somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাযহাব প্রসঙ্গে ডা. জাকির নায়েক, একটি গবেষণামূলক পর্যালোচনা।

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

*প্রত্যেক ইমামই তাঁকে অনুসরণকরতে নিষেধ করেছেন*

প্রত্যেক ইমামই তাঁর অনুসারীদেরকে বলেছেন, তোমরা আমার অনুসরণ করো না। ডাঃ জাকির নায়েক সাহেব মাযহাবের বিরুদ্ধে যে সমস্ত যুক্তি উপস্থাপন করছেন, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অভিযোগ হল, প্রত্যেক ইমামই তাঁকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন, সুতরাং আমরা কেন তাদের অনুসরণ করব? এ প্রসঙ্গে আমরা সর্বপ্রথম ইমামদের বক্তব্যগুলো উপস্থাপন করব এবং এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করব।


ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর বক্তব্যঃ

ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) থেকে বেশ কিছু উক্তি বর্ণিত আছে, যেখানে তিনি তাঁর কথা অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। لا يحل لأحد أن يأخذ بقولنا ما لم يعلم من أين أخذناه

“কারও জন্য আমাদের কথা গ্রহণ করা বৈধ হবে না, যতক্ষণ না সে আমরা কোথা থেকে সেটি গ্রহণ করেছি, সে সম্পর্কে অবগত হবে” তিনি আরও বলেন,
ويحك يا يعقوب ( هو أبو يوسف ) لا تكتب كل ما تسمع مني فإني قد أرى الرأي اليوم وأتركه غدا وأرى الرأي غدا وأتركه بعد غد إذا قلت قولا يخالف كتاب الله تعالى وخبر الرسول صلى الله عليه وسلم فاتركوا قولي

“হে ইয়াকুব! তোমার ধ্বংস হোক! আমার নিকট থেকে যা শোনো, তাই লিপিবদ্ধ করো না, কেননা আমি আজ যে মতটা পছন্দ করি, কাল তা ত্যাগ করি। কাল এক মত গ্রহণ করি, পরশু সেটিও ত্যাগ করি। আমি যদি কখনও এমন কথা বলি যা, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের বিপরীত হয়, তবে আমার কথা পরিত্যাগ করো।


ইমাম মালেক (রহঃ) এর বক্তব্যঃ

এ ব্যাপারে ইমাম মালেক (রহঃ) বলেছেন, إنما أنا بشر أخطئ وأصيب فانظروا في رأيي فكل ما وافق الكتاب والسنة فخذوه وكل ما لم يوافق الكتاب والسنة فاتركوه “নিশ্চয় আমি একজন মানুষ, আমি ভুলও করি আবার সঠিকও করি। সুতরাং তোমরা আমার মতামতের প্রতি লক্ষ্য রাখবে! আমার যে মতটি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী, সেটি গ্রহণ করো এবং যেটি কুরআন ও সুন্নাহের বিপরীত, তা পরিত্যাগ করো।


ইমাম শাফেয়ী (রঃ) এর বক্তব্যঃ

ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) রাসূল (সঃ) এর অনুসরণ প্রসঙ্গে বলেন, إذا وجدتم في كتابي خلاف سنة رسول الله صلى الله عليه وسلم فقولوا بسنة رسول الله صلى الله عليه وسلم ودعوا ما قلت وفي رواية فاتبعوها ولا تلتفتوا إلى قول أحد

আমার কিতাবে যদি রাসূলের সুন্নতের খেলাফ কোন কথা পাও, তবে তোমরা সুন্নাহের উপর আমল করো এবং আমি যা বলেছি, সেটি ত্যাগ করো।


ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর বক্তব্যঃ

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) ইমামদের তাকলীদ প্রসঙ্গে বলেন,لا تقلدني ولا تقلد مالكا ولا الشافعي ولا الأوزاعي ولا الثوري وخذ من حيث أخذوا

তোমরা আমার অনুসরণ করো না এবং ইমাম মালেক, শাফেয়ী, আওযায়ী, সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) এদেরও অনুসরণ করো না। তারা যেখান থেকে গ্রহণ করেছে, তোমরাও সেখান থেকে গ্রহণ করো

