২৪২০ সাল। সেই আকাশলোকের ঘটনার পরে গালকাটা চান্দু এখন ঢাকায়। এখানে আসার সাথে সাথেই তার সাধুভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সবই চলিত ভাষা। সাথে চান্দু এখন যুবক হয়ে গেছে। বোধহয় ঢাকার বাতাসের গুণে। আসাটা যদিও সুখকর হয় নি। মলমপার্টির সাথে হাতাহাতি করেই তার আগমন। তারপরে আবার বর্ষাকাল কিনা ! ঢাকার রাস্তায় তখন একগাদা পানি।
রাস্তায় পানি দেখে চান্দু ভাবলো, শহরের নদী বোধহয় এমনই হয়। এরই মধ্যে একটা গাড়ি জলমগ্ন রাস্তা দিয়ে এগোতে গিয়ে থেমে গেল। চান্দু ভাবলো, এটা বোধহয় এখানকার নৌকা। তাই সে গাড়ির ছাদে লাফ মারলো। সাথে সাথেই টং করে একটা শব্দ হলো এবং গাড়ির দরজা খুলে এক মহিলা বের হলো।
চান্দু কিছু বলার আগেই, মহিলা বাজখাঁই গলায় চেঁচিয়ে উঠলোঃ" ইউ সান অফ এ ***! হাউ ডেয়ার ইউ উঠা মাই গাড়ি "। উঠা শব্দটি বাদে বাকিটুকু চান্দুর মাথার উপর দিয়ে গেল। চান্দু সংস্কৃত জানে কিন্তু এ কোন ভাষা ! । তবে গালির টানে সে নিচে নামতে গেল। রাস্তায় নেমে একটা পা রাখতেই, সেটা ম্যানহোলে ঢুকে গেল। মহিলা বেশ হয়েছে বলেই বিদায় নিলো।
চান্দু কিছু বোঝার আগেই তার পাশে মানুষজন জমে গেল। কেউ কেউ একটা বক্স হাতে নিয়ে তার ছবি তুলছিল। এরই মধ্যে একজন হ্যাঁচকা টানে তাকে টেনে তুললো। তারপর মাথায় একটা হেলমেট জাতীয় জিনিস পরিয়ে দিলো। ডিজিটাল টুপি। সেটা পরে চান্দু সবকিছু বুঝতে পারলো। মহিলার গালি সহ সবই।
এরপরে সে ঢাকার এক বস্তিতে তার আস্তানা বানালো। গালকাটা চান্দু এখন কোডিং শিখে হ্যাকার চান্দু হয়ে গেছে। বড় বড় হ্যাকিং করে। অচিরেই সে ডার্ক ওয়েবের হল অব ফেমে জায়গা করে নিলো। সাইটে সাইটে তার গুনগান। ফলাফল দাঁড়ালো, চান্দু আজ বিলিয়নপতি !
কিন্তু বলে না পায়ের পাতায় চুলকানি। চান্দুর একই অবস্থা, চুরি না করতে করতে হাতে চুলকানি শুরু হয়েছে। কোথাও না কোথাও একটা বড় দাও মারতেই হবে। নাহলে পেটের রাইস আর ডাইজেস্ট হচ্ছে না। সো, চান্দু আবারো পড়াশোনা শুরু করলো। ডিপ পড়াশোনা। ডার্ক ওয়েবের গভীরতম অংশে বিচরণ করতে থাকলো। গড তাকে নিরাশ করলেন না। দিয়েই দিলেন লিংক !
চান্দু এবার বিটকয়েন ব্যাংক হ্যাক করবে। তাই সে প্রস্তুতি নিতে থাকলো। ব্যাংকের ভল্টে সিদ থুক্কু মেঝে কেটে ঢুকে পড়লো। এবার বাকি রইলো ভল্ট হ্যাক করা। হাতের ডিভাইসটা দিয়ে শুরু করবে ভাবতে ভাবতেই চান্দু বিষয়টা লক্ষ্য করলো। পাশেই এক লোক। বললো, "উস্তাদ বায়ে পেলাস্টিক "। চান্দু বাঁয়ে তাকাতেই চোখে অন্ধকার দেখলো।
অজ্ঞান হওয়ার আগে চান্দু শুনলোঃ " উস্তাদ হাতই যথেষ্ট। অযথা যন্তরতন্তর কেন? আমি চিপাগলির কানকাটা মজনু "। এরপরের ঘটনাগুলো বুড়িগঙ্গার পানির মতোই পরিষ্কার। ৫৩ ধারায় জেল হলো চান্দুর। ১০ বছরের জেল। এদিকে কানকাটা মজনু আজ বিলিয়নপতি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৫১