somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেফাজতের বাবুনগরীর ভাই মওলানা ইউসুফ মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে যৌনাচার করতে বাধ্য করল

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খাগড়াছড়িতে কওমি মাদ্রাসা প্রধান এক হেফাজত নেতার বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ছাত্রদের বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার মেয়র অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় গোটা খাগড়াছড়িতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এমন একটি ফৌজদারী অপরাধের পরও অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রশ্ন উঠেছে।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা ইউসুফ, হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর তালত ভাই এবং বাবুনগর মাদ্রাসার মোহতামিম হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর জামাতা। কুয়েতসহ বিভিন্ন বিদেশী সাহায্যপুষ্ট খাগড়াছড়ির এই কওমি মাদ্রাসাটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামের বাবুনগর মাদ্রাসার অধীনে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে।

ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিকরা খাগড়াছড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র গোলপাড়ায় অবস্থিত কওমি মাদ্রাসা ‘দারুল উলুম তালিমুল ইসলাম মাদ্রাসায়’ যান। সেখানে গিয়ে জানা যায়, এখানে প্রায় দেড়শ’ ছাত্র লেখাপড়া করে। আবাসিকভাবে থাকে ৭০ জন। অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রধান মোহতামিম মাওলানা ইউছুপ তখনও মাদ্রাসা শিক্ষকদের সাথে বৈঠক করছিলেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই মাদ্রাসার বিভিন্ন শিশু ছাত্রকে যৌন নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারি মাসে চাঁদা কালেকশনের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ থাকা অবস্থায় রাতের বেলায় মাদ্রাসা প্রধান জোরপূর্বক তার অফিস কক্ষে যেতে বাধ্য করেছে দু‘জন ছাত্রকে। মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়।

নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসার নূরানী শাখার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সাংবাদিকদের অভিযোগ করেছেন, ‘রাতে হোস্টেলে শুয়েছিলাম। অন্যান্য ছাত্রদের সাথে ঝগড়া করবো বলে আমাকে প্রায়ই তার (মোহতামিম) সাথে রাতে থাকার জন্য ডেকে নিয়ে যেত এবং রাতে জোরপূর্বক নির্যাতন চালাতো। এভাবে তিনদিন আমাকে কষ্ট দিয়েছে। বিষয়টি আব্দুল হান্নান হুজুরকে জানালেও তিনি বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলেন।’ এ ব্যাপারে শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হান্নান জানান, ‘ছাত্রটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি জানিয়েছিল। তবে মাদ্রাসার ভাবমূর্তির কথা বিবেচনা করে কাউকে জানাইনি।’

কয়েকদিন আগে নির্যাতনের শিকার হেফজখানার আরেক শিক্ষার্থী তার অভিভাবককে জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়রের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। গত সোমবার সন্ধ্যায় পৌর ভবনে বিচার কাজ অনুষ্ঠিত হয়।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম জানান, নির্যাতনের শিকার পরিবারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে বিচার বসি। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের পরামর্শক্রমে তাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছি।’

পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান জানান, ‘মূলত মেয়রের অনুরোধে অভিযুক্ত মাদ্রাসা প্রধানকে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বলেছি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’

জেলা প্রশাসক মাসুদ করিম বলেন, ‘আমি কওমি মাদ্রাসার অথরিটি কেউ নই। তাই তাকে সেখান থেকে অব্যহতি দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ডিসি অফিসের মসজিদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাওলানা ইউছুপ পবিত্র কোরআন শরীফ হাতে নিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি এলাকার কতিপয় ব্যক্তি ও পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুর রব রাজার ষড়যন্ত্র। জেলা প্রশাসক বা মেয়র তাকে অব্যাহতি দিতে পারেন না।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার শেখ মিজানুর রহমান জানান, ‘বিষয়টি আমি জানিনা। এ ধরনের শিশু নির্যাতনের ঘটনার পর কাউকে পদপদবি থেকে অব্যাহতি দেয়ার অধিকার কারও নেই। এটি ফৌজদারী অপরাধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল।’

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা ইউছুপ মূলত খাগড়াছড়িতে হেফাজত আন্দোলনের অন্যতম নেতা। একই সাথে তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন মসজিদের ইমাম। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার বেতুয়া গ্রামে।

জানা যায়, গত তত্তাবধায়ক সরকারের আমলে তৎকালীন পুলিশ সুপারের পৃষ্ঠপোষকতায় বেশ কয়েকটি পুনর্বাসিত পরিবারকে সরিয়ে মাদ্রাসাটি আরও সম্প্রসারিত করা হয়। এরই মধ্যে সোসাইট অব সোস্যাল রিফর্ম স্ট্যাট অব কুয়েতসহ কয়েকটি বিদেশী সংস্থা এই কওমি মাদ্রাসার জন্য লাখ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে। এসব অনুদানের একটা বিরাট অংশও মাদ্রাসা প্রধান আতœসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

http://www.suprobhat.com/?p=40964
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×