somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুমায়ুন আজাদের পুত্রকন্যার কাছে হুমায়ূন আহমেদের ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সচলায়তন ব্লগে হিমু নামের এক ব্লগারের একটা লেখা দেখলাম আজকে। পোষ্টের শিরোনাম "হুমায়ূন আহমেদ কি হুমায়ুন আজাদের পুত্রকন্যার কাছে ক্ষমা চাইবেন ?" লেখাটা পড়ে একটা জবাব দেওয়ার তাড়না অনুভব করলাম। নানা কারনে আমি হুমায়ুন স্যারের কাছে অনেক ঋণী, কতবার যে মন খারাপ অবস্থার মধ্যে উনার বই পড়ে মন হালকা হইছে, কলিজাটা প্রশস্ত হইছে সেইটার কোন হিসাব দিতে পারব না। কাজেই স্যারের ঋণ খানিকটা পরিশোধ করার একটা চেষ্টা হিসাবে এই লেখাটা লিখতেছি।

সচল-ব্লগার হিমুর লেখাটা পড়ে যেইটা বুঝলাম সেইটা হইল ২০০৮ সালে হুমায়ুন আহমেদ দৈনিক সমকালকে একটা সাক্ষাতকার দেন, সেইখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হইছিল "বাংলাদেশের লেখকরা স্বাধীন কিনা" তিনি হ্যাঁ বাচক উত্তর দেওয়ায় পুনরায় প্রশ্ন করা হইছিল "তাহলে ড. হুমায়ুন আজাদকে মরতে হল কেন?" এই কথার জবাবে হুমায়ুন আহমেদ বলছিলেন "কারন যে বইটা তিনি লিখেছিলেন, তা এতই কুৎসিত যে, যে কেউ বইটা পড়লে আহত হবে। তার জন্য মৌলবাদী হতে হয় না। " :|

সচলায়তন ব্লগার হিমু একজন উচ্চ-শ্রেনীর চিন্তাশীল সমালোচক। উনার মতে ক্যানসার চিকিৎসারত হুমায়ুন স্যার মৃত্যু ভয়ে আক্রান্ত হওয়ার কথা, ধীরে ধীরে এই ভয়টা নাকি বাড়তে থাকবে, ব্লগার হিমু নাকি একধরনের অসুস্থ কৌতুহল নিয়ে অপেক্ষা করতেছেন, যে কবে এই মৃত্যুভয়ের কারনে হুমায়ুন স্যারের আচরন পরিবর্তন হইতে আরম্ভ করবে এবং উনার লেখালেখিতে সেইটার প্রভাব পড়বে (হুঃ আজাদের চ্যালারা এত সাইকো হয় এই প্রথম জানলাম)। কিন্তু উনি খুবই হতাশ যে হুমায়ুন স্যারের লেখালেখিতে কোন রকমের মৃত্যুভয়ের ছাপ এখনও পড়তেছে না (শকুনের দোয়ায় গরু মরলে তো কামই আছিল)। এইটার কারণ হিসাবে উনি অবশ্য হুমায়ুন স্যারের কমার্শিয়াল মনোভাবকে দায়ী করছেন (এইটা হুমায়ুন বিদ্বেষী সুশীলদের অনেক পুরানো একটা ভাংগা রেকর্ড, এখনও মাঝে মাঝে বাজে আরকি)।

সচলায়তন ব্লগার হিমু সম্ভবত একজন প্রবাসী। দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে তিনি নাকি ওরহান পারমুকের লেখা "দ্য ব্ল্যাক বুক" নামের একখানা উপন্যাস পড়েছিলেন। সেই উপন্যাসে এক্সিডেন্ট করে খাদে পড়া গাড়ির মধ্যে পাওয়া দুইটা নর কংকালের মত সুক্ষ বিষয়ও নাকি কাহিনীকার উল্লেখ করতে ভুলেন নাই। হুমায়ুন আহমেদের লেখা জার্নালে "সচল-ব্লগার হিমু" সেইরকম সুক্ষ বিষয় আশা করছিলেন। কিন্তু হুমায়ুন স্যার তাকে হতাশ করছেন। পানির নিচে থাকা দুইটা নরকংকালের কাহিনীর মত সুক্ষ বিষয় নিয়ে লিখে হুমায়ুন স্যার নাকি তাঁর পাঠকদের একটা বৃহৎ অংশের সমর্থন হারাতে চান নাই, যদিও সচল ব্লগার হিমু কথামত হুমায়ুন স্যারের উপরোক্ত টাইপের কাজ করা অতি অবশ্যই উচিৎ ছিল [ইহা সচল-ব্লগার হিমুর মামা বাড়ির আবদার আরকি ;)]

হুমায়ুন স্যার সম্পর্কে উনার অভিযোগের শেষ নাই। হুমায়ুন স্যার নাকি আত্মীয় ভক্ত পরিবেষ্টিত একজন ক্লান্ত, নিঃসংগ মানুষ। এই গন্ডি পেরিয়ে বের হয়ে আর কিছু লেখার শক্তি নাকি তার আর নাই। [এই খানে সচল-ব্লগার হিমুর kind information এর জন্য আমি একটা কথা বলতে চাই, আমাদের হুমায়ুন স্যার "পুতু পুতু সুশীল লেখকদের" মত ঘরের কোনায় বসে থেকে কলম দিয়ে রাজা বাদশাহ মারা টাইপ কাপুরুষ খেলা খেলেন না, পারলে নিজের গন্ডির বাইরে গিয়ে সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ৫০ বয়সে নিজের প্রেয়সীকে বিয়ে করার মত কাম কইরা দেখান, তখন বুঝা যাইব গন্ডির বাইরে যাওয়ার মত কলিজা আছে কোন বাপের ব্যাটার X(]

এই সমস্ত উচ্চ-শ্রেনীর সুশীলরে কি আর কমু। আমি অর্ধ-শিক্ষিত মুর্খ লোক, তাই হুঃ আজাদদের ভাষার কারসাজি দেইখা মুগ্ধ হই না। কারন কঠিন কঠিন ভাষার মার-প্যাচ আমার মগজে ঢুকে না। যেইটা মগজে ঢুকে সেইটা হইল "কঠিন কঠিন ভাষার মার-প্যাচের অন্তরালে লেখকের মনের মধ্যে কি আছে"।

হুমায়ুন স্যারের লেখায় ভাষার মার-প্যাচ থাকে না। সহজ-সরল ভাষায় মানুষের মনের কথা উনি লেখেন। এইজন্য নাকি উনি একজন বাজারি লেখক। উনার বই এই দেশের অবুঝ তরুন-তরুণীরা গোগ্রাসে গিলে। অন্যদিকে হুমায়ুন আজাদদের জটিল এবং কুটিল টাইপের লেখার অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যে কিছু অসুস্থ মানসিকতার সুশীল বিকৃত আনন্দ পাইলেও অবুঝ তরুন-তরুণীদের কাছে সেইসব লেখার (পর্নো হিসাবে পড়া ছাড়া) কোন বেইল নাই।
৩৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×