somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা নববর্ষেরও যদি জাত চলে যায়, তবে হবে কি উপায়...!!!!!??? 8-| :|| B:-)

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ ভোর ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংস্কৃতে একটি কথা আছে “যসপিনদেশে যদাচার” মানে হলো যেমন দেশ তার তেমন আচার মানে রীতিনীতি। কিন্তু বিশ্বায়নের যুগে আজ সেই কথাটি ধীরে ধীরে যেন হারিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর একে অঞ্চলের আচার অনুষ্ঠান ও উৎসব খুব দ্রুতই আরেক অঞ্চেলের উৎসবের সাথে মিশে যাচ্ছে, তাই বলে তারা নিজেদের আদি আচার অনুষ্ঠান বা উৎসব ত্যাগ করছে না। কিন্তু আমরা বাঙালী জাতি সকল ক্ষেত্রেই বড়ই অদ্ভুত ব্যাতিক্রম অন্যদের চেয়ে।আমাদের এই অঞ্চল মানে দেশ প্রাচীনকাল থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রধাণ এলাকা হিসোবে পরিচিত ছিল। আর তাই আমাদের বাংলা ভাষাও কিন্তু মুলত সংস্কৃত ও অন্যান্য ভাষার মিশ্রণে উৎপত্তি বা সৃষ্টি অথবা তৈরি। তাই আমাদের অনেক আচার অনুষ্ঠানে কিছুটা সনাতনী রীতিনীতি আছেই, আর এটাই আমাদের দেশের ঐতিহ্য বা আমাদের বাঙালীর পরিচয়। আমাদের এদেশে ইসলাম এসেছে বিভিন্ন পীর, দরবেশ, আউলিয়ার মাধ্যমে।কালক্রমে এটা সবার মাঝে ছড়িয়ে গেছে। এবং
বর্তমানে বাংলাদেশ প্রায় ৯০% ভাগ মুসলমানের দেশ। আর এমনই মুসলমান যাদের অধিকাংশই তাদের ধর্মগ্রন্থ মানে পবিত্র কোরআন শরীফ পড়তে জানে না, আর জানলেও তার অর্থ বা মানে বোঝেনা, আর ধর্মীয় বিধিবিধান এমন ভাবে মানে যেটুকুতে তার কোন সমস্যা হয় না... মানে এই যেমন এই রোজার সময় শুধু রোজাই রাখে কিন্তু নামাজে অনিহা। কিন্তু রোজা রেখে যদি নামাজ এবং স্বাভাবিক সকল কাজ বাদ দিয়ে শুধু চুপ করে বসে থাকে তাহলে তো কোন লাভই নেই। যদিও সকল ধর্মেই মিথ্যা বলা মহাপাপ, এবং কোন ধর্মই প্রতারণা, সমাজে বিশৃঙ্খলা স্বীকৃত নয়। আামাদের দেশের বেশীর ভাগ মানুষই নামের মুসলমান, কামের নয়। “ইসলাম হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম, আর মুসলমানরা হলো তার সর্বনিকৃষ্ট অনুসারী” বিখ্যাত আইরিস লেখক জর্জ বানার্ড শ’ এর এই উক্তি যেন আমাদের দেশে একটু বেশীই প্রযোজ্য, কারণ সবাই না হলেও অনেকেই ২নম্বরই ব্যবসা করে রাতারাতি ধনী হবার চিন্তা করে, কিন্তু মাথায় টুপি মুখে
চাপ দাড়ি ও সুন্নতী লেবাস তাদের থাকেই। সুদ হারাম জেনেও, সুদ দেয় ও নেয়। অপর ভাই (নিজের, প্রতিবেশী, বন্ধু, পরিচিত, অপরিচিত) কে ঠকিয়ে বা প্রতারণা করে নিজেকে বুদ্ধিমান মনে করে গর্বিত হয়। নামাজের জন্য মসজিদের গিয়ে সামনের কাতার ফাঁকা থাকলেও ফ্যান বা এসির কাছে ছাড়া দাড়ায় না..। একবার আমি একটা টিশার্ট পড়ে নামাজে গিয়েছি, যেটা একটা সামাজিক প্রতিষ্ঠান “প্রদীপ প্রাঙ্গণ” সংস্থার নাম লেখা ছিল। একজন মুরব্বী গোছের লোক মুখে চাপ দাড়ি, পাঞ্জাবী-পায়জামা পরিহিত, আমার কাছে এসে চুপিচুপি বিদ্রুপের সুরে লেখাটাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলছে, এখানে কি লেখা!!!.. আমি প্রথমে একটু আশ্চর্য হলেও, মুহুর্তের মধ্যেই তাঁর মনোভাবনা বুঝতে পেরে স্বাভাবিক ভাবে বললাম কেন,.. প্রদীপ লেখা তাই কি নামাজ হবে না??? লোকটি ভেবেছিল, আমি হায় হায় করে উঠে তার কাছে ক্ষমা চাইবো বা নামাজ শুদ্ধ করার প্রতিকার বা উপায় চাইবো, কিন্তু তা, না করে, উল্টো বললাম, এটা তো বাংলা শব্দ, মানে বাতি বা কুপি, কি সমস্যা এতে?? তখন সে হতাশ ও কিছুটা বিব্রত হয়ে চলে গেল। এই হলো বর্তমানে মুসলমানের নমুনা...। ইসলামে স্পষ্ট বলা