খাওয়া দাওয়া তো অনেক হল, এইবার একটু ঘোরাঘুরি হয়ে যাক। চট্টগ্রামে আসলেন সাগর দেখবেন না তা কি করে হবে? শহর থেকে দূরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে চলে যেতে পারেন আপনি। সময় লাগবে বড়জোর ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা। জোয়ার না থাকলে বালুর চড়ে হাটাহাটি করতে করতে সাগরের জলে পা ভিজিয়ে ভুলে যেতে পারবেন সব শহুরে জঞ্জাল। এখানে আপনি সাগরের পাড়ে বসে খেয়ে নিতে পারেন চটপটি, বাদাম বা ছোট ছোট পিয়াজু। আশা করি খারাপ লাগবে না।
আপনি চাইলে চড়তে পারেন ঘোড়ার পিঠে অথবা স্পিডবোটে করে সাগরের বুকে। সমুদ্র দেখা শেষ হলে বিকেলের দিকে করে চলে যান নেভাল এর দিকে (এয়ারপোর্ট এর পাশে)। এখানে রাস্তার পাশে বাধের উপর পা মেলে বসে দেখতে পারবেন নদীর মোহনাতে ভাসমান দেশী বিদেশি জাহাজ, অপর তীরের ফ্যাক্টরিগুলো। সন্ধ্যার দিকে যখন ফ্যাক্টরিগুলোতে আলো জ্বলে ওঠে তখন এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের মাঝে নিজেকে খুঁজে পাবেন। এখানে একটি প্রজাপতি পার্ক আছে, দিনের আলো থাকতে থাকতে ঘুরে নিতে পারেন এর ভিতরটাও। নেভালে রাস্তার পাশে ছোট ছোট বেশ কিছু খাবার দোকান আছে। আপনি এখানে পেয়ে যাবেন কাঁকড়া ভাজা। চেখে দেখতে পারেন যদি ইচ্ছা হয়।
সাগর তো দেখলেন, পাহাড় দেখবেন? তাহলে আপনাকে যেতে হবে ফয়েজ লেক কিংবা বাটালী হিলে। ফয়েজ লেক-এ পাবেন অ্যামিউজমেন্ট পার্ক সহ একটি বিশাল লেক, যেখানে আপনি নৌকা নিয়ে ঘুরতে পারবেন। আর পাবেন পাহাড়ের গা ঘেষে করা আঁকাবাঁকা রাস্তায় পাহাড়ের উপর থেকে শহর দেখার আনন্দ। পাহাড় আর লেক দেখার আনন্দ আপনি আরো পেতে পারেন শহর থেকে ঘন্টা খানেক দূরে ভাটিয়ারি গলফ ক্লাবের আশে পাশে। যদি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি জোগাড় করতে পারেন তাহলে দেখে আসতে পারেন গলফ ক্লাবের ভিতরটাও।
শহরে আরো বেশ কিছু শিশু পার্ক আছে যেগুলোতে আপনি আপনার বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন। কর্ণফুলী শিশু পার্ক (আগ্রাবাদ সংলগ্ন), জিয়া শিশু পার্ক (কাজির দেউরি) অথবা স্বাধীনতা পার্ক (বহদ্দারহাট টার্মিনালের অপর পাশে)। দিনের বেলায় ঘুরে দেখতে পারেন সার্কটি হাউস (কাজির দেউরি) অথবা আগ্রাবাদ হোটেলের কাছে নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর।
চট্টগ্রামের আরেক নাম বার আউলিয়ার শহর। যারা এই শহরে এসে বিভিন্ন অলি আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করতে যেতে চান তারা যেতে পারেন আমানত শাহ এর মাজার (জেল রোড, লাল দিঘির পাড়), গরম বিবির মাজার (দামপাড়া পুলিশ লাইন এর পাশে), গরীবউল্লাহ শাহ এর মাজার (দামপাড়া থেকে জিইসি যাবার পথে পশ্চিম দিকে), মিসকিন শাহ এর মাজার (কলেজ রোড, মহসিন কলেজ এর পাশে), বায়জিদ বোস্তামির মাজার (বায়েজিদ ক্যান্টনমেন্ট এর পাশে), বদনা শাহের মাজারে (প্রবর্তক মোড়)।
সনাতন ধর্মের যারা আছেন তারা যেতে পারেন বিভিন্ন আশ্রম কিংবা মন্দিরে যেমন- তুলসী ধাম (নন্দনকানন), কৈবল্যধাম (মনছুরাবাদ, এ কে খান), পঞ্চানন ধাম (আন্দরকিল্লা), গোলপাহাড় কালী বাড়ি, চট্টেশ্বরী মন্দির সহ শহরে বিদ্যমান অন্যান্য মন্দিরে।
শহরে এসে কেউ যদি কেনাকাটা করতে চান তাহলে যেতে পারেন নিউমার্কেট, সানমার ওশান সিটি (জিইসি), মিমি সুপার মার্কেট (প্রবর্তক মোড়), আফমি প্লাজা (প্রবর্তক মোড়), শপিং কমপ্লেক্স (২ নং গেইট), আমিন সেন্টার (লালখান বাজার), রেয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমুন্ডী লেইন কিংবা জহুর মার্কেট।
অনেকে চট্টগ্রাম এসে শুটকী কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। আপনি ভালো শুটকী পাবেন কাজীর দেউরী বাজার, রেয়াজ উদ্দিন বাজার এর ভিতর অথবা চাক্তাই ব্রিজের ওখানে।
চট্টগ্রাম নিয়ে প্রথম লেখা (হোটেল রেস্টুরেন্টের কথা)পাবেন এখানে ।
আমাদের ব্লগ - জলেডাঙ্গা'র লিঙ্ক এখানে ।
চট্টগ্রামের যে এরিয়েল ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা নিয়েছি, এখান থেকে।
পতেঙ্গা সৈকতে সূর্যাস্তের ছবি তুলেছেন রাসেল জন
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