somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গ : আমার কলেজ ক্যাম্ব্রিয়ান

০২ রা মে, ২০১৩ বিকাল ৩:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এস.এস.সি পরীক্ষার পর বাবার ইচ্ছায় এবং ঝমকালো বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ভর্তি হলাম ক্যাম্ব্রিয়ানে। গুলশানের রাজকীয় ক্যাম্পাস আর বিলাশবহুল আবাসন ব্যবস্থা মুগ্ধ হয়ে খুশি মনে শুরু করলাম হোস্টেল জীবন কিন্তু চকচক করলেই যে সোনা হয় না তা আমি কিছুদিন বাদেই টের পেলাম।
স্কুল জীবনেও আমি হোস্টেলেই ছিলাম “ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ। মানসিক বিকাশের জন্য ঠিক যা যা প্রয়োজন সবই ছিল সেখানে। বিশাল খেলার মাঠ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই, বিশাল লাইব্রেরী(পাঠ্য ও অন্যান্য বই), সকল প্রকার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সুযোগ-সুবিধা, অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী এবং সর্বোপরি মনোরম পরিবেশ।
ক্যাম্ব্রিয়ানে এসে প্রথমেই প্রিজন সেলে থাকার অনুভূতি হলো। কোন খেলাধুলা নেই (খেলার মাঠই নেই), লাইব্রেরী নামের একটা ঘর আছে যেখানে সবজ্ঞান পাঠ্যপুস্তকে আবদ্ধ। গদবাধা পাঠ্যবই বাদে অন্য কোন বই ছিল না; এমনকি নিজের টাকায় কেনা গল্পের বই ছিল নিষিদ্ধ। এমনকি বিজ্ঞানবিষয়ক বই পর্যন্ত তারা বাজেয়াপ্ত করত। (আমার কাছে থেকে জাফর স্যারের “কোয়ান্টাম মেকানিকস” সিস করা হয়)
এবার আসি ক্লাসের প্রসঙ্গে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রেত কক্ষে শিকক্ষের নিছক বাক্যালাপ শুধুমাত্র বিরক্তিরই উদ্রেক করত, কারণ তারা (ক্যাম্ব্রিয়ানে) দুই বছরের কোর্স এক বছরে শেষ করত; তা আমরা বুঝতে পারি আর নাই পারি। এটা ছিল-
বকা উল্লা বইক্যা যাক,
শোনা উল্লা শুইন্যা যাক
এইভাবে দিন যাকরে যাক।
প্রথম বর্ষ (৬ মাস!!) পরীক্ষায় রসায়নে রসে ৪০ জন বাদে ৫৫০ জনের বাকী সবার ভরাডুবি ঘটে। এছাড়া ফিজিক্স এবং ইংরাজির (ক্যাম্ব্রিয়ানের ইংলিশের যা অবস্থা!) কথা না হয় নাই বললাম। সপ্তাহে বন্ধ মাত্র একদিন তাও শনিবারের পরীক্ষার পড়া মুখস্ত করতেই চলে যেত। প্রতি সপ্তাহেই পরীক্ষা হত এবং তা উত্তীর্ন হতে চলত রাতভর নোট মুখস্ত কর্মসূচী। নাকে-মুখে-কানে যে যেভাবে পারে নোট গুজে পরীক্ষার হলে ঢুকত আর কোনোমতে পাশ করে বেরিয়ে আসত। ইট ডাসেন্ট ম্যাটার- হট হ্যাভ ইউ লার্নট, ইউ হ্যাভ পাশড এন্ড দ্যাটস অল। পাঠ্যপুস্তক তো শোপিস উহা আছে এখনো নতুন। প্রশ্নপত্র ছিল গতানুগতিক তাই নোটের বাইরে প্রয়োজন হয়নি কোনকিছুর যার সুফল ভোগ করেছি ভর্তি পরীক্ষার সময়!!! শিক্ষদের স্বদিচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও একনায়ক স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের শিক্ষানীতির কারণে তারা রেসের ঘোড়ার মত ছুটতেন আর আমরা দর্শকের মত চেয়ে চেয়ে দেখতাম ছয় মাসে কিভাবে একবছর হয়। প্রতিবছর পাশের হার ১০০% রাখার জন্য ঘোড়ার গতি না কমিয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বলদের পাঠিয়ে দেয়া হয় মেট্রোপলিটন কলেজে। সত্যি চেয়ারম্যানের বুদ্ধি তারিফ করার মত; তিনি নিশ্চয়ই আর.এফ.এল চেয়ার ব্যবহার করেন।
