somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অগল্প

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অগল্প -১ "রাজার রাজা"

দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে আমি যখন ক্লান্ত ,ভিক্ষা থেকে পাওয়া অন্ন যখন আমার ক্ষুদা কে সামাল দিতে পারে না যখন নিঃস্ব রিক্ত অবস্থায় ভিক্ষুক আমি দাড়িয়ে আছি রাজপথের ধরে ............ তখনি দেখি স্বর্ণ নির্মিত এক রথ আমার দিকে আসছে ।ধন্যবাদ ভগবান !আজ আমি খেতে পাব !! অনেক দিন পর খেতে পাব ।অবশেষে যেন আজন্ম প্রতিক্ষার এক সমাপ্তি ...রথ থেকে নেমে আমার কাছে কাছে আসছেন "রাজার রাজা " ।দীপ্তিময় তার চোখ ..লাবন্য ময় তার চেহারা ।আমার কাছে এসে বললেন "দুটো ভিক্ষা দেবে বাবা "।

একি রসিকতা !!ভিক্ষুকের কাছে ভিক্ষা পার্থনা ।ক্রোধে লজ্জায় অপমানে আমি আমার ভিক্ষা পাত্র থেকে একটি মাত্র চাল সেই "রাজার রাজা" কে দিলাম ।

ক্লান্ত পায় গৃহে ফিরে সমস্ত ভিক্ষান্ন এক জায়গায় জড়ো করে দেখি আরে ! সমস্ত চালের মাঝে একটি মাত্র চাল স্বর্ণ নির্মিত ।

হায় !সময় ছিল, সুযোগও ছিল ..কেন আমি আমার সর্বস্ব বিলিয়ে দিলাম না সেই রাজার রাজার কাছে ।

(রবি ঠাকুরের গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের একটি কবিতা অবলম্বনে )


অগল্প -২ "পালক"

ছেলেবেলায় আমার কাছে একটা পালক ছিল ।ময়ুরের পালক ।ছেলেবেলার দিনগুলোতে ওই পালকের দিকে তাকিয়ে কত কল্পনা করতাম ।কত আবিস্কার করতাম ,কত দুষ্ট রাজাকে বধ করতাম ।ঘাড়ে গামছা গিট্টু লাগিয়ে নিজেকে রাজা ভাবতাম ।তারপর একসময় পালকটা
হারিয়ে গেল ।কিছুতেই খুঁজে পেলাম না ।

তখন কলকাতায় কলেজের হোস্টেলে থাকি ।একদিন রাতেরবেলা ক্যান্টিন বন্ধ থাকবার জন্য ,হাতে তৈরি রুটি কিনতে যাব বলে ঠিক করেছি ।কিন্তু আপদ !একটা জমাও পড়বার মতো নয় ।সবকটা অনেকদিন কাচা হয় না ,যে একটা ঠিক ঠাক আছে কিন্তু সেটা কলেজে যাবার জন্য । এ সব ক্ষেত্রে সাধারনত রুম মেটের জামাই কাজে লাগে ।কিন্তু সেদিন কি হলো ..সুটকেস খুলে পুরনো ছোট হয়ে যাওয়া একটা জামা পরেই বের হলাম ।

রাস্তার ধারে গুমটি একটা দোকানে রুটি কিনতে গেলাম ।দেখি একটা ১২ -১৩ বছরের বাচ্চা মেয়ে রুটি বানাচ্ছে ।পাশে মেয়েটির ভাই (দেখে তাই মনে হয়েছিল ) হিন্দিতে কি সব যেন লিখছিল ।মেয়েটির পাশে বই খোলা ছিল সে ,মাঝে মাঝেই তাতে সে উকি দিচ্ছিল ।

আমি :রুটি কত করে ?
মেয়েটি :দো রুপিয়া ।
আমি :পড়াশুনা কর ?
মেয়েটি :হা ।
আমি :তোমার বাবা মা কোথায় ?
মেয়েটি :বিহার ।
আমি :আসে না ?
মেয়েটি :মহিনে মে এক দো বার ।

রুটি তৈরি শেষ হয়ে গিয়েছে ।এবার দাম চুকানোর পালা ।পকেটে হাত ঢুকতেই টাকার সাথে অন্য কিছুও ঠেকলো ।পকেট থেকে হাত বের করে দেখি আমার সেই ছেলেবেলার পালকটা ।আমি টাকাটা আর ময়ুরের পালকটা একই সাথে মেয়েটার হাতে তুলে দিলাম ।মেয়েটি খুশি হয়ে পালকটি তার রুক্ষ চুলের ঝুটি তে গুজে দিল ।উনুনের গনগনে হলুদাভ আচে মেয়েটিকে আমার শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে বিন্দুমাত্র কম সুন্দর লাগে নি ।
৭টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×