somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খালেদার কন্ঠে পাকিসুর দেশব্যাপী নিন্দার ঝড়

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাহবুবুল আলম

জেনারেল জিয়ার বিএনপি ও তার নেত্রী খালেদা জিয়া যে পাকিস্তানের দোসর এ কথা আবারো জোরালোভাবে প্রমাণিত হলো শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদার মন্তব্যে। গত ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রো-বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশের মানুষ। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর বিজয়ের মাসে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া পাকিস্তান ও জামায়াতে ইসলামীর মতো অভিন্ন সুরে খালেদা জিয়ার করা মন্তব্যে গোটা জাতি হতবাক ও বিস্মিত। তাই বিভিন্ন পিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এমন বক্তব্য নিয়ে রীতিমতো নিন্দার ঝড় বইছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেতো তুলোধুনা করা হচ্ছে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে।
শুধু মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেই বিএনপি প্রধান ক্ষান্ত হননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সবাইকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে সত্যিকারে যারা সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করেছিল বিএনপিও তাদের বিচার চায়। কিন্তু সেটি হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্মত, স্বচ্ছ। আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক সম্মান দেয়নি—এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নিজের ঘরে যুদ্ধাপারাধী পালছে, মন্ত্রী বানাচ্ছে। তাছাড়া সেই মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে অপ্রাসঙ্গিক হলেও বেগম জিয়া পদ্মাসেতু নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তা দেশের কোটি মানুষের আবেগে কাদা মাখিয়ে দিয়েছেন। সেই সমাবেশে তিনি বলেছেন,‘পদ্মাসেতু নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে, অনেক স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে, আসলে পদ্মাসেতুর স্বপ্ন বা বাস্তবায়ন একদিন পদ্মার বনের জলে ভেসেসে যাবে। এ কথার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মনে আবারো নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, খালেদা জিয়া ও তার দোসরা কী পদ্মাসেতু নিয়ে আবার কোন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে যাচ্ছে, যাতে পদ্মাসেতু নির্মান সম্ভব না হয়? অথবা সাবোটাজ করে নির্মামানাধীন পদ্মাসেতু কী তিনি ও তার দোসররা গুড়িয়ে দেবেন? তা না হলে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সমাবেশ ডেকে তিনি এ কথা বলতে যাবেন কেন?
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিরোধী বিএনপি প্রধানের বক্তব্যের নিন্দা-প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে দেশ ও জাতির কাছে খালেদা জিয়াকে ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকসহ সাধারণ মানুষ। অন্যথায় পাকিস্তানের এজেন্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দ্রুত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের এবং সর্বত্র স্বাধীনতাবিরোধী এই অপশক্তির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে খালেদা জিয়া তাঁর স্বাধীনতাবিরোধী নগ্নরূপ জাতির সামনে আবারও প্রকাশ করেছেন মন্তব্য করেছেন দেশের রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেছেন,‘ খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যে গোটা জাতি হতবাক ও বিস্মিত। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সরকারী ও স্বীকৃত পরিসংখ্যান অস্বীকার করে খালেদা জিয়া আবারও প্রমাণ করেছেন একাত্তরে তিনি যেভাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অনুগত ছিলেন, এখনও সেই অবস্থানে অটল রয়েছেন। পাকিস্তান ও যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের ইসলামীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি হয়েছে খালেদা জিয়ার কণ্ঠে। একাত্তরে রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, আর খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টে হানাদারদের সঙ্গে আরাম-আয়েশে ছিলেন। উনি কিভাবে জানবেন মুক্তিযুদ্ধে কতজন শহীদ হয়েছেন? অনেকে খালেদা জিয়ার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিশিষ্টজনেরা বলেন, পাকিস্তানীদের অপকর্ম আড়াল করার উদ্দেশ্যেই একাত্তরে ক্যান্টনমেন্টে পাক হানাদারদের মেহমানদারিতে থাকা খালেদা জিয়া পরিকল্পিতভাবেই ইতিহাস-বিকৃতকারী বক্তব্য দিয়েছেন। খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ঔদ্ধর্ত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে নিজেকে, তাঁর দল বিএনপিকে ছোট করেছেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। তাই অবিলম্বে পাকিস্তান ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়া এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়দানের অপরাধে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিচারের মুখোমুখি করতেও দাবি জানান বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। (দৈনিক জনকন্ঠ-২৩ ডিসেম্বর ২০১৫)

জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর এই জিয়াউর রহমানই গোলাম আযমকে বাংলাদেশে নাগরিকত্ব প্রদান করেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের এ দেশে প্রতিষ্ঠা করেছিল। যা তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়াও করে যাচ্ছেন। তাই আমি মনে করি, জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর ফাঁসি দেয়া হোক, এটা আজ জনগণের প্রত্যাশা।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি খালেদা জিয়ার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-শান্তি কমিটির হায়েনারা ত্রিশ লাখ বাঙালীকে হত্যা করেছেÑ এ কথা আজ শুধু অনুমানই নয়, মীমাংসিত সত্য। এই জঘন্য গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের বিচার যখন বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে চলেছে, তখন এই বিচারের বিরোধিতা করে পাকিস্তান সরকার নিজেদের সে সময়কার অপকর্মকে অস্বীকার করার মতো ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও দেশের প্রথম সেনাবাহিনীপ্রধান মেজর জেনারেল (অব)কে এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা রণাঙ্গনে থেকে জীবনবাজি রেখে হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। উনি (খালেদা জিয়া) তো তখন ক্যান্টনমেন্টে আরাম-আয়েশে ছিলেন। তাই বিএনপি নেত্রী কিভাবে জানবেন কিভাবে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, কত মানুষ মারা গেছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং স্বাধীনতার পরে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তো কাউন্ট (গণনা) করা হয়নি কত মানুষ শহীদ হয়েছেন। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর ঐতিহাসিকভাবে সত্য ৩০ লাখ শহীদের মহান আত্মদানের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা কখনই দেশপ্রেমের পরিচয় দেয় না বরং শহীদদের প্রতি অবমাননারই শামিল।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইসমত কাদীর গামা ও মহাসচিব (প্রশাসন) এমদাদ হোসেন মতিন খালেদা জিয়ার মনগড়া, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের ৪৪ বছর পর শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা তথা সমগ্র জাতির মধ্যে যে অনৈক্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন, তা মোটেই কাম্য নয়। নেতৃদ্বয় বলেন, খালেদা জিয়ার এই বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য প্রতীয়মান হয় যে, খালেদা জিয়া পাকিস্তানীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একদিন হয়ত বলেই ফেলবেন, এদেশে কোন গণহত্যা হয়নি বা এদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের কাছে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এ নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেব? একেক সময় একেক রকম পাগলামি কথাবার্তা কেউ বলবে, সে বিষয়ে বলার কী রয়েছে। আসলে এসব বিষয়ে তাদের পাত্তা না দেয়ায় ভাল।

ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ দেশ ও জাতির কাছে বিএনপির ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দেশ ও জাতি যখন বিজয়ের ৪৪তম বার্ষিকী উদ্যাপন করছেন, যখন পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সমালোচনা করে একাত্তরের গণহত্যা অস্বীকার করছেÑ ঠিক তখন বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সরকারী ও স্বীকৃত পরিসংখ্যান অস্বীকার করে আবারও প্রমাণ করেছেন, একাত্তরে তিনি যেভাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অনুগত ছিলেন এখনও সেই অবস্থানে অটল রয়েছেন। তাঁরা বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সরকারই নয়, সোভিয়েত বার্তা সংস্থা ‘তাস’, ‘ইউএনআই’ ও ‘ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সংস্থা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ লাখ বলেছে। তবে গণহত্যাকারী পাকিস্তান এবং তাদের গণহত্যার সহযোগীরা সবসময় এই পরিসংখ্যান অস্বীকার করছে। অবিলম্বে হলোকস্ট ডিনাইল এ্যাক্ট প্রণয়নের দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিহাস বিকৃতি প্রতিহতকরণের উদ্দেশ্যে গণহত্যার ভিকটিম ইউরোপের ১৪টি দেশ ‘হলোকস্ট অস্বীকৃতি আইন’ প্রণয়ন করেছে, যে আইনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গণহত্যার পরিসংখ্যান অস্বীকার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তখন থেকেই আমরা বহুবার ইউরোপের হলোকস্ট ডিনাইয়াল এ্যাক্টের মতো আইন প্রণয়নের দাবি করছি। এই আইন প্রণীত না হলে ভবিষ্যতে বিএনপি যদি কখনও ক্ষমতায় আসে তবে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনার লেশমাত্র থাকবে না। একাত্তরের শহীদদের অবমাননাও বন্ধ হবে না।