somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের পতাকা ও আত্মভোলা আবেগ

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ছোট ভাইটা ছোটবেলায় আধো আধো উচ্চারণে বলত 'আমাল আব্বু'।আমি ওকে এ বলে ক্ষেপাতাম'না আমার আব্বু'।ও আরো রাগ করে কেদে কেদে বলত'আমা-আল আব্বু'।কে তখন শিখিয়েছিল "আমাল আব্বু'?ভালবাসার এ আজব অনুভূতি যা শেখাতে হয় না,মুখের ভাষায়ই ফুটে উঠে যখন তখন।
কোন বিপদে পড়লেও আমরা বলে উঠি 'ওহ মাই গড" ।গড কি কেবলি আমার ।তবু কেন বলি "মাই গড" এটাও গডের প্রতি ভালবাসারই টানে।
যখন আমি দেশ নিয়ে কথা বলি তখনও বলি"আমার দেশ"।ভালবাসার এ অনুভূতি যেন কেবলি ভাগ না বসিয়ে নিজের আপন করে নেয়ার প্রয়াস।
বিজয়ের এটা।এ মাসেই লাল সূর্যের ঐ পতাকাটা আমরা পেয়েছি অনেক কিছুর বিনিময়ে।স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে অর্জনের খাতাটা খুব পরিপূর্ণ না হলেও একেবারে শূন্য নয়।বাংগালী জাতিটা খুব আবেগী।আমাদের প্রত্যেকটা স্বাধীকার আন্দোলনের পিছনে সবচেয়ে বড় অনোপ্রেরণার উৎস ছিল আবেগ।ভৌগলিক কারণেই শিক্ষা থেকে অনেক দূরে দেশের বৃহৎ একটা জনবল। এই মানুষদের আবেগ জাগিয়ে তোলাটা যেমন খহুব শহজ নয়,তেমনি একবার আবেগ জেগে উঠলে বিজয় নয়তো বিসর্জন ব্যতীত তাকে দমানো খুব দুঃসাধ্য।
৭মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষন বাঙালী জাতির আবেগকে যে পরিমাণ উথ্থিত করেছিল এবং অতপর শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষনার যুগপৎ ঘটনার মাধ্যমেই সেই আবেগের সাফল্যমন্ডিত সমাপ্তি।সেদিন যারা যুদ্ধে গিয়েছিল তাদের অধিকাংশই খুব বেশি শিক্ষিত ছিলেন না।তাই সঠিক আদর্শের বিপ্লবে আদর্শিত হওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব ছিল না।শুধু আবেগকে পুজি করে এত বড় একটা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের যে নজির আমরা দেখিয়েছি তা বোধ হয় পৃথিবীতে খুব বেশি ঘটেনি।
এর পুরো কৃতিত্ব কেবল সেই মানুষদের যারা তৎকালীন সময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমাদের যুদ্ধের।একটু পেছনে ফিরে যাই-
২৩ জুন নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর প্রান্তরে ৫০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনীর অভিনব প্রহসনের কাছে যে পরাজয়,তার কারণও কিন্তু এই আবেগ।
সেদিন লর্ড ক্লাইভও স্বীকার করেছিলেন-বাংলার ক্ষেতে-খামারে কাজকরা মানুষগুলোও যদি একটা করে ঢিল ছুড়ত ,তাহলেও ইংরেজরা জিততে পারতনা।
নবাব সেদিন বাংগালীদের আবেগকে ব্যবহার করতে পারেননি যেমনটি পেরেছেন আমাদের স্বাধীনতার নেতারা।
৪০ বছর পর আমাদের কাছে এখন স্বাধীনতার চেতনা কেবলি ডিসেম্বর এলেই ফেসবুক বা অন্য কোন সামাজিক সাইটে প্রোফাইলে পতাকার ছবি,ওয়েলকাম টোনে কোন দেশাত্ববোধক গান কিংবা লাল সবুজ গায়ে জড়িয়ে কোন সৌধের সামনে এক মিনিট নীরবতা পালন।আজ যখন আমাদের পতাকা ভারতের খোদ চ্যানেল পায়ের নীচে রেখে অনুষ্ঠান করার দুঃসাহস দেখায় তখনও আমরা সেই চ্যানেলগুলো বর্জনতো দূরে থাক,প্রতিদিনকার মতউপভোগ করেই চলি।সবচাইতে অবাক হই আমাদের দেশের ঠুনকো বিষয় নিয়ে পড়িমড়ি করা বুদ্ধওয়ালাদের নীরবতা দেখে।আজকে সামাজিক ওয়েবসাইটের প্রোফাইল ফটোতে ব্যবহার করা পতাকার ছবিটা আগামীকাল যখন রিপ্লেস করব নিজেরই কোন ছবি দিয়ে তখন দেশকে কেবল ছোট করাই হবে না বেঈমানী করা হবে লক্ষ শহীদের রক্তের সাথে।
পতাকা মামুলি কোন বিষয় নয়।একটি পতাকার সাথে জড়িয়ে থাকে একটা ইতিহাস আর নাম না জানা অগনিত মানুষের কত ত্যাগ আর অশ্রুশিক্ত আবেগের অনুভূতি।এর সাথে লুকিয়ে থাকে কত সন্তানহারা মায়ের ক্লান্ত সময়ের সীমাহীন প্রতিক্ষা,কতো সন্তানের বাবার জন্য রেখে দেয়া উদার জমিন,কতোনা বোনের ভাইয়ের জন্য আকুল অপেক্ষার প্রহর কিংবা কতো না মানুষের তার প্রিয়জনের জন্য জীবনের কতোনা অস্পৃশ্য মুহুর্তের সাথে কেবলি আপ্রাণ শ্বাস টেনে চলা।
কোন সাময়িক আবেগ যেন নষ্ট না করে দেয় আমাদের এ চেতনাবোধ ,বিজয়ের মাসে এমনটিই প্রত্যাশা সবার কাছে..।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×