কুদরত ভাইয়া ছিলেন আমাদের লজিং মাস্টার। সন্ধ্যা হলে আমাদেরকে তার কাছে পড়তে বসতে হত। আমরা ভাইয়া ডাকতাম, মুরুব্বিরা ডাকতো কুদরত আলী আর পাড়ার বখাটে পোলাপান জ্বালাতন করত কুদরইত্যা বলে। কুদরত ভাইয়া মেট্রিকে সেকেন্ড ডিভিশন পান, কিন্তু আইএ পাস করেন থার্ড ডিভিশনে, বিএ টাও সেকেন্ড চান্সে পাস করে যান। এরপরে আর পড়াশুনা করেন নি, গ্রামের হাইস্কুলে চাকরি নেন।
দেশদ্রোহী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী গুলাম আযম নামের পূর্বে প্রফেসর লাগায়। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে না, কোন কলেজে মাস্টারি করতো, পিএইচডি না করলেও সে নাকি ডক্টরগো বাপচাচারেও দেয়ার মত জ্ঞান রাখে। অতএব তার নামের আগে প্রফেসর যোগ করলে কুনু প্রবলেম নাই।
মগবাজারের অর্থায়নপুষ্ট ব্লগার দ্বীপবালক এ বিষয়ে ফতোয়া দেন: "প্রকৃত ব্যাপার হল কলেজে/বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকে সংস্কৃত ও বাংলাসহ অন্যান্য সংস্কৃতজাত ভাষায় অধ্যাপনা বলে। আর যারা এই অধ্যাপনা করেন তাদের উপমহাদেশের লোকেরা অধ্যাপক বলেই সম্বোধন করেন। এটা শুধু আমাদের উপমহাদেশেই নয় পৃথিবীর অনেক দেশেই কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অধ্যাপক বলা হয়। কোন কোন দেশেতো হাইস্কুল শিক্ষকদেরও অধ্যাপক বলা হয়। " আর অধ্যাপকের ইংরেজি তো প্রফেসরই, নাকি?
অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম আমাদের কুদরত ভাইয়াও এখন থেকে নিজেকে অধ্যাপক কুদরত আলী লিখবেন। এ কথা তাকে বলতেই তিনি অবশ্য আমাকে হাতের ডাস্টার পাক্কা মারলেন। রাগ একটু কমলে বুঝায়া বললেন, "গুলাম আযমের ফতোয়া অনুসরণ করার চেয়ে তোরা আমারে এক বোতল ডাইমেক্রন খাওয়াইয়া মাইরা ফেল।"
আমি বেজায় শরমিন্দা হইলাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০০৮ রাত ৮:১৬