এবার আসি ড্রেস কোড নিয়ে। স্কুল জীবন পার করলাম সাদা পোশাক গায় দিয়ে। কলেজ জীবন শুরু হলো কালো পোশাক গায়ে দিয়ে; কালো আমার প্রিয় রং তাই খুশিও হলাম বেশ। কর্পোরেট বেনিয়াদের মত স্যুট আর টাই পড়ে থাইগ্লাসে ঘেরা কংক্রিটের চারদেয়ালে শুরু হলো ক্লাস। ড্রেসের রং কালো কেন তার রহস্য উন্মোচন করলেন স্বয়ং চেয়ারম্যান লায়ন এম. কে. বাশার। “শোকের প্রতীক এই কালো পোশাক আমাদের ড্রেস হয়েছিল শতভাগ শিক্ষিতের দেশ না হওয়ার কারনে।” মাননীয় চেয়ারম্যানের ভিশন ছিল ২০২১; যখন কিনা ক্যাম্ব্রিয়ান তথা বি.এস.বি ফাউন্ডেশন শতভাগ শিক্ষা নিশ্চিত করবে। এবার কিছু প্রশ্নের অবতারণা করা যাক। বাংলাদেশের অশিক্ষার পিছনে মূল কারণ হচ্ছে দারিদ্রতা কিন্তু দেশের সবথেকে ব্যয়বহুল কলেজ কিভাবে অশিক্ষা দূর করবে তা একটা বিরাট প্রশ্ন। লোক দেখানো ৪/৫ জনকে শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে তার আঁড়ালে ইউ.এফ.পি (University Foundation Programe) নামক সার্টিফিকেট বিক্রি শিক্ষার বানিজ্যিকিকরণেরই নামান্তর । অন্যসকল বূর্জোয়াদের মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনেও ব্যবহার করা হয়েছে সুন্দরী ছাত্রীদের, বিজ্ঞাপনে আমার বান্ধবীদের ছবি ছিল কিন্তু আমিসহ কোন ছেলে বন্ধুর ছবি ছিল না। ক্যানরে বাবা! এটা কি লেডিস কলেজ? শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা আর কত?
এবার বলি আবাসিক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে । অভিজাত হোটেলের মত শয়ন কক্ষ থাকলেও নেই কোন স্বাধীনতা। কলেজে পড়ুয়া একটা ছেলেকেও সারাদিন ঘরে বন্দি রাখার হত, চিত্তবিনোদনের জন্য ছিল এক টেলিভিশন যেখানে ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থী জন্যে হিন্দি নাইন এক্সেম দেখা ছাড়া বিকল্প ছিল না। ইনডোর খেলাধুলার জন্যও ছিলনা কোন কমনরুম। ৯টা-২টা ক্লাসের পর ফ্রেশ হয়ে ধাতস্থ হতে না হতেই শুরু হতো প্রাইভেট টিউটরের বিকল্প SSP (আমরা বলতাম super sleeping program) ক্লাস। সুন্দর বিকালে আমাদের মাঠে না গিয়ে পাঠে বসতাম; এটা যে উপকারী দুধ এটা আমার গিলতেই হবে তা হজম হোক আর নাই হোক। সুন্দরী সহপাঠী থাকলেও কথা বলা ছিল নিষিদ্ধ । প্রেম-ভালোবাসা করলে টিসি; যা কিনা কলেজে ভর্তির সময় সংবিধানে ছিল। হেফাজত নিশ্চয়ই এমন বাংলাদেশই চায়। মুরগীর খোয়াড়ে বেড়ে উঠছিলাম আমরা আর আমাদের মস্তিষ্ক ক্রমাগত এসে ঠেকছিল হাটুতে।
সংস্কৃতিক কর্মকান্ড বলতে কিছুই ছিল না। কারণ ক্যাম্ব্রিয়ানের খেলার ধাচটা অনেকটা ম্যানসিটির মত। ম্যানিউ খেলোয়ার তৈরি করে আর সিটি কিনে। ঠিক সেইভাবেই মেরিডিয়ান খুদে গানরাজসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতা থেকে বাছাইকৃত শীর্ষস্থানীয়দের তারা বিনামুল্যে শিক্ষা সুযোগ দিয়ে বি.এস.বি ক্যাম্ব্রিয়ান সাংস্কৃতিক বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। সত্যি মির্জা ফকরুল বড়ই সেলুকাস এই ক্যাম্ব্রিয়ান!
এবার সর্বসাকুল্যে ক্যাম্ব্রিয়ানের কিছু মিথ্যাচারের কথা বলি। এরা প্রচারে বলে এখানে প্রাইভেট পড়তে হয় না কিন্তু SSP নামক ক্লাসটা আসলে প্রাইভেট কোচিং ছাড়া আর কিছুই না কারণ এছাড়া ৬ মাসে ১ বছরের কোর্স শেষ করা কোনোভাবেই সম্ভব না। মহান চেয়ারম্যান কর্মাসের ছাত্র ছিলেন, তিনি নাকি ১ বছরেই ইন্টার মিডিয়েটের কোর্স শেষ করেছিলেন; দুভাগ্যজনক হলেও সত্য তার সিলেবাসে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি বা ম্যাথ ছিল না। তার জন্য কবি বলে গেছেন-
