somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মকথন ৪

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিতকালে এমন দিনে ভাটিগার গোনে খালে জল কুমে আসলে খালে যে পাশ দিয়ে জল নামে সেই পাশে একটা গাছ বান্দা দিতাম কজনেমিলে,এরপর ছোট একটা বান্দা দিতাম যে পর্যন্ত সেচবোসেখানে।মাঝখানে প্রয়োজনমত বান্দা দিতাম।জল সেচা হলে মাছ ধরে, মাটি কোপাতাম বাইন মাছ ধরার জন্য।মাছ ধরা শেষে বাড়িতে মাছ এনে ভাগ করে নিতাম।
নাড়ার পাঁজা উল্টায়ে গুড়ি কাকড়া ধরতাম।দিলীপ দাদের ছাড়াবাড়ির বড়ই গাছে ঢিল মেরে বড়ই খাওয়া ছিলো অবসর সময়ের কাজ।বড় হওয়ার পর গাছে উঠে বড়ই পেড়ে খেয়েছি সেই মগডালের বড়ইও বাদ যেতোনা।ফাল্গুণ চৈত্র মাসে হাঁসের বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য কাছিদিয়ে আইলে কোপ দিতাম শামুক আছেকিনা।ঠন করে উঠলে খুঁচে শামুক বের করে আনতাম,ঐ শামুক কেটে ঐ বাচ্চাকে খাওয়াতাম।
মাঠের নাড়া একপাশ শুকালে উল্টায়ে দিতাম অপর পাশ শুকানোর জন্য।শুকালে ধানের ছোটা দিয়ে আডা(আটি) বেঁধে বাড়ি আনতাম। বাবা হেল্প করতো বাঁধতে আর আমরা নিয়ে আসতাম।ঐ নাড়া বাড়ি আনার পর গৈলান(ছোট আটি) করে ঢিপ দিয়ে রাখতাম।ঘরামি(ঘর ঠিক করে দিত যে) এনে ঘড়ের চালার পুরানো নাড়া ফেলে পরিস্কার করে নতুন নাড়ার গৈলান উপরে ফেলতাম,তা ফেলানোর একটা কৌশল আছে।এর আগে টুনি বাঁশের চটা রেডি করে রাখা হতো।বাঁধার জন্য চুমড়ি(নারকেল গাছের) পেড়ে তাভিজায়ে চিকন করে সোডা বানানো হতো।ঘরামি ঐ চুমড়ি দিয়ে নাড়া চালে বাঁধতো। সম্পূর্ণ ঘড় ছাওয়া হলে নিচ দিয়ে কাছির সাহায্যে বের হওয়া নাড়া কেটে পরিস্কার করা হতো,সাইজ ঠিক করা হতো।এভাবে ৯৩সাল পর্যন্ত চলছে।মুক্তিযুদ্ধে ঘর পোড়ানোর পর আর কাঠের ঘর বানানো হয়েছিলোনা।প্রতিবছর এমন ভাবে ঘড় ঠিক করা লাগতো।শিতের বিকেলে কলই শাক তোলা একটা আনন্দের ছিলো।কলই ফল মাঝারি মত হলে তা দিয়ে কলই ভাজা খেতাম মজা করে।ক্লাসমেট দিপ্তি একদিন আমাদের কলই ভেজে দিছিলো।সে কি আনন্দ।আবার চালতা মাখা খাওয়ার সময় ছিলো এসময়টায়।চালতা পোড়ায়ে সুপারির খোলে ছিঁচে গুর দিয়ে মেখে খেতাম,আবার ঝাল মসলা দিয়েও খেতাম।
আমার মাঝে মাঝে ডায়রিয়া হতো,তখন জল খেতে দিতো না তবে ডাঃ এসে স্যালাইন করে দিতো।আশির দশকের শেষ দিকে গুর দিয়ে স্যলাইন বানায়ে খাওয়াতো।তখন কতো লোক ডিহাইড্রশনে মারা গেছ,তার হিসেব নেই।
শিতকালে বিকেলে স্কুল মাঠে দাড়িয়া বান্দা খেলা ছিলো জমজমাট।কডেং,চাড়ামার,ছিবুড়ি,গাছবান্দা খেলা ছিলো অন্যতম।মাঠে ঘুড়ি উড়ানো,কবুতর পোষা,কুকুর পালানো-কুকুরকে রাগি বানাবার জন্য সিং মাছের কাটা দিয়ে কান ফোরানো ফেনের সাথে মরিচ গোলা খাওয়াতাম।গরু খুঁজে আনা রাহালির(রাখাল) কাছ দিয়ে ছিলো নৈমিত্তিক কাজ।হাঁস খোঁজা, হাস খোঁপে ঢুকানো এসব কতকি!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×