somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাংবাদিকতা বিভাগগুলোর জন্য আবশ্যকীয়

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি জার্মান-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম-- ডয়েচ ভেলে --বাংলাদেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সিলেবাসের মান উন্নয়নের জন্য ইন্টারভিউ সিডিউলের ভিত্তিতে জরিপ পরিচালনা করে। জার্মান থেকে যোগাযোগ করলে আমি ওই জরিপে অংশগ্রহণ করি সাংবাদিকতার একজন প্রাক্তণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক হিসেবে। সেখানে সুপারিশ/মতামতও চাওয়া হয়। আমি যেসব সুপারিশ করি তা নিচে দেয়া হলো। সাংবাদিকতা বিভাগগুলোর জন্য তা পালন আবশ্যকীয় বলেই আমার মনে হয়। এজন্যই এসবের ব্লগীকরণ।

১. সংবাদক্ষেত্রের মনবসম্পদ তৈরির জন্য সাংবাদিকতার তত্ত্ব পড়ানোর পাশাপাশি চর্চার সুযোগ অধিক বাড়াতে হবে (তত্ত্ব-৩০ শতাংশ এবং চর্চা বা অনুশীলন--৭০ শতাংশ হতে পারে) । শুধু সিলেবাসের মান উন্নয়ন করে সাংবাদিকতার মতো প্রায়োগিক শিক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। কেননা, যে শিক্ষক নিজেই একটা কপি সম্পাদনা বা রিপোর্ট লিখতে পারেননা তিনি কি তার শিক্ষার্থীদের এসব শেখাতে পারবেন? পারবেননা। তাই একাডেমিক রেজাল্ট এর সাথে সাংবাদিকতায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন (জাতীয় গণমাধ্যমে ৫ বছর সহকারি অধ্যাপকের জন্য এবং কমপক্ষে ১০ বছর সহযোগী অধ্যাপকের জন্য) শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। অথবা সাংবাদিকতার কোর্স যারা পড়ান [অথচ সাংবাদিকতা করেননি] তাদের অন্তত দুই/তিন বছর [আরো বেশি হতে পারে] জাতীয় ও অন্তর্জাতিক পযার্য়ের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের [সরাসরি ইর্ন্টানদের মতো কাজ করবেন] ব্যবস্থা করতে হবে। .

২. টিভি বুলেটিন তৈরি, অডিও-ভিডিও সম্পাদনা, মোবাইল স্টোরি টেলিং ও প্রিন্ট মিডিয়ার কপি সম্পাদনা [ট্রান্সমিডিয়া গল্পকথন ও ক্রসমিডিয়া গল্পকথনসহ] প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়ার জন্য বিভাগে অলাদা অলাদা ল্যাব স্থাপন করতে হবে।

৩. অ্যাকাডেমি-ইন্ডাস্স্ট্রি সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। সাংবাদিকতা বিভাগ ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতামূলক কমর্সূচি নিতে হবে।

৪. নতুন মিডিয়ার আবির্ভাবের কারণে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় নতুন নতুন পদের প্রয়োজন হচ্ছে। এসব পদকে লক্ষ্য রেখে সিলেবাস তৈরি ও শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৫. প্রতিবছর বা মাঝে-মধ্যে সাংবাদিকতার গ্রাজুয়েটদের ওপর জরিপ পরিচালনা করতে হবে। [বিশ্বের অনেক দেশেই এ ধরনের জরিপ হয়]।

৬. শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে হবে। অপেক্ষাকৃত মেধাবী গ্রাজুয়েটদের নিয়োগ দিতে হবে। আর যেসব অপেক্ষকৃত দুর্বল গ্রাজুয়েট শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের ‘বিশেষ‘ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

বি.দ্র: ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ২০০৯ সালে রাবি সাংবাদিকতা বিভাগ ও জাফরু আয়োজিত “সাংবাদিকতা শিক্ষা ও পেশা“ শীর্ষক সেমিনারে আমি যে কী-নোট উপস্থাপন করেছিলাম সেখানে এ ধরনের ‍আরো সুপারিশ ছিল। প্রতিবছর অনেক সাংবাদিকতার গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে কিন্তু আমরা যখন রিপোর্টার বা সহ-সম্পাদক পদে এসব গ্রাজুয়েটদের নিয়োগ দিতে যায় তখন বোঝা যায় কী তাদের অবস্থা! মনে হয় শুণ্য হাতে যুদ্ধে নেমেছে তারা। আমাদেরও এ অবস্থা হয়েছিল। বাংলাদেশে আমরা এজন্য শিক্ষার্থীদের দোষ দেয়। আসলে তা নয়। মূল সমস্যা সাংবাদিকতা ‍শিক্ষণ প্রক্রিয়ায়।

অনেক সাংবাদিক মনে করেন যে সাংবাদিকতার জন্য ‍ডিগ্রীর প্রয়োজন নেই। সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রয়োজন অবশ্যই আছে, সেটা স্ব-শিক্ষাও হতে পারে। ডিগ্রী অর্জন করুক বা না করুক সাংবাদিকতার তাত্ত্বিক জ্ঞানের প্রয়োজন আছে এবং তা না জানলে আনেক ধারনাগত সীমাবদ্ধতা দেখা যায়। সাংবাদিকতার চিন্তার ক্ষেত্রে পরিশুদ্ধতা আসা কঠিন হয়। এজন্য ডিগ্রী অর্জন না করলেও সাংবাদিকতার বই, সংশ্লিষ্ট আইন ও ডকুমেন্টস পড়া উচিত। হাজার খানেক বই পড়লে বুদ্ধিদীপ্ত সাংবাদিক হতে সাহায্য করবে তাতে সন্দেহ নেই।

আপনারা কী মনে করেন? মতের ভিন্নতা ও সহমত থাকলে তা আরো কার্যকরী হয়। ধন্যবাদ সকলকে [বিস্তারিত দেখুন আমার ‘সাংবাদিকতা:অফলাইন অনলাইন‘ বইটি]।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×