নিজের 'মাতা' সম্পর্কে একটু চিন্তা করে দেখুন। তিনি কত কষ্ট সহ্য করেন। শীতের মৌসুমে, প্রচন্ড শীতের মধ্যে লেপ জড়িয়ে শুয়ে আছেন। পাশে আছে আদরের বাচ্চা। হঠাৎ বাচ্চা প্রসাব করে দিল। তখন নফসের চাহিদা তো এটা হয়ে থাকে যে, এই প্রচন্ড শীতের ভিতর গরম বিছানা ছেড়ে কোথাও লড়তে পারবো না । লেপ ছাড়া বহু কষ্ট, কিন্তু এতসত্বেও মা চিন্তা করেন যে, আমার বাচ্চা ভিজে বিছানায় পড়ে আছে। তার শরীরে ভিজা কাপড় লেগে আছে। হয়ত তার ঠান্ডা লাগবে। অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই সেই বেচারী নিজের নফসের সকল চাহিদা পরিহার করে, এত কড়া শীতের ভিতরে ও পানিতে গিয়ে নিজের কাপড় ধুয়ে নেয়। বাচ্চার কাপড় পাল্টিয়ে দেয়।
এটা কোন সাধারণ কষ্ট নয়। তবে প্রশ্ন হলো মা এত কষ্ট করতে যান কেন? কারন হল যে, মা এ বাচ্চার সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। তাই প্রচন্ড শীত ও তার কাছে হার মানতে বাধ্য।
*************************************************************
মায়ের মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বানীঃ
একদা একটি লোক রসুল (সাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল সে যেন কোনকিছু বোঝার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু পারছিলেন না। তাই তিনি রসুল (সাঃ) কে
প্রশ্ন করলেন, "ও আল্লাহর রসুল (সাঃ), আমার অনেক আত্নীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধব আছে যাদের কে আমি ভালবাসি, আদর ও যত্ন করতে ইচ্ছা পোষন করি। কিন্তু কিছু কিছু সময় আমি বুঝতে পারি না কার অধিকার সবচেয়ে বেশী? কাকে সবার আগে প্রাধন্য দেওয়া উচিত?" আল্লাহর রসুল (সাঃ) সাথে সাথেই তার প্রশ্নের জবাব দিলেন, "তোমার মা'র অধিকার সবচেয়ে প্রথম এবং সবার আগে"।
লোকটি রসুল (সাঃ) এর উপদেশ পেয়ে খুব খুশি হলেন। কিন্তু তার আরও অনান্য আত্নীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধব ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই তাই রসুল (সাঃ) কে আবার প্রশ্ন করলেন, "ও আল্লাহর রসুল (সাঃ), এরপর কার অধিকার সবচেয়ে বেশী?" রসুল (সাঃ) উওর দিলেন "তোমার মা'র "।
দ্বিতীয় বার একই উওর পেয়ে লোকটি একটু অবাক হলেন। ভাবলেন, রসুল (সাঃ) একই উওর পূনরায় বললেন; হয়ত তার পরিষ্কার ভাবে প্রশ্ন করা হ্য়নি। তাই লোকটি আরও পরিষ্কার ভাবে প্রশ্ন করলেন, "ও আল্লাহর রসুল (সাঃ), আমার মায়ের পর কার অধিকার সবচেয়ে বেশী?" রসুল (সাঃ) আবার ও উওর দিলেন "তোমার মা'র "। তোমার মা'র, তোমার মা'র, তোমার মা'র । এইভাবে আল্লাহর রসুল (সাঃ) যখন তিনবার বললেন লোকটি তখন আস্তে আস্তে বুঝতে পারল কেন তিনি এইভাবে উওর দিলেন। লোকটি বুঝল তার মায়ের অধিকার খুবই বেশী।
লোকটি বুঝতে পারল তার মায়ের অধিকার এতই বেশী যে তার প্রশ্নের জবাবে রসুল (সাঃ) বার বার একই উওর দিয়েছেন। লোকটি এবারও উওসুক হয়ে একটু অন্যভাবে প্রশ্ন করলেন, "তাদের অবস্হান কোথায় আমার অনান্য যারা আছে? মায়ের পরে অধিকার সবচেয়ে বেশী কার? মায়ের পরে আর কি কেউ আছে?" রসুল (সাঃ) উওর দিলেন "মা'র পরে তোমার বাবা'র।" "এরপর?" লোকটি প্রশ্ন করল। রসুল (সাঃ) উওর দিলেন, "এরপর তোমার নিকটতম আত্নীয়স্বজনের"। (সহীহ আল-বুখারী- ৮:২)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




