somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মুক্তিযোদ্ধা হাত পেতেছেন আমাদের কাছে!!!!

১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঁচতে চান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হাসেম উদ্দিন

তিনি যুদ্ধ করেছিলেন এই দেশের জন্য আমরা কি পারিনা একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে??

সবাই বেস্ত বিতর্কে এরই মাঝে কতো মুক্তিযোদ্ধার প্রান ঝড়ে জাচ্ছে তার খবর আমরা কয়জন রাখি??

আছেন কি কেউ, তাকে সাহায্য করার মতো ?

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক হাসেম উদ্দিন (অক্ষম)। ১০ জুন ১৯৭১’এ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন গদাগাড়ী গ্রামে সংঘটিত ওই লড়াইয়ে ডান পায়ের হাটু ও উরুতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

সুস্থ হয়ে আবারও যুদ্ধে যোগ দিয়ে ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে দিনাজপুরের বিরল থানায় হানাদার বাহিনীর মর্টার সেলের আঘাতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি।



দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের রেকর্ড উইংয়ের দৈনিক আদেশ নামা দ্বিতীয় খণ্ডে এভাবেই লিপিবদ্ধ রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা হাসেম উদ্দিনের বীরত্ব। তবে দেশের জন্য তার পঙ্গুত্ব বরণের সাক্ষীও যেন ওই রেকর্ড।

সাভারে পক্ষাগাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রতে (সিআরপি) এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ৭৫ বছর বয়সী এ মুক্তিযোদ্ধা।

ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানার বাঁশগাড়া গ্রামের এ কৃতি সন্তানের আছে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয়ের সব কাগজপত্রই। তিনি ছিলেন বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনা সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম্বার ১১১৪, মুক্তিবার্তায় তার নাম্বার ০৩১০০২০২৬৬, যুদ্ধকালীন নাম্বার ১২৩০৫৪।

নিজের বীরত্বের কথা মুখে জানানোর শক্তি নেই এ মুক্তিযোদ্ধার। শুধু নিজের স্বাধীন করা এ দেশে আরো কিছুদিন বেঁচে থাকার জন্য হাসেম উদ্দিন আজ হাত পেতেছেন সকলের কাছে।

দরিদ্র এ মুক্তিযোদ্ধা আর তার সন্তানদের পক্ষে সম্ভব নয় চিকিৎসার এত বিপুল ব্যয়ভার নির্বাহ করা।

১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে দুই দুই বার আহত হওয়ার পর আর সেরে উঠতে পারেননি তিনি। পঙ্গু অবস্থাতেই চলছিল হাসেমের দিন।

কিন্তু গত বছরের জুন মাসের ৮ তারিখে ব্রেইন স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হন এ মুক্তিযোদ্ধা। ফলে হাত পা সহ তার শরীরের বাম অংশ পুরো অবশ হয়ে যায়।

দিনাজপুর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে সিআরপি’তে ভর্তি করা হয় তাকে।

বাংলানিউজে এসেছিলেন হাসেম উদ্দিনের বড় ছেলে পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুর রহমান। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে সুস্থ করে তুলতে চান তিনি। বাংলানিউজকে বলেন, “মিডিয়াতে আসলে অনেকে সাহায্য করে শুনেই এখানে এসেছি।’

৪৩ বছর ধরে পঙ্গু হাসেমের পক্ষে সম্ভব হয়নি সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করে তোলা। সম্ভব হয়নি নিজের অর্থ আয়েরও কোন উপায় বের করতে। এদিকে স্বল্প বেতনের জিল্লুর রহমানের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বাবাকে সুস্থ করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ১৪ লাখ টাকা সংগ্রহ।

জিল্লুর বলেন, “টাকা পয়সার অভাবে বাবার পরীক্ষা নিরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার খরচ করতে পারছি না। হার্ট ও পেটের নিচে অপারেশনের জন্যে ১৪ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। প্রতিমাসে ওষুধপথ্য সহ অন্যান্য পথ্য এবং ফিজিওথেরাপীসহ ৭৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগে”।

হাসেম উদ্দিনের ৭ ছেলে, মেয়ে নেই। রয়েছে ছেলের বৌ, নাতি নাতনি। কিন্তু ১৫ সদস্যের এই পরিবারে আয় করেন মাত্র ২ জন। জিল্লুর রহমান আর ছোট ভাই বিজিবি’তে কর্মরত জোবাইদুর রহমান। এর পরে রয়েছে আরো ৫ ভাই। যারা সকলেই এখনো পড়াশোনা করছেন।

দুই ভাইয়ের পক্ষেও সম্ভব হচ্ছে না এ খরচ বহন করা। তাই সকলের কাছে তারা সাহায্য চেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে সুস্থ করে তুলতে।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসেম উদ্দিনকে সাহায্য করা যাবে ব্র্যাক ব্যাংকের ১৫২৬১০২৫৬৬৩৩৪০০১ এই একাউন্ট নাম্বারের মাধ্যমে।

জিল্লুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় ফোন নং:০১৭১৩৮৬৩৫৪৫ ও ০১৭২৬১৯৪৪৫২।

দেশ মাতৃকার টানে নিজের জীবন তুচ্ছ করে সেদিন হাসেম উদ্দিন ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মরণপণ সংগ্রামে। একবার গুলিবিদ্ধ হয়েও দমে যাননি তিনি। পুরো সুস্থ হওয়ার আগেই আবারও ফিরে আসেন লড়াইয়ের ময়দানে। বরণ করেন আজীবনের পঙ্গুত্ব।

এ রকম হাসেম উদ্দিনরা যদি সেদিন নিজের জীবন তুচ্ছ করে লড়াইয়ে না ঝাঁপিয়ে পড়তেন তবে হয়তো আজ এ লাল সবুজের পতাকা কখনও আমাদের হতো না। স্বাধীন বাংলাদেশ পেতো না তার পরিচয়।

তাই আজ যখন হাসেম উদ্দিন মৃত্যুশয্যায়, অর্থাভাবে তার চিকিৎসা সুদূরপরাহত, তখনই স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রকৃত সময় কিছু না কিছু সাহায্যে মাধ্যমে তার সেই মহান ত্যাগের প্রতি একটু হলেও শ্রদ্ধা প্রদর্শন।

আছেন কি কেউ, তাকে সাহায্য করার মতো ?

[কৃতজ্ঞতাঃbanglanews24.com]
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×