আছে, কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করাই হলো সবচেয়ে বড় জিহাদ, আর সকল প্রকার অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার নির্দেশ আছে। কিন্তু আমরা করছি ঠিক তার উল্টোটা...। নিজের ও পরিবারের ক্ষতির কথা ভেবে সকল অন্যায় অবিচারের সময় চুপ থাকি আর যখন সেই অন্যায় নিজের সাথে হয় তখন বুঝি বিষয়টা কি...। মানুষের আদি প্রবৃত্তিই হলো স্বতন্ত্র হতে চাওয়া অথবা বিখ্যাত হতে চাওয়া। আর অনেক মানুষই সহজে তা হতে চায়.. তাই তো সত্যিকারের বড় বড় অন্যায়, বা অধর্মের সময় নিরব নিষ্ক্রিয় থেকে, নারীদের শাড়ি, টিপ, পরা না পরা’র মত ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে আন্দোলন বা মানব বন্ধন করে হুলুস্থুল বাঁধিয়ে ফেলি। এবার সেরকমই দেখছি “মঙ্গল শোভাযাত্রা” নিয়ে। আরে ভাই, মঙ্গল, অমঙ্গল, বুধ, বা সোম যা ইচ্ছা সেই শোভাযাত্রা হোক,যার ইচ্ছা সে অংশ নেবে , আর যার ইচ্ছা নয় সে যাবে না.. সহজ সোজা বিষয়। না , এখন হঠাৎ করে শুনছি এতে বলে ধর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে!!! আচ্ছা, আমাদের দেশে তো কোন নবী বা রাসুল ধর্ম প্রচারে আসেন নাই, আর কোন নবী বা রাসুলের মাজারও নাই এদেশে। আর যে শোভা যাত্রা হয়, সেটাও খুবই সীমিত এলাকায়, ও সীমিত সময় মানে ৩০-৪৫ মিনিট বড়োজোর...। আর তাতেই যদি ধর্ম নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে, আমাদের, মানে মুসলমানদের অতিপ্রিয় ও অতিপবিত্র তীর্থ ভূমি সৌদি আরব সেখানে আমাদের কেবলা, কাবা শরীফ এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় এবং সর্বশ্রেষ্ট্ মানব শেষ নবী হযরত মুঃ(সাঃ) এর রওজা মুবারক আছে সেখানে যে, ইউরোপ,আমেরিকার জনপ্রিয় একটি আচার “হ্যালোইন” খুব জাঁকজমকের সাথে গত বছর মানে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর পালন বা উৎযাপন করা হলো, তার কি হবে!!! তাহলে এখন কি পৃথিবী থেকে ইসলাম নামক ধর্ম চিরতরে বিলিন বা হারিয়ে গেছে?? এই গুরুতর বিষয় নিয়ে না সৌদি আরবে কোন মানব বন্ধন হলো, না হলো, আমাদের ধর্মপ্রাণ বাংলাদেশে কোন প্রতিবাদ, কিংবা বিক্ষোভ!!! আসলে লালন ফকির বা লালন শাহ্ শতাধীক বর্ষ আগে যা বলেছেন সেটাই প্রকৃত সত্য, একদম আসল, বা খাঁটি কথা...। আর তা হলো “সত্যকাজে কেউ নয় রাজি, সবই দেখি তানা নানা, জাত গেল, জাত গেল বলে, একি আজব কারখানা...” অথবা “গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায়, তাতে ধর্মের কি আসে যায়?” আসলে আমরা পৈতৃক সুত্রে সম্পত্তি পাবার মতো ধর্মটাও উত্তরাধীকার সুত্রে পেয়েছি, তাই, এত সহজে এমন দামীবস্তু পাওয়াতে এর মুল্য বুঝতে অক্ষম, এবং এর আসল তাৎপর্যও অনুধাবনের কোন প্রচেষ্টা নেই আমাদের। আর কথায় আছে, নানা মুনি’র নানা মত, আর এই জন্য জ্ঞানের মাত্রার ভিন্নতার কারণে, একেক আলেমের হাদিস, কোরআনের ব্যাক্ষা বিশ্লেষণ একেক প্রকার। তাই যতদিন না, নিজেরা ধর্ম সন্মন্ধে আগ্রহী ও সচেতন হবো, আর এটা অনুধাবণ না করবো যে, সব তুচ্ছ বিষয়ে ধর্মকে টেনে আনা ঠিক না। ততদিন এইসব উটকো ঝামেলা চলতেই থাকবে। মহাণ স্রষ্টা আমাদের সকলকে এই বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা দিন।
আর নতুন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ সবার জীবনে সুখ ও সাফল্য নিয়ে আসুক, এই কামনায়.. সবাইকে জানাই “শুভ নববর্ষ ১৪৩০”। !:#P

সৌদি আরবে হ্যালোইন
সৌদি আরবের হ্যালোইন

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৭:০৭
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×