১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট, সামরিক ক্যু'এর রাতে যুদ্ধকালীন সময়ের প্রধানমন্ত্রীকে কেন হত্যা করা হয়নি? ষড়যন্ত্রকারীরা হয়তো ভেবেছিলো যে, তাজউদ্দিন আহমেদ ক্যু-কারীদের বিপক্ষে অবস্হা নেবে না; অথবা ক্যু'এর সময় উনাকে হত্যা করার মতো জনবল তাদের ছিলো না; কিংবা, যাদের উপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো, তারা কোন কারণে তা পালন করেনি।
শেখ সাহেবের হত্যার খবর পাবার পর, তাজউদ্দিন সাহেবের মনে প্রথম ভাবনাটা কি হওয়ার কথা? যারা শেখকে হত্যা করেছে, কি কারণে তারা উনাকে হত্যা করেনি? পরবর্তী টার্গেট কে? এখানে তাজউদ্দিন সাহবে কমবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছন: উনার বুঝার দরকার ছিলো যে, পরবর্তী টার্গেট উনি, সেটা তিনি বুঝতে সক্ষম হননি।
শেখের হত্যার খবর কানে আসার সাথে সাথে উনার দরকার ছিলো বাসা থেকে এক কাপড়ে পালিয়ে যাওয়া ও যেকোন প্রকারে কমপক্ষে ভারত চলে যাওয়া। তিনি কিছুই করেননি, নিজের বাসায় বসেছিলেন, অপেক্ষা করছিলেন কখন মিলিটারী এসে ধরে নিয়ে যায়। উনি বাসায় ছিলেন ৭ দিন; আসলে, উনার উচিত ছিলো বাসায় ৭মিনিটও না থাকা।
যেই ৭ দিন তিনি বাসায় ছিলেন, সেই ৭ দিনে ক্যু'এর পক্ষের লোকেরা নিশ্চয় উনার সাথে যোগাযোগ করেছে; উনি অবস্হা বুঝার সুযোগ পেয়েছিলেন। এ'ছাড়া নিশ্চয়, আওয়ামী লীগের কেহ না কেহ উনার সাথে যোগাযোগ করেছিলো, দলের বাইরের মানুষের সাথে উনার নিশ্চয় যোগাযোগ হয়েছিলো; তারা কি বলেছে? কাদের ছি্দ্দিকী শেখ হত্যার বিপক্ষে অবস্হান নিচ্ছিল, সেটা উনার জানার কথা। তখনো আওয়ামী লীগ খুবই শক্তিশালী ছিলো, দরকার ছিলো নেতৃত্ব, উনি গোপন অবস্হানে গিয়ে মওলানা ভাসানীর সাথে যোগাযোগ করলে, উনি সঠিক বুদ্ধি পেতেন।
বেতনহীন ভলনটিয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের চাকুরী কেন উনি শেষ করেছিলেন, সেটা হয়তো তিনি কোনদিনও ভেবে দেখেননি, নিজের লোকদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) দুরে সরায়ে দিয়ে, উনি ভয়ংকর বেকুবীর পরিচয় দিয়েছিলেন; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা উনাকে কখনো ফেলে দিতেন না; তখন, চট্টগ্রাম ও টাংগাইলে বিপুল পরিমাণ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, যেখানে উনি বিশাল সাপোর্ট পেতেন; উনি যদি চট্টগ্রাম, কিংবা টাংগাইল গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের এলাকায় উঠতেন, উনি মিলিটারীর ধরাচোঁয়ার বাইরে থাকতেন। উনি বাইরে থাকলে, ইন্দিরা গান্ধী কিছু একটা ভেবে বের করার চেষ্টা করতেন, হয়তো।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:৩৬