somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদের শুভেচ্ছা :) এবং ব্যাপারীদের “ বিটলামি” সমাচার :|

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝারি সাইজের গাট্টা – গোট্টা একটা গরুর দামাদামি চলছে । ব্যাপারী যে দাম বলল শুনে আক্কেল গুড়ুম ! :|

- ঐ মিয়া গরু কি বেচতে আনছো? নাকি ভাড়া দিয়া আবার সিরাজগঞ্জে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে ?
- হে হে হে ...... বেচতে আনছি ভাই । নইলে তো এতো ছোট করে দাম কইতাম না । ( হালায় কয় কি ???!!! :-/ )
- ইন্ডিয়ান গরু এতো দাম হয় নাকি?
- ইন্ডিয়ান হইব কেন? এক বছর দেশে থাকলে গরু আবার ইন্ডিয়ান থাকে নাকি ?

অকাট্য যুক্তি । ইন্ডিয়া থেকে গরু এনে দেশে এক বছর পেলে – পুষে বড় করলে তার বাংলাদেশী পাসপোর্ট পেয়ে যাওয়া বোধকরি অসম্ভব কিছু না । এমন কথা শুনার পর আর কথা বাড়ানোর রাস্তা খুঁজে পাওয়া গেলো না ।

বাপ – চাচা, ফুপা, বড় ভাইয়ের সাথে পরিবারের জুনিয়র সদস্য হিসেবে হাটে গেছি । দলে দুধ-ভাত হিসেবে নিষ্ক্রিয় সদস্য ক্লাস থ্রি পড়ুয়া দুই ছোট ভাইও আছে । আগের দুই ঈদে কায়দা করে পিছলে গেলেও এবার ছোট কাকু আগে থেকে হাতে ছাই মাখিয়ে টাকি মাছ ধরার মতো করে ধরে ফেলায় আর ফাঁকি দেওয়া গেলো না । দেশে বর্ডার ক্রস করে এবার বৈধ ভাবেই গরু এসেছে ১৯ লক্ষ, অবৈধ ভাবেই এর থেকে কম আসার কথা না । আর আমাদের দেশী গরু তো আছেই । সব মিলিয়ে চাহিদার চেয়ে গরুর যোগান অবশ্যই বেশী । কাজেই দাম কম থাকার কথা । কিন্তু সমস্যা হল গরুর হাটে অ্যাডাম স্মিথ বাবাজীর অর্থনীতির থিওরি খাটে না । অন্তত আমরা যেদিন কিনতে যাই সেদিন কখনোই খাটে নি । এপর্যন্ত যতবার হাটে গিয়েছি প্রতিবার শুনেছি আমরা আসার ঠিক আগের দিনই নাকি দাম কম গেছে, একেবারে পানির দাম । এবারও তাই শুনলাম X((

কিছু কিছু সময়ে মনে হয় মেয়ে হয়ে জন্মানোই বোধহয় ভালো ছিল, জীবনে কিছু ক্ষেত্রে অন্তত কষ্ট কম করতে হতো :(( . গরুর হাটে ঘোরার সময়টা এমনই একটা সময় । দুপুরের প্রচণ্ডতম রোদ, আকাশে - বাতাসে উত্‍কট দুর্গন্ধ, যে কোন সময় যে কোন দিক থেকে শিংয়ের গুঁতা খাওয়ার সম্ভবনা । মাঝেমাঝে আবার গরু ছুটে যায়, তখন দেয়া লাগে দৌড় । এসবে অত্যাচারের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা হাঁটার পর আমাদের আট সদস্যের বিশাল কমান্ডো বাহিনী ক্লান্ত । বাসা কাছেই হওয়ায় দুই পিচ্ছি আস্তে করে মাইনাস হয়ে গেলো । আমরা যারা ভুল করে বড় হয়ে গেছি তাদের তো আর সে সুযোগ নেই, আমরা হাঁটতেই থাকলাম আর দামাদামি করতেই থাকলাম, করতেই থাকলাম । একটা করে গরু পছন্দ হয়, দাম জিজ্ঞাসা করি আর দাম শুনে চোখ কপালে উঠে যায় । সর্বোচ্চ ৫০ হাজার দাম হতে পারে এমন এক গরুর দাম কম বয়সী ছোকরা টাইপ ব্যাপারী চাইলো ৯২ হাজার । আমরা সবাই চোখ সরু বুঝার চেষ্টা করছি ব্যাপারী কী দুষ্টামি করার চেষ্টা করছে নাকি । দাম বলা শেষে উদাসভাবে গরুর লেজের চুল হাত দিয়ে ঠিক করে দেওয়ার ফাঁকে আবার আরেকটু যোগ করে দেয় দামের সাথে ,

- একদাম ।
- একদাম বিরানব্বই হাজার ?
- জে ।

আর তো সহ্য করা যায় না । বাপ-কাকাকে সুযোগ না দিয়ে এবার আমিই লাফ দিয়ে উঠে দাম বললাম ,

- তেত্রিশ হাজার তিনশো তেত্রিশ টাকায় দিবা ? :D :P

এবার ব্যাপারীর চোখ সরু হয়ে যায় আমি রসিকতা করছি কিনা বুঝার জন্য । আমি চেহারায় একটা ভালো মানুষী ভাব ফুটিয়ে তুলে হাসিহাসি মুখে দাড়িয়ে থাকি । ব্যাপারি Shockzz , আই RockzzZ B-) :D :P

অবশেষে আমার আর বড় ভাইয়ের ক্লান্ত, বিধ্বস্ত চেহারা আর একটু পরপর গরুর জন্য বাধা বাঁশের উপর হাত-পা ছড়িয়ে বসে পড়া দেখে তেমন দামাদামি ছাড়াই একটা গরু কেনা হল । বাসায় হাঁটিয়ে আনার সময় মনে হচ্ছিলো এখনো বাচ্চা মানুষ থাকলে ঘোড়া মনে করে গরুর পিঠে চরে ঘুমাতে ঘুমাতে বাসায় ফেরা যেতো ।

এই উপভোগ্য কষ্টটাই আসলে ছেলেদের কোরবানির ঈদের আনন্দ । মেয়েদেরটা কী তারাই ভালো বলতে পারবে ।

দুরের - কাছের, বন্ধু - শত্রু, পরিচিত – অপরিচিত, প্রিয় - অপ্রিয়, বিশেষ প্রিয় সবাইকে আন্তরিক ঈদ মোবারক :) :D B-) ;) :P
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২১
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×