সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত চারটার দিকে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে বাদ আসর সফল এই নগরপিতার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর তাকে চশমাহিলে দাফন করা হবে বলে পাবিারিকসূত্রে জানা গেছে। প্রায় ১৭ বছর চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন মহিউদ্দিন। রাজনীতি ও সমাজসেবায় অসামান্য অবদানের জন্য চট্টগ্রামবাসী তাকে চট্টল বীর হিসেবে জানে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর জীবনে রয়েছে নানা সংগ্রামী ঘটনা। নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। শ্রমিকনেতা থেকে শুরু করে জীবনের তাগিদে তাকে করতে হয়েছে অনেক ধরনের কাজও। সেই তিনি আবার চট্টগ্রামের লালদীঘিতে যখন হাজির হন তখন তার জ্বালাময়ী বক্তব্য শোনার জন্য হাজার হাজার মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই সান্নিধ্যে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন পাকিস্তান নৌবাহিনীর হাতে। সে সময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। সে ক্ষত সারাজীবন বয়ে বেড়িয়েছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তার নিরলস কাজ করার কথা এখনও অনেকেই স্মরণ করেন।
মেয়র থাকা অবস্থায় যখন যে দলই ক্ষমতায় থাকুক, চট্টগ্রামের স্বার্থে আন্দোলন প্রতিরোধ গড়ে তোলতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করেননি তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময়ে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে একাধিকবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ২০১০ সালে তিনি বিএনপির প্রার্থী এম. মঞ্জুরুল আলমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মেয়র নির্বাচনে পরাজয় বরণ করলেও জনগণ থেকে কখনো বিচ্যুত হননি। শরীরের নানা রোগ-ব্যাধিকে উপেক্ষা করে অসীম সাহস, তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত আর জনগণের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার মাধ্যমে তিনি সকল শ্রেণি পেশার মানুষের আপনজনে পরিণত হয়েছিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রামবাসী হারালো তাদের এক অসীম সাহসী বন্ধুকে, দেশ হারালো এক বীর মুক্তিযোদ্ধা- বীর সেনানীকে।
তথ্যসুত্র ও ছবি: অনলাইন নিউজ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৫৩