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেছেন,لا تقلد دينك أحدا من هؤلاء ما جاء عن النبي صلى الله عليه وسلم وأصحابه فخذ به ثم التابعين بعد الرجل فيه مخير

“তোমার দ্বীনের ব্যাপারে এদের কারও অনুসরণ করো না, রাসূল (সঃ) এবং তার সাহাবীগণ যা নিয়ে এসেছেন, সেগুলো গ্রহণ করো। অতঃপর তাবেয়ীগণের অনুসরণ করো, তবে এব্যাপারে ব্যক্তি স্বাধীন”


যুক্তির দাবী হল, প্রত্যেক ইমাম যেহেতু তাকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন, সুতরাং তাদেরকে অনুসরণ করা কিভাবে বৈধ হয়? আর বিস্ময়ের ব্যাপার হল, তাদের নিষেধ সত্ত্বেও সমগ্র মুসলিম উম্মাহ কেন তাদের অনুসরণ করে! দীর্ঘ বার-তের শ’ বছর যাবৎ মুসলিম উম্মাহ কেন ইমামদের মাযহাব অনুসরণ করলো? অথচ স্বয়ং ইমামগণ তাদেরকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন!


প্রথমতঃ লক্ষ করার বিষয় হল, ইমামগণ যদি তাদের অনুসরণ করতে নিষেধ নাও করতেন, কিংবা যদি ধরে নেই যে, পৃথিবীতে কোন মাযহাব নেই, তবে কি কারও পক্ষে ইজতেহাদের যোগ্যতা অর্জন না করে মাসআলা দেয়া জায়েয হবে? কারও পক্ষে কি কুরআন ও হাদীসের বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন না করে ফতোয়া দেয়া বৈধ হবে?

পৃথিবীর সব উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, “শরীয়তের বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন না করে কোন সিদ্ধান্ত দেয়া জায়েয নেই।

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) “ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন” এ বিষয়ে আলাদা একটা পরিচ্ছেদ তৈরি করেছে এবং এর শিরোনাম দিয়েছেন,تحريم القول على الله بغير علم“আল্লাহ সম্পর্কে না জেনে কথা বলা হারাম”

এ শিরোনামের অধীনে শরীয়তের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন না করে ফতোয়া বা মাসআলা প্রদান প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) এ শিরোনামের অধীনে লিখেছেন,وقد حرم الله سبحانه القول عليه بغير علم في الفتيا والقضاء وجعله من أعظم المحرمات بل جعله في المرتبة العليا منها فقال تعالى {قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَاناً وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لا تَعْلَمُونَৃ. وهو القول عليه بلا علم وهذا يعم القول عليه سبحانه بلا علم في أسمائه وصفاته وأفعاله وفي دينه وشرعه


“আল্লাহ তায়ালা ফতোয়া ও বিচারের ক্ষেত্রে না জেনে কোন কথা বলাকে হারাম সাব্যস্ত করেছেন। এবং একে বড় বড় কবিরা গোনাহের অন্তর্ভূক্ত করেছেন বরং একে কবিরা গোনাহের প্রথম স্তরে রেখেছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,“আপনি বলে দিন: আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন, যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গোনাহ, অন্যায়-অত্যাচার, আল্লাহ্র সাথে এমন বস্তুকে অংশীদার করা, তিনি যার কোন সনদ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহ্র প্রতি এমন কথা আরোপ করা, যা তোমরা জান না।”

এখন কারও জন্য যদি যথেষ্ঠ যোগ্যতা অর্জন না করে ফতোয়া দেয়া জায়েয না হয়, তবে একজন সাধারণ মানুষ যে সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মাসআলা বের করতে পারে না, সে কী করবে?