কি যাতনা বিষে
বুঝিবে সে কিসে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
৩ লাখ টাকায় মহাজ্ঞানী বাশার (বাঁশ দেয় যে) HSC-র বৈতরণী পার করান আর মুখে বুলি ফুটান ২০২১ এর মধ্যে ঘরে ঘরে শিক্ষার হ্যারিক্যান পৌছে দেবেন। শফী সাহেব, আপনি না হয় ধর্মব্যবসা করেন কিন্তু এদেশে শিক্ষাব্যবসা করার জন্য অনেক বাশার আছে। অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামের কথা বলা হয় কিন্তু তা নিছক লোক দেখানো প্রচারণা মাত্র। কম্পিউটার কোর্স এবং ইংলিশ কোর্সের কথাও ভন্ডামী যদিও তা ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ফলাও করে ছাপা হয়। বিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ যে ক্যাম্ব্রিয়ান কিভাবে মোকাবেলা করবে সেটাও একটা চিন্তার বিষয় কারণ যারা সেকেলে ধারনায় বিশ্বস্ত হয়ে কলেজে পড়া এডাল্ট ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও মোবাইল ব্যবহার করতে দেয় না তারা ফ্রি ল্যাপটপ দিয়ে কোন ধরনের ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি চালায় সেটাও আমার বোধগম্য না। বাশার সাহেব পাক্কা ব্যবসায়ী, সকল ক্ষেত্রেই তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। বিভিন্ন মিডিয়ার সাথে তাহার ভালো সখ্য আছে; মাহফুজুর রহমান তার জিগিরি দোস্ত। বি.এস.বি-ক্যামব্রিয়ান নামে এটিএন চ্যানেলে শিক্ষা পোগ্রামসহ ডিবেটিং এর অনুষ্ঠান দেখা যায় কিন্তু সেখানে ক্যাম্ব্রিয়ানের কোনও স্টুডেন্টকে দেখা যায় না কারণ ঐ অনুষ্ঠানগুলো নিছক বিজ্ঞাপন ছাড়া আর কিছুই না আর ঐখানে (ডিবেটিং) পারফর্ম করার মত কোনো যোগ্যতাও ক্যামব্রিয়ানের স্টুডেন্টদের নাই যদিও শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ৪-৫ জনের টিম বানানো হয় এবং শুধুমাত্র তারাই বকর-বকর করার সুযোগ পায়; বাকীরা থাকে অন্ধকারে।
এছাড়া যোগ্য শিক্ষক রইস উদ্দিন স্যার চেয়ারম্যানের সুনজর না পেলেও চাটুকার লিংকন খুব দ্রুত সেখানে ভাইস প্রিন্সিপাল বনে যান। এমন শিক্ষক দিয়েই পরিচালিত হয় শিক্ষা বাণিজ্যের অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। চাটুকারিতার জন্য তারাই আবার চেয়ারম্যানের কাছে প্রিয়। অদক্ষ শিক্ষক দিয়ে স্কুলটি পরিচালনার কারণে সেখানকার শিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্নমানের।
শিবিরের সাবেক নেতা লায়ন এম. কে. বাশার এখনো তার পলিটিক্যাল ধারা অব্যাহত রেখেছে। কিছুদিন আগে গণজাগরণমঞ্চের কর্মসূচীতেও ক্যামব্রিয়ানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে সে বাধা দিয়েছে, এটা নিয়ে প্রথম আলোতে এটা নিয়ে একটা প্রতিবেদনও বের হয়েছিল। ধনীর দুলালী বিয়ে করে সাহেব বনে যাওয়া এই শিবির নেতা সরকার বদলের সাথে সাথে হাসিনা আর বঙ্গবন্ধুর ছবি কলেজের দেয়ালে ছেটে দিয়েছে। আহ! এমন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক অনেকদিন দেখেনি বাংলাদেশ। সরকার কেন যে- এখনো এই রক্তচোষা শিক্ষাব্যবসা বন্ধ করছে না সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। ভন্ডামীর শিক্ষানীতি বন্ধের অপেক্ষায় রইলাম।



