প্রথম পর্ব-
(১)
রাত ১টা- বাবার বারো’টা- হটাৎ ষ্টোক- চিৎকার চেচামেচী কান্নার শোরগোলে
এম্বুলেন্স ডাক্তার মেডিকেল কিন্ত কৈ পুরুষ বলতে বাবা ছাড়া কেউ নেই সংসারে
পুরুষ না কাপুরুষ বা অপুরুষ কি বলা যায় তা’রে?
“কন্যা ছাড়া জন্ম দিতে পারেনি যে কোন পুরুষেরে”!
এ রাত বিরাতে কন্যা বের হবে ঘর হতে?!
তারে তো রেখেছিলাম ঘরে আবদ্ধ করে- আর কি’বা জানে সে?
পথঘাট ও যে চেনেনা ভালো করে
ছেলে হতো যদি! - ধরে আনতো জাগিয়ে মহল্লার ট্যাস্কি’টারে............
(২)
অসুস্থ পিতা কাত্রাচ্ছে মেডিকেলের বেডে
কন্যা মেহমানের মত! করে আসবে?
তাতে ও যে স্বামী-শশুর বাড়ীর অনুমতি লাগে
ছেঃ ছেঃ ছেঃ
বৃদ্ধ পিতা-মাতা অনাহারে অর্ধাহারে শেষ বয়সে
জামাই বাবাজী দিতে পারে ভিক্ষা-দয়া পরবশ হলে
সুজোগ পেলে খোটা দিতে ছাড়বেনা মোর অবলা মেয়েটারে
তাই ঘৃনা করে পিতা-মাতা
সন্তান “কন্যা” হলে
বাস্তবতার নিরিখে............................................................
(৩)
“কন্যা দায়গ্রস্থ পিতা”হতে মুক্তি পেতে
ঘরে বদ্ধ করে-কত শত শৃঙখলে তারে
পুঁথিগত বিদ্যা শিখিয়ে-ফেয়ারনেস ক্রীম মাখিয়ে
একখান মাল বানিয়ে লাজুক উজবুক চেহারাতে
উপঢোকন তুলে দেয় পন্যরুপে-
“নে বাবা চাষাবাদ কর -যেমন ইচ্ছে তোর”……………….!!!
ছেঃ ছেঃ ছেঃ
হয়তো সেটাই ঠিক ছিলো
আইয়ামে জাহেলিয়াতে.........................................................
দ্বিতীয় পর্ব-
(৪)
“এবরশন” করার জোড় যুক্তি ছিলো মনে
যখন দেখেছিলাম “আলতা -স্নো” আলট্রাসোনোগ্রামে
সে ভয় যা বাস্তবতার নিরিখে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিলো
আমার মনুষত্বকে-পৈরোষত্বকে মানবিকতাকে
শেষ পর্যন্ত দ্বিধাগ্রস্ত বির্ধস্তত মনটাকে হারিয়েছি পণ করে
কন্যা নহে এ সন্তান আমার- গড়বো মানুষরুপে
আজ আমার সে “নৌশীন” ক্লাস সেভেনে পড়ে……………………….
তৃতীয় পর্ব
(৫)
সন্তান আমার সাইক্লিং করে ফুটবল খেলে
ক্রিকেটে ও কম নয় সুজোগে জিম করে
“দৌড়” ছেলেদের সাথে সমান তালে
পুরুষের ইউনিফর্ম পড়ে…………………………….
ব্যান্ডের গান গায়-পারদর্শী কোরান পড়ায়
পথ ঘাট চেনে সব-মাছ কেনে টিপে টিপে!
হিসেব দেয় আমায়- জাবেদা-নগদানে
আইন-আদালত-কোর্ট- পুলিশ ষ্টেশন থেকে সংসদ
জানে অনেকটা-করছি চেষ্টা-বাস্তবতার প্রয়োজনে
(৬)
প্রায়শঃ বিব্রত-বিডম্বনার শিকার হতে হয় তাকে
পরিবর্তিত হয়েছি আমি-হয়নি সমাজ-আ’জো বড্ড সেকেলে
“ছেলেরা” বন্ধু না ভেবে - আই লাভ ইউ বলে!
আর মেয়েরা বলেঃ আরেব্বাস্! তুমি ছেলে না মেয়ে!!!
আগুন্তুকরা অবাক দৃষ্টিতে- লিংগ ভেদাভেদে দ্বিধায় পড়ে
মুরুব্বি’রা বলে “যা গেছে গোল্লা” বাঘ না ছাগলের বাচ্চা
হাঃ হাঃ হাঃ
হাসছি না কাঁদছি রাগে ক্ষোভে দুঃখে………………….
কিন্তু বুঝি হায়-বিড়ম্বনার চাপে-সে ও ভোগে
কভু হতাশায়-শুধু মেয়ে বলে
সমাজের অসামাজিকতায়…………………………..
(৭)
নৌশীন সাথী হারা
সমসাময়িক মেয়ে যারা
বাবা-মা বড় কড়া!!!
তথাকথিত রীতি’র শৃঙখলে বন্দী তারা
লেয়ার-বয়লার মুরগীর মতো
তাপমাত্রা দিয়ে করছে বড়
যেন অপেক্ষার পালা
মাল চালান দিয়েই দায় সারা................................................!
শেষ পর্ব
কিন্তু না, আমি হতে চাই না- সে জন্মদাতা
ঘৃনা করি হায় সে স্ববিরোধী পিতা-মাতা
যারা স্বীয় ভাবে দূর্ভাগা আর হত্যা করে
সন্তানের “মানুষ” নামের স্বীয় সত্বাকে
সন্তান আমার
পরিবারের ভাবি কর্ণধার-
দেশ-দশ সমাজের করবে উপকার
নয় লিংগ ভেদাভেদে
স্বীয় শির উঁচু করে-মানুষের পরিচয়ে
কিন্তু এই আমি ও যেন ক্রমেই কুকড়ে যাচ্ছি
সেকেলে সমাজের অপচ্ছায়ায়
অপরাধ এটাই-
আমি চাইনা সে দূর্ভাগা পিতা হতে
মোর কলিজার টুকরা সন্তানেরে
দেখতে চাইনা কভু অবলা নারীরুপে………………………………………
পুরুষ-কাপুরুষ-অপুরুষ-প্রতিবন্ধী জন্মদাতা!!!!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা
সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না
...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না
ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন
লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন