ট্রাম্প যেসব ইস্যুর জন্ম দিচ্ছে, তা কারো মাথায় কখনো সহজে আসার কথা নয়; সে তার নিজের নিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী পেন্সকে ফেলে উল্টো দিকে রওয়ানা হয়েছে: ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির স্পীকার রায়ানকে প্রাইমারী ভোটে সমর্থ না দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে; এদিকে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স স্পীকার রায়ানকে পুর্ণ সমর্থন দিয়েছে। নিয়মানুসারে, নিজদলের সবচেয়ে বড় ক্ষমতাসীন ব্যক্তি হলো স্পীকার, সেই স্পীকারকে ভোটে সমর্থন না দিয়ে, নিজে কিভাবে প্রেসিডেনসিয়াল ভোটে জিতবে?
শুধু স্পীকার হলে এক কথা, ট্রাম্প সাথে ঘোষনা করেছে যে, সিনেটর ম্যাককেইনকেও সমর্থন দেবে না; এই সিনেটর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী সিনেটর; ২০০৮ সালে এই সিনেটর ওবামার সাথে প্রেসিডেন্ট পদে হেরেছে; ট্রাম্পকে রিপাবলিকানরা কিভাবে ভোট দেবে কে জানে? অবশ্য, ম্যাককেইনের বেলায় একটু চাপের দরকার আছে, ইহা ক্ষত্রিয়, সারাক্ষণ যুদ্ধ লাগাতে চায়।
গত ৫ দিনে ট্রাম্প ৫ টি ইস্যুর জন্ম দিয়েছে, এই ইস্যুগুলো তাকে পরাজিত করার জন্য যথস্ট; এর মাঝে, শুধু একটা ইস্যু ডেমোক্রেটরা বুদ্ধি করে সাজায়েছে, এবং কৌশলে ট্রাম্পকে তাতে টেনে এনেছে; ডেমোক্রেটিক কনভেনশনে, এক পাকিস্তানী পিতা বক্তৃতা করেছেন, যার ছেলে আমেরিকান সেনা বাহিনীতে ক্যাপটেন ছিলেন, এবং মিডল-ইস্ট যুদ্ধে প্রাণ হারায়েছেন; বক্তৃতার সময় নিহত সৈনিকের পিতা ট্রাম্পকে মুসলিম বিরোধী হিসেবে আক্রমণ করে; কনভেনশন শেষ হওয়ার পর, ট্রাম্প সৈনিকের পিতাকে ট্রাম্প-স্টাইলে প্রতি-আক্রমণ করে; এতটুকু স্বাভাবিক ছিলো; কিন্তু সে মৃত সৈনিককের অবদানকে অবজ্ঞা করে বক্তব্য দেয়; আমেরিকা কখনো মৃত সৈনিকদের নিয়ে কারো অবজ্ঞা সহ্য করে না; ট্রাম্প ভুল স্বীকার করে সরে যেতে পারতো; কিন্ত আজ অবধি সে সেই ইস্যুতে পেছনে সরছে না, এতে সৈনিকের পিতা হঠাৎ করে আমেরিকান মিডিয়ার সো-কেইজে পরিণত হয়েছে। ডেমোরা জনাতো যে, পাকিস্তানী মুসলিম যদি ট্রাম্পকে আক্রমণ করে, তাতে ট্রাম্প আগাগোড়া জড়িয়ে পড়বে; কাজ হয়েছে!
রাশিয়ান ইস্যু আরো ভয়ংকর, আমেরিকার কোন দুধের শিশুও অফিসিয়েলী রাশিয়াকে ও পুতিনকে বন্ধু ডাকবে না; কিন্তু ট্রাম্প সেটাই করেছে। আমেরিকান পলিসি হলো, রাশিয়া ন্যাটোর বিপক্ষের শক্তি, সেই হিসেবে রাশিয়া মোটামুটি শত্রু; ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেছে যে, পুলিন খুবই জ্ঞানী মানুষ, পুতিন কখনো ইউক্রেনের কোন ক্ষতি করবে না; এবং ইউক্রেনের প্রতি পুতিনের নীতিতে কোন ভুল নেই; আমেরিকা হতবাক।
সাথে আছে আরো ট্যাক্স ইস্যু; ইনভেস্টর ওয়ারেন বাফেট হিলারী ক্লিনটনের সভায় বক্তব্য রেখেছে ও ট্যাক্সের ব্যাপারে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছে; এখনো ট্রাম্পের রিয়েকশন জানা যায়নি; তবে, ভয়ংকর কিছু ট্রাম্পের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে যে কোন সময়, যা ট্রাম্পের বিপক্ষে যাবে। যদিও ওয়ারেণ বাফেট রিসেশনের সময় আমেরিকায় চাকুরী সৃস্টির জন্য কোনদিন কিছুই করেনি, উল্টো চীনে চাকুরী সৃস্টি করেছে, তবুও তার প্রতি মানুষের একটা টান আছে।
সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, হিলারীর পক্ষ থেকে কিছু করার দরকার নেই, ট্রাম্প নিজেই নিজকে পরাজিত করবে; এই ৫ ইস্যুতে ট্রাম্প জরীপে ১০ পয়েন্ট পেছনে চলে গেছে!