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেছেন,"إذا كان عند الرجل الكتب المصنفة فيها قول رسول الله صلى الله عليه وسلم واختلاف الصحابة و التابعين فلا يجوز أن يعمل بما شاء ويتخير فيقضي به ويعمل به حتى يسأل أهل العلم ما يؤخذ به فيكون يعمل على أمر صحيح"

“যদি কারও নিকট রাসূল (সঃ) এর লিখিত হাদীসের কিতাবসমূহ থাকে এবং সাহাবা, তাবেয়ী, তাবেয়ীনদের মতপার্থক্য যদি তার জানা থাকে, তবে তার জন্য যে কোন একটাকে গ্রহণ করে তার উপর আমল করা কিংবা তার দ্বারা বিচার করা জায়েয হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে আলেমদেরকে জিজ্ঞেস করবে যে, কোনটি গ্রহণ করবে? অতঃপর সে সঠিকটার উপর আমল করবে।[ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৪]

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন,"لا يجوز الإفتاء إلا لرجل عالم بالكتاب والسنة"“কুরআন ও সুন্নহের ইলম ব্যতীত কারও জন্য ফতোয়া বা মাসআলা দেয়া জায়েয নেই।”[ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৫]"ينبغي لمن أفتى أن يكون عالما بقول من تقدم وإلا فلا يفتي"“যে ফতোয়া দিবে তার জন্য পূর্ববর্তীদের কথা অবগত না হয়ে ফতোয়া দেয়া উচিৎ নয়।”

সুতরাং এ সমস্ত বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, প্রত্যেকেই ফতোয়া বা মাসআলা দিতে পারবে না। বরং এর জন্য যারা যোগ্য, একমাত্র তারাই ফতোয়া দিবে। সুতরাং ইমামদের এ সমস্ত বক্তব্য থেকে এ উদ্দেশ্য নেয়া যে, তারা যোগ্য-অযোগ্য প্রত্যেককে সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা রের করতে বলেছেন এবং তাদেরকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন, এটি তাদের কথার অপব্যাখ্যার নামান্তর।

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) একদিকে বলছেন যে, চার লক্ষ্য হাদীস মুখস্থ না করে এবং উলামাদের বক্তব্য ও মতবিরোধ সম্পর্কে অবগত না হয়ে কেউ মাসআলা দিতে পারবে না, অন্যদিকে তিনি কাউকে অনুসরণ করতে নিষেধ করছেন, সুতরাং এ বিষয় দু’টির মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করলেই তাদের এ সমস্ত বক্তব্যের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে উঠবে। প্রত্যেক ইমামের নিকট মুজতাহিদ হওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে। এ সমস্ত শর্ত কারও মাঝে বিদ্যমান না থাকলে তার জন্য শরীয়তের বিষয়ে মাসআলা দেয়া বৈধ নয়। অতএব, ইমাম আহমাদ ইবনে (রহঃ) যখন মাসআলা দেয়ার জন্য ইজতেহাদের যোগ্য হওয়ার শর্ত দিয়েছেন, সুতরাং তিনি কখনও ইজতেহাদের অযোগ্য লোককে একথা বলতে পারেন না যে, ‘ইমামদের অনুসরণ করো না।’

সুতরাং এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, এখানে ইমামগণ কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন এবং তাদেরকে কী নির্দেশ দিয়েছেন।

ইমামগণ কাদেরকে উদ্দেশ্য করে এ নির্দেশ প্রদান করেছেনঃইমামগণ যে তাঁদেরকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন, এ নিষেধাজ্ঞা কাদের জন্য প্রযোজ্য, সেটি আমাদের নিকট স্পষ্ট হওয়া আবশ্যক। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তাঁদের এমন ছাত্রদেরকে তাঁরা এ নির্দেশ প্রদান করেছেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন ইজতেহাদের যোগ্য। এবং প্রত্যেকেই সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা বের করার যোগ্য ছিলেন।

একজন মুজতাহিদ কখনই আরেক মুজতাহিদকে একথা বলতে পারেন না যে, ‘তুমি আমার অনুসরণ করো’। যেমন একজন সাইন্টিস্ট আরেকজন সাইন্টিস্টকে বলতে পারেন না যে, তুমি আমার গবেষণার উপর নির্ভর করো। বরং প্রত্যেকেই নিজস্ব গবেষণার আলোকে সিদ্ধান্ত দিবে।

