ব্লগাচ্ছলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাপড়বিহীন করার কোন অশুভ উদ্দেশ্য আমার নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের কিছু কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থী তথা জনসম্মুখে কাপড় বিহীন হয়ে যাচ্ছেন, তারই বাস্তব অংশবিশেষ উল্লেখ করাই ব্লগানোর উদ্দেশ্য। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিশেষত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক নিজেদেরকে রাজা হিসেবে মনে করে, আর ছাত্রদের মনে করে অথর্ব প্রজা । রাজাদের অত্যাচারে প্রজারা রাজ্য ছেড়ে পালায়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজ্য ছেড়ে না পালালেও শিক্ষকরাই অনেক সময় তাকে রাজ্য থেকে নির্বাসনে পাঠায়।
------------------------
(১)
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আ' বিভাগের একজন শিক্ষক। তার যন্ত্রণায় ব্যার্থ হয়ে একজন ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। অবশ্য ওই ছাত্রীটি এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করলেও কোন বিচার হয়নি। কারণ তিনি ক্ষমতাসীন দলের ছায়াতে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক। এসব কুকর্ম যখন একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হল বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তাকে বহিষ্কার করেছে।
বি. দ্র: মাঝে মাঝে মনে প্রশ্ন জাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে থাকা শিক্ষকদের কারো মেয়েকে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ছাত্র ধর্ষণ করে। এবং সেই ছাত্রটি যদি তার শিক্ষককে বলে আপনারাই ধর্ষণ কিভাবে করতে হয় শিখিয়েছেন, তাহলে আমার দোষ কোথায় ?
(২)
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার পদত্যাগ গুঞ্জন চলছে। একদিন 'ন' বিভাগের প্রধান ট্রেজারার মহোদয়কে ফোন দিয়ে বললেন- একজন পদত্যাগ করতে চাইছে, তো কি হয়েছে ? বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পদের যোগ্য কি আর কেউ নেই ? কেউ না হতে চাইলে আমি হব। চিন্তা করবেন না।
ট্রেজারার মহোদয়ের কাছে ফোন দেয়ার পর পরই ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টাকে ফোন দিয়ে 'ন' বিভাগের প্রধান বললেন- শুনলাম আপনি নাকি পদত্যাগ করতে চাইছেন। আরে আপনি পদত্যাগ করলেতো বিশ্ববিদ্যালয় অচল । আপনার মতো যোগ্য লোক বিশ্ববিদ্যালয়ে কজন আছে ?
পাঠক দেখলেন তো ভন্ডামী কাহাকে বলে। দুমুখো সাপ জলে না খুঁজে ডাঙ্গায় খুঁজলে তার মতো বহু পাওয়া যাবে।
(২)
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের 'স' বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপকের স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলেই চাকরী করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে তার স্ত্রীকে নিয়োগ দানের জন্য উঠেপড়ে লাগলেন তিনি। কিন্তু সকল চেষ্টা তদবির করেও ব্যার্থ। অবশেষে গ্রন্থাগার কর্মকর্তা পদে নিয়োগে অন্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্লেম দেয়ার জন্যও উঠে পড়ে লাগলেন তিনি। এক প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারের ভাই । ওই শিক্ষক ট্রেজারারের ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র নিয়ে আসলেন যে, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। এ সংক্রান্ত একটি ডকুমেন্টসও তিনি সাংবাদিকদেরকে দেখালেন এবং বললেন যে রাজশাহী শাখা দুদক এটি পাঠিয়েছে। হায়রে বাংলাদেশ শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য একজন প্রগতিশীল মনা ব্যাক্তিকে শিবির কর্মী বানিয়ে ছেড়ে দিল ! অথচ ওই শিক্ষকের ভূমিকা দেখলে মনে হবে- বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল শক্তিকে জিইয়ে রাখতে হলে তার কোন বিকল্প নেই।
(চলবে....................)