আজকে পিসি ঘাটতে ঘাটতে তোমার একটা ছবি খুঁজে পেলাম। এই ছবিটা অনেকদিন দেখিনি। ইদানিং বেশ কয়েকবার এমনটা হলো। পুরোনো ফোল্ডার থেকে হুটহাট তুমি বের হয়ে আসো। কোনোটাতে বেনী করা চুলে, কোনোটাতে সখীদের সংগে খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে, আবার কোনোটায় আমার আম্মুকে জড়িয়ে ধরে। বিচিত্র সব পোশাকে বিচিত্র সব ছবি, আমাদের দুরন্ত কৈশোরের কথা মনে করিয়ে দেয়। আজকের পাওয়া ছবিটা দুই হাজার দুই সালের ফেব্রুয়ারিতে তোলা, ট্যাগের তারিখ দেখে বললাম। ক্যামেরার রেজ্যুলেশ্যান ভাল না, তবু এই রেজ্যুলেশ্যানেই বোঝা যায়, তোমার চোখ-মুখ হাসছে। বনমালা রোডের শেষে যে রেল লাইন আছে, সেখানে তোলা। এই রেললাইনে আমরা প্রায়ই যেতাম। বিকেলে অনিমেষ স্যারের কোচিং শেষে, তোমার মনে পড়ে সেইসব দিনের কথা? সেই প্রতিজ্ঞার কথা, কোন এক জ্যোছনার রাতে আমাদের দূরে কোথাও যাবার কথা ছিল! কোন একদিন হুট হাট করে চলে যাবো। কোনো ব্যাগ-ট্যাগ নিবোনা। অচেনা কোন শহরে গিয়ে সকাল বেলা নামবো, উদ্দেশ্যহীন ঘুরোঘুরি করে আবার ফিরে আসব ফিরতি ট্রেনে।
তোমার মনে আছে? চার টাকা দিয়ে মহাখালী যাওয়া যেত তখন। যেতে ৪০ মিনিটের সম সময় লাগো। কষ্ট-মষ্ট করে কুড়িটা টাকা জমাতে পারলেই কোচিং ফাঁকি দিয়ে কতবার আমরা মহাখালি চলে গেছি! আবার ফিরতি বাসে ফিরে এসেছি।
তখন আট টাকায় কাপ আইসক্রিম পাওয়া যেত। একটা আইসক্রিম কিনে ভাগাভাগি করে খেতাম। প্র্যাক্টিক্যাল খাতা লিখতে আমার কোনকালেই ভাল লাগেনি, তোমাকে কত রিকোয়েস্ট করে, ভাল ভাল কথা বলে-টলে খাতাগুলো লিখিয়ে নিতাম। আব্বুর অফিসে গেলে এ-ফোর সাইজের কালার পেপার, টিস্যুর প্যাকেট নিয়ে আসতাম আংকেলদের কাছ থেকে, সব তোমার জন্য।
তোমার এসব মনে পড়েনা? আমার কিন্তু খুব মনে পড়ে জানো! এখনো রেলগাড়ি দেখলে আমার সেই প্রতিজ্ঞার কতা মনে পড়ে! তুরাগ বাস দেখলে সেই বিকেলগুলোর কথা মনে পড়ে। কী সুন্দর ছিল সময়গুলো!! তোমার মনে পড়ে না এসব? জ্যোছনার রাত্রিগুলোতে তোমার কি ইচ্ছে করেনা রেলগাড়িতে চড়ে অচেনা কোনো শহরে চলে যেতে? আমার কিন্তু করে, খুব ইচ্ছে করে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




