somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কথিত জিনের বিচার চাই: জনগনেরই দায়িত্ব নেয়া উচিত এদেরকে তুলোধুনা করার জন্য

০৩ রা মার্চ, ২০১২ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা খবর শুনে মাথায় আগুন ধরল। মনে হচ্ছে শুকরের বাচ্চাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিই।
সুত্র লিখেছে, মঞ্জুরুল হক নান্দাইল উপজেলার কাশিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। থাকেন কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকার একটি বাসায়। কিন্তু তার এ নামটি ঢাকা পড়ে গেছে আরেকটি নামের আড়ালে। বিদ্যালয়ে এমনকি আশপাশের এলাকায় তিনি পরিচিত ‘জিন স্যার’ নামে। জিন স্যার হিসেবে পরিচয় দিতে তিনি নিজেও বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ব্যবসায়ে উন্নতি, চাকরি লাভ, প্রেম-বিয়েসহ যে কোন মুশকিল আসানে তিনি তদবির করেন। তার তদবিরের ফলে জিনরা অলৌকিক কেরামতির মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে মুশকিল আসান করে দেন। এমন প্রলোভনের ফাঁদ পেতে ভণ্ডামির মাধ্যমে সমস্যাগ্রস্ত লোকজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিন স্যারের কাছে আসা লোকদের মধ্যে অধিকাংশই আসেন প্রেম, বিয়ে, দাম্পত্যকলহসহ নানা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক গোপন বিষয়ের সমাধানের আশায়। সেক্ষেত্রে কোন কাজ না হলেও প্রতারিত লোকজন মানসম্মানের ভয়ে কারও কাছে এসব বিষয়ে মুখ খোলেন না। আর এ সুযোগ নিয়েই জিন স্যার তার জিন-ব্যবসাকে সমপ্রসারিত করে চলেছেন নতুন নতুন লোকজনের মাঝে।
‘আমার বাসায় সব সময়ই বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে লোকজন আসেন। বাসায় একটি নিভৃত কক্ষ আছে যেখানে গভীর রাতে আসন পেতে ওনাদের (জিন) ডাকি। তখন ওনারা এসে আমার সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় আমি ওনাদের কাছে যার যে সমস্যা সে সমস্যার তদবির করি। মাঝেমধ্যে ওনারা তাবিজ-কবজ-ওষুধ দেন। তদবিরে সবারই কাজ হয়। আসনের জন্য ১ হাজার ২৫০ টাকা লাগে। এ টাকা দিয়ে তদবির শুরুর পর কাজের ধরন বুঝে লোকজন খুশি হয়ে টাকা-পয়সা দেন।’ এসব কথা বলেই জিন স্যার মঞ্জুরুল হক সমস্যা নিয়ে আসা লোকজনকে তার কাজের ধরন সম্পর্কে ধারণা দেন। তিনি তখন আরও জানান, তার কাছে গেলে প্রেম, বিয়ে, চাকরি, ব্যবসায় সাফল্য থেকে শুরু করে এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান পাওয়া যায় না। এমনকি তার কাছ থেকে ডাক্তার এবং উকিলরা তাবিজ-কবজ নিলে তাদের রোগী আর মোয়াক্কেলের সংখ্যাও বেড়ে যায়। জিনের সহায়তায় এমনই অলৌকিক কেরামতি দিয়ে সবাইকেই সাফল্যের পথ দেখিয়ে দিতে পারেন তিনি। তাই তার কাছে বিপদগ্রস্ত মানুষ সাহায্যের জন্য আসেন। অনেকেই তার জিন সাধনা সম্পর্কে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে অশরীরী অদৃশ্য জিনের হাতে প্রহৃত হয়েছেন। পরে আবার বিশ্বাস স্থাপন করে তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি জানান, এমন এক তাবিজ আছে, যেটি কাঙ্ক্ষিত কোন সুন্দরি মেয়ের বাড়ির কোণে পুঁতে রাখলে আপনা আপনি মেয়েটি ছেলের কাছে চলে আসবে। কোন মেয়ে বাবা-মার অজান্তে কারও হাত ধরে চলে গেলে তাকে ফিরিয়ে আনাও কোন ব্যাপার নয়- এই জিন স্যারের জন্যে। তিনি এক নিঃশ্বাসে বিভিন্ন এলাকার মানুষদের নাম করে ফিরিস্তি দিতে থাকেন কারা কি কি উপকার পেয়েছেন। ভুক্তভোগীরা জানান, এসব কৌশলের মাধ্যমে খুব সহজেই ওই ব্যক্তি তার কাছে আসা লোকজনকে বশ করে নেন। আসনের বসার নামে ১ হাজার ২৫০ টাকা আদায় করার পর সমস্যার জটিলতা, গুরুত্ব ও গভীরতা অনুযায়ী ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি নিয়ে থাকেন। আর সব টাকাই তিনি জিনের খরচের কথা বলে নেন। কারও কাছে তাৎক্ষণিক পুরো টাকা না থাকলে বাকিতে বা কিছু অগ্রিম নিয়ে তদবির শুরুর কথা বলে নির্ধারিত তারিখে বাকি টাকা দিয়ে যেতে বলেন।
প্রতারিত এক ব্যক্তি জানান, তার স্ত্রী দুই সন্তানসহ রাগ করে বাবার বাড়ি চলে গিয়েছিল। স্ত্রী-সন্তানকে ফিরিয়ে আনার জন্য জিন স্যারের কাছে গিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ না হলেও ওই টাকা আর ফেরত পাননি তিনি। সমপ্রতি কিশোরগঞ্জ শহরের গৌরাঙ্গবাজারের এক ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়ার্কশপ কর্মচারী একটি কাজের জন্য জিন স্যারকে টাকা দিয়েছিলেন। কোন কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়ে না পাওয়ায় জিন স্যারকে তিনি লাঞ্ছিত করেন বলেও জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ বছর ধরে জিন ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার ফাঁদ পেতে অনেক নিরীহ মানুষের কাছ থেকে ওই ব্যক্তি মোটা অঙ্কের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন।
৫২ বছর বয়সী জিন স্যার মঞ্জুরুল হক জানান, তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া এলাকায়। চাকরির সূত্রে এর আগে নান্দাইলে অবস্থান করলেও কয়েক বছর ধরে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকায় এক ব্যবসায়ীর বাসায় থাকেন। তিনি বাসার মালিককে এককালীন ৪ লাখ টাকা দিয়েছেন। ফলে মাসিক ভাড়া দিতে হয় না। আর বাসা ছেড়ে দেয়ার সময় পুরো ৪ লাখ টাকাই তিনি ফেরত পাবেন।

কপিপেস্ট সূত্র: মানবজমিন
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১২ রাত ১০:১০
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×