এক্ষেত্রে লক্ষ্য করতে হবে যে, তিনি কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন এবং কী বলেছেন। ইমামগণ তাদের ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তোমরাও গবেষণা করো। শুধুমাত্র আমার কথার উপর নির্ভর করো না। সুতরাং যারা সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা বের করতে পারে না অর্থাৎ যারা মুজতাহিদ নয়, তাদের জন্য এ কথাকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করাটা নিতান্তই বোকামী।

قال ابو داود: قلت لأحمد: " الأوزاعي اتبع أم مالكا؟ قال: " لا تقلد دينك أحدا من هؤلاء!! ما جاء عن النبي فخذ به "

যেমন ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমি ইমাম মালেককে অনুসরণ করবো না কি ইমাম আওযায়ীকে? ইমাম আহমাদ (রহঃ) উত্তর দিলেন," لا تقلد دينك أحدا من هؤلاء!! ما جاء عن النبي فخذ به "

“দ্বীনের ব্যাপারে এদের কারও অনুসরণ করো না। হুজুর (সঃ) থেকে যা কিছু এসেছে, সেগুলি গ্রহণ করো”[ই’লামুল মুওয়াক্বিয়ীন, আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহঃ), খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২০০]

এখানে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল ইমাম আবু দাউদকে বলেছেন, তুমি তাদের অনুসরণ করো না। ইমাম আবু দাউদের মতো বিখ্যাত মুহাদ্দিসকে নিষেধ করেছেন। এমন নয় যে, যাদের শরীয়তের বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই, কিংবা যাদের জ্ঞান সীমিত, তাদের জন্য এ কথা বলা হয়েছে।

ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ইমাম মুযানী (রহঃ) কে বলেছেন,قال الشافعي للمزني: " يا إبراهيم، لا تقلدني في كل ما اقول!! وانظر في ذلك لنفسك فإنه دين ".“হে ইবরাহিম! আমার প্রত্যেকটি কথার উপর আমল করো না। বরং সে ব্যাপারে তুমিও চিন্তা করো। কেননা এটি দ্বীন।[আল-মাল মাদখাল লিদিরাসাতিশ শরীয়াতিল ইসলামিয়া, আহমাদ শাফেয়ী, পৃষ্ঠা-১০৫]

ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) এর এ বক্তব্য থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ইমামগণ কাদেরকে কী উদ্দেশ্যে তাদেরকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আমাদের সময়ে কেউ যদি ইমাম মুযানি (রহঃ) যে যোগ্যতার অধিকারী ছিলেন, তার তিন ভাগের একভাগও অর্জন করতে সক্ষম হয়, তবে তার জন্য হয়ত একথা মেনে নেয়া সম্ভব যে, সে ইমামদের তাকলীদ করবে না। কিন্তু অযোগ্য লোকদের জন্য এবিষয়টি কোনভাবেই প্রযোজ্য নয়।

ইমামগণ কী বলেছেনঃইমামগণ তাদেরকে অনুসরণ করতে যে নিষেধ করেছেন, তাদের এ সমস্ত বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশ হল,وخذ من حيث أخذوا“তারা যেমন সরাসরি কুআন ও হাদীস থেকে মাসআলা গ্রহণ করেছে, তোমরাও সেখান থেকে মাসআল গ্রহণ করো।”

এ নির্দেশ তাদেরকেই প্রদান করা হয়েছে, যারা সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা গ্রহণের যোগ্য অর্থাৎ যারা মুজতাহিদ।

মূল বিবেচনার বিষয় এটিই। ইমামগণ শুধু তাদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেননি, সাথে সাথে এও বলেছেন, তোমরা কুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা গ্রহণ করো।

সুতরাং যারা মুজতাহিদ নয়, তাদের মুখে এধরণের কথা কখনও শোভা পায় না যে, ইমামগণ তাদেরকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু ইউসুফকে নিষেধ করেছেন, যিনি একজন বিখ্যাত মুজতাহিদ ছিলেন। তিনি আমাদের মত অজ্ঞ-মূর্খদেরকে বলেননি যে, আমাদের অনুসরণ করো না। তাদের উদ্দেশ্য যদি সেটিই হত, তবে তারা জীবনেও কখনও কোন ফতোয়া দিতেন না। কেননা, অনুসরণের বিষয় আসে পরে। ইমাম ফতোয়া না দিলে, মানুষ অনুসরণই করতে পারত না। ইমামগণ সর্ব-সাধারণ সকলকে যদি সরাসরি কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণ করতে বলতেন তবে তাদের নিকট কেউ মাসআলা জিজ্ঞেস করতে এলে বলে দিতেন, “কুরআন ও হাদীস দেখে নাও”।