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৭১এর মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে বলে যে মন্তব্য করেছেন তাতেই প্রমাণিত হয় তিনি এখনো পাকিস্তানিদের দোসর হয়েই আছেন। তার এমন বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় পাকিস্তান ও খালেদা জিয়া একই সূত্রে গাঁথা। বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। আর স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর এসে খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্য নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করবে বলে মত সাধারণ মানুষের। রক্তে কেনা আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের লাল সুবজ পতাকা। ৭১ মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে শহীদ হওয়া বাংলার সূর্য সন্তানরা আমাদের অহংকার। কিন্তু সেই অহংকার আর গৌরবময় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে গেল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন ৭১এর মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। (একুশে টিভি মিডিয়া)
এ প্রসঙ্গে দৈনিক সমকাল-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। রাজনীতিবিদ, বিশিষ্টজন এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বলেছেন, এ বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি নেত্রী প্রকারান্তরে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারীদের অবমাননা করেছেন। বিজয়ের মাসে তিনি স্বাধীনতার জন্য মহান আত্মত্যাগের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন; শহীদদের পরিবারের প্রতি চরম অবজ্ঞা করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া ও গণহত্যাকে অস্বীকার করা পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
উদীচীর সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, 'একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান যখন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন, তখন এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না।' বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা নয়, বরং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে বেশি আগ্রহী ছিলেন বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অপমান করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তারা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, 'তার এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি নিজেকে স্পষ্ট করেছেন_ তার স্বামী জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের চর ছিলেন। তিনিও জামায়াতে ইসলামী ও পাকিস্তানকে খুশি করতে এ ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করলেন। এতে ভালোই হয়েছে। নতুন প্রজন্ম দেখুক ও জানুক খালেদা জিয়া ও তার বিএনপি আসলে কী চায়।' বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ বৈরী মানসিকতা থেকেই খালেদা জিয়া এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলেও রাজাকাররা রাষ্ট্রীয় পতাকা উড়িয়ে চলেছে।'
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব সমকালকে বলেন, 'বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার এহেন উদ্ভট, উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্যে আমরা মোটেও বিস্মিত হইনি। তবে তার এ বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার শাসনামলগুলোতে কখনও ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত কোনো মন্তব্য করেননি। কিন্তু এখন তিনি সেই কাজ করেছেন। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে তার বক্তব্যের মিল রয়েছে, যা কেবল নিন্দনীয় নয়, সকল অর্থেই ঐতিহাসিকভাবে অসত্য এবং পরিপূর্ণভাবে উদ্দেশ্যমূলক।'
পরিশেষে এই বলে শেষ করবো আমাদের বিজয়ের এ মাসে খালেদা জিয়া পাকিস্তানীদের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তা দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিককে হতবাক করেছে। তিনি বাংলাদেশের সোয়া দুইবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখনতো তিনি এমন ধরনের প্রশ্ন তোলেননি, তবে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর আজ কোন উদ্দেশ্যে এমন বিতর্ক তুললেন, সেটা কী বেগম জিয়ার বীমরতি, মতিভ্রম নাকি পাকিদের সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের কন্ঠে কন্ঠ মিলানো তা বোঝা যাচ্ছে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×