somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি আরবে বাংগালীদের দুর্দশার কারন-৫ঃ অপেশাদার কূটনীতি

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের একটা পর্বে উল্লেখ করেছিলাম , সৌদি আরব থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমান সারা বিশ্ব থেকে যত রেমিট্যান্স বাংলাদেশে যায় তার সম্মিলিত যোগফলের বেশি ।ফলে এখানকার অনাবাসীদের অন্য সবার থেকে বেশী সুযোগ-সুবিধা পাওয়া উচিত ।আর এ সুযোগ পাওয়ার একমাত্র উপায় দক্ষ ও শক্তিশালী দুতাবাস ।ইউরোপ আমেরিকার দেশসমুহে পররাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের দক্ষ ও মেধাবীদের নিয়োগ দেয়া হয় ।সেখান থেকে রেমিট্যান্স তো আসেই না বরংটিউশন ফি হিসেবে বিশাল অংকের টাকা দেশ থেকে বেরিয়ে যায় ।তাই, উন্নত সেবা দিতে হলে ফারুখ চৌধুরী কিংবা ড।ইফতেখার আহমেদ চৌধুরির মতো কর্মঠ রাষ্ট্রদুত নিয়োগ দেয়া উচিত । অথচ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পোড়খাওয়া , দুর্নিতীবাজ অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলদের সৌদি আরবে রাষ্ট্রদুত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় । তারা পেশাদারিত্বের পরিবর্তে টাকা কামানোর ধান্ধায় থাকে ।

সাবেক রাস্ট্রদুত মেজর জেনারেল (অব) ইকরাম যেখানেই যেতেন সংবর্ধনা নেয়ার নামে সোনার মুকুট ,স্বর্নের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রি ঊপঢৌকন হিসেবে নিতেন । বিনিময়ে বিভিন্ন অন্যায় সুবিধা দিয়ে দাতাদের সন্তূষ্ট করতেন । তার সময়েই বড় বড় কোম্পানীর ভিসা , বাঙ্গালিদের ভিসা ট্রান্সফার বন্ধ হয়ে যায় ।তিনি নিজের উন্নতিতে মনোযোগী ছিলেন ।
শুধু তিনিই নয় ,দুতবাসের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী যে যেমনে পারে টাকা কামাচ্ছে ।

একা কোন শ্রমিক বিপদে পড়ে দুতাবাসে গেলে কোন পাত্তাই পায় না ।তার উপর আছে দুর্ব্যবহার । দুতাবাসের ড্রাইভার,দারোয়ান,পিয়নের দুর্ব্যবহার-অসহযোগিতায় নাজেহাল হয়নি এমন বাঙ্গালী কমই আছে ।

মাঝে মাঝে একদল শ্রমিক প্রতারিত হয়ে এমন নিঃস্ব পর্যায়ে পৌঁছায় যে , সংঘবদ্ধ হয়ে দুতাবাসের সামনে আশ্রয় ও দানাপানির জন্য অবস্থান নেয় । তখন সৌদি বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা থেকে খাবার মেলে ,আর দুতাবাসের সামনের রাস্তায়খোলা আকাশের নীচে ঘুমিয়ে থাকতে হয় । পত্রপত্রিকায় ছবিসহ খবর টা ফলো আপ করা হয় , ফলে সৌদি কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে ।তারা তদন্ত করে যথারিতি বাংলাদেশী আদম ব্যবসায়ীদের নাম পায়, বাংলাদেশ দুতাবাসকে জানায় ।তখন আদম ব্যবসায়ীরা বিশাল অংকের টাকা দিয়ে দুতাবাস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে । এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে , ঘুরেফিরে একই আদম ব্যবসায়িদের নাম আসছে,আর কর্মকর্তাদের বাড়তি কিছু রোজগার হচ্ছে ।শ্রমিকের স্বার্থ তাদের কাছে বড় নয় ।নিজেদের ও আদম ব্যবসায়ীদের লাভটা এখানে মুখ্য ।
আপনারা সবাই জানেন মিয়ানমারের প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পার্সপোর্টে সৌদি আছে ।এদের হিসাব ও পরিচিতি দুতাবাসে আছে । কেঊ কেঊ সপরিবারে আছেন । এদের পাসপোর্ট নবায়নে ও নতুন শিশুর পাসপোর্ট তৈরিতে বিপুল অংকের আর্থিক লেনদেন হয় ।
সবচেয়ে যেটা জঘন্য ও মানবতা বিরোধী তা হল মৃতদেহ জিম্মি করে টাকা আদায় ।কোন শ্রমিক দুর্ঘটনা বা অন্য কোনভাবে মৃত্যু হলে দেশে লাশ পাঠাতে দুতাবাসের কিছু করনীয় থাকে ।সেজন্য নিহতের স্বজনদের টাকা দিতে হয় । একবার পত্রিকায় দেখেছিএর পরিমান ১০০০০ রিয়াল ।

মক্কায় বাংলাদেশিদের দেয়া সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এসব অভিযোগ জানালেও এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি ।

অথচ ভারতীয় বা ফিলীফাইনি কোন শ্রমিক বিপদে পড়লে বা কোম্পানী কর্তৃক বঞ্চনার শিকার হলে পুরো এম্বাসী তার পক্ষে দাড়ায়-পত্রিকায় বিশদভাবে তার সমস্যা ছাপা হয় ।সৌদি কফিল বা কোম্পানী বুঝে যায় বাঙ্গালীদের সাথেই দুই নম্বরি করা যায় অন্য কারো সাথে নয় ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় টিভি খবরে দেখেছিলাম আবুধাবী দুতাবাসে অনিয়মের তদন্ত হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশের দুতাবাসে হবে বলে ঘোষনা দেয়া হয়েছিল ।অজানা কারনে আমরা এরপর কি হয়েছে তার কিছুই জানি না ।

বর্তমান রাষ্ট্রদুত ফজলুল করিম ইতালি থেকে সফল হয়ে এসেছেন । কিন্তু এখানে এখনো কোন সফলতা দেখাতে পারেননি ।
হয়ত দুতাবাসের অন্য দুর্নিতিবাজদের কারনে পারছেন না ।কিংবা তিনিও হয়ত তার পুর্বসুরিদের পদাংক অনুসরন করছেন ।
(ক্রমশঃ)

বি।দ্র ঃ আমার লেখার কোন অংশে দিমত থাকলে মতামত দিন সংশোধন করা হবে ।
ঐ ব্যপারে কেন লিখিনি সে প্রশ্ন না করে , যেদিক নিয়ে লিখিনি আপনি লিখুন , যোগ করে নিব ।


(৪র্থ পর্ব ) (৬ষ্ঠ পর্ব )

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১০ রাত ১০:৪১
১৪টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×