কিন্তু বাস্তবতা হল, তারা সাধারণ মানুষের জন্য গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী উলামাদের অনুসরণকে আবশ্যক মনে করতেন। কেননা এ ব্যাপারে সকল যুগের সকল উলামা একমত যে, শরীয়তের বিষয়ে অনুমান করে কোন মাসআলা দেয়া জায়েয নেই।

সুতরাং যারা মুজতাহিদ নয়, তাদের জন্য এ নির্দেশনা নয়। বরং এ ব্যাপারে উলামায়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, যারা মুজতাহিদ নয়, তাদের জন্য অন্যের অনুসরণ করা জরুরি।

কিন্তু আমাদের সমাজে একশ্রেণীর অজ্ঞ লোক রয়েছে, যারা নিজেদেরকে শরীয়তের বিষয়ে অনেক বড় জ্ঞানী মনে করে, তারা নিজেদেরকে মহা জ্ঞানী মনে করলেও তারা যে জানে না কিংবা খুব কম জানে, সেটিও তারা জানে না।এ সম্পর্কে শেখ সা’দী (রহঃ) বলেছেন-خواجہ پندارد کہ حاصلے اوست حاصلے خواجہ بجز پندارد نیست“অর্থাৎ খাজা ধারণা করেছে যে, তার অনেক জ্ঞান অর্জিত হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তার এই ধারণাটুকু ছাড়া আর কিছুই অর্জিত হয় নি।”এ বিষয়ে প্রত্যেকের সুস্পষ্ট ধারণা রাখা উচিৎ যে, ইমামগণ তাদেরকে উদ্দেশ্য করে এ সমস্ত কথা বলেননি, যারা ইজতেহাদের যোগ্য নয়। অথচ বর্তমান সময়ে দু’একটি হাদীস পড়ে, হাদীসের দু’একটি কিতাব পড়ে, মুজতাহিদ হওয়ার দাবী করে বলেন যে, ইমামগণ তাদেরকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন।

ইমামগণ সেসমস্ত লোককে কিভাবে সরাসরি কুরআন ও হাদীস অনুসরণের নির্দেশ দিবেন, যারা কুরআন ও হাদীসের ব্যাপারে অজ্ঞ ও মূর্খ লোকদের কাতারে। কেউ যদি ইমামদের এ সমস্ত বক্তব্যকে অসৎ উদ্দেশ্যে সর্বসাধারণের জন্য প্রয়োগ করতে চায়, তবে সে নিঃসন্দেহে ইমামের উপর মিথ্যারোপ করল। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর নি¤েœর বক্তব্য থেকে বিষয়টি আমাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে-

আল্লামা মাইমুনী (রহঃ) বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) আমাকে বলেছেন,يا أبا الحسن ! إياك أن تتكلم في مسألة ليس لك فيه إمام

“হে আবুল হাসান! যে মাসআলায় তোমার কোন ইমাম নেই, সে মাসআলায় সম্পর্কে কিছু বলা থেকে বিরত থাক।

আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে-من تكلم في شيء ليس له فيه إمام أخاف عليه الخطأ“যে ব্যক্তি এমন বিষয়ে কথা বলল, যে বিষয়ে তার কোন ইমাম নেই, তবে আমি তার ভুল করার ব্যাপারে ভয় করছি” [আল-ফুরু, আল্লামা ইবনে মুফলিহ্ (রহঃ), খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮০]إنما هو يعني العلم ما جاء من فوق হযরত আছরম (রহঃ) বলেন-ইমাম মালেক (রহঃ) পূর্ববর্তীদের থেকে বর্ণিত ইলমকেই ইলম বলতেন” [আল-আদাবুশ শরইয়্যাহ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৬২]এ সমস্ত বক্তব্য থেকে সুস্পষ্ট যে, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) তাঁর এক ছাত্রকে বলছেন, কারও অনুসরণ করে না, সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করো, আরেকজনকে বলছেন, কোন ইমামের অনুসরণ ব্যতীত কোন মাসআলা প্রদান করো না। তবে কি তিনি স্ববিরোধীতার আশ্রয় নিয়েছেন? কখনও নয়। বরং তিনি যে ইজতেহাদের যোগ্য, যে সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মাসআলা বের করতে সক্ষম তাকে বলেছেন, তুমি কাউকে অনুসরণ করো না, সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করো। অথচ বর্তমান সময়ে মাসআলা বের করা তো দূরে থাক, শরীয়তের ইলমের ক্ষেত্রে যার অবস্থান পাতালে, সে নিজেকে মনে করে যে, সে ছুরাইয়্যা তারকার উপর রয়েছে।

ইমাম মালেক (রহঃ) এর নিচের উক্তিটি লক্ষ্য করুন!عن خلف بن عمرو قال سمعت مالك بن أنس يقول: ما أجبت في الفتيا حتي سألت من هو أعلم مني هل يراني موضعا لذلك، سألت ربيعة و سألت يحي بن سعيد، فأمراني بذلك فقلت له: يا أبا عبد الله! فلو نهوك؟ قال : كنت أنتهي ، لا ينبغي لرجل أن يري نفسه أهلا لشيئ حتي يسأل من هو أعلم منه

খালাফ ইবনে উমর (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে বলতে শুনেছি-“আমি ততক্ষণ পর্যন্ত ফতোয়া দেইনি, যতক্ষণ না আমার চেয়ে অধিক জ্ঞানীজনকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তারা আমার অবস্থানকে সঠিক বলেন কি না। আমি রবীয়া (রহঃ) এবং ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করতাম। তারা আমাকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিতেন।খালাফ ইবনে আমর (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, যদি তারা আপনাকে নিষেধ করতেন? ইমাম মালেক (রহঃ) উত্তর দিলেন, ‘তবে আমি ফতোয়া থেকে বিরত থাকতাম’। কারও জন্য কোন বিষয়ে নিজেকে যোগ্য মনে করা উচিৎ নয়, যতক্ষণ না সে তার চেয়ে যোগ্য কাউকে জিজ্ঞেস করে”[আল-হিলইয়া, আল্লামা আবু নুয়াইম (রহঃ), খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩১৬]

এবিষয়ে আমাদেরকে লক্ষ্য করতে হবে যে, ইমামগণ যাদেরকে বলেছেন, তোমরা অনুসরণ করো না, তারা ইমামগণের এ সমস্ত নির্দেশ থেকে কী বুঝেছেন। ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) তাঁর ছাত্র ইমাম আবু ইউছুফ (রহঃ) কে বলেছেন-لا تكتب كل ما تسمع مني“তুমি আমার নিকট থেকে যা শ্রবণ করো, যাচাই-বাছাই না করে তা লিপিবদ্ধ করো না।”

ইমাম আবু ইউছুফ (রহঃ) এ নির্দেশের কারণে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর মাসআলা লেখা বাদ দিয়েছেন? ইমাম আবু দাউদকে (রহঃ) কে ইমাম আহমাদ (রহঃ) কারও অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন, ইমাম আবু দাউদ কী ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের মাযহাব ছেড়ে দিয়েছেন?

এভাবে ইমামগণ যাদেরকেই এ নির্দেশ দিয়েছেন, তাদের কেউ যদি সংশ্লিষ্ট ইমামের অনুসরণ থেকে বিরত না হয়, তবে আমরা কেন ইমামদের এ সমস্ত বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করে থাকি? এবং কেন মানুষকে মাযহাব বিদ্বেষী করতে এধরণের উক্তির আশ্রয় নিয়ে থাকি?

