি খেতে খেতে বৃদ্ধার খাওয়া দেখছি। শান্ত একটা মুখ। কিন্তু বয়সের ভারে নত।
তিনি খাচ্ছেন ধীরেধীরে......
তার খাওয়া শেষ হলো। এরপরই আমি একটা চমৎকার বিষয় লক্ষ্য করলাম। তিনি দুহাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে দুআ করলেন।
আচ্ছা আমরা কি খাওয়ার পরে এমনটা করি???? হয়তোবা উত্তর হবেঃ না।
তখনই মনে হলো...... জীবনের রেলগাড়ীর স্টেশন যে কোথায়......
এই বৃদ্ধাও অবশ্যই কারো মা। কিন্তু কেন মায়ের এ হাল?????
জীবনের উন্নতির সাথে মানবীয় গুণাবলির অভাব দেখা দিয়েছে। মানুষ ভুলে গেছে তার পরিচয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৫