বাংলা নিউজ-এর খবরটি দেখুন এখানেঃ

ঢাকা: তৃতীয় শ্রেণিতে পাস শিক্ষক পড়ান ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকতায় তাদের পূর্ব কোন অভিজ্ঞতা ও নিবন্ধনও নেই। ইংরেজীতে দক্ষতাও নেই। শিক্ষার্থীদের তারা পড়াতেও পারেন না। এমন শিক্ষক দিয়েই পরিচালিত হয় শিক্ষা বাণিজ্যের অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। চাটুকারিতার জন্য তারাই আবার চেয়ারম্যানের কাছে প্রিয়। অদক্ষ শিক্ষক দিয়ে স্কুলটি পরিচালনার কারণে সেখানকার শিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্নমানের।

ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের দুর্নীতি-অনিয়ম, শিক্ষার মান এবং শিক্ষকদের অদক্ষতা এবং পরিচালনায় নিয়ম-নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির এক রিপোর্টে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে উল্লিখিত অভিযোগসমুহ প্রমাণিত হযেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষকেরই শিক্ষা জীবনে তৃতীয় শ্রেণি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানও তার লিখিত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটিতে তৃতীয় শ্রেণি পাস করা শিক্ষক রয়েছেন বলে তদন্ত কমিটির কাছে স্বীকার করেছেন। একজন শিক্ষক মাস্টার্স পাস বলে দাবি করলেও তদন্তে তা প্রমাণিত হয় নি। তিনি এ সংক্রান্ত কোন তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেন নি। অন্যদিকে ১২৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৫৮ জন শিক্ষকের শিক্ষক নিবন্ধন নেই। ৩ জন শিক্ষক নিয়োগের পর নিবন্ধন লাভ করেছেন।

যাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে, তাদের সনদপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলা হলেও কেউ তা দেন নি। ইংরেজী শিক্ষকের লেখা প্রকাশিত বই পরীক্ষা করে অনেক ভুল লক্ষ করা গেছে।

৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি ২০০৯ সালের ২৬ জানুয়ারি শিক্ষা সচিবের কাছে রিপোর্ট দাখিল করে। রিপোর্টে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। তবে রিপোর্টে উল্লিখিত তৃতীয় শ্রেণিতে পাস করা শিক্ষকরা এখনো সেখানে কর্মরত আছেন কী না, তা জানা যায় নি।


ক্যামব্রিয়ান কলেজের মালিক মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে আরও তিনটি অবৈধ শাখার অনুমোদনের চেষ্টা চালান। গত ১১ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। ওই বৈঠকেই ক্যামব্রিয়ানের তিনটি শাখার অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিলো। বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী সরকারের এক যুগ্ম-সচিব, এক উপ-সচিব, তথ্য কর্মকর্তা এবং মন্ত্রীর এক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ক্যামব্রিয়ানের অবৈধ শাখা সম্প্রসারণে সহায়তা করার চেষ্টা করছিলো।

ক্যামব্রিয়ানকে অবৈধভাবে শাখা অনুমোদন দেওয়ার জন্যই নীতিমালা পরিবর্তন করতে ওই বৈঠকটি বসার কথা ছিলো।

বিদেশের অবৈধ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ভিসায় মানবপাচার করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের মানবেতর জীবন-যাপন, নামহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শাখা খুলে সনদ বিক্রির অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ৫৬টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রতারণার হাত থেকে জনগণকে বাঁচাতে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় কালো তালিকাভুক্ত ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের নামও গণবিজ্ঞপ্তি আকারে ছাপা হয়েছিল। জনগণকে সতর্ক করা হয়েছিল যাতে কেউ এসব প্রতিষ্ঠানের খপ্পরে না পড়ে। এখনও বহাল আছে ওই কালো তালিকা। এ ৫৬টির দু’টি হলো ক্যামব্রিয়ান কলেজ ও বিএসবি গ্লোবাল ফাউন্ডেশন। দুটোরই মালিক সাবেক শিবির নেতা লায়ন এমকে বাশার।

এর আগে ২০০০ ও ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক ২৫টি কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও ক্যামব্রিয়ান ও বিএসবির নাম ছিল। ১০ লাখ টাকা করে প্রতিটি জিপিএ ফাইভ কিনে রাতারাতি নাম কামানোর অপচেষ্টা করে ক্যামব্রিয়ান। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্যামব্রিয়ানের সার্বিক দুর্নীতির তদন্ত করে। সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ হয় ক্যামব্রিয়ান শিক্ষার নামে যা কিছুই করছে সবই ভুয়া, সাজানো, চোখ ধাধাঁনো খেলা।

কিন্তু, তারপরও এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোন সরকারই কঠোর কোন ব্যবস্থা নেয় নি। উচ্চ পর্যায়ে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক বারবারই পার পেয়ে যান।
original post Click This Link

Click This Link
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×