এক্ষেত্রে আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ) এর উক্তি প্রণিধান যোগ্য। তিনি ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর নিকট মুজতাহিদ হওয়ার জন্য যে সমস্ত শর্ত রয়েছে, সেগুলো উল্লেখ করে লিখেছেন-
فإن أنت قبلت هذه النصيحة و سلكت الطريقة الصحيحة، فلتكن همتك: حفظ ألفاظ الكتاب و السنة، ثم الوقوف علي معانيها بما قال سلف الأمة و أئمتها، ثم حفظ كلام الصحابة و التابعين و فتاويهم و كلام أئمة الأمصارو معرفة كلام الإمام أحمد و ضبطه بحروفه و معانيه و الأجتهاد علي فهمه و معرفته، و أنت إذا بلغت من هذه الغاية فلا تظن أنك قد بلغت النهاية، و إنما أنت طالب متعلم من جملة الطلبة المتعلمين و لو كنت بعد معرفة ما عرفت موجودا في زمن الإمام أحمد، ما كنت حينئذ معدودا من جملة الطالبين. فإن حدثتك نفسك بعد ذلك أنك قد إنتهيت أو وصلت ما وصل إليه السلف فبأس ما رأيت

“তুমি যদি আমার নসীহত গ্রহণ করে থাক এবং সঠিক পথের অনুসন্ধানী হয়ে থাক, তবে তোমার লক্ষ্য থাকবে- তুমি কুরআন ও সুন্নাহের সমস্ত বিষয় মুখস্থ ও আয়ত্ব করবে, অতঃপর পূর্ববর্তীগণ ও ইমামগণ কুরআন ও সুন্নাহের যে অর্থ ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছেন, সেগুলো সম্পর্কে অবগত হবে, অতঃপর তুমি সাহাবী, তাবেয়ীনদের বক্তব্য ও তাদের ফতোয়াসমূহ মুখস্থ করবে এবং বিভিন্ন শহরের উলামায়ে কেরামের যেসমস্ত বক্তব্য রয়েছে, সেগুলোও মুখস্থ করবে। সাথে সাথে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর বক্তব্য মুখস্থ করবে, তার উদ্দেশ্য উপলব্ধি করবে এবং তার মর্ম উদঘাটনে তুমি তোমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তুমি এ সমস্ত কিছু করার পরে মনে করো না যে, তুমি শেষ স্তরে পৌঁছে গেছ, বরং তুমি তখনও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মত একজন সাধারণ শিক্ষার্থী। তুমি এসব কিছু অর্জনের পরও যদি ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর যুগে থাকতে, তবে তুমি তাঁর ছাত্র হওয়ার যোগ্য হতে না। উপরোক্ত বিষয়ের ইলম অর্জনের পরে যদি তোমার অন্তরে এ ধারণার সৃষ্টি হয়, তুমি ইলমের চূড়ান্ত স্তরে পেীঁছে গেছ, কিংবা পূর্ববর্তীগণ যে স্তরে পেীঁছেছিলেন, সে স্তরে পেীঁছে গেছ, তবে তুমি বড়ই নিকৃষ্ট ধারণা পোষণকারী”

ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ) তাঁর নিজের সময়ের অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেন,كما هو حال أهل الزمان بل هو حال أكثر الناس منذ أزمان، مع دعوي كثيرمنهم الوصول إلي الغايات و الإنتهاء إلي النهايات و أكثرهم لم يرتقوا عن درجة البدايات

“অর্থাৎ বর্তমান সময় কিংবা পূর্বের কয়েক যুগ থেকে কিছু লোক দাবী করে থাকে যে, তারা শরীয়তের ইলমের ক্ষেত্রে সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত স্তরে উন্নীত হয়েছে, অথচ বাস্তবতা হল, তাদের অধিকাংশ এখনও প্রাথমিক স্তর অতিক্রম করতে পারে নি।”

তিনি উপদেশ দিয়ে বলেছেন ,إياك و إياك: أن تترك حفظ هذه العلوم المشار إليها و ضبط االنصوص و الآثار المعمول عليها ، ثم تشتغل بكثير الخصام و الجدال، و كثرة القيل و القال و ترجيح بعض الأقوال علي بعض الأقوال مما إستحسنه عقلك.... ولا تكن حاكما علي جميع فرق المؤمنين، كأنك قد أوتيت علما لم يؤتوه أو وصلت إلي مقام لم يصلوه.“সাবধান! সাবধান! পূর্বোক্ত বিষয়ে জ্ঞান অর্জন না করে এবং কুরআন ও সুন্নাহের নস ও আমলে মুতাওয়ারিছা (শ্রেষ্ঠ তিন যুগ থেকে প্রচলিত আমল) সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন না করে (অর্থাৎ মুজতাহিদ না হয়ে) তুমি তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া থেকে বেঁচে থাক। আর বেঁচে থাক দ্বীনের ব্যাপারে অমূলক প্রশ্ন ও মন্তব্য থেকে। এবং তোমার পছন্দ অনুযায়ী এক ইমামের বক্তব্যকে আরেক ইমামের বক্তব্যের উপর প্রাধান্য দেয়া থেকে।” “মুমিনদের সকল দলের ব্যাপারে তুমি বিচারক সেজো না! তোমার ভাবখানা এমন যে, তুমি এমন ইলমের অধিকারী হয়েছো, যা পূর্ববর্তী কেউ অর্জন করেনি, তোমার কাছে এমন এলম পেীঁছেছে, যা পূর্ববর্তীদের কাছে পেীঁছেনি।
আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ) এর এ উপদেশ সকলের হৃদয়ে গেঁথে নেয়া উচিৎ। আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ) এর জন্ম ৭৩৬ হি: এবং মৃত্যু ৭৯৫ হি: অর্থাৎ এখন থেকে প্রায় সাত শ’ বছর পূর্বে তিনি একথাটি বলেছেন। অতএব, আমাদের সময়ের এ সমস্ত স্বশিক্ষিত এবং তথাকথিত মুজতাহিদ ইমামদের সম্পর্কে তাদের মন্তব্য কী হত?

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) লিখেছেন,وقد قال بعض الناس : أكثر ما يفسد الدنيا نصف متكلم ، ونصف متفقه ، ونصف متطبب ، ونصف نحوي ، هذا يفسد الأديان وهذا يفسد البلدان ، وهذا يفسد الأبدان ، وهذا يفسد اللسان)

“দুনিয়াকে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে, আধা বক্তা, আধা ফকীহ, আধা ডাক্তার এবং আধা ভাষাবিদ। এদের একজন (আধা বক্তা) দ্বীনকে ধ্বংস করে, অপরজন (আধা ফকীহ) দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে। আধা ডাক্তার মানুষের শরীরকে নিঃশেষ করে। আর আধা ভাষাবিদ ভাষাকে বিনষ্ট করে।”[মাজমুউল ফাতাওয়া, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১১৮]

আমাদের সমাজে শরীয়তের জ্ঞানের ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ শিশু। অনেকেই এখনও ক্লাস ওয়ানে ওঠারও যোগ্যতা অর্জন করেনি। অথচ ভাবখানা এমন যে উক্ত বিষয়ে ডক্টরেট করেছেন। তারা ডক্টরেট করেন এক বিষয়ে আর সিদ্ধান্ত দেন আরেক বিষয়ে। সারাজীবন ইঞ্জিয়ার থেকে প্রিসক্রিপশন দিতে গেলে যা হয় আর কি!এজন্যই হয়ত রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান (রহঃ) বলেছেন,الناس في حجور علمائهم كالصبيان في حجور أمَّهاتهم “মায়ের কোলে যেমন শিশু, তেমনি আলেমদের কোলে সাধারণ মানুষ”[শরহু ইবনু আবিল ঈয, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১০৫]মুজাহেদ (রহঃ) বলেছেন,ذهب العلماء فلم يبق إلاَّ المتكلِّمون ، والمجتهد فيكم كاللاعب فيمن كان قبلكم“আলেমগণ গত হয়েছেন, এখন শুধু বক্তারা রয়ে গেছে, আর তোমাদের মাঝে যারা ‘মুজতাহিদ’ রয়েছে, পূর্ববর্তীদের তুলনায় তারা তামাশাকারী।



copied from here
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:১৪
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×